Ads Area


নগড়,বণিক ও বাণিজ্য ( ষষ্ঠ অধ্যায় ) প্রশ্ন ও উত্তর || সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস || West Bengal Class -7 History Question And Answer

(ষষ্ঠ অধ্যায়) নগড়, বণিক ও বাণিজ্য প্রশ্ন ও উত্তর 

আজকে আমি তোমাদের জন্যে নিয়ে এসেছি সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস- নগড়,বণিক ও বাণিজ্য  (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর, যা তোদের পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আর দেরি না করে এই পোস্টের প্রশ্ন উত্তর গুলো ভালো করে পড়ে নাও।

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস || নগড়,বণিক ও বাণিজ্য ( ষষ্ঠ অধ্যায় ) প্রশ্ন ও উত্তর || West Bengal Class -7 History Question And Answer


সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস || নগড়,বণিক ও বাণিজ্য ( ষষ্ঠ অধ্যায় ) প্রশ্ন ও উত্তর ||West Bengal Class 7 History Question and Answer

1) কী কী ভাবে মধ্যযুগের ভারতে শহর গড়ে উঠত?

উত্তরঃ মধ্যযুগের ভারতে শহর গড়ে ওঠার কারণগুলি হল-

১) অর্থনৈতিক কারণঃ মধ্যযুগে যে সমস্ত জায়গায় জিনিসপত্র কেনাবেচা চলত সেখানে ধীরে ধীরে লোকসমাগম হয়। এইভাবে ধীরে ধীরে হাট, গঞ্জ, বাজার প্রভৃতি গড়ে নি ওঠার মধ্য দিয়েই শহরের পত্তন হয়েছিল। যেমন- বাংলার চট্টগ্রাম।

২) রাজনৈতিক কারণঃ কোনো সম্রাট বা বাদশাহের রাজধানী বা রাজনৈতিক কেন্দ্রস্থলকে ঘিরে শহর গড়ে উঠেছিল। যেমন-দিল্লি।

৩) প্রশাসনিক কারণঃ প্রশাসনিক কোনো স্থানকে কেন্দ্র করে শহর গড়ে উঠেছিল। যেমন-আগ্রা।

৪) ধর্মীয় কারণঃ কোনো ধর্মীয় স্থানকে কেন্দ্র করেও আলোচ্য সময় শহর গড়ে ওঠে। যেমন-ফতেপুর সিক্রি। 

2) কেন সুলতানদের সময়কার পুরোনো দিল্লির আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়েছিল?

উত্তরঃ সুলতানদের সময়ে ধীরে ধীরে পুরোনো দিল্লির ক্ষয় হওয়ার কয়েকটি কারণ হল-

১) শহর তৈরির ধারণায় বদলঃ প্রথমদিকে দিল্লিতে শহর তৈরি হত পাথুরে এলাকায়। কারণ সেখানে পাথর সহজলভ্য ছিল। কিন্তু পরে সমতলভূমিতে শহর তৈরি হওয়ায় পুরোনো দিল্লির গুরুত্ব কমে যায়।

৩) জলের সমস্যাঃ সুলতানি আমলে পুরোনো দিল্লির ক্ষয়প্রাপ্তির অপর কারণ ছিল পর্যাপ্ত জলের অভাব। তখন দিল্লিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও জল পর্যাপ্ত ছিল না। সুলতানরা এই সমস্যার সমাধানে হৌজ বা পুকুর খনন করলেও তাতে খুব একটা উপকার হয়নি।

৪) যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যাঃ পুরোনো দিল্লির সঙ্গে ভারতের অন্যান্য অংশের যোগাযোগের বিভিন্ন পথ ছিল। তবে মেও এবং জাঠদের জন্য সেইসব পথে যোগাযোগ প্রায়শই বাধাপ্রাপ্ত হত। ফলে এটিও পুরোনো দিল্লির আস্তে আস্তে ক্ষয়ে যাওয়ার একটি কারণ হয়ে ওঠে। উপরোক্ত কারণগুলির জন্য সুলতানদের সময়কার পুরোনো দিল্লির আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়েছিল। 

3) কেন, কোথায় শাহজাহানাবাদ শহরটি গড়ে উঠেছিল? 

উত্তরঃ শাহজাহানাবাদ গড়ে ওঠার কারণ : যমুনা নদীর পশ্চিমপাড়ে উঁচু জায়গায় শাহজাহানাবাদ শহরটি গড়ে উঠেছিল। এই শহরটি গড়ে ওঠার পশ্চাতে বিভিন্ন কারণ হল-

১) নতুন স্থান নির্বাচনঃ বাদশাহ শাজাহান তাঁর রাজধানী স্থাপন করার জন্য পুরোনো দিল্লির অংশ বাদ দিয়ে নতুন স্থান খুঁজছিলেন। এই কারণে তিনি শাহজাহানাবাদ শহরটি নির্মাণ করেন।

২) সার্বভৌমত্ব প্রকাশঃ বাদশাহ শাজাহান শাহজাহানাবাদ শহরটি নির্মাণ করে নিজের সার্বভৌমত্ব প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন।

৩) ভারতীয় সত্তার প্রকাশঃ শাজাহান শাহজাহানাবাদ শহরটি তৈরি করার সময় ইসলামি রীতির সঙ্গে হিন্দু শাস্ত্রের মিল ঘটিয়েছিলেন। এভাবে একজন মোগল শাসক হিসেবে তাঁর মধ্যে ভারতীয় সত্তার প্রকাশ দেখা যায়।

4) ইউরোপীয় কোম্পানির কুঠিগুলি কেমন ছিল?

উত্তরঃ ভারতে ইউরোপীয় কোম্পানির কুঠিগুলির চিত্র ছিল ইতিবাচক কারণ-

১) অবস্থানঃ ভারতে ইউরোপীয় কোম্পানির কুঠিগুলি সাধারণত সমুদ্র তীরবর্তী উপকূলভাগে নির্মিত হত। কুঠিগুলির এই অবস্থানের কারণে জাহাজে করে মালপত্র আমদানি-রপ্তানির সুবিধা হত।

২) গঠনঃ গঠনগত দিক থেকে কুঠিগুলি সুরক্ষিত ছিল। এখানে মালপত্র রাখার গুদাম ঘরের পাশাপাশি থাকবার মতো ঘরও ছিল।

৩) সুরক্ষাঃ নিরাপত্তার জন্য কুঠিগুলিতে অস্ত্রশস্ত্র থাকত। এর ফলে ইউরোপীয় বণিকদের মালপত্র সুরক্ষিত থাকত।

5) মোগল শাসকরা কীভাবে ব্যাবসাবাণিজ্যে উৎসাহ দিতেন?

উত্তরঃ মোগল শাসকরা বিভিন্ন উপায়ে বণিকদের ব্যাবসাবাণিজ্যে উৎসাহ দিতেন। যেমন-

১) শুল্কে ছাড়ঃ আমদানি-রপ্তানি শুল্কে ছাড় দিয়ে মোগল শাসকগণ বণিকদের উৎসাহ দিতেন। এতে বণিকদের লভ্যাংশ ও ব্যাবসার ক্ষেত্রে সুযোগ বেড়ে যেত।

২) বিদেশি বণিকদের সুবিধা দানঃ বিদেশি বণিক বা দূতদের রাজদরবারে আপ্যায়ন করে মোগল শাসকরা নানা সুযোগসুবিধা দান করতেন। অবশ্য বাণিজ্যিক সুযোগসুবিধা - আদায়ের ক্ষেত্রে বিদেশি বণিকদের আগ্রহ এবং উৎসাহও খুব একটা কম ছিল না।

৩) কুঠি নির্মাণে অনুমতি প্রদানঃ মোগল শাসকরা  বণিকদের ব্যাবসাবাণিজ্যে সুবিধা দেওয়ার জন্য কুঠি নির্মাণ, মুদ্রা ব্যবহার, গ্রাম কেনার অনুমতি দিতেন।

6) টীকা লেখোঃ মধ্যযুগের জল সংরক্ষণ।

উত্তরঃ মধ্যযুগের ভারতে জনসাধারণের সুবিধার জন্য সুলতানরা জলাধার খনন করার পাশাপাশি সেগুলি সংস্কার করতেন। ইলতুৎমিস আটকোণা জলাধার 'হৌজ-ই-শামসি' বা 'হৌজ-ই-সুলতানি' খনন করেছিলেন। আলাউদ্দিন খলজি খনন করেছিলেন চারকোণা জলাধার 'হৌজ-ই-আলাই' (পরবর্তী সময় 'হৌজ-ই-খাস)। গিয়াসউদ্দিন তুঘলক উঁচু বাঁধযুক্ত জলাধার তৈরি করেছিলেন। মধ্যযুগে সুলতানরা জল সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলেও জলের সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে পারেননি।

7) শাহজাহানাবাদের নাগরিক বসতিকে মিশ্র প্রকৃতির বলা হয় কেন?

অথবা, টীকা লেখোঃ শাহজাহানাবাদের নগরজীবন।

উত্তরঃ শাহজাহানাবাদে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বিভিন্ন ধরনের বাড়িতে বসবাস করত। সুসজ্জিত বাগানবাড়িতে থাকত রাজপুত্র এবং উচ্চপদস্থ আমিররা। বড়ো ও সুন্দর বাড়িগুলিকে বলা হত 'হাভেলি'। ধনী বণিকরা টালি, ইট ও পাথরের তৈরি বাড়িতে থাকত। সাধারণ ব্যবসায়ীরা দোকানের উপর বা পিছনের ঘরে থাকত। নীচুস্তরের বাড়িগুলি 'মকান' ও 'কোঠি' নামে অভিহিত হত। এ ছাড়া ছিল ছোটো ঘর (কোঠরি), কুঁড়ে ঘর ইত্যাদি। মিশ্র প্রকৃতির এই বসতি অঞ্চলে কোনো বিভাজন ছিল না।

8) মধ্যযুগে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সম্বন্ধে লেখো।

উত্তরঃ মধ্যযুগের ভারতে প্রধানত জলপথ ও স্থলপথে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য চলত। হাট, মান্ডি, গঞ্জ, শহর প্রভৃতি ছিল এই সময়কার বাণিজ্যের কেন্দ্র। খাদ্যশস্য, খাবার, তেল, ঘি, সবজি, ফল প্রভৃতি ছিল অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের উল্লেখযোগ্য দ্রব্য। তা ছাড়া সুতিবস্ত্র, রেশমবস্ত্র, মসলিন কাপড়, হস্তশিল্পজাত দ্রব্যও এই ধরনের বাণিজ্যে বিশেষ স্থান পেত।

9) মধ্যযুগের ভারতে বহির্বাণিজ্য সম্বন্ধে লেখো।

 উত্তরঃ মধ্যযুগের ভারতে বহির্বাণিজ্য প্রধানত সমুদ্রপথে জাহাজে করে চলত। ওই সময়কার আমদানি দ্রব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল-ঘোড়া, টিন, তামা, সোনা, রুপো, সুতিবস্ত্র, আফিম, মশলা, রেশমবস্ত্র প্রভৃতি। গুজরাটি, মালাবার, তামিল, তেলুগু, বাঙালি বণিকরা বহির্বাণিজ্যে অংশ নিত। অন্যদিকে পোর্তুগিজ, দিনেমার, ইংরেজ বণিকদের আগমনে তখন থেকে ভারতের বহির্বাণিজ্যে প্রসার ঘটতে থাকে।

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাসের আরও অধ্যায় থেকে প্রশ্ন ও উত্তর-

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area