পশ্চিমবঙ্গের একনজরে রাজ্য বাজেট ২০২০-২০২১ || West Bengal State Budget 2020-2021 at a Glance
একনজরে পশ্চিমবঙ্গের বাজেট ২০২০-২০২১
ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র রাজ্য বিধানসভায় পেশ করলেন ২০২০-২১ অর্থবর্ষের অন্তবর্তী বাজেট । এই বাজেট অনুযায়ী-
1. এই বারের রাজ্য বাজেটে উন্নয়নমূলক খাতে সবথেকে বেশি অর্থ বরাদ্দ হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামােন্নয়ন দপ্তরের জন্য । উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২০,৬৯২ কোটি টাকা । গ্রামীণ এলাকায় ১০০ দিনের কাজ, বাংলা আবাস, বাংলা গ্রামীণ সড়ক, মিশন নির্মল বাংলা প্রভৃতি জনস্বার্থজনিত প্রকল্পগুলি চালাতে এই বরাদ্দ করা হয়েছে ।
2. পুর ও নগরােন্নয়ন দপ্তরের উন্নয়নের খাতে বরাদ্দ হয়েছে ৮,৪৩০ কোটি টাকা ।
3. গ্রাম ও শহরের দরিদ্র মানুষকে নিখরচায় বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে ‘হাসির আলাে’ নামে একটি নতুন প্রকল্পের ঘােষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী এইবারের বাজেটে । এর জন্য ২০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে । অনুমান অনুযায়ী এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩৫ লক্ষ গরীব পরিবার উপকৃত হবে ।
4. বাজেটে রাজ্যের তপশিলি জাতির ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষদের জন্য ' বন্ধু ' নামে একটি প্রকল্পের ঘােষণা করা হয়েছে । এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মানুষরা মাসে ১০০০ টাকা করে বার্ধক্য ভাতা পাবেন ।
5. রাজ্যের আদিবাসী সমাজের বয়স্ক মানুষদের জন্য ‘জয় জোহার’ ও ‘বন্ধু’ নামক প্রকল্পের ঘােষণা করা হল । ৬০ বছর বয়স পেরিয়ে যাওয়া আদিবাসী মানুষরা এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে বার্ধক্য ভাতা পাবেন ।
6. চা বাগানে কর্মরত গৃহহীন শ্রমিকদের স্থায়ী বাসস্থান দিতে ' চা সুন্দরী ' নামে একটি নতুন প্রকল্পের কথা ঘােষণা করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র । এই প্রকল্পের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে ।
7. বাজেটে রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছােট ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে মানােন্নয়নের জন্য উৎসাহ দিতে ' বাংলাশ্রী ' নামে নতুন প্রকল্পের কথা জানানাে হল । এর জন্য ১০০ কোটি বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে ।
8. বেকার যুবক-যুবতীদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে ' কর্মর্সাথী ' প্রকল্পের কথা ঘােষণা করা হল । এই প্রকল্পের আওতায় আগামী তিন বছরে ১ লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা করা হবে । ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লগ্নির প্রকল্পের সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার । এর জন্য ৫০০ কোটি বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে ।
9. বাজেটে জানানাে হয়েছে রাজ্যের সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের কর্মসংস্থানের জন্য তৈরি হচ্ছে ১১৫ টি মার্কেটিং হাব বা কাতীর্থ | রাজ্যের সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আগামী অর্থবর্ষের ৩,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা ।
10. উন্নয়ন খাতে অর্থ বরাদ্দে দ্বিতীয় স্থান স্কুল শিক্ষা দপ্তরে । তাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮,৭৫০ কোটি টাকা ।
11. খাদ্য দপ্তরের জন্য মােট বরাদ্দ হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি । কৃষি দপ্তরের জন্য বরাদ্দ ৫,৮৬০ কোটি টাকা । স্বাস্থ্য দপ্তর উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ৪,৫৪৮ কোটি টাকা, পূর্ত দপ্তর ৩,৯০০ কোটি টাকা, নারী শিশু ও সমাজ কল্যাণ । দপ্তরের জন্য বরাদ্দ ৫,৪৮৬ কোটি টাকা ।
12. মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের জন্য বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩,৬০০ কোটি টাকা ।
13. সেচ দপ্তরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২,৮২০ কোটি টাকা ।
14. এইবারের বাজেটে জানানাে হয়েছে আগামী দু’বছরে পশ্চিমবঙ্গে আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী করতে চলেছে রাজ্য সরকার । ঝাড়গ্রামের বিরসা মুন্ডা বিশ্ববিদ্যালয়, তপশিলি জাতি অধ্যুষিত এলাকায় আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি শিক্ষার উন্নয়নে ওবিসি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে । উচ্চশিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের জন্য বাজেটে ৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ করা হয়েছে । 15. আগামী তিন বছরে বাংলায় নতুন ১০০ টি ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প পার্ক তৈরি হতে চলেছে । সেই লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের বাজেটে মােট ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ।
16. প্রতিটি জেলায় ‘ বাংলা সহায়তা কেন্দ্র ' গড়ার কথা ঘােষণা করা হল রাজ্য বাজেটে । কলকাতা সহ বাংলার ২৩ টি জেলায়, ৬৬ টি এসডিও অফিস, ৩৪২ টি বিডিও অফিস, ১,৫০০ টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ৮১৩ টি লাইব্রেরিতে এই কেন্দ্র গড়ে তােলা হবে । রাজ্য জুড়ে এই ধরণের মােট ২৭৪৪ টি কেন্দ্র স্থাপনের কথা বলা হয়েছে । এই কেন্দ্র থেকে সাধারণ মানুষ কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, জাতি সংক্রান্ত সংশয়পত্র, বাসস্থানের সংশয়পত্র, কর প্রদানসহ বিভিন্ন পরিষেবার সুযােগ পাবেন । এই কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ।
17. বাজেটে বেতন খাতে সরকার বরাদ্দ করেছে ৫২,৯০৪ কোটি টাকা । পেনশন ও অন্যান্য অবসরকারীর প্রাপ্য মেটাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ২০,৮৪৪ কোটি টাকা ।
18. মহাত্মা গান্ধি, জয় হিন্দ ও আজাদ নামে তিনটি সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমি চালুর জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দের । পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার ।
19. নতুন বাজেটে জমি একত্রীকরণে স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । নিয়ম অনুযায়ী জমি অ্যামালগেমেশন বা একত্রীকরণে ৫ থেকে ৭ শতাংশ হারে যা স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হতাে, তা এখন থেকে ০.৫ শতাংশ হারে দিতে হবে । সর্বাধিক তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে ।