কোশ কী গঠন ব্যাখ্যা | Explain Cell Structure In Bengali
কোশ কী গঠন ব্যাখ্যা/ কোশ বিজ্ঞান: এই টপিকটি থেকে প্রায় সমস্ত রকম প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় WBCS | WBPSC | BANK | Rail | WBP | SSC প্রায়শই প্রশ্ন এসেই থাকে, তাই আপনাদের কাছে এই কোশ কী গঠন ব্যাখ্যা/ কোশ বিজ্ঞান তথ্য গুলি সুন্দর করে দেওয়া হলো ।
যদি ভালোভাবে মুখস্ত বা মনে রাখেন তা হলে প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় আপনাদের অনেক সুবিধা হবে ।
কোশ কী
সংজ্ঞা: অর্ধভেদ্য পর্দা বেষ্টিত, প্রোটোপ্লাজম সমন্বিত, স্বপ্রজননশীল, জীবদেহের গঠনগত এবং কার্যগত একককে কোশ বলে । যেমন- ডিম ।
আবিষ্কারক: বিজ্ঞানী রবার্ট হুক (1665) সর্বপ্রথম কর্কে কোশ পর্যবেক্ষণ করেন । যদিও প্রকৃতপক্ষে তিনি কোশপ্রাচীর পর্যবেক্ষণ করেন ।
বিজ্ঞানী লিউয়েন হক (1672) সর্বপ্রথম জীবিত কোশ রূপে ব্যাকটেরিয়া পর্যবেক্ষণ করেন ।
প্রকারভেদ: প্রোটোপ্লাজম এবং নিউক্লিয়াসের সংগঠনের উপর ভিত্তি করে কোশ প্রধানত তিন প্রকার-
1. প্রোক্যারিওটিক কোশ
2. মেসোেক্যারিওটিক কোশ
3. ইউক্যারিওটিক কোশ
প্রোক্যারিওটিক, মেসোক্যারিওটিক এবং ইউক্যারিওটিক কোশের বৈশিষ্ট্য
প্রোক্যারিওটিক কোশ
- নিউক্লিয়াস- আদর্শ নিউক্লিয়াস থাকে না
- ক্রোমোজোম- গঠিত হয় না
- সেন্ট্রোমিয়ার- গঠিত হয় না
- কোশ বিভাজন- অ্যামাইটোসিস
- স্পিন্ডল গঠন- গঠিত হয় না
- রাইবোজোম- 70s প্রকৃতির
মেসোক্যারিওটিক কোশ
- নিউক্লিয়াস- আদর্শ নিউক্লিয়াস থাকে
- ক্রোমোজোম- গঠিত হলেও আম্লিক প্রোটিনযুক্ত
- সেন্ট্রোমিয়ার- গঠিত হয় না
- কোশ বিভাজন- অ্যামাইটোসিস
- স্পিন্ডল গঠন- গঠিত হয় না
- রাইবোজোম- 80s প্রকৃতির
ইউক্যারিওটিক কোশ
- নিউক্লিয়াস- আদর্শ নিউক্লিয়াস থাকে
- ক্রোমোজোম- গঠিত হয় এবং ক্ষারীয় প্রোটিন যুক্ত
- সেন্ট্রোমিয়ার- গঠিত হয়
- কোশ বিভাজন- মাইটোসিস বা মিয়োসিস বা উভয়
- স্পিন্ডল গঠন- গঠিত হয়
- রাইবোজোম- 70s এবং 80s উভয় প্রকৃতির
জীবদেহে অবস্থানের উপর ভিত্তি করে কোশ প্রধানত দুই প্রকার- (i) উদ্ভিদ কোশ (ii) প্রাণি কোশ
উদ্ভিদ কোশ |
প্রাণি কোশ |
উদ্ভিদ কোশ এবং প্রাণি কোশের মধ্যে পার্থক্য:
উদ্ভিদ কোশ এবং প্রাণি কোশের পার্থক্য |
---|
বিষয় | উদ্ভিদ কোশ | প্রাণি কোশ |
কোশ প্রাচীর | থাকে । প্রধানত সেলুলোজ নির্মিত | থাকে না |
সেন্ট্রোজোম | থাকে না | থাকে |
ক্লোরোপ্লাস্ট | থাকে | থাকে না |
লাইসোজোম | থাকে না | থাকে |
মাইক্রোভিলাই | থাকে না | থাকে |
পিনোসাইটিক গহ্বর | গঠিত হয় না | গঠিত হয় |
ভ্যাকুণ্ডল | পরিণত কোশে সংখ্যায় অল্প এবং আকারে বড় হয় | পরিণত কোশে সংখ্যায় তুলনামূলক বেশী এবং আকারে অনেক ক্ষুদ্র হয় |
কোশাস্তর সংযোগ | সাধারণত প্লাজমোডেসমাটা কোশান্তর সংযোগ সাধন করে | ডেসমোজোম, টাইট জাংশন, অ্যাডহেরেন জাংশন, গ্যাপজাংশন ইত্যাদি কোশান্তর সংযোগ সাধন করে |
কোশপ্রাচীর (Cell Wall)
সংজ্ঞা: প্রায় সমস্ত উদ্ভিদ কোশের প্লাজমাপর্দাকে ঘিরে সেলুলোজ ও অন্যান্য উপাদান সহযোগে গঠিত নির্জীব, পুরু, দৃঢ়, ভেদ্য, স্থিতিস্থাপক আবরণকে কোশপ্রাচীর বলে ।
আবিষ্কার: বিজ্ঞানী রবার্টসন সর্বপ্রথম কোশে কৌশপ্রাচীর আবিষ্কার করেন ।
কাজ:
(i) কোশকে নির্দিষ্ট আকার আকৃতি প্রদান করে ।
(ii) কোশের আভ্যন্তরীণ উপাদানগুলিকে বাইরের আঘাত ও জীবাণুর থেকে রক্ষা করে ।
(iii) পার্শ্বীয় কোশের মধ্যে পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে ।
গঠন: একটি আদর্শ কোশপ্রাচীর প্রধানতঃ মধ্যপর্দা, প্রাথমিক প্রাচীর এবং গৌণ প্রাচীর নিয়ে গঠিত ।
উৎপত্তি: কোশ বিভাজনের টেলোফেজ দশা থেকে শুরু করে সাইটোকাইনেসিস দশায় দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের মাঝে কোশপ্রাচীর গঠিত হয় ।
রাসায়নিক উপাদান:
মধ্যপর্দা: Ca এবং Mg পেকটেট ।
প্রাথমিক প্রাচীর: সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ ।
গৌণ প্রাচীর: সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ, লিগনিন কাইটিন, সুবেরিন, ওয়াক্স, মিউসিলেজ, উৎসেচক, জল, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি ।
প্লাজমোডেসমাটা (Plasmodesmata)
সংজ্ঞা: উদ্ভিদকোশে কূপজোড়ার মধ্য দিয়ে যে সাইটোপ্লাজমীয় সূত্রাকার গঠন দুইটি পার্শ্ববর্তী কোশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে তাদের প্লাজমোডেসমাটা বলে ।
কোশপর্দা বা প্লাজমা পর্দা (Plasma membrane)
সংজ্ঞা: প্রত্যেক সজীব কোশের প্রোটপ্লাজমকে ঘিরে যে সূক্ষ্ম (70Å-100Å), স্থিতিস্থাপক, অর্ধভেদ্য বা প্রভেদক ভেদ্য, লিপোপ্রোটিন নির্মিত ত্রিস্তরীয় সজীব আবরণ থাকে তাকে কোশপর্দা বা প্লাজমা পর্দা বলে ।
আবিষ্কার: বিজ্ঞানী স্বোয়ান (1838) সর্বপ্রথম কোশপর্দা আবিষ্কার করেন ।
নামকরণ: বিজ্ঞানী নেগেলি এবং ক্রামার (1855) সেল মেমব্রেন (cell membrane) কথাটি প্রবর্তন করেন ।
বিজ্ঞানী প্লোত্র (1931) কোশপর্দাকে সর্বপ্রথম প্লাজমালেম্মা (Plasmalemma) নামে অভিহিত করেন ।
কাজ:
- কোশকে নির্দিষ্ট আকার প্রদান করা ।
- প্রোটোপ্লাজমকে পৃথক করে রাখে এবং রক্ষণাত্মক কাজ করে ।
- কোশ অঙ্গানুর পর্দা গঠন করে ।
- পিনোসাইটোসিস ও ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
- বিভিন্ন উপাদানের পরিবহনকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
- কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে ।
রাসায়নিক উপাদান:
- লিপিড- ফসফোলিপিড এবং স্ফিংগোলিপিড
- প্রোটিন- বাহক প্রোটিন, গঠনগত প্রোটিন এবং উৎসেচক প্রোটিন ।
- শর্করা- গ্লাইকোপ্রোটিন এবং গ্লাইকোলিপিড ।
প্রকারভেদ:
ভেদ্যতার উপর ভিত্তি করে কোশপর্দা চার প্রকার- অভেদ্যপর্দা, অর্ধভেদ্য প্লাজমাপর্দা, পছন্দমাফিক ভেদ্যপর্দা
- অভেদ্যপর্দা- যে প্লাজমা পর্দার মাধ্যমে গ্যাসীয় অণু ব্যতীত কোনো কঠিন বা তরল পদার্থের অণু চলাচল করতে পারে না তাকে অভেদ্য প্লাজমা পর্দা বলে । যেমন- মাছের অনিষিক্ত ডিম্বাণুর প্লাজমাপর্দা ।
- অর্ধভেদ্য প্লাজমাপর্দা- যে পর্দার মাধ্যমে কেবলমাত্র দ্রাবক অণু চলাচল করতে পারে কিন্তু দ্রাব পারে না, তাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে । যেমন- মাছের পটকা ।
- পছন্দমাফিক বা বিভেদমূলক ভেদ্যপর্দা- যে সকল প্লাজমা পর্দার মাধ্যমে অল্প পরিমাণে দ্রাবের অণু চলাচল করতে পারে বা যে সকল প্লাজমা পর্দা দিয়ে পছন্দমাফিক আয়ন বা ক্ষুদ্র অণুর চলাচল ঘটে, তাকে পছন্দমাফিক ভেদ্যপর্দা বা বিভেদমূলক ভেদ্যপর্দা বা প্রভেদক ভেদ্যপর্দা বলে । যেমন- সজীব কোশের কোশপর্দা ।
- ডায়ালাইজিং প্লাজমাপর্দা- যে প্লাজমাপর্দার মাধ্যমে ঔদস্থৈতিক চাপের দ্বারা বলপূর্বক দ্রাব এবং দ্রাবকের অণুগুলি চলাচল করে, তাকে ডায়ালাইজিং প্লাজমা পর্দা বলে । যেমন- এন্ডোথেলিয়াম কোশের ভিত্তি পর্দা ।
দ্বি একক পর্দাযুক্ত কোশীয় অঙ্গানু
নিউক্লিয়াস (Nucleus)
সংজ্ঞা: ইউক্যারিওটিক কোশের প্রোটোপ্লাজমে সর্বাপেক্ষা ঘন, প্রায় গোলাকার, যে দ্বি একক পর্দাবেষ্ঠিত কোশীয় অঙ্গাণু বংশগত বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে নিউক্লিয়াস বলে ।
আবিস্কার: বিজ্ঞানী অ্যানটন ভ্যান লিউয়েনহক এবং ফনট্যানা সর্বপ্রথম নিউক্লিয়াস পর্যবেক্ষণ করেন ।
নামকরণ: বিজ্ঞানী রবার্ট ব্রাউন (1831) নিউক্লিয়াস নামকরণ করেন ।
গঠন: একটি আদর্শ নিউক্লিয়াস চারটি অংশ নিয়ে গঠিত ।
- নিউক্লিও পর্দা
- নিউক্লিওপ্লাজম
- নিউক্লিওলাস
- নিউক্লিওজালক বা ক্রোমাটিন তন্তু
কাজ :
- নিউক্লিয়াসের মধ্যে বংশগত বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী ক্রোমাটিন থাকে বা জীবের বংশগত, বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে ।
- বিভিন্ন প্রকার ভ্যারিয়েশন ও পরিব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
- ইহা RNA সৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
মাইটোকনড্রিয়া (Mitochondria)
সংজ্ঞা: সজীব ইউক্যারিওটিক কোশের সাইটোপ্লাজমে বিক্ষিপ্তাকারে ছড়িয়ে থাকা লিপোপ্রোটিন নির্মিত দ্বিপর্দাযুক্ত যে গোলাকার, ডিম্বাকার বা সূত্রাকার কোশ অঙ্গাণু কোশের প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপন্ন করে তাকে মাইটোকনড্রিয়া বলে ।
আবিষ্কার: বিজ্ঞানী কলিকার (1880) প্রথম মাইটোকনড্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন ।
নামকরণ: সি. বেড়া (1897) সর্বপ্রথম মাইটোকনড্রিয়া নামকরণ করেন ।
রাসায়নিক প্রকৃতি: 60 % -70 % প্রোটিন, 25 % -35 % লিপিড, 5 % -7 % RNA, DNA এবং ম্যাঙ্গানীজ, ক্যালসিয়াম, ফসফেট পাওয়া যায় ।
কাজ:
- শ্বসনের ক্রেবসচক্র সংঘটিত হওয়ায় এখানে ATP উৎপন্ন হয় এবং সতি হয় । তাই ইহাকে কোশের শক্তিঘর বলে ।
- মাইটোকনড্রিয়ার গহ্বরে অবস্থিত উৎসেচক ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড সংশ্লেষকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
প্লাস্টিড (Plastid)
সংজ্ঞা: দ্বি একক পর্দাযুক্ত বিক্ষিপ্তাকারে উন্নত উদ্ভিদ কোশের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত গোলাকার, ডিম্বাকার, নলাকার যে কোশীয় অঙ্গাণু সালোকসংশ্লেষ, বর্ণ নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য সঞ্চয়ী অঙ্গরূপে কাজ করে তাকে প্লাসটিড বলে ।
আবিষ্কার: ই. হেকল (1866) সর্বপ্রথম প্লাসটিড আবিষ্কার ও নামকরণ করেন ।
প্রকার: সিম্পার (1883) রং এর উপর ভিত্তি করে প্লাসটিডকে তিনটি ভাগে ভাগ করেন-
- লিউকোপ্লাসটিড
- ক্রোমোপ্লাসটিড
- ক্লোরোপ্লাসটিড
কাজ:
(i) লিউকোপ্লাসটিড বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সঞ্চয় করে ইহা নিম্নোক্ত প্রকারের হয়-
- অ্যালিউরোপ্লাস্ট- প্রোটিন সঞ্চয় করে ।
- এলিওপ্লাস্ট– ফ্যাট সঞ্চয় করে ।
- অ্যামাইলোপ্লাস্ট- স্টার্চ সঞ্চয় করে ।
(ii) ক্রোমোপ্লাসটিড বিভিন্ন প্রকার রঞ্জক ধারণ করে ফুল, ফল ও অন্যান্য অঙ্গের বর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে পরাগযোগ এবং বীজ বিস্তারে সাহায্য করে । ইহা নিম্নোক্ত প্রকারের হয়-
- রোডোপ্লাস্ট- ফাইকোএরিথ্রিন নামক লাল রঞ্জক ধারণ করে ।
- ফিয়োপ্লাস্ট- ফিউকোজ্যান্থিন নামক হলুদ বাদামী রঞ্জক ধারণ করে ।
- জ্যান্থ্রোপ্লাস্ট- জ্যান্থিন নামক হলুদ বর্ণের রঞ্জক ধারণ করে ।
- ক্যারোটিনোপ্লাস্ট- ক্যারোটিনয়েড নামক কমলা রঞ্জক ধারণ করে ।
(iii) ক্লোরোপ্লাস্ট সালোকসংশ্লেষকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
কোশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি
- কোশ কথাটি Cellula থেকে এসেছে । যার অর্থ ছোট উপাদান ।
- Corti (1939) প্রথম প্রোটোপ্লাজম পর্যবেক্ষণ করেন । বিজ্ঞানী পারকিনজী (1772) ইহার নামকরণ করেন ।
- উদ্ভিদবিজ্ঞানী ম্যালথিয়াস স্লেইডেন এবং প্রাণীবিজ্ঞানী থিওডোর স্বোয়ান (1839) সর্বপ্রথম কোশ তত্ত্ব প্রবর্তন করেন ।
- স্লেইডেন এবং স্বোয়ান যে পুস্তিকায় কোশতত্ত্ব প্রথম প্রবর্তন করেন তার নাম ছিল- 'Microscope Investigation on the similarity of Structure and growth in animals and plants'
- মানুষের দেহে প্রায় 260 ধরণের কোেশ দেখা যায় ।
- কোশতত্ত্ব অনুযায়ী প্রতিটি সজীব জীব এক বা একাধিক কোশ দ্বারা গঠিত । যা পর্দা ঘেরা একটি নিউক্লিয়াস ও প্রোটোপ্লাজম দ্বারা গঠিত ।
- ‘Omnis Cellula e Cellula’ শব্দের অর্থ একটি কোশ পূর্ববর্তী কোশ থেকে উৎপত্তি লাভ করে । ইহা রুডলফ ভিরচাও (Rudlof Virchow) প্রবর্তন করেন ।
- ‘Cell doctrine’ অনুযায়ী কোশ হল জীবদেহের গঠনগত ও কার্যগত একক ।
- PPLO (প্লিউরো নিউমোনিয়া লাইক অরগানিজম) হল সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কোশ ।
- উদ্ভিদের সবচেয়ে বৃহৎ কোশ হল Ramie (Bochameria nivea) উদ্ভিদের তন্তু ।
- বহু নিউক্লিয়াসযুক্ত উদ্ভিদ কোশকে সিনোসাইট বলে । (Vaucheria)
- বহু নিউক্লিয়াসযুক্ত প্রাণিকোশকে সিনসিটিয়াম বলে (পেশী কোশ) ।
- টেলোফেজ দশার শেষের দিকে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের মাঝে প্রথম কোশপাত (Cell Plate) গঠিত হয় । যা পরিবর্তিত হয়ে মধ্যপর্দা (middle lamella) গঠন করে ।
- গৌণ কোশ প্রাচীরে যে সমস্ত গর্ত পরিলক্ষিত হয় তাদের কূপ (pit) বলে ।
- কোশ পর্দায় 70 % ইনটিগ্রাল প্রোটিন এবং 30 % এক্সট্রিনসিক প্রোটিন থাকে ।
- সাইটোপ্লাজমীয় ধাত্রের দুটি দশা দেখা যায় । (i) সল দশা (ii) জেল দশা ।
- উদ্ভিদ কোশে গলগিবস্তু অসংযুক্ত অবস্থায় একত্রে জালকের ন্যায় অবস্থান করে । উদ্ভিদ দেহে ইহাকে ডিকটিওজোম বলে ।
- স্ফেরোজোম হল গোলাকার 0.5um-1um ব্যাস বিশিষ্ট কোশ অঙ্গাণু, যা ফ্যাট সংশ্লেষ ও সঞ্চয় করে ।
- বিজ্ঞানী পারনার (1953) স্ফেরোজোম আবিষ্কার করেন ।
- রাইবোজোমের ‘S’ বলতে বোঝায় Sedimentation coefficient বা Svedberg unit
- রাইবোজোমের অধঃএককগুলি সংযুক্ত হয়ে একটি সম্পূর্ণ রাইবোজোম গঠিত হয় । ইহার জন্য Mg++ প্রয়োজন ।
- মাইটোকন্ড্রিয়া, ক্লোরোপ্লাস্টিড এর নিজস্ব DNA রাইবোজোম এবং উৎসেচক থাকায়, এদের সেমি অটোনোমাস বা আংশিক স্বয়ংক্রিয় কোশ অঙ্গাণু বলে ।
- নিউক্লিয়াস ইউক্যারিওটিক কোশের সবচেয়ে বৃহৎ কোশীয় অঙ্গাণ ।
- নিউক্লিয়াস দ্বি একক পর্দাযুক্ত কোশীয় অঙ্গানু । বহিঃপর্দাকে এক্টোক্যারিওথেকা এবং অন্তঃপর্দাকে এডোক্যারিওথেকা বলে । উভয় পর্দার মাঝের ফাঁকা স্থানকে পেরিনিউক্লিয়ার স্থান বলে ।
- সাইটোপ্লাজমের মধ্যে যে সুক্ষ্মতত্ত্ব জালকের ন্যায় গঠন সৃষ্টি করে তাকে সাইটোস্কেলিটন বা সাইটোপ্লাজমীয় কঙ্কালতন্তু বলে । ইহা মাইক্রোফিলামেন্ট, ইন্টারমিডিয়েট ফিলামেন্ট এবং মাইক্রোটিবিউলস নিয়ে গঠিত ।
- নিউক্লিওলাস rRNA এবং প্রোটিন সহযোগে গঠিত ।
- মাইক্রোফিলামেন্ট সাইটোপ্লাজমীয় চলনকে নিয়ন্ত্রণ করে । বিশেষ করে এন্ডোসাইটোসিস এবং এক্সোসাইটোসিস ।
- সেন্ট্রিওল MTOCs গঠনের মাধ্যমে বেমতত্ত্ব গঠন করে, যা কোশ বিভাজনকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
- পারঅক্সিজোম এবং গ্লাইঅক্সিজোমকে একত্রে মাইক্রোবডিজ বলে ।
- মূলের অর্বুদে পারঅক্সিজোম সংবন্ধ হওয়া নাইট্রোজেনকে উরিডস এ পরিণত করে ।
- কোশীয় অণুগুলির আনবিক গঠন X-Ray Crystallography পদ্ধতিতে জানা যায় ।
- অ্যাসিটোকারমিন বা অ্যাসিটোঅরসিন রঞ্জক দ্বারা ক্রোমোজোম রঙ করা হয় ।
- সেলুলোজ নির্মিত কোশ প্রাচীরকে Acid Fuchsine দ্বারা রঞ্জিত করা হয় ।
- নিউক্লিয়াস বেসিক ফুচসিন, হিমাটোজাইলিন এবং ম্যালাকাইট গ্রীন রঞ্জক দ্বারা রঞ্জিত করা হয় ।
- ব্যাকটেরিয়ার কোশ ক্রিস্টাল ভায়োলেট এবং স্যাফ্রানাইন রএক দ্বারা রঞ্জিত করা হয় ।
- গলগিবড়ি, বিভাজিত কোশ, অ্যাক্সন, ইষ্ট মিথিলিন ব্লু দ্বারা রঞ্জিত করা হয় ।
- রক্ত কণিকাকে লিসম্যান রঞ্জকে রঞ্জিত করা হয় ।
- সুদান 4 রঞ্ঝঞ্জকে চবি ও তৈল পদার্থ রঞ্জিত করা হয় ।
- আয়োডিনের সাহায্যে স্টার্চ রঞ্জিত করা হয় ।
- সাধারণতঃ সাইটোপ্লাজমের pH কিছুটা অ্যাসিডিক 6.8 এবং নিউক্লিওপ্লাজমের pH 7.6 থেকে 7.8 হয়, অর্থাৎ ক্ষারীয় ।
- কোশের 90 % জৈব পদার্থ এবং 10 % অজৈব পদার্থ ।
- স্লেরেনকাইমা তত্ত্ব হল উদ্ভিদের সবচেয়ে বৃহৎ কোশ ।
- নিউক্লিয়াসকে কোশের মস্তিষ্ক বলা হয় ।
- মাইটোকনড্রিয়াকে কোশের শক্তিঘর বলা হয় ।
- লাইসোজোমকে আত্মঘাতী থলি বলা হয় ।
- রাইবোজোমকে কোশের প্রোটিন ফ্যাক্টরী বলা হয় ।
- মানুষের মেমরী কোশ (memory cell) সবচেয়ে বৃহৎ জীবনকাল যুক্ত কোশ ।
- স্ফেরোজোমকে উদ্ভিদের লাইসোজোেম বলে ।
- GERL তন্ত্র গলগিবডি, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম এবং লাইসোজোমের সমন্বয়ে গঠিত হয় ।
- কোশের ভ্যাকুওলের চারপাশে যে ঘন সাইটোপ্লাজম পরিলক্ষিত হয় তাকে টোনোপ্লাজম বলে ।
- কোশের মধ্যে অবস্থিত ক্যালসিয়াম অক্সালেটের কেলাসকে র্যাফাইডস বলে ।
- কোশের মধ্যে অবস্থিত ক্যালসিয়াম কার্বনেটের কেলাসকে সিস্টোলিথ বলে ।
গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্ন ও উত্তর
1. কোষ কাকে বলে ?
উত্তর- জীবের ক্ষুদ্রতম সংগঠিত একক আত্ম প্রজননশীল প্রোটোপ্লাজমকে কোষ বলে ।
2. কোষ(sell) কী?
উত্তর- জীবনের চালক যন্ত্র ।
3. প্রণীকোষর মধ্যে সবচেয়ে বড় কী ?
উত্তর- উটপাখীর ডিম আয়তনে সবচেয়ে বড় .প্রণীকোষ ।
4. মানুষের রক্তের শ্বেত কনিকার ব্যাস কত?
উত্তর- ৭-১২মাইক্রমিটার ।
5. প্রোক্যারিওটস (prokaryotes) কী?
উত্তর-যে জীবকোষে আদি নিউক্লিয়াস থাকে ।
6. ভাইরাসের দেহ কী কোষ দ্বারা গঠিত ?
উত্তর- না ।
7. উদ্ভিদ কোষের মধ্যে সবচেয়ে বড় কী ?
উত্তর- রেমি গাছের বাকল -তন্ত ।
8. DNA- এর চারটি বেস কী কী ?
উত্তর- এডেনাইন,সুয়ানাইন.থাইমিন, এবং সাইটোসিন ।
9. RNA- এর চারটি বেস কী কী ?
উত্তর- এডেনাইন,গুয়ানাইন,উরাসিল, এবং সাইটোসিন ।
10 সবচেয়ে দীর্ঘ প্রাণী কোষ কী ?
উত্তর- নার্ভকোষ ।
11. মাইটোকনড্রিয়াকে কী বলে ?
উত্তর- কোষের শক্তিঘর ।
12. গোলাপি কমপ্লেক্স কী ?
উত্তর- একক পদার্থযুক্ত যে সব কোষের উপাংশ কোষীয় ক্ষরণে যুক্ত থাকে তাকেই বলে গোলাপি কমপ্লেক্স ।
13. প্লাষ্টিড কাকে বলে ?
উত্তর- উদ্ভিদ কোষে দুটি পর্দা বেষ্টিত বিপাক কাজে নিযুক্ত অঙ্গানুকে প্লাষ্টিড বলে ।
14. কোষ প্রাচীর কী জড়, নাকি জীবিত ?
উত্তর- জড় ।
15. কোষ – প্রাচীন কী দিয়ে গঠিত ?
উত্তর- লিগনিন এবং সেলুলোজ ।
16. প্লাজমা পর্দা কী দিয়ে গঠিত ?
উত্তর- লিপিক এবং প্রোটিন ।
17 কূপ-পর্দা কী ?
উত্তর- দুটি কুপের মাঝখানের প্রাচীনকে কূপ পর্দা বলে ।
18 কোষ আবরক কাকে বলে ?
উত্তর- প্রানীকলার কোষপর্দার বাইরে প্রোটিন শর্করা দ্বারা গঠিত যে একটা পাতলা নরম আবরণী থাকে তাকেই কোষ আবরক বলে ।
19. উদ্ভিদকোষে জলের পরিমান কত থাকে ?
উত্তর- শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ ।
20. বড় নিউক্লিয়াসকে কী বলে ?
উত্তর- বড় নিউক্লিয়াসকে মাইক্রোনিউক্লিয়াস বলে ।
21. কোষ আবরক কাকে বলে ?
উত্তর- প্রাণীকলার কোষপর্দার বাইরে প্রোটিন শর্করা দ্বারা গঠিত যে একটা পাতলা নরম আবরণী থাকে থাকেই কোষ আবরক বলে ।
22. টেনোপ্লাজম বা কোষ গহ্বর পর্দা কী ?
উত্তর- ভ্যাকুওল বেষ্টিত সাইটোপ্লাজমের পাতলা ও স্বচ্ছ স্তরটিকে টেনোপ্লাজম বা কোষ গহ্বর পর্দা বলে ।
23. হাইলাম কাকে বলে ?
উত্তর- শ্বেতসার স্তরগুলি যে বিন্দু থেকে বিস্ত্রিতি লাভ করে সেই বিন্দুটিকে হাইলাম বলে ।
24. তেঁতুল, হরিতকি, বহেড়া ইত্যাদি কী জাতীয় পদার্থ ?
উত্তর- নাইট্রোজেন ঘটিত পদার্থ ।
25. নিউক্লিয়াসের সূত্রগুলি কিভাবে তৈরি হয় ?
উত্তর- রাইবোনিউক্লিও প্রোটিন দ্বারা ।
26. নিউক্লিয়াসে সুতার ন্যায় অংশকে কী বলে ?
উত্তর- নিউক্লিওলোনিমা (Nucleolonema) ।
27. পিনো সাইটোসিস কাকে বলে ?
উত্তর- কোষের তরল খাদ্য গ্রহন প্রক্রিয়াকে ।
28. ফ্যাগো সাইটোসিস কাকে বলে ?
উত্তর- কোষের কঠিন খাদ্য ভক্ষণ প্রণালীকে ।
29. প্রোক্যারিওট ও ইউক্যারিওট নাম প্রবর্তন করেন কে ?
উত্তর- ডগহার্টি ।
30. উদ্ভিদ কোষের মধ্যে সবচেয়ে বড় কী ?
উত্তর- রেমী গাছের বাকল তন্তু ।
31. অন্ধ কূপ কাকে বলে ?
উত্তর- কোষ প্রাচীরের একদিকে কুপের সৃষ্টি হলে অপর দিকে যদি আর একটা কূপ সৃষ্টি না হয় ।
32. কোষ রস কাকে বলে ?
উত্তর- কোষ গহ্বর মধ্যস্থ তরল জলীয় পদার্থকে কোষ রস বলে ।
33. অভিস্রবন কী ?
উত্তর- ইহা একটি ভৌত প্রক্রিয়া ।
34. গ্রানা কী ?
উত্তর- পর্দা আবৃত চ্যাপটা থলির থাক ।
35. মানুষের জনন কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা কত ?
উত্তর- ২৩ টি ।
36. মানুষের স্বাভাবিক কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা কত ?
উত্তর- ৪৬ টি ।
37. একটি কোষ বিভাজন পদ্ধতির নাম লেখো ?
উত্তর- হেটারোসিস ।
38. কোষ বিভাজনের সময় DNA সংশ্লেসে হয় কিসে ?
উত্তর- ইন্টারফেজে ।
39. কী DNA থেকে সরাসরি উৎপন্ন হয় না ?
উত্তর- অ্যামাইনো অ্যাসিড ।
40 রেশম তন্তুর প্রধান উপাদান কী ?
উত্তর- ফাইব্রোয়েন ।
41. সচেয়ে সরলতম অ্যামাইনো অ্যাসিড কী ?
উত্তর- গ্লাইসিন ।
42. ক্রসিং ওভার কাদের মধ্যে হয় ?
উত্তর- দুটি নন-সিস্টার ক্রোমাটিড এর মধ্যে ।
43. ইস্ট কী ?
উত্তর- এককোষী ইউক্যারিওট ।
44. কোষচক্রের কোন দশায় DNA এর সংশ্লেষ ঘটে ?
উত্তর- S দশায় ।
45. একটি অর্ধ স্বয়ংক্রিয় কোষ অঙ্গানুর উদাহরণ দাও ?
উত্তর- ক্লোরোপ্লাস্ট ।
46. একটি ক্ষুদ্রতম কোষ অঙ্গাণুর উদাহরণ দাও ?
উত্তর- রাইবোজোম ।
47. উদ্ভিদকোষে গলগিবডি কে কী বলে ?
উত্তর- ডিকওজোম ।
48. কোষের প্রোটোপ্লাজম অংশের নামকরন করেন কে ?
উত্তর- পারকিনজী ।
49. কোন বিজ্ঞানী ক্রোমোজোম আবিস্কার করেন ?
উত্তর- ওয়ালডেয়ার ।
50. কোন কোষ বিভাজনটিকে অনুন্নত ধরা হয় ?
উত্তর- প্রোমাইটোসিস ।
51. মিয়োসিসের দীর্ঘতম দশা কী ?
উত্তর- প্রথম প্রফেজ ।
52. প্রাণীকোষে সাইটোকাইনেসিসের সাধারন পদ্ধতি কী ?
উত্তর- ফারোইং ।
53. সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্রোমোজোম পাওয়া যায় যে উদ্ভিদ কোষে সেটি কী ?
উত্তর- আফিওগ্লোসাম ।
54. কোন প্রাণী কোষে প্লাষ্টিড থাকে ?
উত্তর- ইউগ্লিনা ।
55. উদ্ভিদ কোষে ফ্রগমোপ্লাস্ট কোথা থেকে উৎপন্ন হয় ?
উত্তর- গলগিবডি থাকে ।
56. কোষপর্দার তরল মোজাইক মডেল টি কার ?
উত্তর- সিঙ্গার নিকোলসন এর ।