Ads Area


একটি রাজপথের আত্মকথা বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Ekti Raajpother Atmokotha Bangla Prabandha Rachana

 একটি রাজপথের আত্মকথা বাংলা প্রবন্ধ রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে।

এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত "একটি রাজপথের আত্মকথা" প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।


একটি রাজপথের আত্মকথা বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Ekti Raajpother Atmokotha Bangla Prabandha Rachana


একটি রাজপথের আত্মকথা বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Ekti Raajpother Atmokotha Bangla Prabandha Rachana



একটি রাজপথের আত্মকথা


ভূমিকা :

 "পথ কি তার নিজের শেষকে জানে, যেখানে লুপ্ত ফুল আর স্তব্ধ গান পৌঁছাল, যেখানে তারার আলোয় অনির্বাণ বেদনার দেওয়ালি-উৎসব।"-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ভাষ্য যেন আমার সার্থক আত্মপরিচয়। সেই কবে সূচনার কথা; আজও আমার ক্ষীণ মনে পড়ে, তবে এ কথা সত্যি আমার শেষ ঠিকানা কোথায় তা আমিও জানি না! বহু যুগ আগে ঘন জঙ্গলের বুক চিরে মানুষ আমাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। গাছগাছালির ফাঁকে ফাঁকে এই ক্রমাগত চলাতেই তো আমার আনন্দ। এভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়াই তো জীবন। ধুলো-মাটি দিয়ে তৈরি আমার শরীরে কত কাল ধরে কত কিছুর প্রলেপ পড়ল। ক্রমে শক্ত-জমাট হয়ে উঠলাম আমি। তবু থামতে পারলাম কোথায়। আমার থামা বারণ, কারণ আমি যে রাজপথ, পথিক মানুষের চিরসখা।

 আত্নকথা :

 আমার দুপাশে কত গাছপালা। গাছে গাছে বিচিত্র পাখির কলতান। দিনরাত অশান্ত, অস্থির মানুষ ও তার যানবাহন আমার বুকের ওপর দিয়ে ছুটে চলেছে। এক একজনের এক-একহরকম ছন্দ। তাদের গতিময় ছন্দের স্রোতের ভিন্ন ভিন্ন দোলা আমার প্রাণে তোলে শিহরণ। 'চরৈবেতি চরৈবেতি' এই তো আমাদের মন্ত্র। তবে এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বেদনায় ম্লান অসহায় মানুষের পায়ের শব্দে আমি অনুভব করেছি নৈরাশ্যের কম্পন। আবার তৃপ্ত মানুষের হাঁটায় সয়েছি দম্ভ ও আত্মবিশ্বাসের অনুরণন। আর দূর থেকে আসা মানুষজন যখন পায়ে পায়ে হাঁটে, তখন তাদের রোমাঞ্চ-কৌতূহল-উদ্দীপনা যেন প্রতিটি পদসঞ্চারের তালে ফুটে ওঠে। তবে ক্লান্ত পথিক অনেক পথ চলে যখন আমার প্রান্তে কোনো নদীর সামনে ক্ষণকালের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে, তখন কৌতুক ও আনন্দে আমারও থামতে ইচ্ছে হয়।

অনুভূতি :

 মানবজীবনের মতো আমার জীবনেও যেন তিনটি অধ্যায়-শৈশব, যৌবন ও পরিণতির কাল। আমার শৈশব হল রাজপথের পত্তনের কাল, তখন লোকজন ছিল কম, গাছপালা ছিল বেশি। তখন গাড়িঘোড়ার সংখ্যা হাতে গোনা যেত। তাই দিনে-রাতে কোনো মানুষের পদশব্দ শুনলেই আমার শিরায় শিরায় উত্তেজনার শিহরণ অনুভূত হত। মানুষের পায়ের শব্দের অপেক্ষায় আমি অধীর হয়ে থাকতাম। তারপর দিন গেল বদলে। গাড়ি-ঘোড়া বাড়ল, লোকজন বাড়ল, রক্তপাতে, বেদনায় কেঁপে উঠলাম আমি। প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু কে শোনে সে কথা!

উপসংহার :

এখন আমার একটাই সান্ত্বনা আমি মানুষকে ঘরের সন্ধান দিই। ধুলো-ধোঁয়া-কোলাহল থেকে ঘরের স্বস্তি ও স্তব্ধতায় মানুষকে নিয়ে যাই। মানুষের বেদনা ও ভালোবাসার সঙ্গে আমার ভলোবাসা ও যন্ত্রণাও আবর্তিত হয়। শুধু এই বোধটুকুই আমি মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত করতে চাই।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area