Ads Area


জ্ঞানচক্ষু (আশাপূর্ণা দেবী) প্রশ্ন ও উত্তর || দশম শ্রেণীর বাংলা || Gyanchakhu Questions And Answers class-10

জ্ঞানচক্ষু
(আশাপূর্ণা দেবী)

 প্রিয় মাধ্যমিক শিক্ষাথীর্র,

তোমাদের আজ শেয়ার করতে চলেছি Class-10 বাংলা বই থেকে জ্ঞানচক্ষু গল্পের কিছু প্রশ্নপত্র রয়েছে। লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর লেখা জ্ঞানচক্ষু এই গল্পটি। তাই পরীক্ষা জন্য এই গল্প থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর তোমাদের কাছে তুলে ধরা হল, নিচে নতুন পোস্টে এই গল্পের সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর আছে,তোমরা ভালো করে পড়ে নাও।

দশম শ্রেণীর বাংলা || জ্ঞানচক্ষু (আশাপূর্ণা দেবী) || Gyanchakhu Questions And Answers Class-10


দশম শ্রেণীর বাংলা || জ্ঞানচক্ষু (আশাপূর্ণা দেবী) || Gyanchakhu Questions And Answers Class-10


1) অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি

১) "এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের"-কোন্ বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল?

উত্তর: একজন লেখকও যে সাধারণ মানুষের মতো হতে পারে, তাদের আচরণও যে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই হয়ে থাকে সেই বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল।

২) "অনেক বই ছাপা হয়েছে"-কার অনেক বই ছাপা হয়েছে?

উত্তর: তপনের ছোটোমেসো, যিনি আসলে লেখক, তাঁরই অনেক বই ছাপা হয়েছে।

৩) "তবে তপনেরই বা লেখক হতে বাধা কী?" তপনের লেখক হতে বাধা ছিল কেন? অথবা, তপনের লেখক হতে বাধা নেই কেন?

উত্তর: তপন মনে করত লেখকরা তার মতো সাধারণ মানুষ নয়, হয়তো তাঁরা অন্য গ্রহের জীব-তাই তার লেখক হতে বাধা ছিল।

অথবা, নতুন মেসোকে দেখে তপন বুঝতে পারল তিনি তাদের মতোই মানুষ, আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয়। তাই তপনেরও লেখক হতে কোনো বাধা নেই।

৪) তপনের লেখা গল্প দেখে তার ছোটোমেসো কী বলেছিলেন?

উত্তর: তপনের লেখা গল্প দেখে তার ছোটোমেসো বলেছিলেন গল্পটা ভালোই হয়েছে। শুধু একটু সংশোধন করে দেওয়া দরকার। তাহলেই তার লেখা ছাপতে দেওয়া যাবে।

৫) কী কারণে মেসোমশাই তপনের লেখা ভালো বলেছিলেন?

উত্তর: ছোটোমেসোমশাইয়ের নতুন বিয়ে হয়েছে, তাই শ্বশুরবাড়ির একটি বাচ্চা ছেলেকে খুশি করতেই মূলত তপনের মেসোমশাই লেখা ভালো হয়েছে বলেছিলেন।

৬) 'মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা'-কোন্ কাজকে মেসোর উপযুক্ত কাজ বলে ছোটৌমাসি মনে করেন?

উত্তর: তপন একটা গল্প লিখেছিল। তার লেখক মেসোমশাই সেই গল্প 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপার ব্যবস্থা করে দিলে সেটাই মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে বলে ছোটোমাসি মনে করেন।

৭) লেখার প্রকৃত মূল্য কে বুঝবে বলে তপন মনে করেছিল? 

উত্তর: তপনের ছোটোমেসো লেখালেখি করতেন। তাঁর অনেকগুলো বই ছিল। তিনি যেহেতু অনেক বই লিখেছেন, তাই লেখক মানুষ হিসেবে তিনিই লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝবেন বলে তপন মনে করেছিল।

৮)"লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝলে নতুন মেসোই বুঝবে।"-লেখার প্রকৃত মূল্য কেবল নতুন মেসোই বুঝবে কেন?

উত্তর: নতুন মেসো একজন নামকরা লেখক। তাই তিনিই তপনের লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝবেন।

৯) 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় লেখা ছাপা প্রসঙ্গে তপনের মেসোমশাই কী বলেছিলেন?

উত্তর: 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তপনের মেসোমশাইয়ের পরিচিত। তপনের লেখা দেখে মেসোমশাই বলেছিলেন, তিনি যদি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার সম্পাদককে লেখা ছাপানোর কথা বলেন তাহলে সম্পাদকমশাই না বলতে পারবেন না।

১০) গল্প লেখার পর তপনের কী মনে হয়েছিল? 

 উত্তর: একটা গোটা গল্প সে লিখে ফেলেছে এটা ভেবেই তপনের সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল, মাথার চুল পর্যন্ত খাড়া হয়ে উঠল। সে ভাবল এখন তাকেও লেখক বলা যায়।

১১) তপন গল্প লিখে প্রথম কাকে পড়ে শুনিয়েছিল?

উত্তর: তপন গল্প লিখে প্রথম শুনিয়েছিল তার থেকে আট বছরের বড়ো ছোটোমাসিকে। কারণ ছোটোমাসি ছিল তার বন্ধুর মতোই।

১২) তপনের লেখা গল্প পড়ে ছোটোমাসি কী বলেছিল?

উত্তর: তপনের লেখা গল্প পড়ে ছোটোমাসি তাকে বাহবা জানিয়ে বলেছিল মেসোমশাইকে দেখিয়ে তপনের গল্প পত্রিকায় ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেবে।

১৩) "তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।" তপনের এই অবস্থার কারণ কী?

উত্তর: নতুন মেসো তপনের লেখাটা কারেকশান করে ছাপিয়ে দিতে চাইলে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।

১৪) "আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন-" তপন কী দেখতে পাচ্ছিল?

উত্তর: তপন দেখতে পাচ্ছিল যে, লেখক মানে আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয়, তিনি তপনদেরই মতো মানুষ।

১৫) "ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয়।"-ছোটোমাসি কোন দিকে ধাবিত হয়?

উত্তর: মেসোমশাই যেখানে দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন সেদিকে ছোটোমাসি ধাবিত হয়।

১৬) "তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয়।"- তপনের এই পুলকের কারণ কী?  

উত্তর: তপনের মাসি তপনের লেখা নিয়ে মেসোমশাইয়ের কাছে গিয়ে হইচই করলে সে পুলকিত হয় কারণ তার লেখার মূল্য একমাত্র মেসোমশাইয়ের পক্ষেই বোঝা সম্ভব।

১৭)"এইসব মালমশলা নিয়ে বসে।"-কীসের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা গল্প লিখতে গিয়ে যে রাজারানির গল্প, খুন-জখম অ্যাকসিডেন্ট, না খেতে পেয়ে মরে যাওয়া ইত্যাদিকে বিষয় করে সেসবের কথা বলা হয়েছে।

১৮) "এটা খুব ভালো।'-বক্তার একথা বলার কারণ কী ছিল?

উত্তর: তপন যে শুধু তার অভিজ্ঞতা আর অনুভূতির বিষয় নিয়ে গল্প লিখেছে তার প্রশংসা করেই তপনের মেসোমশাই মন্তব্যটি করেন।

১৯) "আর তোমরা বিশ্বাস করবে কিনা জানি না..." কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: একজায়গায় বসে তপনের একটা গল্প লিখে ফেলা প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করা হয়েছে।

২০)"যেন নেশায় পেয়েছে।"-কীসের কথা বলা হয়েছে? 

উত্তর: তপনের গল্প লেখার নিরলস চেষ্টার 'কথা বলা হয়েছে। হোম টাস্ক ফেলে রেখে, লুকিয়ে লুকিয়েও সে গল্প লিখে গেছে।

২১) "... এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা।"-কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে? 

উত্তর: ছোটোমাসি আর মেসোমশাইয়ের 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসার কথা বলা হয়েছে।

২২) "বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।'-কেন তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে?

উত্তর: তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা ছোটোমাসি আর মেসোমশায়ের কাছে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকাটি দেখে তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে, কারণ তাতেই তার গল্প প্রকাশের কথা ছিল।

২৩)"পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?”-কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে? 

উত্তর: ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পেয়ে তপনের গল্প হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরছে, এই ঘটনাকেই অলৌকিক বলা হয়েছে।

২৪) "তা ঘটেছে, সত্যিই ঘটেছে।" কী ঘটেছে?

উত্তর: তপনের নিজের লেখা গল্প 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। এটিই হল ঘটনা। 

২৫) "সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়"-এই শোরগোলের কারণ কী ছিল?

উত্তর: সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কারণ 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল।

২৬) "ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে।"-কোন্ কথাটা? 

উত্তর: তপনের গল্প কাঁচা লেখা হওয়ায় তাতে একটু-আধটু কারেকশন করতে হয়েছে-তপনের মেসোমশাইয়ের এই কথাটা ছড়িয়ে পড়ে।

২৭) "আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।"-কোন্ চেষ্টার কথা বলা হয়েছে? 

উত্তর: তপনের মেজোকাকু বলেছিলেন যে তপনের মেসোমশাইয়ের মতো কেউ থাকলে তাঁরাও গল্প লেখার চেষ্টা করতেন।

 ২৮) "তপন আর পড়তে পারে না।"-কেন তপন আর পড়তে পারে না?

উত্তর: নিজের প্রকাশিত গল্প পড়তে গিয়ে তপন যখন দেখে মেসোমশাই তার পুরোটাই কারেকশন করে দিয়েছেন, তখনই সে আর পড়তে পারে না।

২৯) "শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন-" তপনের সংকল্প কী ছিল?

উত্তর: তপন সংকল্প করেছিল যে, যদি কখনও লেখা ছাপাতে হয়, তাহলে তপন নিজে গিয়ে তা পত্রিকায় দেবে। 

৩০)"যদি কখনো লেখা ছাপতে দেয় তো, তপন নিজে গিয়ে দেবে।"-তপনের এমন সিদ্ধান্তের কারণ কী?

উত্তর: পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পে তপন নিজের মূল লেখাটির কোনো মিল পায়নি বলে তার এমন সিদ্ধান্ত।

৩১)"কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল"- কোন্ কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর: তপনের ছোটোমেসোমশাই বই লিখতেন আর তাঁর বই ছাপাও হত। তপনের মনের মধ্যে লেখককে দেখার একটা সুপ্ত বাসনা ছিল। তার ধারণাই ছিল লেখকরা যেন অন্য জগতের মানুষ। লেখকদের অতিমানবত্ব নিয়ে সে মনের মধ্যে নানারকম আজগুবি ধ্যানধারণা পোষণ করত। একজন লেখককে সামনে থেকে দেখা তার কাছে এক স্বপ্নপূরণের মতো ছিল। তাই ছোটোমেসো বই লেখেন আর সেই বই ছাপা হয় শুনে তপনের চোখ মার্বেলের মতো হয়ে গিয়েছিল।

৩২)"নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের"- কীভাবে তপনের নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল? 

উত্তর: আশাপূর্ণা দেবীর লেখা 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপন, লেখকদের নিয়ে নিজের মনের মধ্যে এক অদ্ভুত ধ্যানধারণা পোষণ করত। সে ভাবত বোধহয় লেখকদের আচার-আচরণ সবকিছুই সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা। তপনের ছোটোমেসোমশাই একজন লেখক ছিলেন। কলেজে ছুটি উপলক্ষ্যে তিনি তপনদের বাড়িতে এসে কিছুদিন ছিলেন। তপন দেখল নিছক সাধারণ মানুষের মতোই তাঁর সমস্ত আচার-আচরণ। ছোটোমেসোকে দেখে লেখকরা যে আসলে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষ তা সে জানতে পারল আর সেটা জানার পর তার যেন জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল।

৩৩) "তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয়।" মাসির হইচই এবং তাতে তপনের পুলকিত হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: তপন একটা গল্প লিখেছিল। তার ছোটোমাসি সেই গল্পটা দেখে তপনকে উৎসাহিত করার জন্য হইচই শুধু করে দেন। এরপর গল্পটা তিনি তপনের নতুন মেসোর হাতে দেন। নতুন মেসো কলেজের অধ্যাপক এবং লেখক। তিনি অবশ্যই তপনের গল্পটার ভালোমন্দ বিচার করতে পারবেন। নতুন মেসোর দৃষ্টিগোচর হওয়াতে তপন রোমাঞ্চে পুলকিত হয়ে ওঠে।

৩৪)"রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই"- এই কথাটি বলার কারণ কী ছিল?

উত্তর: 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপন একটা গল্প লিখে তার ছোটোমাসিকে শোনায়। ছোটোমাসি লেখাটি হাতে পাওয়ামাত্র তার স্বামীকে পড়ে দেখতে বলে। তপনের ছোটোমেসো বই লিখতেন। জহুরি যেমন কোন্টা আসল রত্ন আর কোন্টা নয় তা বলতে পারেন, তেমনই একজন লেখক, বলতে পারেন কোন্ লেখা ভালো আর কোন লেখাটা খারাপ। তাই তপন ভেবেছিল এই লেখার আসল মূল্য যদি কেউ বোঝেন, তাহলে তিনি তার মেসোমশাই।

৩৫)"মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা।" কোল্টি, কেন মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে বলে বক্তা মনে করেছে?

উত্তর: 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন একটা গল্প লিখেছিল। ছোটোমাসি সেই গল্পটি ছাপাবার উদ্দেশ্যে তপনের মেসোর হাতে দেন। মেসো গল্পটি পড়েন এবং বলেন যে, একটু কারেকশান করে দিয়ে ছাপতে দেওয়া চলে। তপনের উদ্যোগকে উৎসাহ দিতে ছোটোমাসি তাঁর স্বামীকে গল্পটি ছাপিয়ে দিতে অনুরোধ করেন, আর মনে করেন সেটাই হবে মেসোর উপযুক্ত কাজ।

৩৬) সবাই তপনের গল্প শুনে হাসলেও, তপনের ছোটোমেসো তাকে কী বলেছিলেন?

উত্তর: তপনের কাঁচা হাতের লেখা গল্প শুনে সবাই হাসলেও তার ছোটোমেসো তাকে উৎসাহই দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন তার বয়সি সমস্ত ছেলেরা রাজারানির গল্প আর নয়তো খুন, জখম, অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে গল্প লেখে। গতানুগতিক ছকের বাইরে তারা কেউ বেরোতে চায় না। কিন্তু তপন এত অল্প বয়সেই চেনা গন্ডির বাইরে বেরিয়েছে। রাজারানি, অ্যাক্সিডেন্টের গল্প বাদ দিয়ে সে নিজের ভরতি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্প লিখেছে, নিজের অনুভূতির বিষয় নিয়ে গল্প লিখেছে, যা প্রশংসার যোগ্য।

৩৭)"তপন বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকায়।" তপনের বিহ্বলতার কারণ কী?

উত্তর: সৃষ্টিতেই স্কুরিত হয় স্রষ্টার আশা ও আকাঙ্ক্ষা। পরিতৃপ্তির আনন্দে স্রষ্টা তখন হয়ে পড়েন বিহবল ও আত্মহারা। তপনের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল। আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে যে গল্পটি সে লিখেছিল সেটি তার আশা-আকাঙ্ক্ষার পূর্ণরূপ। সেটি পত্রিকায় ছাপা হবে- এই আশা তপনকে পুলকিত করে। তা ছাড়া তার নতুন মেসো তপনের লেখাটার প্রশংসা করেছিল। একজন লেখকের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে তপন আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়ে।

৩৮)"গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের"-তপনের গায়ে কেন কাঁটা দিয়ে উঠল?

উত্তর: তপন গল্পের বই পড়তে ভালোবাসত। ছোটোবেলা থেকেই তপন ন রাশি রাশি গল্প শুনেছে আর বস্তা বস্তা বই পড়েছে। একদিন দুপুরে হ যখন চারিদিক নিস্তব্ধ, সে একটা খাতা আর কলম নিয়ে সারাদুপুর - বসে একটা আন্ত গল্প লিখে ফেলে। গল্প লেখার পর সে নিজে গোটা গল্পটা লিখেছে ভেবে নিজেই অবাক হয়ে গেছিল। গল্প শেষ করার পদ্যর আনন্দে, উত্তেজনায় তপনের সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল।

৩৯) হঠাৎ ভয়ানক একটা উত্তেজনা অনুভব করে তপন।"তপনের উত্তেজনার কারণ বর্ণনা করো।

উত্তর: নতুন মেসো তপনের লেখা গল্প নিয়ে যাওয়ার পর তার উৎসাহ আরও বৃদ্ধি পায়। এই উৎসাহের আতিশয্যে তপন হোমটাস্কের খাতায় আর-একটি গল্প লিখে ফেলে। একান্ত নির্জনে একাসনে বসে লেখা গল্পটি পড়ে সে নিজেই বিস্মিত হয়। নিজের প্রতি বিশ্বাস জন্মায় তার। তাহলে সত্যিই সে একজনাবজ লেখক হতে চলেছে- এই ভাবনাই তাকে উত্তেজিত করে।

৪০) তপনের বাড়িতে তার কী নাম কেন প্রচলিত হয়েছিল?

উত্তর: তার লেখক ছোটোমেসোমশাই-এর থেকে বাহবা লাভের পর তপন গল্প লেখার বাড়তি অনুপ্রেরণা পায় এবং গল্প লেখার ব্যাপারে আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। তার লেখা প্রথম গল্পটি সে বিশ্বাস করে ছোটোমাসিকে পড়তে দিলেও তপনের কাঁচা হাতে লেখা গল্পটি এভাবে সকলের কানে পৌঁছোয় এবং তাঁরা খানিক মশকরা ও ঠাট্টা মিশিয়েই তপনের নামের সঙ্গে 'কবি', 'সাহিত্যিক', 'কথাশিল্পী' অভিধাগুলি জুড়ে দেন।

৪১)"বুকের রক্ত চলকে ওঠে তপনের।"-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা লেখো।

উত্তর: মেসোর হাতে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা দেখে তপনের এরূপ অবস্থা হয়েছিল। তপনের লেখা গল্পটি তার নতুন মেসো 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে নিয়ে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন তপন সেই অপেক্ষায় বসেছিল। তারপর একসময় সে ভুলেই গিয়েছিল গল্পটির কথা। একদন আকস্মিকভাবেই তার ছোটোমাসি আর মেসো তাদের বাড়ি বেড়াতে এলেন। তপন মেসোর হাতে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা দেখতে পেল। তার গল্প ছাপা হয়েছে-এই প্রত্যাশাতেই তার বুকের রক্ত যেন চলকে উঠল।

৪২)"এতক্ষণে বইটা নিজের হাতে পায় তপন।"-কোন্ বইটার কথা বলা হয়েছে? সেটি হাতে পেয়ে তপন কী দেখতে পেয়েছিল? 

উত্তর: 'সন্ধ্যাতারা' নামক পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল। বই বলতে এখানে ওই পত্রিকাকেই বোঝানো হয়েছে।

 তীব্র উত্তেজনা আর কৌতূহল নিয়ে তপন পত্রিকাটির পাতা ওলটায়। নিজের গল্প পড়তে গিয়ে সে চমকে ওঠে। প্রত্যেকটি লাইন তার কাছে আনকোরা নতুন মনে হয়। তার লেখার সঙ্গে ছাপার অক্ষরের কোনো মিল নেই। নিজের লেখা গল্পের মধ্যে সে আর নিজেকে খুঁজে পায় না।

৪৩) তপন তার লজ্জা কাটিয়ে কী পড়তে যায় এবং পড়তে গিয়ে সে কী দেখে?

উত্তর: ভরতি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে তপন একটা গল্প লিখেছিল। গল্পের নাম ছিল 'প্রথম দিন'। তপনের মেসোমশাই ছিলেন লেখক। তিনি তপনের গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপান। পত্রিকাটি হাতে পেয়ে তার মা তাকে লেখাটি পড়ে শোনাতে বললে প্রাথমিক লজ্জা ও জড়তাটুকু কাটিয়ে তপন পড়তে শুরু করে। পড়তে গিয়ে সে দেখে তার লেখাটা আগাগোড়াই ছোটোমেসো সংশোধন করেছেন। তপনের কাঁচা হাতের লেখা গল্প পুরোটাই বদলে তিনি নিজের পাকা হাতে সেটি লিখে দিয়েছেন।

৪৪)"সবাই শুনতে চাইছে তবু পড়ছিস না?" কী শুনতে চাওয়ার কথা বলা হয়েছে? তা না পড়ার কারণ কী?

উত্তর: 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হওয়া তপনের গল্পটি শুনতে চাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তপনের নতুন মেসো সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় গল্পটি ছাপিয়ে দিয়েছিলেন। সেটি নিয়ে তিনি তপনদের বাড়িতে এলে সবার মধ্যে একটা হইচই পড়ে যায়। তপনের মা তাকে গল্পটা পড়ে শোনাতে বলেন। কিন্তু গল্পটি পড়ে তপন হতবাক হয়ে যায়। গল্পটা এমনভাবে কারেকশান করা হয়েছে, যার মধ্যে তপন নিজেকে খুঁজেই পায়নি। সম্পূর্ণ নতুন একটা গল্প বলেই তার মনে হয়েছে। গভীর হতাশা আর দুঃখ তপনকে যেন বারুদ্ধ করেছিল। তাই সে গল্পটা পড়তে চায়নি।

৪৫) "তপনের মনে হয় আজ সবথেকে দুঃখের দিন"- তপনের এরকম মনে হওয়ার কী কারণ ছিল?

উত্তর: ছোটোমেসোমশাইয়ের উদ্যোগে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় তপনের লেখা গল্প ছেপে বেরোলে, সে তার মাকে গল্পটি পড়ে শোনাতে যায়। সে দেখে ছোটোমেসো সংশোধনের নামে সেই লেখার আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন। সে যে লেখাটা ছাপতে দিয়েছিল তার সঙ্গে ছেপে আসা লেখার কোনো মিল নেই। লজ্জায়, অপমানে তপন ভেঙে পড়ে। সে বুঝতে পারে তার লেখা কাঁচা হাতের, তবুও যদি সেই লেখাই ছাপা হত তাহলে তার মনে আনন্দ জন্মাত। আর ছাপা না হলেও এতটা দুঃখ তার হত না।

৪৬) "শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন"- তপন গভীরভাবে কী সংকল্প করেছিল?

উত্তর: ছোটোমেসোর দৌলতে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হলেও সে নিজের লেখা পড়তে গিয়ে দেখে যে গল্প তপন ছাপতে দিয়েছিল এটা আসলে সেই লেখাটা নয়। মেসোমশাই আগাগোড়াই লেখাটা সংশোধন করে নিজের পাকা হাতে গল্পটি লিখে দিয়েছেন। - অপমানে, লজ্জায় তপন সংকল্প করে যদি আর কোনোদিন লেখা - ছাপানোর হয়, সে নিজে গিয়ে তা ছাপতে দেবে। না ছাপলেও ক্ষতি নেই, অন্তত নিজের নামে অন্য কারও লেখা তাকে পড়তে হবে না।

৪৭) "তপনকে এখন 'লেখক' বলা যেতে পারে"- একথা মনে হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: তর্পন ছোটোবেলা থেকে অনেক বই পড়েছে। ফলে গল্প কীরকম হয় সেই সম্পর্কে তার মোটোমুটি একটা ধারণা হয়েছে। একদিন দুপুরে তপন তার ভরতির প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা গোটা গল্প লিখে ফেলে। গল্পটার নাম দেয় 'প্রথম দিন'। একটা গোটা গল্প নিজে লিখে ফেলেছে একথা ভেবে সে নিজেই অবাক হয়ে যায়,তাই তপনের বিশ্বাস ছিল, তাকেও এখন লেখক বলা যেতে পারে।

আরও পড়ুন-

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area