Ads Area


নিরক্ষরতা দূরীকরাণ ছাত্রসমাজের ভূমিকা বাংলা রচনা || Bengali Grammar Class-12

 নিরক্ষরতা দূরীকরাণ ছাত্রসমাজের ভূমিকা বাংলা রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে।

এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত "নিরক্ষরতা দূরীকরাণ ছাত্রসমাজের ভূমিকা" প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।


নিরক্ষরতা দূরীকরাণ ছাত্রসমাজের ভূমিকা বাংলা রচনা || Bengali Grammar Class-12


নিরক্ষরতা দূরীকরাণ ছাত্রসমাজের ভূমিকা বাংলা রচনা || Bengali Grammar Class-12


নিরক্ষরতা দূরীকরাণ ছাত্রসমাজের ভূমিকা


'অজ্ঞান, অন্ধকারে ওত পেতে থাকে মহাপাপ, নিরক্ষরতা তাই জাতির জীবনে এক অভিশাপ।'


ভূমিকা :

অক্ষরজ্ঞান যার নেই, সেই তো নিরক্ষর। সে তো চোখ থাকতেও অন্ধ। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- "মানুষের অন্ধত্বের মতো নিরক্ষরতা এই দুর্ভাগা দেশের হতভাগ্য জনগণের সর্বাপেক্ষা নিষ্ঠুরতম অভিশাপ।" তাই, নিরক্ষরতা দূরীকরণে সকলের সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে ছাত্রসমাজকে।

নিরক্ষরতার পিছনে স্বার্থবাদী মানুষ :

সমাজের এক শ্রেণির স্বার্থপর মানুষের চক্রান্তে যুগ যুগ ধরে জনগণ শিক্ষা থেকে দীর্ঘকাল অশিক্ষার অন্ধকারে থাকতে থাকতে এরা মানুষের পরিচয় হারিয়ে ভারবাহী পশুতে রূপান্তরিত হয়েছে। বঞ্চিত হয়েছে। এরা জানে না, সমাজে তাদেরও বেঁচে থাকার সমান অধিকার বর্তমান। তাই, বড়ো দুঃখে কবি বলেছেন-“ওই সব মূঢ় ম্লান মুক মুখে দিতে হবে ভাষা।” নিরক্ষরতার অন্ধকারে ডুবে থাকা শোষিত মানুষের নিদারুণ যন্ত্রণায় কাতর হয়ে কবি এ কথা বলেছেন। স্বাধীন ভারতে নিরক্ষরতার স্বরূপ দেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় অর্ধশতাব্দীকাল। 

জনসংখ্যার দিক থেকে আমরা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। তবু ভারতে আজ প্রায় ১১০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৪০ কোটি মানুষ এখনও অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, কিন্তু সে তুলনায় স্বাক্ষর মানুষের সংখ্যা বাড়েনি। ফলে গণতন্ত্রের ভিত সুদৃঢ় হয়নি। “পরাধীনতার অবসানে আমাদের দুয়ারে পশ্চিমের গণতন্ত্রের রথ ভিড়লেও, সে নবযুগের রথকে মূঢ়, নিরক্ষর ও অন্ধ জনগণ অন্যের নির্দেশে টেনে নিয়ে চলেছে।"

সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা :

গণতন্ত্রের সাফল্যের প্রয়োজনে দেশব্যাপী নিরক্ষরতা দূরীকরণ আবশ্যক। নবযুগ এসেছে। চিন্তাভাবনায় বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটেছে। অথচ কৃষিপ্রধান আমাদের দেশের কৃষকরা নিরক্ষরতার জ্ঞানহীন আঁধারে বসে মান্ধাতা আমলের পদ্ধতিকে অবলম্বন করে চলেছে। তাদের নানা পদ্ধতি, তত্ত্ব, তথ্য সম্পর্কে অবহিত করতে হলে 'সাক্ষরতার জিয়নকাঠি স্পর্শ ছাড়া আর কোনো জাদুমন্ত্র নেই।'

সাক্ষরতার প্রথম ধাপ :

নিরক্ষরতার অন্ধকার দূর করতে হলে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, উচ্চ-নীচ নির্বিশেষে সকলের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে। এজন্য চাই গণশিক্ষা, সর্বজনীন শিক্ষা। প্রথম কথা অক্ষরজ্ঞান, রবীন্দ্রনাথের কথায়- "লেখাপড়া শেখাই সেই রাস্তা।” দেশের সকল নিরক্ষরকে সাক্ষর করার জন্য বিভিন্ন স্থানে নৈশ বিদ্যালয়, বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র, পাঠাগার প্রতিষ্ঠা, পাঠ্যবই বিতরণ ইত্যাদি কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

নিরক্ষরতা এবং ছাত্রদের কর্তব্য ও পথনির্দেশ :

দেশের, দশের ও সামাজিক সংকট মোচনে ছাত্রসমাজ অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে এসেছে। ছাত্ররাই পারে নিরক্ষরতার রাহুগ্রাস হতে সমাজকে মুক্ত করতে। তারা অবসর সময়ে বাড়ির এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা নিরক্ষর এবং সমাজে যারা পিছিয়ে পড়েছে, তাদের মধ্যে সাক্ষরতার আলো জ্বেলে দিতে পারে। এজন্য তারা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দিতে পারে। টিভি, রেডিয়ো প্রভৃতি প্রচার মাধ্যমেরও সাহায্য নিতে পারে। সরকারের উচিত সাক্ষরতা কর্মসূচিকে পাঠ্যক্রমের অর্ন্তভুক্ত করা। এতে সব ছাত্র এই কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারবে।

উপসংহার :

সমাজকে নিরক্ষরমুক্ত করার মহান কর্মযজ্ঞে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে সকল শিক্ষিত মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এবং সকলকেই যোগ দিতে হবে সাক্ষরতা আন্দোলনে। এজন্য ছাত্রসমাজ থেকে শুরু করে দেশের সকলকেই দায়িত্ব নিতে হবে আর বলতে হবে-“নিরক্ষর মানুষের হাতে ধরিয়ে দাও বই, সেই হবে তার জীবনযুদ্ধের হাতিয়ার।”

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area