(প্রথম অধ্যায়) কারক ও অ- কারক সম্পর্ক
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী,
তোমরা যারা দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ (প্রথম অধ্যায়) কারক ও অ- কারক সম্পর্ক থেকে প্রশ্ন উত্তর খুঁজে চলেছ, আজকের এই নতুন পোস্টে প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে, তাই আর সময় নষ্ট না করে নিচের প্রশ্ন উত্তর মনোযোগ সহকারে পড়ে নিতে পারো।
দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ || কারক ও অ- কারক সম্পর্ক (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || Karaka O A- karaka Samparka Questions Answers
১) কারক কাকে বলে?
উত্তর: বোক্যের বিশেষ্য বা বিশেষ্য স্থানীয় নামপদের সঙ্গে বাক্যস্থিত সমাপিকা ক্রিয়াপদের যে সম্বন্ধ তাকেই কারক বলে।
২) কারক-চিহ্ন বা বিভক্তি চিহ্ন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে সমস্ত চিহ্ন (ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ বা সার্থক শব্দ) বাক্যের ক্রিয়ার সঙ্গে বাক্যান্তর্গত নামপদের এবং নামপদগুলির পরস্পরের মধ্যে সম্বন্ধকে সুনিশ্চিত করে, তাদেরকেই কারক-চিহ্ন বা বিভক্তি-চিহ্ন বলা হয়।
৩) বাংলা ভাষায় কারক চিহ্ন হিসেবে কাদের ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: বাংলা ভাষায় মৌলিক বিভক্তি চিহ্ন, অনুসর্গ এবং নির্দেশককে কারক চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৪) মৌলিক বিভক্তি চিহ্ন বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে সমস্ত অর্থহীন ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ শব্দের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ফলে, তারা পদে রূপান্তরিত হয়, তাদেরকে মৌলিক বিভক্তি চিহ্ন বলে। যেমন : 'এ', 'তে', 'কে', 'রে', 'এর', 'র', 'য়' প্রভৃতি।
৫) অনুসর্গ বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে সমস্ত অব্যয় বা সার্থক শব্দ বিশেষ্য কিংবা বিশেষ্য স্থানীয় শব্দের সঙ্গে কারক-চিহ্ন হিসেবে যুক্ত হয়ে সেই শব্দগুলিকে পদে রূপান্তরিত করে, তাদের বলা হয় অনুসর্গ। যেমন: জন্য, থেকে দিয়ে প্রভৃতি। আলমারি থেকে আনো।
৬) নির্দেশক কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর: বাক্যের পদাশ্রিত যেসব চিহ্ন একবচন বা বহুবচনকে স্পষ্ট করে তোলে তারাই হল নির্দেশক। একবচনকে বোঝাবার প্রয়োজনে সংখ্যাবাচক টি, টা, খানা, খানি এবং বহুবচন বোঝাতে গণ, বৃন্দ, সব, সমূহ প্রভৃতি নির্দেশকও পদের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
৭) শব্দবিভক্তি বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি যোগ করে শব্দকে নামপদে রূপান্তরিত করা হয়, তাকে শব্দবিভক্তি বলে। যেমন: 'কে', 'রে' প্রভৃতি।
৮) বিভক্তি কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর: প্রথাগতভাবে বিভক্তিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়- শব্দবিভক্তি এবং ধাতু বা ক্রিয়াবিভক্তি।
৯) ক্রিয়াবিভক্তি বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে বিভক্তি ধাতু বা ক্রিয়ামূলের (ক্রিয়াপদের মূল অবিভাজ্য অংশ) পরে যুক্ত হয়ে ধাতুকে ক্রিয়াপদে পরিণত করে, তাকে ধাতু বিভক্তি বলে। যেমন: 'ইয়াছি', 'এন' প্রভৃতি। আমি বই পুড়ি [পড় (ধাতু) + ই (বিভক্তি)]।
১০) তির্যক বিভক্তি বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে বিভক্তি একাধিক কারকে প্রযুক্ত হয় তাকে তির্যক বিভক্তি বলে। যেমন- 'এ'বিভক্তিটি বিশেষত অধিকরণ কারকের বিভক্তি-চিহ্ন হলেও, যে-কোনো কারকেই প্রযুক্ত হয়ে যে-কোনো পদকেই তির্যকভাবে অন্বিত করায়, তাকে তির্যক বিভক্তি বলা হয়। কত ধানে কত চাল (অপাদান)। এ কলমে লেখা যায় না (কর্ম)। রাজা গেলেন শিকারে (নিমিত্ত) ইত্যাদি। তবে 'কে', 'তে' প্রভৃতি অধিকাংশ বাংলা বিভক্তিই এই শ্রেণির।
১১) মৌলিক বিভক্তি-চিহ্নের সঙ্গে অনুসর্গের একটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর: মৌলিক বিভক্তি-চিহ্নগুলি শব্দের সঙ্গে জুড়ে একাত্ম হয়ে যায়, ফলে এদের পৃথক কোনো অস্তিত্ব থাকে না। কিন্তু অনুসর্গ পদের আগে বা পরে বসে বিভক্তির মতো কাজ করলেও সম্পূর্ণ পৃথকভাবে অবস্থান করে।
১২) মৌলিক বিভক্তি-চিহ্নের সঙ্গে নির্দেশকের একটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর: মৌলিক বিভক্তি-চিহ্ন পদের শেষ অংশে থাকে। যেমন: বনে (বন + 'এ') যাব। নির্দেশক পদের আগে বা পরে পদাশ্রিত অবস্থায় থাকে। (যেমন: খান পাঁচেক বাড়ি। গ্রামখানি সুন্দর।
১৩) অনুসর্গ এবং নির্দেশকের একটি পার্থক্য লেখো। উত্তর: অনুসর্গ একবচন কিংবা বহুবচনের বোধকে সম্পূর্ণ করে না।নির্দেশক বিশেষভাবে বচনের বোধকে সম্পূর্ণ করে।
১৪) নীচের বাক্যটির মধ্যে থেকে বিভিন্ন কারক চিহ্নগুলিকে চিহ্নিত করে দেখাও।
উত্তর: চাঁদের আলোয় গ্রামখানি ভাসছে। চাঁদের (চাঁদ + 'এর' বিভক্তি) আলোয় (আলো 'য়' বিভক্তি) গ্রামখানি (গ্রাম+ 'খানি' নির্দেশক) ভাসছে।
১৫) নীচের বাক্যটির মধ্যে থেকে বিভিন্ন কারক চিহ্নগুলিকে চিহ্নিত করে দেখাও :
উত্তর: বন্ধুগণ এখান থেকেই জঙ্গলের আরম্ভ। বন্ধুগণ (বন্ধু+হ 'গণ' নির্দেশক) এখান থেকেই ('থেকে' অনুসর্গ 'ই' বিভক্তি) হল জঙ্গলের (জঙ্গল+ 'এর' বিভক্তি) আরম্ভ।
১৬) কারক কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর: বিশেষ্য বা বিশেষ্য স্থানীয় নামপদের সঙ্গে বাক্যস্থিত ক সমাপিকা ক্রিয়াপদের সম্পর্কের বিচারে কর্তৃ (কর্তা), কর্ম, করণ, হো নিমিত্ত, অপাদান এবং অধিকরণ-কারক এই ছয় প্রকার।
১৭) কর্তৃ (কর্তা) কারক কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে পদটিকে আশ্রয় করে বাক্যস্থিত ক্রিয়া প্রকাশিত হয়, তাকে তা কর্তৃ (কর্তা) কারক বলে। যেমন: ওরা কাজ করে।
১৮) প্রযোজক কর্তা কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: কর্তা যখন কাজটি নিজে না করে অন্যকে দিয়ে করিয়ে এক নেয়, তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন: তিনি আমাকে এই দিয়ে কাজটি করালেন।
১৯) প্রযোজ্য কর্তা কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: অপরের প্রভাবে কেউ কোনো কাজ করলে, তাকে বলা হয় প্রযোজ্য কর্তা। যেমন: আমরা রাঁধুনিকে দিয়ে রান্না করালাম।
২০) সমধাতুজ কর্তা কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: অকর্মক ক্রিয়াটি যে ধাতু থেকে নিষ্পন্ন, সেই ধাতু থেরো লা নিষ্পন্ন পদ ক্রিয়ার কর্তা হলে, তাকে সমধাতুজ বা ধাত্নর্থক কর্তাওে না বলা হয়। যেমন: বাজনা বাজল।
২১) উক্ত কর্তা কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও। উত্তর: কর্তৃবাচ্যের কর্তায় শূন্য বিভক্তি হলে তাকে উক্ত কর্তা বলে। কল যেমন: মেবারের আকাশ ক্রোধে গর্জন করছে।
২২) ব্যতিহার কর্তা কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: কোনো ক্রিয়ার দুই কর্তার পারস্পরিক প্রতিযোগিতা বা বিবাদ বোঝালে সেই ক্রিয়ার দুই কর্তাকে ব্যতিহার কর্তা বলে। যেমন: রাজায় রাজায় যুদ্ধ বেধেছে।
২৩) নিরপেক্ষ কর্তা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: কোনো বাক্যে সমাপিকা এবং অসমাপিকা দু'ধরনের ক্রিয়ার বিভিন্ন কর্তা থাকলে, অসমাপিকা ক্রিয়ার নিয়ন্ত্রক কর্তাটিকে ইচ্ছা নিরপেক্ষ কর্তা বলে। যেমন: দাঁত থাকতে মানুষ দাঁতের মর্যাদা বোঝে না।
২৪) উপবাক্যীয় কর্তা কাকে বলে? উদাহরণ দাও। উত্তর: বাক্যস্থিত খণ্ডবাক্যকে উপবাক্য (clause) বলে। এক্ষেত্রে এই উপবাক্য যদি কর্তা হিসেবে ক্রিয়া নিষ্পন্ন করে, তখন তাকে উপবাক্যীয় কর্তা বলে। যেমন: তিনি এভাবে চলে যাবেন ভাবা ব যায়নি।
২৫) 'বহুক্রিয়ার এক কর্তা'-র একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: মেয়েটি শুধু গাইছে আর নাচছে আর হাসছে আর খেলছে।
২৬) কর্মকারক বলতে কী বোঝ? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: কর্তা যাকে আশ্রয় করে ক্রিয়া সম্পন্ন, সেই কর্মের সঙ্গে ক্রিয়ার ট্রেন অন্বয়কেই কর্মকারক বলে। যেমন: তোমার পতাকা যারে দাও।
২৭) দ্বিকর্মক বাক্যের গৌণকর্মটি কেমন হয়?
উত্তর: দ্বিকর্মক বাক্যের গৌণকর্মটি প্রাণীবাচক এবং বিভক্তিযুক্ত কা হয়। যেমন: আমি তোমাকে বইটা দিলাম। এখানে 'তোমাকে' হল গৌণকর্ম।
২৮) সমধাতুজ কর্ম বলতে কী বোঝ? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: কর্ম ও ক্রিয়া একই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হলে কর্মটিকে ধাতুর্থক অপ কর্ম বা সমধাতুজ কর্ম বলে। যেমন: প্রলয় নাচন নাচলে যখন, 'আম হে নটরাজ!
২৯) বাক্যাংশ কর্ম বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও। উত্তর: কোনো বাক্যাংশ যদি বাক্যের কর্ম হিসেবে কাজ করে, তবে অধিক তাকে বাক্যাংশ কর্ম বলে। যেমন: আমি ওকে রাস্তা দিয়ে যেতে দেখলাম।
৩০) অসমাপিকা ক্রিয়ারূপী কর্মের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে।
৩১) কর্মের বীলা বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও। উত্তর: কোনো বাক্যে একই কর্ম পুনরাবৃত্ত হলে, তাকে কর্মের বীপ্সা বলা হয়। 'বীপ্সা' বলতে পুনরাবৃত্তিকে বোঝায়। যেমন: যা যা বলেছি করেছ তো।
৩২) করণ কারক বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: কর্তা যে পদের সাহায্যে বা যা দিয়ে ক্রিয়া সম্পাদন করে, ক্রিয়াপদের সঙ্গে তার সম্পর্ককে করণ কারক বলে। যেমন: আমরা কোদালে মাটি কাটি।
৩৩) লক্ষণাত্মক করণ বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: কোনো লক্ষণ বা চিহ্ন বোঝাতে লক্ষণাত্মক বা উপলক্ষণে করণের ব্যবহার হয়। যেমন: জটায় চেনা যায় সন্ন্যাসী।
৩৪) সমধাতুজ করণ বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: কোনো বাক্যে ক্রিয়া বা ক্রিয়াজাত বিশেষণ পদটি যে ধাতু। থেকে নিষ্পন্ন করণ কারকটিও যদি সেই একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হয়, তখন তাকে সমধাতুজ করণ বলে। যেমন: কি বাঁধনে বেঁধেছো মোরে।
৩৫) নিমিত্ত কারক বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও। উত্তর: কোনো বাক্যের ক্রিয়া যখন কোনো বস্তু বা ব্যক্তির জন্য ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে, তখন তাকে নিমিত্ত কারক বলা হয়। যেমন: অন্ধজনে দেহ আলো।
৩৬) নিমিত্ত কারকে অনুসর্গ ব্যবহারের দৃষ্টান্ত দিয়ে একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: এখানে ছোটোদের জন্য ভালো স্কুল নেই।
৩৭) অপাদান কারক বলতে কী বোঝ? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: বাক্যের মধ্যে যা থেকে কোনো কিছুর পতন, স্খলন, নিঃসরণ, উৎপাদন, অপসারণ, গ্রহণ, ভীতি, বিচ্ছিন্ন বা বিশ্লিষ্ট হওয়াকে বোঝায়, ক্রিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের নাম অপাদান কারক। যেমন: দুধে দই হয়। তিলেতে তেল হয়।
৩৮) স্থানবাচক অপাদানের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: ট্রেনটা হাওড়া ছাড়ল। -এই বাক্যে ট্রেনের হাওড়া থেকে পৃথক হওয়া বা ছেড়ে যাওয়া বোঝানো হয়েছে। তাই এটি স্থানবাচক অপাদানের দৃষ্টান্ত।
৩৯) কালবাচক অপাদান বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: কোনো বাক্যে সময় বা কাল বোঝাতে কালবাচক অপাদানের ব্যবহার হয়। যেমন: তিনি কখন থেকে অপেক্ষা করছেন।
৪০) 'আমার চেয়ে তোমার বয়স কম।' এই বাক্যটি কী ধরনের অপাদান কারকের উদাহরণ?
উত্তর: 'আমার চেয়ে তোমার বয়স কম।' -দুই ব্যক্তির বয়সের তারতম্য বোঝানো হয়েছে বলে, এটি তারতম্যবাচক অপাদান কারকের দৃষ্টান্ত।
৪১) অধিকরণ কারক বলতে কী বোঝ? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে স্থান বা কাল কিংবা বিষয়কে আশ্রয় করে ক্রিয়াটি নিষ্পন্ন হয় তা হল অধিকরণ পদ আর ক্রিয়ার সঙ্গে এই পদের সম্পর্ককে অধিকরণ কারক বলে। যেমন: জঙ্গলে বাঘ ডাকে।
৪২) অধিকরণ কারক কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তর: অধিকরণ কারক তিন প্রকার- (১) স্থানাধিকরণ (২) কালাধিকরণ এবং (৩) বিষয়াধিকরণ বা ভাবাধিকরণ।
৪৩) একটি ব্যাপ্তিবাচক কালাধিকরণের উদাহরণ দাও।
উত্তর: শরৎ কালে কাশফুল ফোটে। (ব্যাপ্তিবাচক কালাধিকরণের দৃষ্টান্ত)
৪৪) একটি ক্ষণমূলক কালাধিকরণের উদাহরণ দাও।
উত্তর: দুপুর দুটোয় ট্রেন ছাড়বে। (ক্ষণমূলক কালাধিকরণের দৃষ্টান্ত)
৪৫) ভাবাধিকরণের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: গোলমালে হারিয়ে ফেললাম।
৪৬) ছাদ থেকে বাজি পোড়ানো হবে। রেখাঙ্কিত অংশটি কোন্ কারকের উদাহরণ?
উত্তর: ছাদে দাঁড়িয়ে বাজি পোড়ানো অর্থে প্রযুক্ত হওয়ায়, এটি অধিকরণ কারকে 'থেকে' অনুসর্গের উদাহরণ।
৪৭) কর্তৃকারকে 'কে' বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: আপনাকে যেতেই হবে।
৪৮) কর্মকারকে শূন্য বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: ওরা চিরকাল টানে দাঁড়।
৪৯) নিমিত্ত কারকে 'তে' বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: ক্ষুধিতে জোগাও অন্ন।
৫০) করণ কারকে 'য়' বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: মেবারের পাহাড় লজ্জায় মুখ ঢাকছে।
৫১) অপাদান কারকে 'এ' বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: তোমার ভূতে ভয় কীসের?
৫২) অধিকরণ কারকে 'তে' বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: পুরীতে সমুদ্র আছে।
৫৩) অ-কারক পদ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: বাক্যে এমন কিছু পদ থাকে ক্রিয়াপদের সঙ্গে যাদের কোনো । সম্পর্ক নেই, অথচ বাক্যস্থিত অন্য কোনো বিশেষ্য বা বিশেষ্য স্থানীয় পদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে। এই পদগুলিকে বলা হয় অ-কারক পদ আর বাক্যান্তর্গত এমন সম্পর্ককে বলা হয় অ-কারক সম্পর্ক।
৫৪) অকারক পদ কয় প্রকার?
উত্তর: অকারক পদ দুই প্রকার- (১) সম্বন্ধ পদ এবং (২) সম্বোধন পদ।
৫৫) সম্বন্ধ পদ বলতে কী বোঝ? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: যার অধিকারে কোনো কিছু থাকে কিংবা যার সঙ্গে অন্য কোনো কিছুর সম্বন্ধ থাকে, তাকেই বলে সম্বন্ধ পদ। যেমন: বইটা আমার পড়া নেই। বাতের ব্যথা প্রভৃতি।
৫৬) লোকটাই পালের গোদা হয়ে বসেছে। রেখাঙ্কিত অংশটির কারক নির্ণয় করো।
উত্তর: সম্বন্ধ পদে 'এর' বিভক্তি।
৫৭) সম্বোধন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: বাক্যে যে পদের সাহায্যে কাউকে ডাকা হয়, তাই হল সম্বোধন পদ। 'ওরে, আজ তোরা যাসনে ঘরের বাইরে।'এই বাক্যটিতে সম্বোধন পদটি হল 'ওরে'।
৫৮) সম্বোধন পদের পরে সাধারণত কোন্ কোন্ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: সম্বোধন পদের পরে সাধারণত পাদচ্ছেদ (,) বা বিস্ময়বোধক চিহ্ন (!) ব্যবহৃত হয়।
৫৯) 'আমারে ফিরায়ে লহো অয়ি বসুন্ধরে।' রেখাঙ্কিত পদটি কোন্ পদ?
উত্তর: রেখাঙ্কিত 'বসুন্ধরে' পদটি সম্বোধন পদ।
৬০) সম্বন্ধ পদ ও সম্বোধন পদের একটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর: সম্বন্ধ পদগুলি সাধারণত 'র' বা 'এর' বিভক্তিযুক্ত হয়। যেমন-হাতের পাঁচ, মিছরির ছুরি প্রভৃতি। কিন্তু সম্বোধন পদ সচরাচর শূন্য বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন: ও মা, তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি। মহাশয়, আমরা বহুকালের অসভ্য জাতি।
৬১) খাঁটি বাংলা প্রবাদ-প্রবচনে কোন্ পদের প্রয়োগ খুব বেশি? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: খাঁটি বাংলা প্রবাদ-প্রবচনে সম্বন্ধে পদের প্রয়োগ খুব বেশি। যেমন: হাতের পাঁচ, মিছরির ছুরি, ডান হাতের কাজ প্রভৃতি।
৬২) ক্রম সম্বন্ধ বোঝায় এমন একটি সম্বন্ধ পদের উদাহরণ দাও।
উত্তর: অঙ্ক বইয়ের তেরোর পাতা দেখো।
৬৩) 'মা ছেলেকে ভাত খাওয়াচ্ছেন।' এই বাক্যের প্রযোজক কর্তা ও প্রযোজ্য কর্তা চিহ্নিত করো।
উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যে 'মা' হল প্রযোজ্য কর্তা এবং 'ছেলে' প্রযোজক কর্তা।
৬৪) 'তিনি আমাকে দিয়ে কাজটি করালেন'। এই বাক্যটির প্রযোজক কর্তা ও প্রযোজ্য কর্তা চিহ্নিত করো।
উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যে 'তিনি' হল প্রযোজ্য কর্তা এবং 'আমাকে' প্রযোজক কর্তা।
৬৫) 'লেখাপড়ায় মন দাও'। এটি অধিকরণের কোন্ শ্রেণিতে পড়ে?
উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যটিতে ক্রিয়া ভাব বা বিষয়কে অবলম্বন করে নিষ্পন্ন হয়, তাই এটি ভাবাধিকরণের দৃষ্টান্ত।
৬৬) বিভক্তি ও অনুসর্গ এই দুইয়েরই বহুল ব্যবহার ঘটে এবং দুটি কারকের নাম লেখো।
উত্তর: করণ এবং অধিকরণ কারকে বিভক্তি ও অনুসর্গ এই দুইয়েরই বহুল ব্যবহার ঘটে।
৬৭) সম্বন্ধ পদের ক্ষেত্রে বিভক্তি না অনুসর্গ কোল্টির প্রয়োগ বাহুল্য দেখা যায়?
উত্তর: সম্বন্ধ পদে শুধুই বিভক্তির ব্যবহার ঘটে। অনুসর্গের ব্যবহার নেই।
৬৮) প্রধানত অনুসর্গ-যোগে গঠিত কারক কোনটি?
উত্তর: অপাদান কারক হল প্রধানত অনুসর্গ যোগে গঠিত।
৬৯) 'তিলে তেল হয়' এবং 'তিলে তেল আছে'-রেখাঙ্কিত পদ দুটি কোন্ কোন্ কারকের দৃষ্টান্ত?
উত্তর: প্রথমটি অপাদান এবং দ্বিতীয়টি অধিকরণ কারকের দৃষ্টান্ত।
৭০) 'আমার ইস্কুল এইটি।' এবং 'সে ইস্কুল পালাল।' রেখাঙ্কিত পদ দুটি কোন্ কোন্ কারকের দৃষ্টান্ত?
উত্তর: প্রথমটি কর্ম এবং দ্বিতীয়টি অপাদান কারকের দৃষ্টান্ত।
৭১) 'চোখে টান পড়ে।' এবং 'চোখে ধুলো পড়েছে'। রেখাঙ্কিত পদ দুটি কোন্ কোন্ কারকের দৃষ্টান্ত?
উত্তর: প্রথমটি কর্তৃ এবং দ্বিতীয়টি অধিকরণ কারকের দৃষ্টান্ত।
৭২) 'ডাক্তার ডাক।' এবং 'ডাক্তার এলেন, দেখলেন।' রেখাঙ্কিত পদ দুটি কীসের দৃষ্টান্ত?
উত্তর: প্রথমটি সম্বোধন পদ এবং দ্বিতীয়টি কর্তৃকারক।৭৩) করণ এবং অপাদান কারকে 'তে' বিভক্তির একটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তর: মহামারিতে গাঁ উজাড় হয়ে গেল। (করণ কারক, 'তে' বিভক্তি) এত মেঘেতে বৃষ্টি নেই। (অপাদান কারক, 'তে' বিভক্তি)
৭৪) কারক নির্ণয় করার একটি উপায় লেখো।
উত্তর: বাক্যস্থিত পদটির অর্থ বুঝে কারক নির্ণয় করতে হয়।
৭৫) বাক্যে ব্যবহার করে করণ কারকে অনুসর্গের প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর: 'স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ।'
৭৬) নিমিত্ত কারকে অনুসর্গের ব্যবহার দেখিয়ে একটি বাক্য লেখো।
উত্তর: সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু।
৭৭) সংস্কৃত ভাষায় কোন্ বাংলা কারকটি নেই?
উত্তর: বাংলা ভাষার নিজস্ব প্রয়োজনে নিমিত্ত কারকের সৃষ্টি, এটি সংস্কৃত ভাষায় নেই।
৭৮) 'সে ব্যাকরণে পারদর্শী'। এবং 'সে ভাইকে ব্যাকরণ পড়াচ্ছে'। রেখাঙ্কিত পদ দুটি কোন্ কোন্ কারকের দৃষ্টান্ত?
উত্তর: প্রথমটি অধিকরণ ('এ' বিভক্তি) এবং দ্বিতীয়টি কর্মকারকের দৃষ্টান্ত।
আরও পড়ুন দশম শ্রেণীর বাংলা-
- দশম শ্রেণীর বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি প্রশ্ন ও উত্তর