(পঞ্চম অধ্যায়) নদী সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
আজ তোমাদের জন্য সপ্তম শ্রেণীর ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় থেকে নদী সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করলাম, যা তোমাদের পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই সময় অপচয় না করে নিচের দেওয়া প্রশ্ন উত্তর ভালো করে পড়েনাও অথবা খুব ভালো করে মুখস্ত করো।
সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল || নদী (পঞ্চম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || class-7 Geography West Bengal
1) মূল নদী থেকে সৃষ্ট যে সকল নদী বেরিয়ে গিয়ে অন্যত্র মিশে যায়, তাকে কী বলে? এটি কোন্ প্রবাহে দেখা যায়?
উত্তরঃ শাখানদী। এটি নিম্নপ্রবাহে সৃষ্টি হয়।
2) পর্বতের উঁচু অংশ থেকে পাদদেশ পর্যন্ত যে বিরাট অংশের জল মূল নদীতে এসে পড়ে, তাকে কী বলে?
উত্তরঃ ধারণ অববাহিকা।
3) অনিত্যবহ নদীর উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গের দামোদর বা অজয়।
4) একটি আদর্শ নদীর উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ গঙ্গা।
5) নদীর কোন্ প্রবাহে অসংখ্য নদীমঞ্চ দেখা যায়?
উত্তরঃ নিম্নপ্রবাহে।
6) মোহানার কাছে মাত্রাহীন 'এ' অক্ষরের মতো যে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় তাকে কী বলে?
উত্তরঃ বদ্বীপ।
7) পাখির পায়ের মতো বদ্বীপ কোন্ নদীতে দেখা যায়?
উত্তরঃ মিসিসিপি-মিসৌরি নদীতে।
8) T' ও 'V' আকৃতি ভূমিরূপ কোন্ প্রবাহে দেখা যায়?
উত্তরঃ উচ্চগতি প্রবাহে।
9) ভারতের একটি অন্তর্বাহিনী নদীর নাম লেখো?
উত্তরঃ লুনি।
10) উৎস থেকে সৃষ্ট নদী যখন অন্য নদীতে এসে মেশে তাকে কী বলে?
উত্তরঃ উপনদী।
11) গঙ্গা নদীর উৎস কোথায়?
উত্তরঃ গঙ্গোত্রীর গোমুখ গুহায়।
12) একাধিক দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীকে কী বলে?
উত্তরঃ আন্তর্জাতিক নদী।
13) নদী কাকে বলে?
উত্তরঃ স্বাভাবিকভাবে প্রবহমান পার্বত্য বেগবতী জলধারাকে নদী বলে। নদী অভিকর্ষের টানে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট খাতের মধ্য দিয়ে ভূমির ঢাল অনুসারে উৎস থেকে মোহানার দিকে বয়ে চলে। যেমন-গঙ্গা নদী।
14) উপনদী কাকে বলে?
উত্তরঃ উৎস থেকে সৃষ্টি হয়ে কোনো নদী যখন অন্য নদীতে এসে মিলিত হয় তখন তাকে উপনদী বলে। যমুনা, কোশি, গণ্ডক প্রভৃতি গঙ্গার উপনদী।
15) শাখানদী কাকে বলে?
উত্তরঃ মূল নদী থেকে যে সমস্ত নদী শাখার মতো বেরিয়ে গিয়ে অন্য কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অন্য কোনো নদীর সঙ্গে মেশে বা সমুদ্রে পতিত হয় তাদের শাখানদী বলে। যেমন-ভাগীরথী, পদ্মা গঙ্গার শাখানদী।
16) নদীর উৎস কাকে বলে?
উত্তরঃ নদী যেখানে সৃষ্টি হয় তাকে নদীর উৎস বলে। সাধারণত পাহাড়-পর্বত, মালভূমি প্রভৃতি উঁচু জায়গা থেকে নদীর উৎপত্তি হয়। যেমন-গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা থেকে গঙ্গার উৎপত্তি হয়েছে।
17) নদীর মোহানা কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রবাহপথের শেষে নদী যেস্থানে কোনো সাগর, উপসাগর, জলাশয়, হ্রদ বা অন্য কোনো নদীতে গিয়ে মেশে সেই মিলন অঞ্চলকে নদীর মোহানা বলে। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে গঙ্গা নদীর মোহানা রয়েছে।
18) ধারণ অববাহিকা কাকে বলে?
উত্তরঃ পার্বত্য বা মালভূমি অঞ্চল থেকে সমভূমির দিকে আসার সময় ক্ষুদ্র জলধারা প্রধান নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে নদীখাতে প্রবাহিত হয়। পর্বতের ওপর থেকে পাদদেশ পর্যন্ত যে বিরাট অংশে অসংখ্য ছোটো ছোটো জলধারা মূলনদীতে এসে মেশে সেই অঞ্চলটিকে ধারণ অববাহিকা বলে।
19) জলবিভাজিকা কাকে বলে?
উত্তরঃ যে উচ্চভূমি পাশাপাশি অবস্থিত দুই বা ততোধিক নদী অববাহিকাকে পৃথক করে, তাকে বলে জলবিভাজিকা। মধ্যভারতের উচ্চভূমি ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ দিকের নদনদীর মাঝে জলবিভাজিকা হিসেবে অবস্থান করছে।
20) নদী উপত্যকা কাকে বলে?
উত্তরঃ উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত নদী যে খাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তাকে নদী উপত্যকা বলে। দুটি উচ্চভূমি বা পর্বতের মধ্যবর্তী সংকীর্ণ বা প্রশস্ত নিম্নভূমিকে নদী উপত্যকা বলে।
21) দোয়াব কাকে বলে?
উত্তরঃ দুই নদীর মধ্যবর্তী প্রায় সমতল বিস্তীর্ণ ভূভাগকে দোয়াব বলে। পারসি শব্দ 'দোয়াব'-এর 'দো'-এর অর্থ দুই, 'আব'-এর অর্থ জল বা নদী। ভারতের গঙ্গা, যমুনা নদীর দোয়াব অংশে আগ্রা ও এলাহাবাদ শহর অবস্থিত। দোয়াব অঞ্চল পলিসমৃদ্ধ ও খুব উর্বর হওয়ায় কৃষিকাজের উপযোগী।
22) নদী অববাহিকা কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রধান নদী, উপনদী ও শাখানদী উৎস থেকে মোহানা - পর্যন্ত যে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় সেই ভূমিভাগকে নদী অববাহিকা বলে। বিশ্বের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নদী অববাহিকা হল-গঙ্গা নদীর অববাহিকা,ইয়াংসি-কিয়াং নদীর অববাহিকা ইত্যাদি। ভারতের বৃহত্তম নদী অববাহিকা হল গঙ্গা নদীর অববাহিকা।
23) নিত্যবহ নদী কাকে বলে?
উত্তরঃ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপত্তি হওয়া বরফগলা জলে পুষ্ট নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে বলে এই নদীকে নিত্যবহ নদী বলে। যেমন-গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি নিত্যবহ নদীর উদাহরণ।
24) অনিত্যবহ নদী কাকে বলে?
উত্তরঃ মালভূমি থেকে উৎপন্ন নদীতে সারাবছর জল থাকে না। একে অনিত্যবহ নদী বলে। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের নদীগুলি অনিত্যবহ নদীর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। যেমন-দামোদর, অজয়। এই নদীগুলিতে গ্রীষ্মকালে জলের প্রবাহ কমে যায়। এগুলি বৃষ্টির জলে পুষ্ট বলে বর্ষাকালে যথেষ্ট জল থাকে।
25) গিরিখাত কাকে বলে?
উত্তরঃ উচ্চগতিতে নদী প্রবলবেগে প্রবাহিত হওয়ায় পার্শ্বক্ষয়ের তুলনায় নিম্নক্ষয় বেশি হয়। পার্বত্য অঞ্চলে এরূপ গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকে গিরিখাত বলে। এটি ইংরেজি 'V' অক্ষরের মতো দেখতে হয়। যেমন-শতদ্রু নদীর গিরিখাত। অনেক সময় বৃষ্টিপাত বা ধসের ফলে 'T' আকৃতির উপত্যকা 'V' আকৃতি লাভ করে।
26) অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ কাকে বলে?
উত্তরঃ মধ্যপ্রবাহে নদী আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হলে দুটো বাঁক যখন পরস্পরের খুব কাছে চলে আসে তখন বাঁক দুটির মাঝের অংশ ক্ষয় পেয়ে দুটো বাঁক জোড়া লেগে যায় এবং ঘোড়ার পায়ের ক্ষুরের আকৃতি ধারণ করে। এই বাঁকের মধ্যে নদীর জল জমে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ সৃষ্টি করে। মূল নদী থেকে এই বাঁক আলাদা হয়ে যাওয়ায় নদীর জলের জোগান থাকে না। তখন বর্ষার জল ওই অংশে সঞ্চিত হয়।
27) আন্তর্জাতিক নদী কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল নদী তার গতিপথে একাধিক দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তাকে আন্তর্জাতিক নদী বলে। যেমন-গঙ্গা নদী তার গতিপথের প্রথমাংশে ভারত এবং শেষাংশে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অপর একটি অন্যতম আন্তর্জাতিক নদী হল সিন্ধু নদী।
28) পৃথিবীর ও ভারতের বৃহত্তম নদী অববাহিকা কোনটি?
উত্তরঃ আমাজন নদীর অববাহিকা পৃথিবীর বৃহত্তম নদী অববাহিকা। এর আয়তন প্রায় 75 লক্ষ বর্গকিলোমিটার। ভারতের বৃহত্তম নদী অববাহিকা হল গঙ্গা নদীর অববাহিকা। এর আয়তন প্রায় 10,86,000 বর্গকিলোমিটার।
29) অন্তর্বাহিনী নদী কাকে বলে?
উত্তরঃ যে নদী কোনো দেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তি লাভ করে সেই দেশেরই কোনো হ্রদ বা জলাশয়ে গিয়ে মেশে, সেই নদীকে বলা হয় অন্তর্বাহিনী নদী। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ভারতের লুনি নদী ও রাশিয়ার আমুদরিয়া প্রভৃতি অন্তর্বাহিনী নদী।
আরও পড়ো-