বাক্য পরিবর্তনের নিয়ম উদাহরণ
বাক্য: কতকগুলি সুসজ্জিত পদসমষ্টি যখন মনের ভাবকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে, তখন সেই সুসজ্জিত পদসমষ্টিকে বলে ‘বাক্য’।
উদাহরণ: রাম ভালো ভালো বই পড়ে।
বাক্যের লক্ষণ- বাক্যে মিলিত পদসমষ্টিকে তিনটি লক্ষণযুক হতে হবে। সেগুলি হল-
(১) আসক্তি/নৈকট্য (যথাস্থানে পদগুলির স্থাপন), (২) আকাঙ্ক্ষা (বাসনাপূরণ), (৩) যোগ্যতা (ভাবপ্রকাশে অর্থগত সংগতিস্থাপন)।
প্রধান অংশ: প্রতিটি পূর্ণবাক্যের দুটি প্রধান অংশ থাকে।
সে দুটি হল– (১) উদ্দেশ্য (যার সম্পর্কে বলা হয়), (২) বিধেয় (উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয়)।
বাক্যের শ্রেণিবিভাগ: বাক্যকে প্রধানত দু-ভাগে ভাগ করা যায়-
(১) গঠন অনুযায়ী বাক্য, (২) অর্থ অনুযায়ী বাক্য।
গঠন অনুযায়ী বাক্য: গঠন অনুযায়ী বাংলা বাক্যকে চার ভাগে ভাগ করা যায়।
(ক) সরল বাক্য, (খ) জটিল বাক্য, (গ) যৌগিক বাক্য ও (ঘ) মিশ্র বাক্য।
(ক) সরল বাক্য- বাক্যে যখন একটি মাত্র উদ্দেশ্য (কর্তা) ও একটি মাত্র বিধেয় (সমাপিকা ক্রিয়া) থাকে, তখনই হয় 'সরল বাক্য'।
বৈশিষ্ট্য:
(১) সরল বাক্যের কর্তৃপদটি একপদী বা বহুপদী হতে পারে।
(২) একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে (উহ্য থাকতে পারে)।
(৩) বাক্যে অসমাপিকা ক্রিয়া এক বা বহু কিংবা নাও থাকতে পারে।
(৪) একটি বাক্যে আবশ্যিক এবং ঐচ্ছিক উপাদান, যেমন- কর্ম, স্থানবাচক, কালবাচক পদ প্রভৃতি থাকতে পারে।
(খ) জটিল বাক্য: যে বাক্যে প্রধান খন্ড বাক্যের অধীন এক বা একের বেশি অপ্রধান খণ্ডবাক্য থাকে, তাকে 'জটিল বাক্য' বলে।
উদাহরণ: যখন বৃষ্টি থামল তখন সূর্য উকি দিল।
অপ্রধান খণ্ডবাক্য: অপ্রধান খণ্ডবাক্য তিন প্রকার
(১) বিশেষ্য-স্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য, (২) বিশেষণস্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য ও (৩) ক্রিয়া-বিশেষণস্থানীয় খণ্ড বাক্য।
(১) বিশেষ্যস্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য- যে অপ্রধান খণ্ডবাক্য সমগ্রবাক্যে বিশেষ্য স্থানীয় হয়ে ব্যবহৃত হয়, তাকে বলা হয় বিশেষ্য-স্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য।
উদাহরণ- গিয়ে শুনি, ব্রহ্মপুত্রে বন্যা হয়েছে।
(২) বিশেষণ-স্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য: যে অপ্রধান উপাদান বাক্য প্রধান খণ্ডবাক্যের অন্তর্গত কোনো নামপদকে বিশেষিত করে, তাকে বলে বিশেষণ-স্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য।
উদাহরণ: প্রাণ দিয়েছেন যিনি, আহার দেবেন তিনি।
(৩) ক্রিয়াবিশেষণ-স্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য: যে অপ্রধান খণ্ডবাক্য প্রধান খন্ডবাক্যের অন্তর্গত ক্রিয়াপদকে বিশেষিত করে, তাকে ক্রিয়াবিশেষণ-স্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্য বলে।
উদাহরণ: যদি শক্তিতে কুলোয় অবশ্যই করব।
জটিল বাক্যের বৈশিষ্ট্য:
(১) জটিল বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্য এবং এক বা একাধিক অপ্রধান খণ্ডবাক্য থাকে।
(২) বাক্যের প্রথমে বা শেষে প্রধান খণ্ডবাক্য থাকতে পারে।
(৩) এই বাক্যে অন্তত দুটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে।
(৪) এই ধরনের বাক্যে এক বা একাধিক অব্যয় থাকতে পারে, আবার নাও থাকতে পারে।
(৫) জটিল বাক্যে একজোড়া সাপেক্ষ সর্বনাম (যেমন– যে- সে, যাদের- তারা প্রভৃতি) থাকে।
(গ) যৌগিক বাক্য: দুই বা ততোধিক স্বাধীন বাক্য যদি সং যোজক, বিয়োজক, সংকোচক এবং ব্যতিরেকাত্মক প্রভৃতি অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি দীর্ঘতর বাক্য গঠন করে, তাকে ‘যৌগিক বাক্য' বলে।
উদাহরণ:
(১) সে সৎ কিন্তু তার ভাই অসৎ। (সরল সরল)
(২) সে সৎ কিন্তু যে বন্ধুটি তার সঙ্গে এসেছিল সে অসৎ। (সরল + জটিল)
বৈশিষ্ট্য:
(১) যৌগিক বাক্যে কমপক্ষে দুটি কর্তা এবং দুটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে।
(২) যৌগিক বাক্যে অব্যয়ের ব্যবহারে নানা বৈচিত্র্য দেখা যায়। বাক্যে অব্যয় একটি, একাধিক, একই অব্যয় বারবার, কিন্তু অব্যয় বাক্যে উহ্য থাকতে পারে।
(৩) ক্রিয়াহীন যৌগিক বাক্য সম্ভব।
(৪) শুধু ক্রিয়ার দ্বারা যৌগিক বাক্য গঠিত হতে পারে।
(ঘ) মিশ্র বাক্য: ভিন্ন জাতীয় হোক বা সমজাতীয় হোক, একাধিক স্বাধীন খণ্ডবাক্যের সঙ্গে এক বা একাধিক অধীন খণ্ডবাক্য যুক্ত হয়ে মিশ্রিত আকারে বৃহত্তর বাক্য গঠন করলে, তাকে 'মিশ্র বাক্য' বলে।
উদাহরণ: লোক হিসাবে সে ভালো, কিন্তু কেউ যদি তাকে বিরক্ত করে, তবে সে তা সহ্য করে না।
মিশ্র বাক্যের শ্রেণিবিভাগ- মিশ্র বাক্য নানাভাবে গঠন হতে পারে। যেমন-
(১) সরল + জটিল, (২) সরল + যৌগিক, (৩) যৌগিক + জটিল, (৪) জটিল + জটিল, (৫) যৌগিক + যৌগিক।
গঠনভিত্তিক সরল, জটিল এবং যৌগিক বাক্যের পরিবর্তন বা বাক্যান্তর
(ক) সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(১) বাক্য পরিবর্তিত হলেও অর্থ অপরিবর্তিত থাকে।
(২) সরল বাক্যের অন্তর্গত কোনো পদ বা পদসমষ্টিকে সম্প্রসারিত করে প্রধান বাক্যের ওপর নির্ভরশীল অপ্রধান অধীন বাক্য তৈরি করতে হবে।
(৩) কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছাড়া সরল বাক্যের কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয় ক্রিয়া)-র পরিবর্তন না করে জটিল বাক্যের প্রধান খণ্ডবাক্য তৈরি করতে হয়।
(৪) দুই অপ্রধান বাক্যকে পরস্পরের অধীনরূপে গড়ে তুলতে হয়।
(৫) সরল বাক্যের কর্তা এবং সমাপিকা ক্রিয়া ছাড়া বাকি অংশ বিশেষ্য, বিশেষণ বা ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় অপ্রধান খণ্ডবাক্যে পরিণত হয়।
(৬) প্রধান ও অপ্রধান খণ্ডবাক্য সাপেক্ষ সর্বনাম (যে-সে, যার-তার, যিনি-তিনি প্রভৃতি) অথবা নিত্যসম্বন্ধী অব্যয় (যদি-তবু, যেমন-তেমন, যেই-সেই, যত-তত প্রভৃতি) দ্বারা যুক্ত করতে হয়।
উদাহরণ:
(১) সরল বাক্য: খেতে দাও নাহলে চুরি করব।
জটিল বাক্য: যদি খেতে না দাও, তবে চুরি করব।
(২) সরল বাক্য: মনের চলাচলের উপরই মানুষের বড়োত্ব।
জটিল বাক্য: মনের চলাচল যতখানি ততখানিই মানুষ বড়ো।
(৩) সরল বাক্য: পরিশ্রমীরা জীবনে কৃতকার্য হয়।
জটিল বাক্য: যারা পরিশ্রম করে তারা জীবনে কৃতকার্য হয়।
(৪) সরল বাক্য: ধনীরা প্রায়ই অহংকারী হয়।
জটিল বাক্য: যাদের ধন আছে তারা প্রায়ই অহংকারী হয়।
(৫) সরল বাক্য: সাবধান না হলে বিপদে পড়বে।
জটিল বাক্য: যদি তুমি সাবধান না হও, তবে বিপদে পড়বে।
(৬) সরল বাক্য: জীবনে উন্নতি করতে হলে পরিশ্রম করো।
জটিল বাক্য: যদি জীবনে উন্নতি করতে চাও, তবে পরিশ্রম করো।
(৭) সরল বাক্য: তুমি না এলে আমি যাব না।
জটিল বাক্য: যদি তুমি না আস, তবে আমি যাব না।
(৮) সরল বাক্য: প্রজারা ভূস্বামীর চিরন্তন ধন।
জটিল বাক্য: যাহারা ভূস্বামী, প্রজারা তাহাদের চিরন্তন ধন।
(৯) সরল বাক্য: এবার আমার একটি বিচিত্র অভিজ্ঞতা হইল।
জটিল বাক্য: এবার আমার যে একটি অভিজ্ঞতা হইল, তাহা বিচিত্র।
(১০) সরল বাক্য: গুণহীন ব্যক্তির জীবনই বৃথা।
জটিল বাক্য: যে ব্যক্তি গুণহীন তার জীবনই বৃথা।
(১১) সরল বাক্য: গৌরবির কথা শুনে ওর সর্বাঙ্গ জ্বলে গেল।
জটিল বাক্য: যখন গৌরবির কথা শুনল তখন ওর সর্বাঙ্গ জ্বলে গেল।
(খ) জটিল বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিণত করার বিপরীত নিয়মগুলি এখানে প্রযোজ্য হবে। যেমন–
(১) জটিল বাক্যের অন্তর্গত অপ্রধান খণ্ডবাক্যকে কৃৎ, তদ্ধিত প্রত্যয়ের দ্বারা কিংবা সমাসের দ্বারা সংকুচিত করে একটি পদ বা পদসমষ্টিতে পরিণত করতে হবে।
(২) সমগ্র জটিল বাক্যকে একটি উদ্দেশ্য এবং তার একটি মাত্র বিধেয় (সমাপিকা) ক্রিয়ায় পরিণত করতে হবে।
(৩) জটিল বাক্যের নিত্যসম্বন্ধী অব্যয় অথবা সাপেক্ষ সর্বনাম লোপ করতে হবে।
উদাহরণ:
(১) জটিল বাক্য: যারা ধনকামী তারা নিজেদের গরজে দারিদ্র্য সৃষ্টি করে।
সরল বাক্য: ধনকামীরা নিজেদের গরজে দারিদ্র্য সৃষ্টি করে।
(২) জটিল বাক্য: যে রক্ষক সেই ভক্ষক।
সরল বাক্য: রক্ষকই ভক্ষক।
(৩) জটিল বাক্য: ইহার যাহা ভালো তাহা অপরূপ ভালো।
সরল বাক্য: ইহার ভালো অপরূপ ভালো।
(৪) জটিল বাক্য: পরের ভাবনা ভাবা তখনই সত্য হয়, পর যখন আমাদিগকে ভাবাইয়া তোলে।
সরল বাক্য: পর আমাদিগকে ভাবাইয়া তুলিলে পরের ভাবনা ভাবা সত্য হয়।
(৫) জটিল বাক্য: একদিনও সে নিরুদ্বেগে সুখে যাপন করবে তা পারে না।
সরল বাক্য: একদিনও সে নিরুদ্বেগে সুখে যাপন করতে পারে না।
(৬) জটিল বাক্য: যখন এই পরিচিত স্পর্শ পায় তখন প্রাণীটি চঞ্চল হয়ে ওঠে।
সরল বাক্য: পরিচিত এই স্পর্শে প্রাণীটি চঞ্চল হয়ে ওঠে।
(৭) জটিল বাক্য: যা পরোপকার তাই পরম ধর্ম।
সরল বাক্য: পরোপকারই পরম ধর্ম।
(৮) জটিল বাক্য: যা পরিচ্ছন্ন বায়ু তা এখনই দুর্লভ হয়ে উঠেছে।
সরল বাক্য: এখনই পরিচ্ছন্ন বায়ু দুর্লভ হয়ে উঠেছে।
(৯) জটিল বাক্য: সময় সেখানে যেমন স্তব্ধ তেমন স্রোতহীন।
সরল বাক্য: সময় সেখানে স্তব্ধ স্রোতহীন।
(১০) জটিল বাক্য: পশ্চাৎ যখন রৌদ্র হইবে তখন পরামর্শ করা যাইবে।
সরল বাক্য: পশ্চাৎ রৌদ্র হইলে পরামর্শ করা যাইবে।
(১১) জটিল বাক্য: ধনের একটি ধর্ম আছে, তা হল অসাম্য।
সরল বাক্য: ধনের ধর্ম অসাম্য।
(গ) সরল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(১) বাক্য পরিবর্তনের সময় অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(২) সরল বাক্যের অন্তর্গত অসমাপিকা ক্রিয়া সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয় ক্রিয়া) করে একটি স্বাধীন খণ্ডবাক্য বা সরল বাক্য করতে হবে।
(৩) নবগঠিত খণ্ডবাক্যকে মূল বাক্যের সঙ্গে সংযোজক/ ব্যতিরেকাত্মক/প্রাতিপক্ষিক /বিয়োজক অব্যয় দ্বারা যুক্ত করতে হবে। (সংযোজক অব্যয় আর, কিন্তু, অথচ, এজন্য, অতএব প্রভৃতি)
(৪) সরলবাক্যের সমাপিকা ক্রিয়া দিয়ে অন্য একটি স্বাধীন খণ্ডবাক্য করা যায়।
বি. দ্র.-
(ক) সংযোজক অব্যয়: এবং, ও, আর প্রভৃতি।
(খ) বিয়োজক অব্যয়: কিংবা, অথবা, বা, না প্রভৃতি।
(গ) ব্যতিরেকাত্মক অব্যয়: যদি, নইলে, নয়তো, নতুবা প্রভৃতি।
(ঘ) প্রাতিপক্ষিক অব্যয়: তথাপি, কিন্তু, তবুও, অথচ, বরং প্রভৃতি।
উদাহরণ:
(১) সরল বাক্য: বিদ্যাহীন ব্যক্তি সমাজে উপেক্ষিত।
যৌগিক বাক্য: বিদ্যাহীন ব্যক্তি আছে, তবে সে সমাজে উপেক্ষিত।
(২) সরল বাক্য: রক্ষকই ভক্ষক।
যৌগিক বাক্য: সেই রক্ষক এবং সেই ভক্ষক।
(৩) সরল বাক্য: সাধনা না করলে সিদ্ধিলাভ হবে না।
যৌগিক বাক্য: সাধনা করো নতুবা সিদ্ধিলাভ হবে না।
(৪) সরল বাক্য: জ্ঞানী বলিয়াই তিনি বিনয়ী ছিলেন।
যৌগিক বাক্য: তিনি জ্ঞানী ছিলেন, সেইজন্যই তিনি বিনয়ী ছিলেন।
(৫) সরল বাক্য: সর্বহারার শৃঙ্খল ছাড়া হারাবার কিছু নেই।
যৌগিক বাক্য: সর্বহারা শৃঙ্খল হারাতে পারে কারণ তা ছাড়া তাদের হারাবার কিছু নেই।
(৬) সরল বাক্য: তুমি কথা না বললে মরবে।
যৌগিক বাক্য: কথা বলো, নচেৎ তুমি মরবে।
(৭) সরল বাক্য: ধনী হয়েও লোকটির মনে শান্তি নেই।
যৌগিক বাক্য: লোকটি ধনী কিন্তু মনে তার শান্তি নেই।
(৮) সরল বাক্য: চাষিরা মাচার উপর বসে বুনো শুয়োর তাড়াচ্ছে।
যৌগিক বাক্য: চাষিরা মাচার উপর বসে আছে আর বুনো শুয়োর তাড়াচ্ছে।
(৯) সরল বাক্য: লগির ঘায়ে মাথা ফাটিয়ে পাঁকে পুঁতে দেবে।
যৌগিক বাক্য: লগির ঘায়ে মাথা ফাটাবে এবং পাঁকে পুঁতে দেবে।
(১০) সরল বাক্য: কিন্তু সে আর নাই।
যৌগিক বাক্য: আগে সে ছিল, কিন্তু এখন আর নাই।
(ঘ) যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
সরল থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তন করার বিপরীত নিয়মগুলি এখানে প্রযোজ্য। যেমন
(১) বাক্যের শেষ সমাপিকা ক্রিয়া বাদে অন্য ক্রিয়াগুলিকে অসমাপিকা ক্রিয়ায় রূপান্তরিত করতে হবে।
(২) যৌগিক বাক্যের অব্যয়গুলি সরল বাক্যে লুপ্ত হবে।
উদাহরণ :
(১) যৌগিক বাক্য: নদীর চরে গর্ত খোঁড়া হইল এবং অভাগীকে শোয়ানো হইল।
সরল বাক্য: নদীর চরে গর্ত খুঁড়িয়া অভাগীকে শোয়ানো হইল।
(২) যৌগিক বাক্য: সূর্য ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে আমার ঘুম ভাঙে।
সরল বাক্য: সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমার ঘুম ভাঙে।
(৩) যৌগিক বাক্য: এতদিন ধরা পড়বার কথা ছিল কিন্তু ধরা পড়েনি।
সরল বাক্য: এতদিন ধরা পড়েও পড়েনি।
(৪) যৌগিক বাক্য: আমাদের ডাকের মধ্যে গরজ ছিল কিন্তু সত্য ছিল না।
সরল বাক্য: আমাদের ডাকের মধ্যে গরজ থাকিলেও সত্য ছিল না।
(৫) যৌগিক বাক্য: এই তাঁহার উদ্দেশ্য এবং ইহাই তাঁহার কার্য।
সরল বাক্য: এই তাঁহার উদ্দেশ্য ও কার্য।
(৬) যৌগিক বাক্য: সে আর ভিক্ষা করে না, দাবি করে।
সরল বাক্য: সে ভিক্ষা আর না করলেও দাবি করে।
(৭) যৌগিক বাক্য: সাহিত্য জীবনের স্বাভাবিক প্রকাশ, তাহা তো প্রয়োজনের প্রকাশ নহে।
সরল বাক্য: সাহিত্য প্রয়োজনের প্রকাশ না হইয়া জীবনের স্বাভাবিক প্রকাশ।
(৮) যৌগিক বাক্য: হিত করিবার একটি মাত্র ঈশ্বরপ্রদত্ত অধিকার আছে, সেটি প্রীতি।
সরল বাক্য: প্রীতিই হিত করিবার একটি মাত্র ঈশ্বরপ্রদত্ত অধিকার।
(৯) যৌগিক বাক্য: বড়ো একটা আগুন করো, আর সবাই কাছাকাছি ঘেঁষে থাকো।
সরল বাক্য: বড়ো একটা আগুন করে সবাই কাছাকাছি ঘেঁষে থাকো।
(ঙ) জটিল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম
(১) বাক্য পরিবর্তিত হলেও অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(২) অপ্রধান খণ্ডবাক্যকে স্বাধীন খণ্ডবাক্যে পরিবর্তন করাতে হবে।
(৩) প্রথমে সাপেক্ষ সর্বনাম বা অব্যয় দুটিকে তুলে দিতে হবে।
(৪) ক্রিয়াগুলিকে নিয়ে এক-একটি স্বাধীন বাক্য গঠন করতে হবে।
(৫) সংযোজক অব্যয়ের দ্বারা স্বাধীন বাক্যগুলিকে যুক্ত করতে হবে।
উদাহরণ:
(১) জটিল বাক্য: যদিও আমরা গরিব মানুষ, কিন্তু সবাই ভদ্র ঘরের সন্তান।
যৌগিক বাক্য: আমরা গরিব বটে, কিন্তু সবাই ভদ্র ঘরের সন্তান।
(২) জটিল বাক্য: যেমন কাজ করবে, তেমন ফল পাবে।
যৌগিক বাক্য: কাজ করো অনুরূপ ফল পাবে।
(৩) জটিল বাক্য: যে লোকটি খাঁটি গুণী সে লোকটি সব পারে।
যৌগিক বাক্য: ও খাঁটি গুণী লোক, ও সব পারে।
(৪) জটিল বাক্য: যে রক্ষক সেই ভক্ষক।
যৌগিক বাক্য: সেই রক্ষক ও সেই ভক্ষক।
(৫) জটিল বাক্য: সেখানে কাণ্ডটি কী হইতেছে সেটা জানা চাই।
যৌগিক বাক্য: সেখানে কিছু একটা কাণ্ড হইতেছে এবং সেটা জানা চাই।
(৬) জটিল বাক্য: তুমি যদি যাও তাহলে আমাকে এখানে থাকতে হবে।
যৌগিক বাক্য: তুমি যাও, কিন্তু আমাকে এখানে থাকতে হবে।
(৭) জটিল বাক্য: যার যা প্রাপ্য সম্মান, তাকে তা না দিলে কর্তব্যের হানি ঘটে।
যৌগিক বাক্য: সম্মানীয়কে প্রাপ্য সম্মান দিতে হয়, নইলে কর্তব্যের হানি ঘটে।
(৮) জটিল বাক্য: যখন স্কুলে পৌঁছেছি, তখনই বৃষ্টি আরম্ভ হল।
যৌগিক বাক্য: স্কুলে পৌঁছেছি, আর বৃষ্টিও আরম্ভ হল।
(৯) জটিল বাক্য: যদিও খাঁচাটার উন্নতি হয়েছে তবুও পাখিটার খবর কেউ রাখে না।
যৌগিক বাক্য: খাঁচাটার উন্নতি হয়েছে কিন্তু পাখিটার খবর কেউ রাখে না।
(১০) জটিল বাক্য: হিতৈষী যে সুদটি আদায় করে সেটি মানুষের আত্মসম্মান।
যৌগিক বাক্য: হিতৈষী সুদটি আদায় করে এবং সেটি মানুষের আত্মসম্মান।
(চ) যৌগিক বাক্য থেকে জটিল বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
জটিল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে পরিবর্তনের বিপরীত নিয়মগুলি এখানে প্রযোজ্য হবে। যেমন-
(১) একটি বাক্যকে স্বাধীন রেখে অন্য বাক্যগুলিকে তার ওপর নির্ভরশীল করে তুলতে হবে অর্থাৎ তাকে বিশেষ্য, বিশেষণ বা ক্রিয়াবিশেষণ-স্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্যে রূপান্তরিত করতে হবে।
(২) সংযোজক অব্যয় তুলে দিতে হবে।
(৩) এক্ষেত্রে নিত্য সম্বন্ধী অব্যয় বা সাপেক্ষ সর্বনাম ব্যবহার করতে হবে।
উদাহরণ:
(১) যৌগিক বাক্য: একবার দেখিয়া আসিবে এবং সে কৌতূহলও নাই।
জটিল বাক্য: একবার যে দেখিয়া আসিবে, সে কৌতূহলও নাই।
(২) যৌগিক বাক্য: আমরা বনবাসী বটে, কিন্তু লৌকিক ব্যাপারে নিতান্ত অনভিজ্ঞ নই।
জটিল বাক্য: যদিও আমরা বনবাসী, তথাপি লৌকিক ব্যাপারে নিতান্ত অনভিজ্ঞ নই।
(৩) যৌগিক বাক্য: উদ্যোগী পুরুষ কর্ম করেন এবং লক্ষ্মী লাভ করেন।
জটিল বাক্য: যিনি উদ্যোগী পুরুষ তিনি কর্ম করেন এবং লক্ষ্মী লাভ করেন।
(৪) যৌগিক বাক্য: সকল সাহিত্যেরই একটা দশা থাকে এবং এই লোকসাহিত্যেরও সেই দশা।
জটিল বাক্য: সকল সাহিত্যেরই যেমন দশা এই লোকসাহিত্যেরও সেই দশা।
(৫) যৌগিক বাক্য: কিন্তু সমাজের অপমানটা গায়ে লাগে না, হৃদয়ে লাগে।
জটিল বাক্য: কিন্তু সমাজের যে অপমান তাহা গায়ে লাগে না, হৃদয়ে লাগে।
(৬) যৌগিক বাক্য: সংসারে অন্য অভাব অনেক আছে, কেবল নিন্দুক আছে যথেষ্ট।
জটিল বাক্য: সংসারে যদিও অন্য অভাব অনেক আছে, কেবল নিন্দুক আছে যথেষ্ট।
(৭) যৌগিক বাক্য: ইহার কারণ অতি ভয়ানক এবং তাহার অনুসন্ধান করাও যন্ত্রণাদায়ক।
জটিল বাক্য: ইহার কারণ যেমন অতি ভয়ানক, তাহার অনুসন্ধান করাও তেমনই যন্ত্রণাদায়ক।
(৮) যৌগিক বাক্য: স্টেশনে পৌঁছিলাম, আর ট্রেনটিও ছাড়িয়া দিল।
জটিল বাক্য: যখনই স্টেশনে পৌঁছিলাম, তখনই ট্রেনটি ছাড়িয়া দিল।
অর্থ অনুযায়ী বাক্য: অর্থ অনুযায়ী বাক্যকে সাতটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন – (১) নির্দেশক, (২) প্রশ্নবোধক, (৩) অনুজ্ঞাবাচক, (৪) ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক, (৫) আবেগসূচক, (৬) সন্দেহবাচক বা সংশয়সূচক এবং (৭) শর্তসাপেক্ষ বাক্য।
(১) নির্দেশক বা নির্দেশাত্মক/বর্ণনাত্মক বাক্য:
যে বাক্যে কোনো বক্তব্য সাধারণভাবে নির্দেশ করা হয় বা বিবৃত হয়, তাকে নির্দেশক/নির্দেশাত্মক/বর্ণনাত্মক বাক্য বলে।
উদাহরণ: রাম রোজ এখানে আসে।
শ্রেণিবিভাগ: নির্দেশক বাক্যকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়।
(ক) সদর্থক/ অস্ত্যর্থক/ইতিবাচক/হ্যাঁ-বাচক,
(খ) নঞর্থক/নেতিবাচক / না-বাচক।
(ক) সদর্থক/ অন্ত্যর্থক/ইতিবাচক/হ্যাঁ-বাচক: যে নির্দেশক বাক্যে কোনো কিছুর অস্তিত্ব বা আছে অর্থ প্রকাশিত হয়, তাকে 'সদর্থক / অস্ত্যর্থক / ইতিবাচক হ্যাঁ / বাচক' বাক্য বলে।
যেমন: গল্পটা আমি জানি।
(খ) নঞর্থক/ নেতিবাচক / না-বাচক: যে নির্দেশক বাক্যে কোনো ঘটনা/ তথ্য/সংবাদ / অস্তিত্ব বা কোনো বিষয় অস্বীকার করা হয় বা সে সম্বন্ধে আপত্তি করা হয়, তাকে 'নঞর্থক / নেতিবাচক / না-বাচক' বাক্য বলা হয়। যেমন : গল্পটি আমি জানি না।
(২) প্রশ্নবোধক বাক্য: যে বাক্যে কোনও ঘটনা, ভাব বা অবস্থা সম্বন্ধে কিছু জানবার ইচ্ছা বা প্রশ্ন করা হয় তাকে বলে 'প্রশ্নবোধক / প্রশ্নাত্মক' বাক্য।
উদাহরণ: কোথায় গিয়েছিলে সেদিন?
শ্রেণিবিভাগ: প্রশ্নবোধক বাক্য দুই রকমের- (ক) হ্যাঁ-না প্রশ্নবোধক বাক্য, (খ) বস্তুগত প্রশ্নবোধক বাক্য।
(ক) হ্যাঁ-না প্রশ্নবোধক বাক্য: তুমি যাবে কি? - এই বাক্যের উত্তর হ্যাঁ বা না দিয়ে হয়।
(খ) বস্তুগত প্রশ্নবোধক বাক্য: রাম এখন কী করছে? - বাক্যের উত্তর অনেক শব্দ বা বাক্যের সাহায্যে দিতে হয়। এই ধরনের বাক্য কী, কীভাবে, কাকে, কখন, কোথায় প্রভৃতি শব্দ দিয়ে করতে হয়।
(৩) অনুজ্ঞাবাচক বাক্য: যে বাক্য আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ, নিষেধ প্রভৃতি অর্থ প্রকাশ করে, তাকে 'অনুজ্ঞাবাচক' বাক্য বলে।
উদাহরণ: (১) সময় কাজে লাগাও। (২) ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন।
শ্রেণিবিভাগ: অনুজ্ঞাবাচ বাক্য দুই রকমের হয়
(ক) বর্তমান অনুজ্ঞা, (খ) ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা।
(ক) বর্তমান অনুজ্ঞা- তোমরা বাড়ি যাও।
(খ) ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা- কাল একবার এখানে এসো। মনে রাখবে, ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞায় নিষেধার্থক 'না' হয়, বর্তমানে হয়।
যেমন: কোনোদিন এমন কাজ করবে না।
(৪) ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক বাক্য: যে বাক্যে ইচ্ছা, প্রার্থনা, উচ্ছ্বাস প্রভৃতি অর্থ বোঝায়, তাকে ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক বাক্য বলে।
উদাহরণ: (১) ভারত যেন জয়লাভ করে। (২) বাবুদের জয় হোক।
(৫) আবেগসূচক/আবেগবোধক/বিস্ময়বোধক বাক্য:
যে বাক্যে আনন্দ, শোক, ক্রোধ, উৎসাহ, ভয়, বিস্ময়, বিরক্তি, ঘৃণা, দুঃখ ইত্যাদি কোনো একটি আবেগ প্রকাশিত হয়, তাকে 'আবেগসূচক/আবেগবোধক/বিস্ময়বোধক বাক্য বলে।
উদাহরণ: কী আনন্দ! আমাদের টিম জিতেছে।
(৬) সন্দেহবাচক / সংশয়সূচক/সন্দেহদ্যোতক বাক্য: যদি কোনো বাক্যে ক্রিয়ানিষ্পত্তি সংশয় বা সন্দেহজনক হয়, তবে তাকে 'সন্দেহবাচক/সংশয়সূচক/সন্দেহদ্যোতক বাক্য বলে। উদাহরণ : খেলাটা হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে।
(৭) শর্তসাপেক্ষ/কার্যকারণাত্মক বাক্য: যে বাক্যে কারণ, নিয়ম, শর্ত ইত্যাদি প্রকাশ পায়, তাকে 'শর্তসাপেক্ষ / কার্যকারণাত্মক' বাক্য বলে।
উদাহরণ:
(১) বৃষ্টি হলে ফসল ভালো হবে।
(২) 'যদি বলি জ্ঞানশিক্ষা, তাহা হইলে তর্ক উঠিবে'।
অর্থগত বাক্যের পরিবর্তন/বাক্যান্তর
বাক্যের লেখ্যরীতি বা মৌলিক অর্থ বজায় রেখেই বাক্যের। ভঙ্গির রূপান্তর করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে বাক্যের ক্রিয়ার কাল ও সাধু-চলিতের পরিবর্তন ঘটানো যাবে না।
অন্ত্যর্থক/ইতিবাচক বাক্য থেকে নঞর্থক/নেতিবাচক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(ক) বাক্য পরিবর্তিত হলেও অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(খ) বাক্যটির মূল অর্থ যার ওপর নির্ভরশীল (কর্তা অথবা কর্ম) তার বিপরীত অর্থবোধক শব্দ প্রয়োগ করতে হবে। যেমন - আস্তিক > নাস্তিক।
(গ) না, নয়, নি, নহে - প্রভৃতি নঞর্থক অব্যয় যোগ করতে হবে।
(ঘ) দু-বার নঞর্থক অব্যয় ব্যবহার করা যেতে পারে।
(ঙ) অস্ত্যর্থক বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়ার পার্শ্ববর্তী পদের সঙ্গে ‘অ’, ‘অন্’ ইত্যাদি নঞর্থক উপসর্গ যোগ করা যেতে পারে।
(চ) নঞর্থক ক্রিয়া ও নাস্তর্থক শব্দ বা নঞর্থক অব্যয় যোগে বাক্য পরিবর্তন করা যেতে পারে।
বাক্য পরিবর্তনের কিছু দৃষ্টান্ত:
(১) অভ্যর্থক- খাঁচাটার উন্নতি হইতেছে।
নঞর্থক- খাঁচাটার অবনতি হইতেছে না।
(২) অস্ত্যর্থক- ভিতরের শক্তি তো স্বেচ্ছা।
নঞর্থক- ভিতরের শক্তি তো পরের ইচ্ছাধীন নয়।
(৩) অন্ত্যর্থক- তিনদিন হল বৃষ্টি সর্বক্ষণ হচ্ছে।
নঞর্থক- তিনদিন হল বৃষ্টির কামাই নেই।
(৪) অস্ত্যর্থক- বিদীর্ণ করিয়া দিক এ হৃদয় মম।
নঞর্থক- দীর্ণ নাহি হোক এ হৃদয় মম।
(৫) অস্ত্যর্থক- চিৎকার করিবার ফাঁকটুকু পর্যন্ত বোজা।
নঞর্থক- চিৎকার করিবার ফাঁকটুকু পর্যন্ত নাই।
৬) অস্ত্যর্থক- তামাকটিকে সব গুছিয়ে রাখো।
নঞর্থক- তামাকটিকে সব অগোছালো রেখো না।
(৭) অভ্যর্থক- সে কথা আমার আজও মনে আছে।
নঞর্থক- সে কথা আমি আজও ভুলিতে পারি নাই।
(৮) অস্ত্যর্থক- তোর সব পাপ আমি কেড়ে নেব, তুই বল।
নঞর্থক- তোর কোনো পাপ থাকতে দেব না, তুই বল।
(৯) অন্ত্যর্থক- দেখিলে শরীরে রোমাও হয়।
নঞর্থক- দেখিলে শরীরে রোমা* না হইয়া পারে না।
(১০) অন্ত্যর্থক- সংসারে অন্য অভাব অনেক আছে।
নঞর্থক- সংসারে অন্য অভাব কম নেই।
(১১) অন্ত্যর্থক- চোখ দুটি দেখিলে কিন্তু লোকটির প্রতি শ্রদ্ধা হয়।
নঞর্থক- চোখ দুটি দেখিলে কিন্তু লোকটির প্রতি শ্রদ্ধা না হইয়া যায় না।
নঞর্থক/নেতিবাচক বাক্য থেকে অন্ত্যর্থক/ইতিবাচক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(ক) বাক্য পরিবর্তিত হলেও অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(খ) অস্ত্যর্থক বাক্য থেকে নঞর্থক বাক্যে পরিবর্তনের বিপরীত নিয়মগুলি এখানে অনেক প্রযোজ্য –
(১) বিধেয় ক্রিয়ার নঞর্থক অব্যয়টি তুলে দিতে হবে।
(২) মূল অর্থ নির্ভরশীল যে শব্দের ওপর, তার বিপরীত শব্দ লিখতে হবে।
(৩) প্রয়োজনমতো নঞর্থক শব্দ বা বাক্যাংশকে অস্ত্যর্থক শব্দে পরিবর্তিত করতে হবে।
বাক্য পরিবর্তনের কিছু দৃষ্টান্ত:
(১) নঞর্থক: অল্প পুথির কর্ম নয়।
অস্ত্যর্থক: অনেক পুথির কর্ম।
(২) নঞর্থক: তুমি অন্যায় করিও না।
অন্ত্যর্থক: তুমি ন্যায় করিও।
(৩) নঞর্থক: তাদের অনাহারে প্রাণবিয়োগও অসম্ভব নয়।
অন্ত্যর্থক: তাদের অনাহারে প্রাণবিয়োগও সম্ভব।
(৪) নঞর্থক: মানুষকে ঘৃণা করার মতো পাপ আর নেই।
অন্ত্যর্থক: মানুষকে ঘৃণা করা পাপ।
(৫) নঞর্থক: তাদের সংসারে আর টানাটানি রহিল না।
অন্ত্যর্থক: তাদের সংসারে স্বচ্ছলতা আসিল।
(৬) নঞর্থক: তোমার তো স্পর্ধা কম দেখিনে।
অন্ত্যর্থক: তোমার তো স্পর্ধা যথেষ্ট দেখি।
(৭) নঞর্থক: এ বনে কেহ ইচ্ছাপূর্বক আসে না।
অন্ত্যর্থক: এ বনে সকলেই অনিচ্ছাপূর্বক আসে।
(৮) নঞর্থক: আপনার দয়ার কথা কোনোদিন ভুলব না।
অন্ত্যর্থক: আপনার দয়ার কথা চিরদিন মনে রাখব।
(৯) নঞর্থক: শুধু শব্দ নয় পিছনে অর্থও কম নাই।
অস্ত্যর্থক: শব্দ ছাড়া পিছনে অর্থও অনেক আছে।
(১০) নঞর্থক: সে আমি বলতে পারব না।
অস্ত্যর্থক: সে আমি বলতে অপারগ।
(১১) নঞর্থক: ওর কান্না আমি সইতে পারি না।
অস্ত্যর্থক: ওর কান্না আমার অসহ্য।
(১২) নঞর্থক: আমি সাধ করিয়া চোর হই নাই।
অস্ত্যর্থক: আমি কি সাধ করিয়া চোর হইয়াছি?
(১৩) নঞর্থক: আখেরে গোঁয়ারের জিত হয় না।
অস্ত্যর্থক: আখেরে গোঁয়ারের হার হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন- কারক বিভক্তি নির্ণয়
নির্দেশক বাক্য থেকে প্রশ্নবোধক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(ক) বাক্য পরিবর্তিত হলেও অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(খ) মূল বাক্যকে কে, কী, কবে, কোথায় ইত্যাদি দিয়ে প্রশ্ন করে যথাযথ প্রশ্নবোধক পদটি যোগ করতে হবে এবং প্রশ্নচিহ্ন দিতে হবে।
(গ) মূল বাক্য সদর্থক হলে বিধেয়-ক্রিয়ায় নেতিবাচক অব্যয় যোগ করতে হবে।
(ঘ) মূল বাক্য নঞর্থক হলে বিধেয়-ক্রিয়ার নেতিবাচক অব্যয়টি বর্জন করে ‘আর' প্রভৃতি বাক্যালংকার অব্যয় যোগ করতে হয়।
বাক্য পরিবর্তনের কিছু দৃষ্টান্ত:
(১) নির্দেশক: ও কথায় আর কোনো কাজ নেই।
প্রশ্নবোধক: ও কথায় আর কাজ কী?
(২) নির্দেশক : মরা লোকে তো আর কথা কয় না।
প্রশ্নবোধক: মরা লোকে কি আর কথা কয়?
(৩) নির্দেশক: ভুল সকলেরই হয়।
প্রশ্নবোধক: ভুল কার না হয়?
(৪) নির্দেশক: অত কথায় কাজ নেই।
প্রশ্নবোধক: অত কথায় কাজ কী?
(৫) নির্দেশক: ইহা সত্যই আশ্চর্যজনক।
প্রশ্নবোধক: ইহা কি আশ্চর্যজনক নহে?
(৬) নির্দেশক: সাহিত্য জীবনের স্বাভাবিক প্রকাশ।
প্রশ্নবোধক: সাহিত্য কি জীবনের স্বাভাবিক প্রকাশ নহে?
(৭) নির্দেশক: ধনের ধর্মই অসাম্য।
প্রশ্নবোধক: ধনের ধর্মই কি অসাম্য নয়?
(৮) নির্দেশক: মরতে তো একদিন হবেই ভাই।
প্রশ্নবোধক: মরতে কি একদিন হবে না ভাই ?
(৯) নির্দেশক: এ অঞ্চলে তার বড়ো খাতির।
প্রশ্নবোধক: এ অঞ্চলে কি তার বড়ো খাতির নেই?
(১০) নির্দেশক: এতো শুধু খেলা নয়।
প্রশ্নবোধক: এ কি শুধু খেলা?
(১১) নির্দেশক: সে পরীক্ষা সমগ্র পৃথিবীর কাছে।
প্রশ্নবোধক: সে পরীক্ষা কি সমগ্র পৃথিবীর কাছে নয়?
প্রশ্নবোধক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(ক) বাক্যের পরিবর্তন হলেও অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(খ) নির্দেশক বাক্য থেকে প্রশ্নবোধক বাক্যে পরিবর্তনের বিপরীত নিয়মগুলি এখানে প্রযোজ্য হবে।
(গ) ভাববাচ্যের সহায়তা নেওয়া যেতেও পারে।
(ঘ) সাধারণ বাক্য প্রস্তুত করা যেতে পারে।
(ঙ) নির্দেশক বাক্যের শেষে দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ বসে।
(চ) প্রশ্নসূচক অব্যয়ের লোপ ঘটবে।
বাক্য পরিবর্তনের কিছু দৃষ্টান্ত:
(১) প্রশ্নবোধক: আমারা কি শহরে যেতে পারি?
নির্দেশক: আমরা শহরে যেতে পারি না।
(২) প্রশ্নবোধক: আর কামড়াইলেই বা কী করব?
নির্দেশক: আর কামড়াইলেও কিছু করতে পারি না।
(৩) প্রশ্নবোধক: অত বড়ো একটা মহাপ্রাণ আজ পর্যন্ত তুমিই বা কয়টা দিতে পারিলে?
নির্দেশক: অত বড়ো একটা মহাপ্রাণ আজ পর্যন্ত তুমিও বেশি দিতে পার নাই।
(৪) প্রশ্নৰোধক: তাহাতে আর বিচিত্র কী?
নির্দেশক: তাহাতে আর বিচিত্র কিছু নাই।
(৫) প্রশ্নবোধক: ভালো মানুষকে কে না ভালোবাসে?
নির্দেশক: ভালো মানুষকে সবাই ভালোবাসে।
(৬) প্রশ্নবোধক: এখন আর কী আছে?
নির্দেশক: এখন আর কিছু নেই।
(৭) প্রশ্নৰোধক: বিদ্যাসাগর কি মহামানুষ নন?
নির্দেশক: বিদ্যাসাগর নিশ্চয়ই মহামানুষ।
(৮) প্রশ্নবোধক: তুমি কোথায় থাকো?
নির্দেশক: তোমার কোথায় থাকা হয়।
(৯) প্রশ্নবোধক: জাতি গঠনের কাজ কি সমাপ্ত হইয়াছে?
নির্দেশক: জাতি গঠনের কাজ সমাপ্ত হয় নাই।
(১০) প্রশ্নবোধক: সব দিন কি সমান যায়?
নির্দেশক: সব দিন সমান যায় না।
(১১) প্রশ্নবোধক: কে জানে সে কবে আসবে?
নির্দেশক: সে কবে আসবে তা কেউ জানে না।
নির্দেশক বাক্য থেকে আবেগসূচক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম ও
(ক) বাক্যের পরিবর্তন হলেও বাক্যের অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(খ) মূল বাক্যের অর্থ অনুযায়ী কী, কেমন, ভারী ইত্যাদি বিস্ময়বোধক শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
(গ) নঞর্থক নির্দেশক বাক্য হলে নঞর্থক অব্যয়ের পরিবর্তে সাধারণ ক্রিয়াবিশেষণ যুক্ত করে অথবা বাক্যটি প্রশ্নবোধক করে পরিবর্তন করতে হয়।
(ঘ) কিছুটা ভাববাচ্যের ভাব আনতে হয়।
(ঙ) অধিকাংশক্ষেত্রে বাক্যের শেষে বিস্ময় বা আবেগচিহ্ন (!) থাকবে।
(চ) বাক্যের প্রয়োজনে মূল বাক্যের পদক্রমও পরিবর্তিত হয়।
(ছ) প্রয়োজনে বাক্যের শুরুতে আহাঃ, আঃ, উঃ (!) ইত্যাদি আবেগসূচক অব্যয় যুক্ত করতে হয়।
বাক্য পরিবর্তনের কিছু দৃষ্টান্ত:
(১) নির্দেশক: ছেলেটা সত্যিই ভারী দুষ্টু।
আবেগসূচক: ছেলেটা সত্যিই কী দুষ্টু।
(২) নির্দেশক: এ অঞ্চলে তাঁর বড়ো খাতির।
আবেগসূচক: এ অঞ্চলে কী খাতির তাঁর।
(৩) নির্দেশক: ভগবানের সকল কার্যই আশ্চর্য।
আবেগসূচক: ভগবানের কোন্ কার্য না আশ্চর্য!
(৪) নির্দেশক: এ অতি সুকঠোর দণ্ড তব।
আবেগসূচক: হায়! এ কী সুকঠোর দণ্ড তব।
আবেগসূচক/বিস্ময়বোধক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম
(ক) বাক্যের পরিবর্তন হলেও অর্থের পরিবর্তন হবে না।
(খ) নির্দেশক বাক্য থেকে আবেগসূচক বাক্যের বিপরীত নিয়মগুলি এখানে প্রযোজ্য। এ ছাড়া -
(গ) ব্যক্তিগত ব্যাপারকে সমষ্টিগত ব্যাপার করতে হবে।
(ঘ) ক্রিয়ার কাল হবে বর্তমান।
(ঙ) ডঃ, আহা - প্রভৃতি বিস্ময়সূচক শব্দ তুলে দিতে হবে।
বাক্য পরিবর্তনের কিছু দৃষ্টান্ত:
(১) আবেগসূচক: কী ভয়ংকর দৃশ্য।
নির্দেশক: অতি ভয়ংকর দৃশ্য।
(২) আবেগসূচক: কী বিচিত্র তোমার চরিত্র।
নির্দেশক: তোমার চরিত্র বড়োই বিচিত্র।
(৩) আবেগসূচক: আহা! বৃদ্ধের কী দুঃখ!
নির্দেশক: বৃদ্ধটির দুঃখ আমাদের ব্যথা দেয়।
(৪) আবেগসূচক: আহা! কী সৌন্দর্য!
নির্দেশক: সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হতে হয়।
(৫) আবেগসূচক: তপোবনের কী অনির্বচনীয় মহিমা!
নির্দেশক: তপোবনের মহিমা খুবই অনির্বচনীয়।
অনুজ্ঞাবাচক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম
(ক) বাক্যের পরিবর্তন হলেও অর্থের কোনো পরিবর্তন হবে না।
(খ) অনুজ্ঞাবাচক ধাতুটি 'আ' প্রত্যয় যোগ করে অসমাপিকা ক্রিয়ায়, কৃৎ-প্রত্যয় যোগ করে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বা ক্রিয়াবাচক বিশেষণ পদে পরিণত করতে হবে। এরপর বিধেয়, সংগত, উচিত, কাম্য-প্রভৃতির কোনো একটি যোগ করতে হয়।
(গ) ধাতুর সঙ্গে ‘তে’/ ইতে', যোগ করে, তার সঙ্গে ‘নিষেধ করছি, ‘অনুরোধ করছি', মিনতি করছি', 'বলছি' ইত্যাদি ক্রিয়া যোগ করতে হয়।
(ঘ) ক্রিয়ার কাল বর্তমান হবে।
(ঙ) প্রয়োজনে মূল পদের বিপরীত শব্দ বা 'না-সূচক' অব্যয় প্রয়োগ করতে হয়
নির্দেশক বাক্য থেকে অনুজ্ঞাবাচক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(ক) অনুজ্ঞাবাচক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যের বিপরীত নিয়মগুলো এখানে প্রযোজ্য।
(খ) কারো উক্তিকে প্রত্যক্ষ উক্তির নিয়মে নিয়ে যাওয়া ভালো।
(গ) নির্দেশক বাক্যের মূল ধাতুকে অনুজ্ঞাবাচক ক্রিয়াপদে পরিণত করতে হবে।
ইচ্ছাবাচক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম
(ক) বাক্যের পরিবর্তন হলেও অর্থের পরিবর্তন হবে না।
(খ) ‘তে’/‘ইতে’ যোগ করে অসমাপিকা ক্রিয়া করে তার সঙ্গে ‘প্রার্থনা করছি, ‘ইচ্ছা করি’, ‘কামনা করছি’ প্রভৃতি যোগ করতে হবে।
(গ) ক্রিয়ার কালকে বর্তমান কাল ধরে নিতে হবে।
(ঘ) কোথাও দু-বার নেতিবাচক অব্যয় ব্যবহার করে ইতিবাচক করতে হয়।
নির্দেশক বাক্য থেকে ইচ্ছাবাচক বাক্যে পরিবর্তনের নিয়ম:
(ক) ইচ্ছাবাচক বাক্য থেকে নির্দেশক বাক্যে পরিবর্তনের বিপরীত নিয়মগুলি এখানে খাটবে।
(খ) বর্তমান বা ভবিষ্যৎ কালের ক্রিয়া 'উক' ও 'ডন' যোগ করে ইচ্ছামূলক বর্তমান কালের ক্রিয়ায় পরিণত করতে হবে।
আরও পড়ুন- বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্নোত্তর
বাক্য পরিবর্তনের কিছু দৃষ্টান্ত:
নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো:
১. ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর কুফলের মাশুল দেবে। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর। ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর কুফলের মাশুল দেবে না কি?
২. সে পরীক্ষা সমগ্র পৃথিবীর কাছে। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর। সে পরীক্ষা কি সমগ্র পৃথিবীর কাছে নয়?
৩. মনের চলাচল যতখানি ততখানি মানুষ বড়ো। (সরল বাক্যে)
উত্তর। মনের চলাচলের ওপরই মানুষের বড়োত্ব।
৪. আপনার দয়ার কথা কোনোদিন ভুলব না। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর। আপনার দয়ার কথা চিরদিন মনে রাখব।
৫. অল্প পুথির কর্ম নয়। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যেহেতু অল্প পুথি, সেইহেতু তার কর্ম নয়।
৬. সময় সেখানে স্তব্ধ স্রোতহীন। (নস্ত্যর্থক বাক্যে)
উত্তর। সময় সেখানে স্তব্ধ স্রোতসর্বস্ব নয়।
৭. এই দেখতে তার ঔৎসুক্যের সীমা নেই। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর। এই দেখতে তার ঔৎসুক্য সীমাহীন।
৮. ভালো করে যদি ডাল ভাতটা খায় তাতেই পুষ্টি। (সরল বাক্যে)
উত্তর। ভালো করে ডাল ভাতটা খেলেই পুষ্টি।
৯. গৌরবির কথা শুনে ওর সর্বাঙ্গ জ্বলে গেল। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যখন গৌরবির কথা শুনল তখন ওর সর্বাঙ্গ জ্বলে গেল।
১০. অতি স্পষ্ট সে চিহ্ন। (নেতিবাচক বাক্য)
উত্তর। সে চিহ্ন কম অস্পষ্ট নয়।
১১. এ অঞ্চলে তার খুব নামডাক। (প্রশ্নবোধক বাক্য)
উত্তর। এ অপলে কি তাঁর খুব নামডাক নেই?
১২. ধনের ধর্ম অসাম্য। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। ধনের একটি ধর্ম আছে, সেটি হল অসাম্য।
১৩. যে জল ফুটিতেছে তাহাতে হাত দিও না। (সরল বাক্যে)
উত্তর। ফুটন্ত জলে হাত দিও না।
১৪. স্থানটির রূপ ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)
উত্তর। স্থানটির রূপ ভাষায় অবর্ণনীয়।
১৫. পরিশ্রম ছাড়া কৃতকার্য হতে পারো না। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। পরিশ্রম করো নতুবা কৃতকার্য হতে পারবে না।
১৬. আজ দোকান-পাট বন্ধ। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর। আজ দোকান-পাট খোলা নেই।
১৭. তিনদিন হল বৃষ্টির কামাই নেই। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)
উত্তর। তিনদিন হল বৃষ্টি সর্বক্ষণ হচ্ছে।
১৮. পড়াশোনা করলে জীবনে উন্নতি হবেই। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যদি পড়াশোনা করো তবে জীবনে উন্নতি হবেই।
১৯. ধনী হলেও লোকটির মনে শান্তি নেই। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। লোকটি ধনী কিন্তু মনে শান্তি নেই।
২০. গুরুজনদের অস্ত্রসজ্জা কোরো না। (জিজ্ঞাসামূলক)
উত্তর। গুরুজনদের কি অশ্রদ্ধা করা উচিত?
২১. জামা কিনিতে গেলাম, পাইলাম একপাটি মোজা। (সরল বাক্যে)
উত্তর জামা কিনিতে গিয়া পাইলাম একপাটি মোজা।
২২. পণ্ডিতেরা বসিয়া অনেক বিচার করিলেন। (যৌগিক থাকে)
উত্তর। পন্ডিতেরা বসিলেন এবং অনেক বিচার করিলেন।
২৩. যদি ইচ্ছা হয় তবে সেখান হইতে চাল ডাল কিনিতে পারো। (সরল বাক্যে)
উত্তর। ইচ্ছা হইলে সেখান হইতে চাল ডাল কিনিতে পারো।
২৪. 'সবই মোহর' কথাটি প্রচার কানে ভালো লাগিল না। (হ্যাঁ-বাচক বাকো)
উত্তর। 'সবই মোহর' কথাটি প্রশ্নর কানে খারাপ লাগিল।
২৫. সকলে নেপোলিয়ান নহেন। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর। সকলে কি নেপোলিয়ান?
২৬. পাখিটা মরিল। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর। পাখিটা জীবিত রহিল না।
২৭. দুর্গাপুরে আর এ জঙ্গলে তফাত কী? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। দুর্গাপুরে আর এ জঙ্গলে কোনো তফাত নেই।
২৮. আমরা ইজারাদারদের কাছারি লুটিয়া গ্রামের লোকের ধন গ্রামের লোককে দিয়া আসি। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। আমরা ইজারাদারদের কাছারি লুট করি এবং গ্রামের লোকের ধন গ্রামের লোককে দিয়া আসি।
২৯. খাঁচাটার উন্নতি হইতেছে, কিন্তু পাখিটার খবর কেহ রাখে না। (সরল বাক্যে)
উত্তর। খাঁচার উন্নতি হইলেও পাখিটার কেহ খবর রাখে না।
৩০. জবাব শুনিয়া রাজা অবস্থাটা পরিষ্কার বুঝিলেন। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। রাজা যখন জবাব শুনিলেন তখন তিনি অবস্থাটা পরিষ্কার বুঝিলেন।
৩১. স্বার্থই স্বার্থত্যাগের প্রধান শিক্ষক। (প্রশ্নাত্মক বাক্যে)
উত্তর। স্বার্থই কি স্বার্থত্যাগের প্রধান শিক্ষক নয় ?
৩২. এ ধনের রাশির লোভ কে সংবরণ করিবে? (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর। এ ধনের রাশির লোভ কেহই সংবরণ করিবে না।
৩৩. নিদ্রা আসিতে বিলম্ব হইল না। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)
উত্তর। নিদ্রা অবিলম্বে আসিল।
৩৪. তরবারি নিয়ে কী অদ্ভুতভাবে যুদ্ধ করছে। (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। তরবারি নিয়ে অতি অদ্ভুতভাবে যুদ্ধ করছে।
৩৫. এই স্থানে এ শক্তিরও মৃত্যুবীজ উপ্ত হইতেছে। (প্রশ্নাত্মক বাক্যে)
উত্তর। এই স্থানে কি এ শক্তিরও মৃত্যুবীজ উপ্ত হইতেছে না?
৩৬. শিখিতে চাইলে আমি শিখাইতে পারি। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যদি শেখো, আমি শিখাইতে পারি।
৩৭. প্রফুল্ল একটি মোহর লইয়া হাটের সন্ধানে বাহির হইল। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। প্রফুল্ল একটি মোহর লইল এবং হাটের সন্ধানে বাহির * হইল।
৩৮. আমরাও আইনকানুন বুঝি। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর। আমরাও যে আইনকানুন বুঝি না, এমন নয়।
৩৯. দিতে গেলেও টুডু নিত না। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)
উত্তর। দিতে গেলেও টুডু ফিরিয়ে দিত।
৪০. অনুগত খ্রিস্টান ছাত্রেরা হোরোকে এড়িয়ে যায়। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যারা অনুগত খ্রিস্টান ছাত্র, তারা হোরোকে এড়িয়ে যায়।
৪১. দেশে কি নিয়মের অভাব? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। দেশে নিয়মের অভাব নেই।
৪২. রাজপণ্ডিতেরা দক্ষিণা পাইয়া খুশি হইয়া বাসায় ফিরিলেন। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। রাজপণ্ডিতেরা দক্ষিণা পাইলেন এবং খুশি হইয়া বাসায় ফিরিলেন।
৪৩. প্রভাত হইতে প্রফুল্ল বনের ভিতর এদিক ওদিক বেড়াইতে লাগিল। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যখন প্রভাত হইল তখন প্রফুল্ল বনের ভিতর এদিক ওদিক বেড়াইতে লাগিল
৪৪. চোর কি না বোঝা যাচ্ছে না। (সন্দেহবাচক বাক্যে)
উত্তর। বোধহয় চোর।
৪৫. বৃষ্টির পরেই ঠান্ডা পড়বে। (শর্তসাপেক্ষ বাক্যে)
উত্তর। যদি বৃষ্টি পড়ে তবেই ঠান্ডা পড়বে।
৪৬. খুব জব্দ হয়েছে। (আবেগবাচক বাক্যে)
উত্তর। কেমন জব্দ হয়েছে!
৪৭. কী পাষণ্ড! (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। অত্যন্ত পাষণ্ড।
৪৮. বায়ুর অন্যতম উপাদান অক্সিজেন। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। বায়ুর কতকগুলি উপাদান আছে এবং সেগুলির অন্যতম হল অক্সিজেন।
৪৯. এখনই পরিচ্ছন্ন বায়ু দুর্লভ হয়ে উঠেছে। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যা পরিচ্ছন্ন বায়ু তা এখনই দুর্লভ হয়ে উঠেছে।
৫০. দুঃসাধ্য হলেও নিতান্ত অসাধ্য নয়। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর। দুঃসাধ্য হলেও অনেকটাই সাধ্যের মধ্যে।
৫১. এখনও মনে আছে। (নেতিবাচক বাক্যে)
উত্তর। এখনও ভুলিনি।
৫২. তুমি এসকল দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করিয়া ধর্মাচরণে মন দাও। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। তুমি এসকল দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করো এবং ধর্মাচরণে মন দাও।
৫৩. তবে ও ছোঁড়াকে যদি বিদায় না করো আমার ডিটে ছেড়ে দাও। (সরল বাক্যে)
উত্তর। তবে ও ছোঁড়াকে বিদায় না করলে আমার ভিটে ছেড়ে দাও।
৫৪. যে বিচারক চোরকে সাজা দিলেন, তিনি আগে তিনদিবস উপবাস করিবেন। (সরল বাক্যে)
উত্তর। চোরকে সাজাপ্রদানকারী বিচারককে আগে তিনদিবস উপবাস করিতে হইবে।
৫৫. গৌরবি মনে মনে ঠাকুরকে ডেকে চোখ বুজল। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। গৌরবি মনে মনে ঠাকুরকে ডাকল এবং চোখ বুজল।
৫৬. আমি যদি খাইতে না পাইলাম, তবে সমাজের উন্নতি লইয়া কী করিব? (সরল বাক্যে)
উত্তর। আমি খাইতে না পাইলে সমাজের উন্নতি লইয়া কী করিব?
৫৭. চাহিয়া দেখিলাম হঠাৎ কিছু বুঝিতে পারিলাম না। (সরল বাক্যে)
উত্তর। চাহিয়া দেখিয়াও হঠাৎ কিছু বুঝিতে পারিলাম না।
৫৮. ধনীর ধনবৃদ্ধি না হইলে দরিদ্রের কী ক্ষতি ? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। ধনীর ধনবৃদ্ধি না হইলে দরিদ্রের কোনো ক্ষতি নাই।
৫৯. অনেক অনুসন্ধানে এক ভগ্ন ষষ্ঠি আবিষ্কৃত করিয়া মার্জারী প্রতি ধাবমান হইলাম। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। অনেক অনুসন্ধানে এক ভগ্ন যষ্ঠি আবিষ্কার করিলাম এবং মার্জারী প্রতি ধাবমান হইলাম
৬০. খাইতে দাও নহিলে চুরি করিব। (সরল বাক্যে)
উত্তর। খাইতে না দিলে চুরি করিব।
৬১. মার্জারী কমলাকান্তকে চিনিত। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর। কমলাকান্ত মার্জারীর অচেনা ছিল না।
৬২. শ্রীমন্তকে দেখে ফুলজান ঘোমটা টেনে সরে দাঁড়াল। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর ফুলজান শ্রীমন্তকে দেখল এবং ঘোমটা টেনে সরে-দাঁড়াল।
৬৩. সেই-ই কেবল কাদিল না। (অন্তার্থক বাকো)
উত্তর সে ছাড়া আর সকলেই কাদিল।
৬৪. এ পাহাড়ের আমের প্রকৃতি অজ্ঞাত ছিল না। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর এ পাহাড়ের আমের প্রকৃতি আত ছিল।
৬৫. এই দুইজন মাত্র জাগ্রত অবস্থায় ছিল। (নেতিবাচক বাকো)
উত্তর। এই দুইজন ব্যতীত আর কেহই জাগ্রত অবস্থায় ছিল
৬৬. বৈশাখ শেষ হইয়া আসে, কিন্তু মেঘের ছায়াটুকু কোথাও নাই। (সরল বাক্যে)
উত্তর। বৈশাখ শেষ হইয়া আসিলেও মেঘের ছায়াটুকু কোথাও নাই।
৬৭. এই শৃঙ্গে উঠিলেই তোমার অভীষ্ট সিদ্ধ হইবে। (জটিল থাকো)
উত্তর যদি এই শৃঙ্গে উঠিতে পারো, তবেই তোমার অভীষ্ট সিদ্ধ হইবে।
৬৮. গ্রামে যে দুই-তিনটা পুষ্করিণী আছে তাহা একেবারে শুষ্ক। (যৌগিক বাকো)
উত্তর। গ্রামে দুই-তিনটা পুষ্করিণী আছে, কিন্তু তাহা একেবারে শুষ্ক।
৬৯. আমাদের এক চাকর ছিল, তাহার নাম শ্যাম। (সরল থাকো)
উত্তর। আমাদের শ্যাম নামে এক চাকর ছিল।
৭০. তারা বাগানের শৌখিন গাছ নয়, তাদের নালিশ শোনবার কেউ নাই। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যেহেতু তারা বাগানের শৌখিন গাছ নয়, তাই তাদের নালিশ শোনবার কেউ নেই।
৭১. তাহার আভাস পাইতাম কিন্তু নাগাল পাইতাম না। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর। তাহার আভাস পাইতাম কিন্তু তাহা ছিল নাগালের বাইরে।
৭২. অপূর্ব, গম্ভীর শোভা এই জায়গাটার। (বিস্ময়সূচক বাক্যে)
উত্তর। কী অপূর্ব, গম্ভীর শোভা এই জায়গাটার।
৭৩. মানুষে মানুষে কাছাকাছি বাস করে তবু কিছুতেই মনের মিল হয় না। (সরল বাক্যে)
উত্তর। মানুষে মানুষে কাছাকাছি বাস করলেও কিছুতেই মনের মিল হয় না।
৭৪. এ সৌন্দর্যভূমি আমার কাছে অজ্ঞাত ছিল। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর। এ সৌন্দর্যভূমি আমার কাছে জ্ঞাত ছিল না।
৭৫. আমরা যে আত্মশাসনের দাবি করছি সেটা তো বর্বরের প্রাপ্য নয়। (সরল বাক্যে)
উত্তর। আমাদের আত্মশাসনের দাবিটা তো বর্বরের প্রাপ্য নয়।
৭৬. আগুন লাগাতে বেশিক্ষণ লাগে না। (সদর্থক বাক্যে)
উত্তর। আগুন লাগাতে অল্প সময় লাগে।
৭৭. আচারের মধ্যে পার্থক্য পরস্পরের মধ্যে কঠিন বিচ্ছেদ আনে। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। আচারের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায় এবং তা পরস্পরের মধ্যে কঠিন বিচ্ছেদ আনে।
৭৮. তাঁর প্রস্তাব মাথা পেতে নেওয়াই ভালো। (প্রশ্নসূচক বাক্যে)
উত্তর। তাঁর প্রস্তাব মাথা পেতে নেওয়াই ভালো নয় কি?
৭৯. ধর্ম আমাদের মেলাতে পারেনি। (প্রশ্নসূচক বাক্যে)
উত্তর। ধর্ম আমাদের মেলাতে পেরেছে কি?
৮০. রাষ্ট্র প্রতিমার কাঠামো গড়বার সময় এ কথাটা মনে রাখা দরকার। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যখন রাষ্ট্র প্রতিমার কাঠামো গড়া হবে তখন এ কথাটা মনে রাখা দরকার।
৮১. বৈমাত্র সন্তানও মাতার কোলের অংশ দাবি করতে পারে। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যারা বৈমাত্র সন্তান, তারাও মাতার কোলের অংশ দাবি করতে পারে।
৮২. মাঝি উত্তর করিল না। (ইতিবাচক বাক্যে)
উত্তর। মাঝি নিরুত্তর রহিল।
৮৩. মাঝে মাঝে পা ঠুকে মশাদের ঘনিষ্ঠতায় বাধা দেবার চেষ্টা করবেন। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। মাঝে মাঝে পা ঠুকবেন এবং মশাদের ঘনিষ্ঠতায় বাধা দেবার চেষ্টা করবেন।
৮৪. তথায় নদীর যেরূপ বিস্তার, সেরূপ বিস্তার আর কোথাও নাই। (সরল বাক্যে)
উত্তর। তথাকার ন্যায় নদীর বিস্তার আর কোথাও নাই।
৮৫. প্রতীক্ষাও আপনাদের ব্যর্থ হবে না। (সদর্থক বাক্যে)
উত্তর। প্রতীক্ষাও আপনাদের সার্থক হবে।
৮৬. একপ্রকার হতাশ হইয়া, লোকালয়ের উদ্দেশে ইতস্তত ধাবমান হইলেন। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। একপ্রকার হতাশ হইলেন এবং লোকালয়ের উদ্দেশে ইতস্তত ধাবমান হইলেন।
৮৭. কিছুই বুঝতে পারবেন না। (অন্তার্থক বাক্যে)
উত্তর। সবই না-বোঝা থাকবে।
৮৮. আজ আমার কুটিরে অবস্থিতি করুন। (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। আজ আমার কুটিরেই অবস্থান করতে হবে।
৮৯. কেন তুই আমার কাছে লুকোচ্ছিস? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। আমার কাছে তোর লুকোনোর কারণটি জানতে চাইছি।
৯০. পরের বিষয়ে কথা কয় অভদ্রলোক। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। পরের বিষয়ে যারা কথা কয় তারা অভদ্রলোক।
৯১. এবারে পারিনি বলে তেলেনাপোতার মাছ কি বার বার ফাঁকি দিতে পারবে? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। এবারে পারিনি বলে তেলেনাপোতার মাছ বারবার ফাঁকি দিতে পারবে না।
৯২. এখন কি পরের বাড়ি থাকে? (নির্দেশাত্মক বাক্যে)
উত্তর। এখন পরের বাড়ি থাকে কি না জানতে চাই।
৯৩. চোর দোষী বটে, কৃপণ ধনী তদপেক্ষা শতগুণে দোষী। (সরল বাক্যে)
উত্তর। চোর দোষী হইলেও কৃপণ ধনী তদপেক্ষা শতগুণে দোষী।
৯৪. ডাকলেই তো আমার বাড়ি থেকে সাড়া পাবে। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। যদি ডাকো তাহলে তো আমার বাড়ি থেকে সাড়া পাবে।
৯৫. চিন্তা কোরো না। (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। চিন্তা করতে মানা করছি।
৯৬. আর দাঁড় টানিবার প্রয়োজন নাই। (প্রশ্নবোধক বাক্যে
উত্তর। আর দাঁড় টানিবার প্রয়োজন আছে কি?
৯৭. ও বীরের কাজ নয়। (অন্ত্যর্থক বাক্যে)
উত্তর। ও কাপুরুষের কাজ।
৯৮. আমাদের সেই মনের ভাবের কোনো পরিবর্তন হইল না। (অন্ত্যর্থক বাক্যে)
উত্তর। আমাদের সেই মনের ভাব সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত রহিল।
৯৯. সেটা স্বাভাবিক। (নেতিবাচক বাক্যে)
উত্তর। সেটা অস্বাভাবিক নয়।
১০০. ভারতবর্ষ বড়ো বিচিত্র দেশ। (বিস্ময়বোধক বাক্যে)
উত্তর। ভারতবর্ষ কী বিচিত্র দেশ !
১০১. তোমার সেখানে যাওয়া উচিত। (অনুজ্ঞাবাচক বাক্যে)
উত্তর। তুমি সেখানে যাও।
১০২. ধৈর্য অতীব অসাধারণ। (বিস্ময়বোধক বাক্যে)
উত্তর। কী অসাধারণ ধৈর্য!
১০৩.একা একা কি বাঁচা যায়? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর। একা একা বাঁচা যায় না।
১০৪. সত্য কথা যদি শুনিবেন তবে ডাকুন রামকে। (সরল বাক্যে)
উত্তর। সত্য কথা শুনিবার জন্য রামকে ডাকুন।
১০৫.এই বিষম বিপদে আমাকে একা ফেলে যেও না। (অস্ত্যর্থক বাক্যে)
উত্তর। এই বিষম বিপদে আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাও।
১০৬.এই মহিলা সকল সুলক্ষণযুক্তা। (নেতিবাচকে)
উত্তর। এই মহিলা কোনো দুর্লক্ষণযুক্তা নয়।
১০৭. ভগবান বিরূপ হইলে মানুষের সাধ্য কি বাঁচানোর। (জটিল বাক্যে)
উত্তর। ভগবান যদি বিরূপ হন, তা হইলে মানুষের বাঁচানোর সাধ্য নাই।
১০৮. ছাত্রের উত্তর শুনিয়া শিক্ষক পরিষ্কার বুঝিলেন। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর। শিক্ষক ছাত্রের উত্তর শুনিলেন এবং পরিষ্কার বুঝিলেন।
১০৯. তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক! (প্রশ্নাত্মক বাক্যে)
উত্তর। তোমার ইচ্ছাই কী পূর্ণ হবে না?