আধুনিক জীবনে তথ্যপ্রযুক্তি বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা - পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো।যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “আধুনিক জীবনে তথ্যপ্রযুক্তি বিজ্ঞান” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আধুনিক জীবনে তথ্যপ্রযুক্তি বিজ্ঞান
অনুরূপে: (১) তথ্যপ্রযুক্তি; (২) তথ্যপ্রযুক্তি ও বর্তমান সমাজ; (৩) বর্তমান ফলিত বিজ্ঞানের আর এক নাম তথ্যপ্রযুক্তি।
ভূমিকা-
বর্তমান শতকে মানুষ সভ্যতার শীর্ষদেশে আরোহণ করেছে। এই সাফল্য এসেছে বিজ্ঞানকে নির্ভর করে। অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনানোই বিজ্ঞানের একমাত্র দায়িত্ব। বিজ্ঞানের হাত ধরে মানুষ জ্ঞানের সীমানাকে প্রসারিত করতে পেরেছে। দৈনন্দিন জীবনের বস্থা করে নিতে পেরেছে, আবার ব্যাবসাবাণিজ্যের পথ প্রশস্ত করে লক্ষ্মীলাভ করতে পেরেছে। বিজ্ঞানের এই জয়ের মুকুটে সাম্প্রতিক কালের সংযোজিত চিত্তাকর্ষক পালকটি হল তথ্যপ্রযুক্তি। বলতে দ্বিধা নেই, সমগ্র বিশ্ব আজ এই প্রযুক্তিটির পথ ধরে সাফল্য খুঁজে নেবার চেষ্টায় মগ্ন। তাই বর্তমান শতকের সভ্যতার অন্যতম দিশারী হল তথ্যপ্রযুক্তি।
তথ্যপ্রযুক্তি ও মানবসভ্যতা:
বিজ্ঞান হল তথ্য ও তত্ত্ব সমন্বিত পরীক্ষিত বাস্তব সত্যের জ্ঞানভাণ্ডার। এই জ্ঞানের প্রয়োগের নাম প্রযুক্তি বিজ্ঞান। তথ্যনির্ভর প্রযুক্তি বিজ্ঞানের নাম হল তথ্যপ্রযুক্তি। কর্মক্ষেত্রে একজন মানুষকে নির্ভর করতে হয় বহুবিচিত্র তথ্যের ওপর। কিন্তু সে সমস্ত তথ্যসম্ভার ধরে রাখার জন্য মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা সংকুলান হয় না। সেইজন্য দরকার পড়ে লাইব্রেরির। একটি কম্পিউটার সেই পাঠাগারের কাজ করে দেয়। একটি বোতামে চাপ দেবার সাথে সাথে সে মুহূর্তে হাজির করে দেয় যাবতীয় তথ্যের সমষ্টি। কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি মানুষের শ্রমের লাঘব ও সময়ের সাশ্রয় করে মানুষের কাছে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
সমাজের সমস্ত মানুষের কাজের ক্ষেত্র সহজ করে দেয় তার ফেলে আসা দিনের অভিজ্ঞতা। নানা মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা এই অভিজ্ঞতা কম্পিউটার তার নিজের মধ্যে জমা করে রাখে। তাই যখনই প্রয়োজন হয়, কম্পিউটারের কাছে হাত পাতলেই সে তা জানিয়ে দেয়।
একটিমাত্র বোতামের চাপে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মানুষ পেয়ে যায় তার জিজ্ঞাস্য হাজার প্রশ্নের উত্তর। বর্তমান শতকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে সাফল্যের চাবি লুকিয়ে রয়েছে এই কম্পিউটারের মধ্যে। তাই এখন তথ্যপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। আর সেই কারণেই বিশ্বের প্রগতিবাদী সমস্ত দেশ নির্ভর করছে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর।
তথ্যপ্রযুক্তির নানাদিক:
তথ্যপ্রযুক্তিতে রয়েছে এমন বহুবিচিত্র শিক্ষণীয় বিষয় যাকে অবলম্বন করে মানুষ খুঁজে পেতে পারে নানা কাজের সুলুকসন্ধান। যেমন- সেলস একজিকিউটিভ, হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ার, হার্ডওয়ার ডিজাইনার, সফটওয়ার এক্সপার্ট, কম্পিউটার প্রোগ্রামার, কম্পিউটার অপারেটার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটার, ইনপুট-আউটপুট কনট্রোল পার্শন ইত্যাদি। এসবের যে-কোনো একটিতে দক্ষতা অর্জন করেই উপার্জনের পথ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
এই ছাড়াও মেডিক্যাল ট্রানস্ক্রিপশনিস্ট, মার্কেট সার্ভেয়ার, স্ক্যানিং, ডেটা কনভার্সেশন, মার্কেট সুপারভাইজিং ইত্যাদি বাণিজ্যিক মাধ্যমে আছে অজস্র কাজের সুযোগ। টেলিফোন, টেলেক্স, ইন্টারনেট, পেজার, টেলিপ্রিন্টার, সেলফোন ইত্যাদি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশ্ব আজ এসে হাজির হয়েছে হাতের মুঠোর মধ্যে।
এই সবই সম্ভব হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির দ্বারা। পত্রপত্রিকা প্রকাশনার ক্ষেত্রে ডিটিপি নিয়ে এসেছে যুগান্তকারী বিপ্লব। সেলুলার যোগাযোগের মাধ্যমে উড়োজাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে বা হ্যারিকেন, টর্নেডো, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আগাম সংবাদ জানতে পেরে মানুষ আগে থাকতে সাবধান হতে পারছে। উপগ্রহ যোগাযোগের মাধ্যমে জিআইএস; ডিজিট্যাল ম্যাপিং প্রভৃতি অনেক অজানা তথ্যের সম্ভার জানা যাচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তির ভবিষ্যৎ:
বর্তমানে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ জীবন গড়ে নেবার জন্য শিক্ষার্থীরা দলে দলে হাজির হচ্ছে শিক্ষায়তনের পাদদেশে। সরকারও এ বিষয়ে হাত গুটিয়ে বসে নেই। সরকারি আনুকূল্যে গড়ে উঠছে নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে বিদ্যালয় স্তরে কম্পিউটার শিক্ষাসূচি চালু করে সরকার সময়োপযোগী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে বিদেশের বুকে গড়ে উঠছে বিশাল কর্মক্ষেত্র। সেখানে চাকুরিতে আছে আশাতীত রোজগার। তাই অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী আজকাল এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশের মাটিতে।
উপসংহার:
পরিশেষে বলা যেতে পারে, সম্পদ সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সংবাদ ও তথ্য আদান-প্রদান, প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার আগাম সংবাদ ইত্যাদি পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ও উন্নতি হল তথ্যপ্রযুক্তির প্রধান ফসল। তথ্যপ্রযুক্তি দেশের প্রগতির পথে প্রশস্ত সমৃদ্ধ করে। দেশ সমৃদ্ধ হলে তবেই সে দেশের মানুষের জীবনে আসবে সার্বিক মুক্তি। কাজেই তাকে উপেক্ষা করার উপায় নেই।
আরও পড়ুন-
Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন। যদি কোন ভুল থেকে থাকে তবে তা Typing mistake এর জন্য। আমাদের comment করে জানান আমরা তা সংশোধন করে দেবার চেষ্টা করবো।