একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি বাংলা রচনা
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে।
এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত "একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি " প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি বাংলা রচনা || Memory Of Football Match Bengali Grammar
একটি ফুটবল ম্যাচের স্মৃতি
ভূমিকা :
ছেলেবেলা থেকেই খেলার মাঠের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা। খুব একটা খেলতে যে পারতাম তা নয়, তবে খেলার উত্তেজনটা মাঘের শীতে আগুন পোহাবার মতোই ভালো লাগত। হাইস্কুলে ভরতির পর সুযোগটা একটু বেড়েও গেল। কারণ স্কুলে খেলার ক্লাস থাকত। তা ছাড়া বিভিন্ন স্কুলের সঙ্গে আমাদের স্কুলের খেলা থাকলে তো খেলা দেখার জন্য স্কুল ছুটি হয়েও যেত। এমনই একটা খেলার কথা আমার বেশ মনে আছে।
বিবরণ :
ম্যাচটা ছিল আন্তঃমহকুমা স্কুল ফুটবলের গুরুত্বপূর্ণ সেমিফাইনাল ম্যাচ। ইতিমধ্যেই ফাইনালে উঠে বসে আছে একদা সুব্রত কাপ বিজয়ী মধ্যমগ্রাম হাইস্কুল দল। কাজেই এ ম্যাচের বিজয়ী দল ফাইনালে মধ্যমগ্রাম স্কুলের মুখোমুখি হবে। সেদিনের খেলায় দুই মুখোমুখি দল হল বারাসাতের গান্ধি মেমোরিয়াল স্কুল এবং বিরাটি হাইস্কুল। উভয় দলের কাছেই ম্যাচটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে আগের তিনদিন টানা বর্ষা হয়েছে। প্রবল বর্ষণের জন্য খেলা পরিত্যক্ত হবার সম্ভাবনাও ছিল। তবে খেলা হয়েছিল। আমরা বিরাটি স্কুলের ছাত্ররা রেল ময়দানে পৌঁছে গেছিলাম।
দুপুর দুটোয় খেলা শুরু হল। রেফারি বাঁশি বাজিয়ে খেলার সূচনা করলেন। ছোটো ছোটো পাসে খেলে প্রথমেই আমাদের স্কুল চেপে ধরেছিল মহাত্মা গান্ধি স্কুলকে। কিন্তু ওদের স্টপার যে ছেলেটি খেলছিল ওকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন চিনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সুধীর কর্মকার। ওকে এড়িয়ে আমাদের ছেলেরা গোলে বল প্রায় মারতেই পারছিল না। আমাদের ফরোয়ার্ড লাইনের ব্যর্থতা বারবার ধরিয়ে দিচ্ছিল ওই ছেলেটি। কখনো ছোটো পাসে, কখনো লম্বা পাসে, কখনো বা মাথায় মাথায় খেলা বেশ জমে উঠেছিল। রেফারি বাঁশি বাজিয়ে খেলার হাফ টাইম ঘোষণা করলেন। গোলশূন্য অবস্থাতেই কেটে গেল খেলার প্রথমার্ধ।
খেলার দ্বিতীয়ার্ধে সেন্টার ফরোয়ার্ড বিশ্বজিৎকে বসিয়ে তরুণকে মাঠে নামানো হল। এবারে কিন্তু খেলার গতি অনেকটা কমে এসেছে। মূলত বৃষ্টিভেজা মাঠের সবুজ ঘাসের তলার কাদা অংশটা এবার সামনে উঠে এসেছে। বল মাটিতে পড়ে গতি পাচ্ছে না। ছেলেরাও তাদের শরীরের ভারসাম্য ঠিকমতো রাখতে পারছিল না। বলের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছিল বারবার। তবু এরই ফাঁকে তরুণ কাজের কাজটি করে বসল। মাঝমাঠ থেকে লম্বা পাস বাড়িয়ে দিয়েছিল অভিরূপ। সেই পাশে পেয়েই বিন্দুমাত্র সময় ব্যয় না করেই তরুণ ডানদিকের বারপোস্টের একেবারে কোণ ঘেঁষে সোজা বল জালে ঢুকিয়ে দিল। গোলকিপার অত দ্রুত ঘটনাটির জন্য প্রস্তুতও ছিল না। ওই এক গোলেই জিতে ফিরল আমাদের ছেলেরা। রেফারি বাঁশি বাজিয়ে খেলা শেষ করলেন।
উপসংহার :
অদ্ভুত সৌভ্রাতৃত্বময় পরিবেশে খেলাটি হয়েছিল। আশ্চর্যের বিষয় বৃষ্টিভেজা মাঠ, তবু একটাও ফাউল হয়নি। আসতে আসতে ভাবছিলাম আমাদের কলকাতার মাঠের বড়ো খেলোয়াড়রা যদি একবার দেখতেন তবে হয়তো মাঠের গোলমাল গ্যালারিতে ছড়িয়ে পড়ত না।
আরও পড়ুন-