Ads Area


বিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি বাংলা রচনা || Bangla Rachana Class-10

 বিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি বাংলা প্রবন্ধ রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত "বিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি" প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি বাংলা রচনা || Bangla Rachana Class-10


বিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি বাংলা রচনা || Bangla Rachana Class-10



বিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি


"বিদ্যালয়ের জীবন মাঝে আছে সুখের খনি, 

আলো আছে, আশা আছে-আছে পরশমণি।"


 মাতৃসমা :

আমার বিদ্যালয় আমার দ্বিতীয় গৃহ, স্নেহময়ী জননী। মা যেমন সোহাগে-আদরে-শাসনে-সাহচর্যে গৃহের মধ্যে আমাকে আপন করে জড়িয়ে ধরে রাখেন, বিদ্যালয়ও তেমনি আমার শৈশব-কৈশোরের দিনগুলিকে বড়ো মমতায় জড়িয়ে ধরে রেখেছে। বিদ্যাশিখার সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার প্রাণের সম্পর্ক। বিদ্যালয় আমার প্রাণের আরাম, মনের বিকাশকেন্দ্র।

বিদ্যালয় ভবন ও ঐতিহ্য :

আমি একটি গ্রামের স্কুলের ছাত্র। গ্রামের স্কুল হলেও, আমাদের স্কুলটি বেশ পুরোনো। আমাদের বিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠান হয়ে গেছে। বিদ্যাসাগর মশায়েরই অনুরোধে এক অপুত্রক জমিদার এই বিদ্যালয়টি একদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই ভবনটিতে বিরাট বিরাট ঘর। বড়ো বড়ো দরজা-জানলা; আলো-বাতাস অবাধ। কত ছাত্র এখানে এসেছেন-পড়াশোনা করে বড়ো হয়েছেন। তাদের কাছে এই বিদ্যালয় 'মন্দির' হয়ে আছে। এমন ঐতিহ্যমণ্ডিত সুদৃশ্য মনোহর বিদ্যালয় আর নেই। স্কুল থেকে বিদায় নেবার প্রাক্কালে বহু কথা মনে পড়ছে।

বিদ্যালয়ে প্রতিদিন :

সকাল দশটা থেকে আমাদের ক্লাস আরম্ভ হয়। ঢং ঢং করে ঘণ্টা পড়ে। প্রতিদিন ক্লাস আরম্ভ হওয়ার আগে প্রার্থনা হয়। চারটে পিরিয়ড হওয়ার পর টিফিন হয়। টিফিনের পর হয় আরও তিনটি ক্লাস। মাস্টারমশাইরা অতি দক্ষ। আমাদের হেড মাস্টারমশাই বেশ রাশভারী লোক। তাঁর চেহারাটি অবিকল 'ফার্স্ট বুক অফ রিডিং'-এর পিয়ারীচরণ সরকারের মতো। উঁচু ক্লাসে উনি আমাদের ইংরেজি পড়াতেন।

শিক্ষকদের কথা :

স্কুলে সবচেয়ে ভালোলাগত বাংলার স্যারকে। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে আসতেন। পাটভাঙা পরিষ্কার জামা- কাপড়। সবসময় হাসিখুশি থাকতেন। আমাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতেন। তাঁর অমায়িক ব্যবহারের জন্য স্কুলে তিনি খুব জনপ্রিয় ছিলেন। উনি আমাদের মধ্যে একটু একটু করে তৈরি করেছিলেন সাহিত্যবোধ। ওঁর কাছ থেকেই আমরা মধুসূদন দত্ত এবং রবীন্দ্রনাথের কবিতা বুঝতে শিখেছিলাম। আধুনিক কবি-সাহিত্যিকদের লেখার প্রতি আগ্রহও তাঁর কাছ থেকেই পাওয়া। অঙ্কের মাস্টারমশাই আমাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন একেবারে দাদার মতো। উনি ছিলেন সহজ ও অমায়িক। অঙ্কের মাস্টারমশাই হলেও, ওঁর সাহিত্যবোধ ও রসবোধ কিছু কম ছিল না। উনাকে নিয়ে আমার কত কথাই না মনে পড়ছে।

অনুষ্ঠান :

বাংলার মাস্টারমশাইয়ের মুখে আমি প্রথম রবীন্দ্রনাথের 'শাজাহান' কবিতার আবৃত্তি শুনেছিলাম বিমুগ্ধ চিত্তে। পঁচিশে বৈশাখ ছিল সেই দিনটি। তখন আমাদের মর্নিং স্কুল। রজনীগন্ধা দিয়ে আমরা রবীন্দ্রনাথের ছবি সাজিয়েছিলাম। আমার বিদ্যালয়-জীবন এমনই স্মৃতির মালা গাঁথা। সেইসব স্মৃতি এখনও আমার মনের মণিকোঠায় সযত্নে রক্ষিত।

বিদ্যালয় ও আমার ভবিষ্যৎ :

আমার বিদ্যালয় জীবন নাটকীয় না হলেও ঘটনাবহুল। খেলাধুলা, নাটকাভিনয়, আবৃত্তি ইত্যাদি 'সিলেবাস' বহির্ভূত কাজে আমার উৎসাহ ছিল প্রচুর। অনেক দুষ্টুমির নায়ক ছিলাম আমি। এইসব দুষ্টুমির জন্য শাস্তি কম পাইনি। তবে এর জন্য আমি দুঃখবোধ করি না। বিদ্যালয়ের বনমহোৎসবের সময় আমরা অনেক গাছ লাগিয়েছিলাম, তাদের কোনো-কোনোটি বেশ বড়ো হয়েছে। ঠিক কোন্ গাছটির মতো আমার ভবিষ্যৎ হবে, তা জানি না। বিদ্যালয়ের সুনামের জন্য আমাকে মানুষ হতেই হবে। বিদ্যালয়ের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদের ওপর অনেকখানি বর্তায়। নতুবা মায়ের সুনাম রাখব কী করে? আমার বিদ্যালয় হল আমার মা।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area