জ্যামিতির ইতিহাস ও জ্যামিতির প্রাথমিক ধারনা সম্পর্কে এই পোস্টে দেওয়া হলো। এখান থেকে তোমরা জানতে পারবে জ্যামিতি শব্দের অর্থ, জ্যামিতি কাকে বলে, প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি বিষয়ে। ছোটদের জ্যামিতি ধরন সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমনযৌগ্য প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলি পড়লেই তোমরা জ্যামিতির কৌশল গুলি জানবে। সুতরাং এখন আর দেরি না করে চলো দেখে নেওয়া যাক জ্যামিতির সকল প্রশ্ন গুলি।
জ্যামিতির ইতিহাস
জ্যামিতি = জ্যা + মিতি, জ্যা অর্থ পৃথিবী এবং মিতি অর্থ হচ্ছে পরিমাপ। ব্যুৎপত্তিগত অর্থে জ্যামিতি শব্দের অর্থ জমি-জরীপ বা ভূমির পরিমাপ বোঝায়। আবার জ্যামিতি শব্দটি ইংরেজি ‘Geometry’
শব্দের আক্ষরিক অনুবাদ। ‘Geo’ অর্থ পৃথিবী এবং ‘Metry’ অর্থ মাপা।
তাই পুরো শব্দটির অর্থ হল পৃথিবীর পরিমাপ করা। প্রত্যেক দেশেই ক্ষেত্র পরিমাপের মধ্য দিয়েই জ্যামিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের দেশে বৈদিক যুগে যাগযজ্ঞের প্রয়োজনে বেদি তৈরি করতে গিয়ে আর্য ঋষিরা বিভিন্ন আকৃতির ত্রিভুজ, বর্গক্ষেত্র, আয়তক্ষেত্র, বৃত্ত প্রভৃতি অঙ্কন করতেন। এজন্য তাঁরা কতকগুলি নিয়ম মেনে চলতেন। এই নিয়মগুলিকে বলা হত “শুল্বসূত্র”।
এই ‘শুল্বসূত্র’ থেকেই গড়ে উঠল এক শাস্ত্র যার নাম “ক্ষেত্রতত্ত্ব”। আর এই “ক্ষেত্রতত্ত্বকেই” বলা হল জ্যামিতি।
মিশর দেশের ইতিহাস থেকে দেখা যায় যে নীলনদের প্লাবনের পর হয়। জমি বণ্টন ও হিসাব রাখতে এবং বাঁধ তৈরি করতে গিয়ে বিভিন্ন রকমের পরিমাপের প্রয়োজন হয়।
তার ভেতর দিয়েই জ্যামিতির উন্নতি। মিশরের পিরামিড নির্মাণে ও রোমের নগর তৈরির পরিকল্পনাতে জ্যামিতির প্রয়োগ লক্ষ করা গেছে।
জ্যামিতির বিকাশে প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকদের অবদান অমস্বীকার্য। প্রথম ‘প্রমাণ সাপেক্ষ জ্যামিতি’র প্রচলন করেন দার্শনিক থেলস্ (Thales) [ খ্রিঃ পূঃ 624-547 ]।
থেলস্ -এর পর পীথাগোরাস (খ্রিঃ পূঃ 548-495) জ্যামিতিকে একটি যুক্তি বিজ্ঞানে পরিণত করেন। এর পর প্রখ্যাত গ্রিক গণিতবিদ ইউক্লিড জ্যামিতির সূত্রগুলি সুসংবদ্ধ ও সুবিন্যস্ত করে সর্বপ্রথম জ্যামিতি বিষয়ক বই ‘ELEMENTS’ রচনা করেন।
বইটি ১৩ খণ্ডে বিভক্ত। এজন্য ইউক্লিডকে জ্যামিতি শাস্ত্রের জনক বলা হয়।
জ্যামিতি কাকে বলে?
গণিতশাস্ত্রের যে শাখায় বস্তু সমূহের আকার, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, ক্ষেত্রফল, আয়তন বা তাদের অঙ্কন পদ্ধতির বিষয়ে ধারণা দেয় তাকে জ্যামিতি বলে।
জ্যামিতি পাঠের প্রয়োজনীয়তা :
(১) জ্যামিতি পাঠ করলে যে কোনো বস্তুর আকার, আয়তন ইত্যাদি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করা যায়।
(২) সঠিকভাবে ভূমি বা জমির পরিমাপ করা সম্ভব।
(৩) দক্ষ শ্রমিক বা শিল্পী হতে গেলে জ্যামিতির সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
(৪) কারিগরিবিদ্যা ও প্রযুক্তিবিদ্যাতে এর ব্যবহার ব্যাপক।
জ্যামিতির শ্রেণিবিভাগ :
জ্যামিতি দু-ধরনের যথা- ব্যবহারিক জ্যামিতি এবং তাত্ত্বিক বা উপপত্তিক জ্যামিতি।
ব্যবহারিক জ্যামিতি (Practical Geometry) :
জ্যামিতির যে শাখায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে ছবি এঁকে জ্যামিতির নিয়মগুলি বুঝিয়ে দেওয়া হয় আর ওই নিয়মগুলি ব্যাবহারিক জীবনে কাজে লাগানো হয়, তাকে ব্যাবহারিক জ্যামিতি বলে।
তাত্ত্বিক বা উপপত্তিক জ্যামিতি (Theoretical Geometry) :
জ্যামিতির যে শাখায় জ্যামিতির নিয়মগুলি যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তাকে তাত্ত্বিক বা উপপত্তিক জ্যামিতি বলে।
আরও পড়ুন-