তোমার প্রিয় শখ প্রবন্ধ রচনা - Essay on Your Favorite Hobby In Bengali - পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো।যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “তোমার প্রিয় শখ” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তোমার প্রিয় শখ প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা:
প্রাত্যহিক জীবনের আঘাত-সংঘাতময় একঘেয়েমি ও গ্লানি থেকে নিজেকে মুক্ত করে অনাবিল আনন্দলাভের জন্য প্রত্যেক মানুষেরই কোনো-না-কোনো শখ থাকা দরকার। গতানুগতিক জীবনের মধ্যে এই শখ বৈচিত্র্য এনে আনন্দময় জগতের সন্ধান দেয়।
শৃঙ্খলাযুক্ত শখের গুরুত্ব:
মানুষের জীবনে শখের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু শৃঙ্খলাবিহীন শখ থাকলে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে যায়। নিজের একান্ত ইচ্ছাটিকে মানুষ যখন উচ্ছৃঙ্খলতা থেকে রক্ষা করে সুন্দর পথে চালিত করে, তখনই সেটিকে শখ বলে অভিহিত করা চলে।
প্রত্যেক মানুষেরই শখ আছে। বিভিন্ন মানুষের থাকে বিভিন্ন শখ। প্রধানত যে সকল শখ মানুষকে বেশি আকৃষ্ট করে, সেগুলি হল, সংগীত, উদ্যানচর্চা, খেলাধুলা, সাহিত্য, ডাকটিকিট সংগ্রহ ইত্যাদি। বোতলের নানারকম ‘লেবেল’ সংগ্রহ করে কেউ, কেউ দেশবিদেশের মুদ্রা সংগ্রহ করে, কেউ আবার সংগ্রহ করে অটোগ্রাফ।
আমার প্রিয় শখ:
আমার প্রিয় শখ হল চিত্রাঙ্কন। জীবনে আমি কারো নিকট চিত্রাঙ্কন বিদ্যা শিক্ষা করিনি। আমার অন্তরের রং ও রেখার যে খেলা চলছে প্রতিদিন, তার প্রেরণাতেই আমি চিত্রাঙ্কনকে আমার শখ হিসেবে বেছে নিয়েছি। আমার বিদ্যালয় জীবন প্রায় শেষ হতে চলেছে। এরপর জীবিকার তাগিদে হয়তো আমি কারিগরি শিক্ষাগ্রহণে ব্রতী হব। চিত্রাঙ্কন শিক্ষা করার সুযোগ আমার কোনোদিনই আসবে না জানি। কিন্তু সমস্ত জেনেও আমার মন সর্বদাই চায়।
রেখা ও রং -এ জগৎ ও জীবনের নানা বিষয়কে রূপ দিতে। প্রাচীন ভারতীয় শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে হয়েছে পুনরুজ্জীবিত। আমাদের প্রাচীন শিল্পরীতি হল শিল্পীর চিন্তা, দর্শন ও ভাবের প্রকাশ। আমি এই ভারতীয় রীতি অনুসরণ করে আমার অবকাশকে পরিপূর্ণ আনন্দের দ্বারা ভরাট করে রাখি।
সম্পৃক্ত চিত্রাঙ্কন:
আমার অঙ্কিত চিত্রগুলির মধ্যে যেগুলি আমার মনকে তৃপ্তি করেছে সেগুলি একত্র করে রেখেছি একটি অ্যালবামে যখন কোনো কিছু ভালো লাগে না, তখন সেই চিত্রগুলি আমাকে সত্যকার আনন্দ দান করে। সংগীতশিল্পী যেমন মনের আনন্দে একাকী গুনগুন করে গান করে, আমিও তেমনি আমার শিল্পসাধনার ফসলটুকু নিয়ে বিভোর আনন্দে ডুবে যাই। আমি তো নিপুণ চিত্রশিল্পী নই। চারিদিকে কত কিছুই তো দেখতে পাই। সেগুলি দেখে মনের মধ্যে অনুভূতি জাগে, রঙে ও রেখায় সেগুলি যথাযথ প্রকাশ করতে পারি না। তথাপি আমি আন্তরিকভাবে সবকিছু প্রকাশ করতে চেষ্টা করি।
হয়তো আমার প্রকাশ যথাযথ হয় না। আমি যে বলতে চাই, তা সঠিকভাবে বলা যায় না। অনেক সময় নিজের সৃষ্ট চিত্র দেখে নিজেরই অতৃপ্তি জাগে। তবু আমি ভাবি এই অতৃপ্তি হয়তো একদিন আমাকে কোনো সার্থক চিত্র-সৃষ্টিতে অনুপ্রাণিত করবে, যা দেখে গভীর তৃপ্তিতে ভরে উঠবে আমার মন। আমি জানি, অতৃপ্তির যন্ত্রণা থেকেই নতুন সৃষ্টি হয়।
উপসংহার:
মানুষের জীবনের প্রিয় সামগ্রী-ই হল তার শখের বস্তু। চিত্রাঙ্কন আমার কাছে খুব প্রিয়। কিন্তু আমাদের দেশে গুরুজনদের কাছ থেকে এ বিষয়ে উৎসাহ পাওয়া যায় কোথায়? যখন দেখি আমার একান্ত প্রিয় শখটিকে বড়োরা ভালো চোখে দেখেন না, তখন বড়ো বেদনা বোধ করি। গুরুজনদের সুতীক্ষ্ম দৃষ্টির আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখে আমার একান্ত শখের পরিচর্যা করতে হয়।
কারণ তাঁদের ধারণা স্কুলপাঠ্যবহির্ভূত কোনো বিষয় নিয়ে অনুশীলন করতে গেলে পড়াশোনার ক্ষতি হবে। কিন্তু পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে আমার শখটির কোনো শত্রুতা আছে বলে আমি মনে করি না। বস্তুত, শখ মানুষের অবসরবিনোদনের বস্তু, জীবনের সঙ্গে তার সংঘর্ষ ঘটার কোনো কারণ নেই।
আরও পড়ুন-
Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন। যদি কোন ভুল থেকে থাকে তবে তা Typing mistake এর জন্য। আমাদের comment করে জানান আমরা তা সংশোধন করে দেবার চেষ্টা করবো।