Ads Area


দিল্লি সুলতানি তুর্কো আফগান শাসন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল || West Bengal Class 7 History

(চতুর্থ অধ্যায়) দিল্লি সুলতানি : তুর্কো - আফগান শাসন

প্রিয় ছাত্র ছাত্রী,

আজ তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস- দিল্লি সুলতানি : তুর্কো - আফগান শাসন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর। যা সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যা আগত টেস্ট ও ফাইনাল পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস || দিল্লি সুলতানি : তুর্কো - আফগান শাসন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || West Bengal Class 7 History


সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস || দিল্লি সুলতানি : তুর্কো - আফগান শাসন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || West Bengal Class 7 History 


1) দিল্লির সুলতানদের কখন খলিফাদের অনুমোদন দরকার হত?

উত্তর: খলিফারা সাধারণত ভারতবর্ষের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতেন না। তবে কখনো-কখনো এদেশীয় সুলতানদের খলিফার অনুমোদন প্রয়োজন হত। সেই কারণগুলি হল-

১) সুলতান পদ বা ওই পদের বৈধতা নিয়ে সমস্যা শুরু হলে।

২) সুলতানির অংশবিশেষ অধিকার করে কেউ স্বাধীনতা ঘোষণা করতে চাইলে।

৩) দেশের অভ্যন্তরে কেউ সুলতানকে মানতে না চাইলে।

2) সুলতান ইলতুৎমিসের সামনে প্রধান তিনটি সমস্যা কী ছিল?

উত্তরঃ ইলতুৎমিস যখন সিংহাসনে বসেন তখন তাঁর সামনে প্রধান তিনটি সমস্যা ছিল-

১) সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরের বিদ্রোহীদের দমন করা।

২) মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করা। এবং

৩) সুলতান পদটিকে বৈধতা প্রদান করা।

3) কারা ছিল সুলতান রাজিয়ার সমর্থক? কারা ছিল তাঁর বিরোধী?

উত্তরঃ ১) সমর্থকঃ সেনাবাহিনী, অভিজাতদের একাংশ ও দিল্লির সাধারণ লোকের সমর্থন নিয়ে রাজিয়া সিংহাসন আরোহণ করেন। 

২) বিরোধীঃ  তুর্কি অভিজাত, বিশেষ করে চল্লিশ চক্রের সদস্যরা রাজিয়ার বিরোধী ছিলেন। রাজিয়া নারী হওয়ায় উলেমারাও তাঁর শাসন মানতে পারেননি।

4) আলাউদ্দিন খলজি কীভাবে মোঙ্গল আক্রমণের মোকাবিলা করেন?

উত্তরঃ আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি নিয়েছিলেন-

১) সৈনিকদের থাকার জন্য সিরি নামক নতুন শহর নির্মাণ করেছিলেন।

২) বিশাল সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন।

৩) সেনাবাহিনীর ব্যয়নির্বাহের জন্য উচ্চহারে রাজস্ব আদায়, বাজারদর নিয়ন্ত্রণ-প্রভৃতি উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

৪) দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন।

5) ইলিয়াস শাহি ও হোসেন শাহি আমলে বাংলার সংস্কৃতির পরিচয় দাও।

উত্তর: ইলিয়াস শাহি ও হোসেন শাহি আমলে বাংলায় বাংলা ভাষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটেছিল।

১) ইলিয়াস শাহি শাসনকাল : ইলিয়াস শাহি বংশের শাসক সিকন্দর শাহের আমলে পান্ডুয়ায় 'আদিনা মসজিদ' নির্মিত হয়। সুলতান বরবক শাহের আমলে রচিত হয় বিখ্যাত বাংলা কাব্য 'শ্রীকৃয়বিজয়'। বরবক শাহ এই কাব্যের লেখক মালাধর বসুকে 'গুণরাজ খাঁ' উপাধিতে ভূষিত করেন।

২)হোসেন শাহি শাসনকাল : হোসেন শাহি আমলে বাংলায় ধর্মীয় উদারতা দেখা যায়। এসময়ে শ্রীচৈতন্যদেবের নেতৃত্বে ভক্তিবাদের প্রসার ঘটে। আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে এবং পরবর্তীকালে নির্মিত 'ছোটো সোনা মসজিদ' 'বড়ো সোনা মসজিদ' প্রভৃতি ছিল অনন্য স্থাপত্যকীর্তি। এসময়ে বিজয়গুপ্ত, বিপ্রদাস প্রমুখ 'মনসামঙ্গল' কাব্য রচনা করে খ্যাতিলাভ করেন।

6) ইলতুৎমিস সিংহাসনে বসে কোন্ কোন্ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং সেইসব সমস্যার সমাধান কীভাবে করেছিলেন?

উত্তরঃ কুতুবউদ্দিন আইবকের মৃত্যুর পর 1211 খ্রিস্টাব্দে তাঁর জামাই ইলতুৎমিস দিল্লির সিংহাসনে বসেন। দিল্লি সুলতানির প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ইলতুৎমিস সিংহাসনে বসে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন।

1) সমস্যাসমূহ: ১) আলোচ্য সময় নাসিরউদ্দিন কুবাচা সিন্ধুদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করে পাঞ্জাব দখলের চেষ্টা করেন। 

২) গজনির তাজউদ্দিন ইলদুজ পাঞ্জাব দখলের পর দিল্লি অধিকার করার চেষ্টা করেন।

 ৩) আবার বাংলার শাসক আলিমর্দান খলজি তখন স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ ছাড়া 

৪) দিল্লির ওমরাহদের অনেকেই ইলতুৎমিসের বিরোধিতা করেন।

2) সমাধান:১) ইলতুৎমিস একে-একে সমস্ত বিদ্রোহীকে দমন করে নিজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।

২) বাগদাদের খলিফার কাছ থেকে 'সুলতান-ই-আজম' উপাধি লাভ করেন। ফলে তাঁর মর্যাদা ও প্রতিপত্তি দুই-ই বৃদ্ধি পায়। এভাবে তিনি স্বাধীন সুলতানির প্রতিষ্ঠা করেন।

7) রাজিয়ার কৃতিত্ব লেখো।

 উত্তর: দিল্লি সুলতানির অন্যতম শাসক ছিলেন ইলতুৎমিসের কন্যা সুলতান রাজিয়া। তিনি নানা বিষয়ে তাঁর পারদর্শিতা প্রদর্শন করেছিলেন। যেমন-

১) মহিলা হয়েও শাসক হিসেবে তিনি দিল্লির সিংহাসনে বসে মানসিক দৃঢ়তা প্রদর্শন করেন।

২) উলেমার আপত্তি থাকলেও অমুসলিমদের ওপর থেকে জিজিয়া কর প্রত্যাহার করেন।

৩) রাজিয়া বেশ কয়েকটি বিদ্রোহ দমন করেছিলেন।

8) মোহম্মদ-বিন্-তুঘলকের রাজধানী স্থানান্তরের তিনটি কারণ লেখো।

উত্তরঃ মোহম্মদ-বিন্-তুঘলক দিল্লি থেকে দক্ষিণ ভারতের দৌলতাবাদে তাঁর রাজধানী স্থানান্তরিত করেছিলেন। এর প্রধান কারণ ছিল-

১)বৈদেশিক আক্রমণ বিশেষত মোঙ্গল আক্রমণ থেকে রাজধানীকে রক্ষা করা।

২) তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ দিল্লির অধিবাসীদের বিরোধিতা থেকে নিজেকে রক্ষা করা।

৩) দাক্ষিণাত্যকে আরও ভালোভাবে শাসন করা।

9) সুলতানি যুগে প্রচলিত ইকতা ব্যবস্থার ভালো দিক ও খারাপ দিক কী ছিল বলে তুমি মনে করো?

উত্তরঃ সুলতানি যুগের প্রদেশ বা অংশগুলিকে ইকতা বলা হত। এই ইকতার প্রধানকে বলা হত ইকতাদার। ওই সময় ইকতা ব্যবস্থার ভালো ও খারাপ দিকগুলি হল-

1) ভালো দিক : ১) সুলতানি যুগের প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা ইকতা ব্যবস্থার দ্বারা পরিচালিত হত।

 ২) ইকতার রাজস্ব আদায় এবং প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ-উভয় কাজই এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্পন্ন করা যেত। তা ছাড়া • যুদ্ধের সময় সুলতানের প্রয়োজনীয় সৈন্যের চাহিদা ইকতাদাররা মেটাত।

2)খারাপ দিক: ১) অনেক সময় ইকতাদাররা সুলতানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে সাম্রাজ্যের স্থিতিশীলতা নষ্ট হত।

 ২) আদায়ীকৃত রাজস্বের একাংশ ইকতাদাররা আত্মসাৎ করে শক্তিশালী হয়ে উঠত। 

৩) অনেক সময় ইকতাদারদের কারণে সম্রাটের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়ত।

10) আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন?

অথবা, আলাউদ্দিন খলজি কীভাবে মোঙ্গল আক্রমণের বিরোধিতা করেন? 

উত্তরঃ সমগ্র সুলতানি আমলে বহুবার মোঙ্গল আক্রমণ হয়েছে। আলাউদ্দিন খলজির আমলেও মোঙ্গলরা আক্রমণ করে। সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে তিনি

 ১) উত্তর-পশ্চিমের সীমান্তগুলি সুরক্ষিত করেন। পাঞ্জাবের শাসনকর্তা গাজি মালিকের ওপর সীমান্ত রক্ষার ভার দেন। 

২) সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে তোলেন। 

৩) সৈন্যদের রাখার জন্য 'সিরি' নামক নতুন শহর গড়ে তোলেন। দুর্গনির্মাণ করেন।

11) আলাউদ্দিন খলজির বাজারদর নিয়ন্ত্রণের ফল কী হয়েছিল?

উত্তরঃ আলাউদ্দিনের বাজারদর নিয়ন্ত্রণের ফল মিশ্র প্রকৃতির হয়েছিল। কারণ, এই উদ্যোগের ফলে

 ১) সৈন্যরা অল্প বেতনে তাদের জীবন অতিবাহিত করতে পারত। অপরদিকে 

২) ব্যবসায়ী, কৃষক, শিল্পী, কারিগর ও সাধারণ মানুষকে অনেক সময় নানা অসুবিধার মধ্যে পড়তে হত। 

৩) বণিকদের লাভের হার কমে যাওয়ায় তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তেমনি ব্যাবসাবাণিজ্যেও মন্দা দেখা দিয়েছিল।

12) তোমার মতে কে বিজয়নগর রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি এবং কেন?

উত্তর: আমার মতে বিজয়নগর রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি হলেন তুলুভ বংশের কৃমদেব রায়। যে সমস্ত কারণে কৃষ্ণদেব রায় বিজয়নগর রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি ছিলেন সেগুলি হল-

১) রাজ্যসীমা বিস্তার : কৃমদেব রায়ের আমলে বিজয়নগরের রাজ্যসীমা পূর্বে বিশাখাপত্তনম থেকে পশ্চিমে কোঙ্কন এবং দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।

২) সাংস্কৃতিক উন্নতি: কৃষ্ণদেব রায়ের আমলে বিজয়নগর রাজ্যে সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্প, সংগীত ও দর্শনশাস্ত্রে প্রভূত উন্নতি হয়েছিল।

৩) অর্থনৈতিক উন্নতি : কৃষ্ণদেব রায়ের আমলে উন্নত কৃষি ও বাণিজ্যের জন্য বিজয়নগর আর্থিক দিক থেকে সমৃদ্ধির চূড়া স্পর্শ করেছিল।

13) নব মুসলমান কাদের বলা হয়?

উত্তরঃ জালালউদ্দিন খলজির আমলে মোঙ্গলরা ভারত আক্রমণ করলে তিনি তাদের পরাজিত করে সন্ধি করতে বাধ্য করেন। পরে চেঙ্গিজ খানের বংশধর উলুঘ খানের নেতৃত্বে একদল মোঙ্গল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে জালালউদ্দিন তাদের দিল্লির আশেপাশে বসবাস করার অনুমতি দেন। এরা 'নব মুসলমান' নামে পরিচিত হয়। আলাউদ্দিন খলজির আমলে এরা বিদ্রোহ করার কারণে একদিনে ত্রিশ হাজার নব মুসলমানকে হত্যা করা হয়।

14) খলজি বিপ্লব কী?

উত্তরঃ গিয়াসউদ্দিন বলবনের মৃত্যুর পর তার পৌত্র কায়কোবাদ দিল্লির সিংহাসনে বসেন। কিন্তু তাঁর অযোগ্যতার কারণে ওমরাহগণ কায়কোবাদকে সিংহাসনচ্যুত করে তার শিশুপুত্র কায়ুমার্সকে সিংহাসনে বসান। এই সময়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে জালালউদ্দিন ফিরোজ খলজি কায়কোবাদ ও কায়ুমার্সকে হত্যা করে দিল্লির সিংহাসনে খলজি বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। এই ঘটনাই 'খলজি বিপ্লব' নামে পরিচিত।

15) 'দাগ' ও 'হুলিয়া' কী?

উত্তরঃ আলাউদ্দিন খলজি সামরিক বিভাগের দুর্নীতি দূর করার জন্য 'দাগ' ও 'হুলিয়া' প্রথার প্রবর্তন করেন।

১) দাগ: 'দাগ' অর্থাৎ ঘোড়া চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া। এই ব্যবস্থায় ঘোড়াগুলিকে একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর 'দাগ' বা চিহ্ন দেওয়া হত।

২) তুলিয়া: সেনাবাহিনীর সংখ্যা, বিবরণ ইত্যাদি নথিভুক্ত রাখার পদ্ধতি 'হুলিয়া' নামে পরিচিত। যুদ্ধের সময় যাতে নকল সেনা হাজির না হতে পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল।

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাসের আরও অধ্যায় থেকে প্রশ্ন ও উত্তর-

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area