(চতুর্থ অধ্যায়) বাচ্য
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী,
তোমরা যারা দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ (চতুর্থ অধ্যায়) বাচ্য সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর খুঁজে চলেছ, আজকের এই নতুন পোস্টে তোমরা প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে, তাই আর সময় নষ্ট না করে নিচের প্রশ্ন উত্তর মনোযোগ সহকারে পড়ে নিতে পারো।
দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ || বাচ্য (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || Bachya Questions Answers Class-10
১) বাচ্য বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ব্যক্তিভেদে বাচনভঙ্গি অনুযায়ী কর্তা, কর্ম বা ক্রিয়াপদের প্রাধান্য নির্দেশ করে ক্রিয়াপদের রূপের যে পরিবর্তন ঘটে, তাকেই বলে বাচ্য (Voice)।
২) বাক্যে ক্রিয়াপদের রূপভেদের কারণ কী?
উত্তর: বাক্যে প্রকাশভঙ্গির তারতম্য অনুসারে ক্রিয়াপদের রূপভেদ ঘটে।
৩) সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুসারে বাচ্য কয় প্রকার?
উত্তর: সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুসারে বাচ্য চার প্রকার- (১) কর্তৃবাচ্য, (২) কর্মবাচ্য, (৩) ভাববাচ্য ও (৪)কর্মকর্তৃবাচ্য।
৪) কর্তৃবাচ্য বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে বাক্যবিন্যাসে বাক্যের কর্তা প্রাধান্য লাভ করে এবং ক্রিয়াপদটি সবসময়ই কর্তৃপদের অনুগামী হয়, তাকে কর্তৃবাচ্য বলে। যেমন: তোমরা আসছ কখন?
৫) কর্তৃবাচ্যের একটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: কর্তৃবাচ্যে কর্তাই প্রধান এবং সাধারণত তা বাক্যের উদ্দেশ্য অংশে অবস্থান করে।
৬) কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়ার রূপটি কেমন হয়?
উত্তর: কর্তৃবাচ্যে কর্তার পুরুষ ও বচন অনুসারে ক্রিয়া গঠিত হয়। যেমন: আমি বই পড়ি।
৭) কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়াটি সকর্মক কিংবা অকর্মক হলে কী ঘটে?
উত্তর: কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়াটি অকর্মক হলে তাকে ভাববাচ্যে এবং সকর্মক হলে তাকে কর্মবাচ্যে রূপান্তরিত করা যায়।
৮) কর্মবাচ্য বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে বাচ্যে কর্মপদটি কর্তৃপদে পরিণত হয়ে বাক্যে প্রাধান্য পায় এবং ক্রিয়া কর্মের অনুগামী হয়, তাকে কর্মবাচ্য বলে। যেমন: আমার দ্বারা একাজ হবে না।
৯) কর্মবাচ্যে ক্রিয়া কার অনুগামী হয়?
উত্তর: কর্মবাচ্যের ক্রিয়াটি কর্মপদের অনুগামী হয়।
১০) কর্মবাচ্যের একটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: অকর্মক ক্রিয়ার কর্ম নেই, তাই অকর্মক ক্রিয়ার কর্মবাচ্য হয় না। সবসময় সকর্মক কিংবা দ্বিকর্মক ক্রিয়ার কর্মবাচ্য হয়। যেমন-মায়ের দ্বারা বোনকে ভূগোল পড়ানো হচ্ছে। বাবর কর্তৃক দিল্লির সিংহাসন অধিকৃত হল ইত্যাদি।
১১) কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়াপদটির রূপ কী?
উত্তর: কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়াপদটি সাধারণত মৌলিক অথবা যৌগিক দক্রিয়া হয়।
১২) কর্মবাচ্যের ক্রিয়াপদটির রূপ কেমন হয়?
উত্তর: কর্মবাচ্যের ক্রিয়াপদটি সাধারণত সংযোগমূলক
ক্রিয়ায় করে পরিণত হয়।
১৩) বাংলায় কর্মবাচ্যের ক্রিয়াপদটি কীভাবে গঠিত হয়?
উত্তর: বাংলায় অধিকাংশ ক্রিয়ার কর্মবাচ্যের কোনো রূপ হয় না বলে ক্রিয়াবাচক বিশেষণের সঙ্গে 'হ'-ধাতু যুক্ত করে কর্মবাচ্যের ক্রিয়াপদটি গঠিত হয়।
১৪) ভাববাচ্য বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে বাক্যবিন্যাসে সাধারণত ক্রিয়ার ভাবটিই প্রধান বলে বিবেচিত হয়, তাকে ভাববাচ্য বলে। যেমন: আমার স্কুলে আসা হল।
১৫) ভাববাচ্যের একটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: ভাববাচ্যের কর্তা বা কর্তৃপদ সম্বন্ধ পদ বা কর্মকারকের ('-র', যেটি '-এর', '-র', '-কে') বিভক্তিযুক্ত হয়। যেমন: আমাদের খাওয়া হয়েছে। অনেক সময় আবার কর্তা উহ্যও থাকে। যেমন-পরে আসা হল।
১৬) কর্মকর্তৃবাচ্য বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে বাক্যে কর্তার উল্লেখ থাকে না বরং কর্মস্থানীয় কর্তার গান মতো কাজ করে তাকে কর্মকর্তৃবাচ্য বলে। যেমন: বাঁশি বাজে। ঢোল বাজে। ঘুড়ি ওড়ে। পাতা নড়ে ইত্যাদি।
১৭) কোন্ বাচ্যের রূপান্তর সম্ভব নয়?
উত্তর: কর্মকর্তৃবাচ্যের রূপান্তর সম্ভব নয়।
১৮) ভাববাচ্যে কর্তার ভূমিকাটি কেমন হয়?
উত্তর: ভাববাচ্যে কর্তার ভূমিকা গৌণ, ক্রিয়াই হল প্রধান।
১৯) কর্তৃবাচ্য থেকে ভাববাচ্যে রূপান্তরের একটি নিয়ম লেখো।
উত্তর: কর্তৃবাচ্যের ক্রিয়ার মূল ধাতুর সঙ্গে 'আ' প্রত্যয় যোগ করে। প্রিয়াবিশেষ্য পদ গঠন করা হয় এবং এরপর কোথাও 'হ' বা খা' ধাতুর আগমন ঘটে। যেমন: ওখানে বেশ বেড়ানো হল।
২০) কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্যে রূপান্তরের একটি নিয়ম লেখো।
উত্তর: কর্তৃবাচ্যের কর্তার সঙ্গে 'র' বা 'এর' বিভক্তি যোগ করে; তার সঙ্গে 'দ্বারা', 'দিয়ে', 'কর্তৃক' প্রভৃতি অনুসর্গের ব্যবহার। ঘাটে। যেমন: অলকাই একাজ করেছে। > অলকার দ্বারাই একাজ করা হয়েছে।
২১) ভাববাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্যে রূপান্তরের একটি নিয়ম লেখো।
উত্তর: কর্তৃবাচ্যের কর্তার সঙ্গে 'র' বা 'এর' বিভক্তি যোগ করে; তার সঙ্গে দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক প্রভৃতি অনুসর্গের ব্যবহার ঘটে।
২২) বাচ্যান্তরের সময় কী কী অক্ষুণ্ণ থাকে?
উত্তর: বাচ্যান্তরের ক্ষেত্রে ভাষারীতি (সাধু বা চলিত) এবং ক্রিয়ার ভাব কিংবা কালের রূপটি অক্ষুণ্ণ থাকে।
২৩) বিকল্প শ্রেণিবিভাগ অনুসারে বাচ্য কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর: বিকল্প শ্রেণিবিভাগ অনুসারে বাচ্য দুই প্রকার-কর্তৃবাচ্য ও ভাববাচ্য।
২৪) কোন্ বাচ্যটি বাংলা ভাষার স্বাভাবিক প্রয়োগবিধি নির্ভর নয়?
উত্তর: কর্মবাচ্যটি বাংলা ভাষার স্বাভাবিক প্রয়োগবিধি নির্ভর নয়। কারণ কথা বলার সময় আমরা মোটেই এভাবে কথা বলি না।
২৫) কর্মকর্তৃবাচ্যকে কর্তৃবাচ্যের অন্তর্ভুক্ত করার একটি কারণ লেখো।
উত্তর: ব্যাকরণের ক্ষেত্রে ঘটনাটি যে ঘটাচ্ছে এবং যে ঘটনাটি ঘটছে-বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়াটি কার সঙ্গে সাযুজ্য লাভ। করেছে সেটাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই কর্মকর্তৃবাচ্যকে ঘটিত-কর্তৃবাচ্যের অন্তর্ভুক্ত করাই সংগত।
২৬) বাংলা বাক্য সংগঠনে বাচ্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বাংলা বাচ্যের যথার্থ স্বরূপ নির্ধারণ করতে গিয়ে বলা যায়, বাক্য সংগঠনে কখনও প্রকাশ্য কর্তা বা উদ্দেশ্যের প্রাধান্য স্বীকৃত হয় আবার কোথাও কর্তাকে গৌণ করে ক্রিয়া-ঘটনাটিকে মুখ্য করে তোলা হয়।
২৭) কর্তৃবাচ্য কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তর: কর্তৃবাচ্য দুই প্রকার-ঘটক-কর্তৃবাচ্য এবং ঘটিত- কর্তৃবাচ্য।
২৮) ভাববাচ্য কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তর: ভাববাচ্য তিন প্রকার-সম্বন্ধ কর্তা ভাববাচ্য, গৌণ কর্মকর্তা ভাববাচ্য এবং লুপ্ত কর্তা ভাববাচ্য।
২৯) উদাহরণ দাও: ঘটক-কর্তৃবাচ্য
উত্তর: আমি বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে দু-একটাই বললাম।
৩০) উদাহরণ দাও: ঘটিত-কর্তৃবাচ্য
উত্তর: মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।
৩১) উদাহরণ দাও: সম্বন্ধ কর্তা ভাববাচ্য
উত্তর: আমার পক্ষে এ কথা বলা ঠিক হবে না।
৩২) উদাহরণ দাও: গৌণ কর্মকর্তা ভাববাচ্য
উত্তর: তোমার আর কিছু করার আছে কি?
৩৩) উদাহরণ দাও : লুপ্ত কর্তা ভাববাচ্য
উত্তর: লুপ্ত কর্তা ভাববাচ্য : এত ঠান্ডা খাবার খাওয়া যায় না।
আরও পড়ো-