(প্রথম অধ্যায়) পৃথিবীর গতি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর
প্রিয় সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রী,
আজ আমরা তোমাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর দিতে চলেছি, যা ভূগোলের প্রথম অধ্যায় পৃথিবীর গতি থেকে, আগত টেস্ট ও ফাইনাল পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাবে সাহায্য করবে। তাই আর দেরি না করে নিচের দেওয়া প্রশ্ন উত্তর গুলো ভালো করে দেখে নাও।
সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল || পৃথিবীর গতি (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || West Bengal class -7 geography
1) নিশীথ সূর্যের দেশ বা মধ্য রাত্রির সূর্যের দেশ কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবীর পরিক্রমণের ফলে 21 মার্চ থেকে 23 সেপ্টেম্বর উত্তরায়ণের প্রায় 6 মাস, সুমেরু অঞ্চলে একটানা দিন হয়। এই সময়ে নরওয়ের উত্তরসীমার হ্যামারফেস্ট (70°30' উঃ) বন্দরে মধ্যরাত্রিতেও আবছা সূর্যালোক দেখা যায়। একে নিশীথ সূর্য বলে এবং এই অঞ্চলকে নিশীথ সূর্যের দেশ বলে।
2) সুমেরু ও কুমেরু প্রভা কাকে বলে?
উত্তরঃ সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের ফলে সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে টানা 6 মাস দিন ও পরবর্তী 6 মাস রাত থাকে। এই অঞ্চলে রাত্রিবেলায় মাঝে মাঝে আকাশে রামধনুর মতো অস্পষ্ট আলো দেখা যায়। সুমেরু অঞ্চলে একে সুমেরু প্রভা বা অরোরা বোরিয়ালিস এবং কুমেরু অঞ্চলে কুমেরু প্রভা বা অরোরা অস্ট্রালিস বলে।
3) বিষুব কী?
উত্তরঃ একটি বছরের যে দিনটিতে পৃথিবীর সর্বত্র 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি সংঘটিত হয় তাকে বিষুব বলে। পৃথিবীতে দুদিন এই রকম বিষুব দেখা যায়। বিষুব কথার অর্থ দিনরাত্রি সমান। নিরক্ষরেখায় যেহেতু দিনরাত্রি সমান হয় তাই এই অক্ষরেখাকে বিষুবরেখা বলে। বিষুব দুইটি-
১) মহাবিষুব ও
২) জলবিষুব।
4) মুক্তিবেগ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বেগে কোনো বস্তু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাটিয়ে মহাশূন্যে চলে যেতে পারে তাকে মুক্তিবেগ বলে। মুক্তিবেগের হিসাবে, কোনো বস্তু প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি গতিবেগে ওপরের দিকে ছুটতে হবে। এই বেগে কোনো বস্তু আর নীচের দিকে পড়বে না। যেমন কৃত্রিম রকেট, মহাকাশযান, কৃত্রিম উপগ্রহ।
5) মেরুপ্রভা কিভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ পৃথিবীর দুই মেরু প্রদেশে একটানা রাত চলার সময় মাঝে মাঝে আকাশে রামধনুর মতো রঙিন আলোর জ্যোতি বা মেরুপ্রভা দেখা যায়। বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন আয়নিত গ্যাসের সঙ্গে সূর্যরশ্মির সংঘর্ষের ফলে মেরু অঞ্চলের আকাশে এইরকম বিচ্ছুরিত আলোর সৃষ্টি হয়। সুমেরু অঞ্চলে একে অরোরা বোরিয়ালিস ও কুমেরু অঞ্চলে অরোরা অস্ট্রালিস বলে।
6) পৃথিবীর অক্ষ এবং কক্ষের পরিচয় দাও।
উত্তরঃ পৃথিবীর উত্তর মেরুবিন্দু ও দক্ষিণ মেরুবিন্দুতে যে কাল্পনিক রেখা টানা হয় তাকে মেরুরেখা বা অক্ষ বলে। অক্ষকে কেন্দ্র করে পৃথিবী নিজের চারদিকে ঘুরতে থাকে। এটি উত্তর-দক্ষিণে হেলে থাকে। পৃথিবী যে নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার পথে সূর্যকে মাঝখানে রেখে অনবরত ঘুরে চলেছে সেই পথটিকে কক্ষ বা কক্ষপথ (Orbit) বলে। প্রতিটি গ্রহ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।
7) পৃথিবী নিজ অক্ষের সঙ্গে 66 ½° কোণে হেলে অবস্থান করে কেন?
উত্তরঃ বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী সৃষ্টির সময়ে বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষের কারণেই পৃথিবী নিজ অক্ষের সঙ্গে 66 ½° কোণে হেলে অবস্থান করে।
8) উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন কবে হয়?
উত্তরঃ 22 ডিসেম্বর থেকে 21 জুন পর্যন্ত 6 মাস সূর্যের উত্তরমুখী আপাতগতি হল উত্তরায়ণ। একইভাবে 21 জুন থেকে 22 ডিসেম্বর পর্যন্ত 6 মাস ধরে সূর্যের দক্ষিণমুখী আপাত গতি হল দক্ষিণায়ন।
9) আবর্তন গতি কাকে বলে?
উত্তরঃ পৃথিবীর নিজ অক্ষের চারিদিকে 66 ½° কোণে করে 24 ঘণ্টায় একবার যে নির্দিষ্ট গতিতে পূর্ণ আবর্তন করে, তাকে পৃথিবীর আহ্নিক গতি বা আবর্তন গতি বলে। আবর্তন গতির ফলে দিনরাত্রি হয়।
10) পরিক্রমণ গতির বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ
(1) পৃথিবীর মেরুরেখা কক্ষতলের সঙ্গে 66 ½° কোণে হেলে অবস্থান করে।
(2) এই অবস্থায় পৃথিবী নিজ মেরুদণ্ডের চারিদিকে ঘুরতে ঘুরতে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে অক্ষ একটি নির্দিষ্ট দিকে সূর্যের চারিদিকে প্রদক্ষিণ করে। রতে
(3) পরিক্রমণ গতিতে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিউর র্দিষ্ট সময় লাগে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড।
11) বছরের বিভিন্ন সময়ে বিষুবরেখা, কর্কটক্রামি রেখা ও মকরক্রান্তি রেখায় সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে কেন?
উত্তরঃ বছরের বিভিন্ন সময়ে বিষুবরেখা ও কর্কটক্রান্তিরেখা ও মকরক্রান্তিরেখায় সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে কারণ-
(1) কক্ষতলের সঙ্গে পৃথিবীর মেরুরেখার 66 ½° কোনে অবস্থান।
(2) পৃথিবীর অভিগত গোলক আকৃতি
(3) পরিক্রমণ গতি।
(4) বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অবস্থানে মেরুরেখার পরস্পর সমান্তরাল অবস্থান।
12) অপসূর কাকে বলে?
উত্তরঃ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে পরিক্রমণ করতে জ করতে 4 জুলাই পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব সর্বাধিক হয় প্রায় 15 কোটি 20 লক্ষ কিমি। সূর্য থেকে পৃথিবীর এই দূরতম অবস্থানকে বলে অপসূর অবস্থান।
13) অনুসূর কী?
উত্তরঃ পৃথিবীর সূর্যকে পরিক্রমণ করতে করতে ও জানুয়ারি পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দূরত্ব হয় সর্বনিম্ন, প্রায় 14 কোটি 70 লক্ষ কিমি। সূর্য থেকে পৃথিবীর এই অবস্থানকে বলে অনুসূর।
আরও পড়ো-