Ads Area


সহায়ক পাঠের যে গল্পটি তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে প্রবন্ধ রচনা | The Story Helpful Text That You like Essay Writing

সহায়ক পাঠের যে গল্পটি তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে প্রবন্ধ রচনা | The Story Helpful Text That You like Essay Writing

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো।যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “সহায়ক পাঠের যে গল্পটি তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে প্রবন্ধ রচনা” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।


সহায়ক পাঠের যে গল্পটি তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে প্রবন্ধ রচনা


ভূমিকা:

ভালো লাগা একান্তই ব্যক্তিগত তথা নিজস্ব অনুভূতির বিষয়। সব সময় যুক্তি দিয়ে তার বিচার হয় না। মনের গ্রহণশীলতার ওপর নির্ভর করে ভালো লাগা। একজনের কাছে যেটা ভালো, অন্যের কাছে তা ভালো নাও হতে পারে। সুতরাং, নির্বিশেষ তত্ত্ব সেই ভালো লাগার। বিশেষ কোনো লেখক বা কবির রচনা বা বিশেষ কোনো গল্প-উপন্যাস প্রিয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে পাঠকের নিজস্ব অনুভূতির এবং গ্রহণশীল মনই সবচেয়ে বড়ো বিচারক।


সবচেয়ে ভালো লাগা গল্পটি:

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রকাশিত বাংলা সহায়ক পাঠ গ্রন্থের যে গল্পগুলি আমাদের পাঠক্রমে রয়েছে, তাদের মধ্যে বৈচিত্র্য আছে বলে সবগুলিই আমার ভালো লাগে। তবু যেহেতু সবচেয়ে ভালো লাগা গল্পটি বেছে নিতে হবে, তাই আমার তালিকার শীর্ষে স্থান দিলাম সুবোধ ঘোষ রচিত ‘অযান্ত্রিক’ গল্পটিকে।


কাহিনি:

‘অযান্ত্রিক’ গল্পের অন্তিম পরিণতির বেদনা আমাকে একই সঙ্গে মুগ্ধ এবং ব্যথিত করেছে। আমরা পশুপাখির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের একাধিক গল্প পড়ছি- কিন্তু তেমন সম্পর্ক যে যন্ত্রের সঙ্গেও হতে পারে ‘অযান্ত্রিক না পড়লে হয়তো কোনোদিনও অনুভব করা যেত না। ‘অযান্ত্রিক নামটিতেও লেখক বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, বিমলের পনেরো বছরের পুরানো ‘ফোর্ড’ গাড়িটি (জগদ্দল) তার কাছে প্রিয়, যন্ত্রের চেয়েও বেশি কিছু। বিমল তার কষ্ট বোছে, ক্ষুধাতৃয়া অনুভব করে, তার সঙ্গে কথা বলে, পরিষ্কার করে, সাজায়। এ যুগের পক্ষে একান্ত বেমানান হলেও জগদ্দলকে বিক্রি করার কথা বিমল ভাবতেও পারে না। গাড়ি সম্বন্ধে প্রতিকূল কথা শুনলে ক্রুদ্ধ হয়। বিমল গর্বিত এ গাড়ি নিয়ে।

এর শক্তি, সামর্থ্য এবং বিশ্বস্ততা অতুলনীয়। তবু মাঝে মাঝে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। সারিয়ে তোলে বিমল। এবার বড়ো মেরামতির দরকার হল। বিমল সিদ্ধান্ত নিল জগদ্দলকে সম্পূর্ণ নতুন করে তুলবে। অর্থ ব্যয় করল অকাতরে, যত্ন করল হৃদয়ের সমস্ত উন্নতা দিয়ে। কিন্তু জগদ্দল আর ফিরে পেল না তার পুরানো প্রাণশক্তি। তার যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে বিমল দেখল তার প্রিয় বন্ধু, তার পনেরো বছরের জীবনসঙ্গী ধীরে ধীরে অচল যন্ত্রে, কেবলই লোহার স্তূপে পরিণত হল।



লেখকের সহানুভূতি:

‘এ গল্পের পটভূমি বঙ্গদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে- বিহারের মানভূমে। রাঁচি-রামগড়-মালদা ইত্যাদি শহরের নাম পাওয়া যায় গল্পে। সুবোধ ঘোষ প্রথম জীবনে হাজারিবাগে চাকরি করতেন। তার ছাপ আছে গল্পে। কাহিনিটি একমুখী- বিমল, তার ট্যাক্সি; উভয়ের সম্পর্কের মানবিকতা। আদর্শ ছোটোগল্পে এই একমুখী বৃত্ত কাম্য। অত্যন্ত দরদি মন নিয়ে ঘটনা পরম্পরা এঁকে গেছেন লেখক। বিশেষ করে জগদ্দলের সঙ্গে বিমলের সম্পর্কের কখনও স্নেহ-ভালোবাসা, কখনও ক্ষোভ-অভিমান অর্থাৎ ফুটে উঠেছে সামগ্রিক একাত্মতা। তারই ছায়া পড়েছে গল্পের শেষে। জগদ্দলের পরিণতি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে , বিমলের বেঁচে থাকার আর কোনো অর্থ নেই।


ভালো লাগার কারণ:

ভালো লাগা যদিও বিশ্লেষণের ঊর্ধ্বে তবু, এ গল্পটি আমার প্রিয় হয়ে উঠেছে বিশেষ কয়েকটি কারণে-

(ক) শেষ পর্যন্ত ‘জগদ্দল’ নামক ট্যাক্সিটি যান্ত্রিকতা অতিক্রম করে মানব-অস্তিত্ব লাভ করেছে।

(খ) বিমলের একক সংলাপ এবং গাড়ীর প্রতি আবেগ

(গ) গাড়ির যন্ত্রাংশ জ্বালানি, মেরামত, পথ চলা- কোনো কিছুতেই যান্ত্রিকতা নেই।

(ঘ) ট্যাক্সি চালকদের জীবনযাত্রা, রস-রসিকতা, নিয়মের অধিক যাত্রী পরিসেবা ইত্যাদি প্রত্যক্ষ বাস্তবতা।

(ঙ) দুটি বিশেষ দৃশ্যঃ নবসাজে সজ্জিত জগদ্দলকে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাবার প্রয়াস এবং শেষ দৃশ্যে যখন শোক আর নেশার মধ্যে বিমল শুনতে পাচ্ছে তার জগদ্দলকে সমাধি-খননের শব্দ।

(চ) বিমলের একরোখা চরিত্র । সে যেন ট্র্যাজেডির নায়ক, চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে ভবিষ্যতের শূন্যময় পরিণাম তবু অন্ধবিশ্বাস আর আবেগ তাকে তাড়িয়ে নিয়ে চলেছে প্রাণনাশের দিকে। 


উপসংহার:

‘অযান্ত্রিক কিন্তু এইটুকুতেই শেষ হয়ে যায়নি; গল্প শেষ হলেও আর-একটা ভাবনা জাগিয়ে রেখে যায় আমাদের মনে। বিমল তো জগদ্দলের মালিক হল, কিন্তু মালিক সুলভ প্রভুত্ব পরায়ণতা কখনও দেখায়নি সে। আজকের পৃথিবীতে শ্রমিকশ্রেণি পরিণত হয় মালিকের শোষণ যন্ত্রে, আর এ গল্পে যন্ত্র হয়ে উঠেছে মানুষ। এই ভাবটির জন্য ‘অযান্ত্রিক’ গল্প সহায়ক পাঠের গল্পগুলির মধ্যে আমার কাছে সব থেকে প্রিয়।


বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধরচনা পড়তে এখানে ক্লিক করুন


(যদি কোন ভুল থেকে থাকে তবে তা Typing mistake এর জন্য । আমাদের comment করে জানান আমরা তা সংশোধন করে দেবার চেষ্টা করবো ।)

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area