বই মানুষের সর্বাশ্রেষ্ঠ সঙ্গী বা বন্ধু বাংলা রচনা
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে।
এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত " বই আমাদের শ্রেষ্ঠ বন্ধু" প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বই আমাদের শ্রেষ্ঠ বন্ধু বাংলা রচনা || Boi Amader Srestho Bondhu Bangla Rachana
বই আমাদের শ্রেষ্ঠ বন্ধু
"জ্ঞানভাণ্ডারের চাবিকাঠি সে তো বই।
সুখে-দুঃখে জীবনের সাথী আর আছে কই?"
ভূমিকা :
এই মানবজীবনে সবচেয়ে বড়ো সম্পদ বই। বই পড়েই মানুষ অজানাকে জানতে পারে, অচেনাকে চিনতে পারে। বই অতীত ও বর্তমানের বহুমুখী জ্ঞানসম্পদের বাহক ও ধারক। বিদ্যার্থীদের প্রতি দেবী সরস্বতীর দুটি প্রধান দান-বীণা ও পুস্তক। বীণাবাদন সকলে পারে না। বই পড়া অপেক্ষাকৃত সহজ। বই পড়া সভ্যসমাজের একটি সাংস্কৃতিক ব্যাপার বলে বিবেচিত।
প্রাচীন যুগ ও গ্রন্থপাঠ :
বই পড়া সর্বকালে সর্বদেশের মানুষের শখ। বিভিন্ন বুচির মানুষ তাদের বুচিমাফিক বইয়ের পাতায় চোখ রেখে শখ চরিতার্থ করে। বই বা সাহিত্যসমাজ, মানবমনের দর্পণ বিশেষ। মানুষের মনের প্রতিচ্ছবি হল সাহিত্য। তাই আমাদের বই পড়তেই হবে। মানুষ ও সমাজকে সম্পূর্ণরূপে জানবার জন্যই বই পড়া দরকার। বই পড়া ছাড়া সাহিত্য পাঠ ও চর্চার উপায়ান্তর নেই।
পাঠাগারের সাহিত্যভাণ্ডার :
দেহের খাদ্য ভাত, রুটি; মনের খাদ্যের জোগান দেয় বই। মনের সুস্থতার ওপর অনেকাংশে দেহের সুস্থতা নির্ভরশীল। মনকে সুস্থ রাখার জন্য ভালো বইয়ের সঙ্গ প্রয়োজন। ভালো বই পাঠককে সচেতন মানুষ রূপে গড়ে তোলে। ভালো বই মানে ভালো বন্ধু এবং যোগ্য শিক্ষক। মানুষের জীবনের চলার পথে যেমন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ভালো বই। কেননা বইতে বাস্তব জীবনের কথাই লিপিবদ্ধ থাকে। গ্রন্থের দর্পণে নিজেকে পর্যালোচনা করে মানুষ তার চলার পথ ঠিক করতে পারে। বইকে যে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে, তার শত্রু অনেক কম। বই জ্ঞানের প্রতীক, বই আনন্দের প্রতীক। বইয়ের মাধ্যমে বিশ্বমানবের সঙ্গে যোগ ঘটে।
আনন্দ এবং মানসিক সুস্থতা :
বই মানুষকে চেতনাসম্পন্ন নাগরিকে পরিণত করে। বই আসলে মানুষের চৈতন্য ও মনীষার সৃষ্টি। লেখকের উপলব্ধিজাত অভিজ্ঞতা বইতে লিপিবদ্ধ হয়। সুতরাং তার সঙ্গে পাঠকের পরিচয় ঘটলে তা মানুষকে সচেতন করে তোলে। এইভাবে মানুষ সচেতন নাগরিক হয়ে ওঠে। জীবনকে বুঝতে হলে, অভ্যাসের সংস্কারের বেড়া ভাঙতে হলে বইয়ের সঙ্গ অবশ্য প্রয়োজন। প্রমথ চৌধুরী বলেছেন, “বৈঠকখানার দেওয়ালে হাজার টাকার একখানি নোট না ঝুলিয়ে, হাজার টাকা দামের একখানা ছবি ঝোলানোতে যে, আর্থিক সুরুচির পরিচয় দেয়, তেমনি নানা আকারের নানা বর্ণের রাশি রাশি বই সাজিয়ে রাখাতে প্রমাণ হয় যে গৃহকর্তা একাধারে ধনী ও গুণী।”
উপযোগিতা :
বই হল আয়নার মতো, যাতে আমাদের নিজেদের মনের প্রতিবিম্ব ধরা পড়ে। বইবিহীন জীবনকে আত্মাবিহীন দেহের সঙ্গে তুলনা করা চলে।
উপসংহার :
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে "ধনবানে কেনে বই, গুণবানে পড়ে।” এই প্রবাদটি আংশিক সত্য। যে প্রকৃত গুণবান, সে অনেক সময় নিজেকে নিঃস্ব করে বই কেনে। বই কেনা যেমন নেশা, তেমন বই পড়াও নেশা।
আরও পড়ুন-