আঁকা, লেখা
(মৃদুল দাশগুপ্ত)
প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 7 এর আঁকা, লেখা কবিতা থেকে প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের সপ্তম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত এর লেখা আঁকা,লেখা রয়েছে। তাই এই কবিতার কিছু প্রশ্নপত্র নিচে রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে। এবং তোমাদের পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || আঁকা, লেখা (মৃদুল দাশগুপ্ত) প্রশ্ন ও উত্তর || Class-7 West Bengal Bengali
১) কবি কখন ছবি আঁকেন?
উত্তর: দুপুরবেলায় কবির মন যখন খুশি আর খেয়ালে ভরে ওঠে, তখন তিনি 'রং ছড়িয়ে' ছবি আঁকেন।
২) কখন তাঁর ছড়া লেখার শুরু?
উত্তর: মাঠে চাঁদের জ্যোৎস্না দুধের সরের মতো যখন জমে যায় এবং বাতাসে সামান্য কাঁপন লাগে, তখন কবির ছড়া লেখার শুরু।
৩) তিনটি শালিক কী করে?
উত্তর: তিনটি শালিক ঝগড়া থামায় কবির ছবি আঁকা দেখে।
৪) কে অবাক হয়ে তাকায়?
উত্তর: অবাক হয়ে তাকায় চড়াই পাখি।
৫) মাছরাঙা কী চায়?
উত্তর: মাছরাঙা চায় তার নীল রংটি শিল্পীর আঁকায় থাকুক।
৬) প্রজাপতিদের ইচ্ছা কী?
উত্তর: প্রজাপতিদের ইচ্ছে তারা যেন শিল্পীর আঁকাতে থাকে।
৭) গর্তে কে থাকে?
উত্তর: গর্তে থাকে ইঁদুর।
৮) চাঁদের পুর দুধের সর কোথায় জমে?
উত্তর: চাঁদের পুরু দুধের সর জমে দূরের মাঠে।
৯) কারা, কোথায় অ-আ লিখছে?
উত্তর: দশটি জোনাকি বকুল গাছে 'অ'-'আ' লিখছে।
১০) কবি কোন্ বিষয়কে 'পদক পাওয়া' মনে করেছেন?
উত্তর: পাঠকের কাছে পৌঁছানোকে কবি 'পদক' পাওয়া মনে করেছেন।
১১) কবি যখন ছড়া লিখতে শুরু করেন তখন চারপাশের প্রকৃতিতে কাঁ কী পরিবর্তন ঘটে?
উত্তর: কবি যখন ছড়া লিখতে শুরু করেন, সেইসময় চাঁদের আলো দুধের সরের মতো মাঠে পুরু হয়ে জমে ওঠে এবং বাতাসে ঈষৎ কাঁপন লাগে। কবির মনে হয়, সেইসময় তারার দল মালা হয়ে খুব গোপনে তাঁর কাছে নেমে আসে। সেইসময় দশটা জোনাকি যেন অন্ধকারে বকুল গাছে 'অ, আ' লিখতে থাকে।
১২) কবি যখন ছবি আঁকেন, তখন কী কী ঘটনা ঘটে?
উত্তর: কবি যখন ছবি আঁকতে বসেন, তখন যে তিনটি শালিক ঝগড়া করছিল তারা ঝগড়া থামিয়ে দেয়, অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে চড়ুই পাখি আর মাছশিকার ভুলে মাছরাঙা তার নীল রং শিল্পীকে ধার দিতে চায়। প্রজাপতির ঝাঁক অনুরোধ করতে থাকে তাদের যেন রাখা হয় শিল্পীর ছবিতে এবং গর্ত থেকে ইঁদুর পিটপিট চোখে তাকাতে থাকে। কবিকে পেয়ে রং-তুলিরাও বেজায় খুশি হয়ে ওঠে।
১৩)"তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়"-কোন্ কবির কোন্ কবিতায় এমন তিন শালিকের প্রসঙ্গ অন্যভাবে আছে?
উত্তর: তিনটি শালিকের ঝগড়া আছে রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, তাঁর 'সহজ পাঠ ২য় ভাগের নবম পাঠে। সেখানে তিনটি শালিকের রান্নাঘরের চালে ঝগড়া করার উল্লেখ আছে।
১৪)মাছরাঙা পাখি কেমন দেখতে? সে মৎস্য ভুলে যায় কেন?
উত্তর: মাছরাঙা পাখির দেহের রং প্রধানত নীল হলেও তার সঙ্গে অন্য রঙের বাহারও থাকে। এই পাখির ঠোঁট বেশ লম্বা ও তীক্ষ্ণ হয়। সে মাছ-ধরা ভুলে যায় শিল্পীর আঁকা দেখে।
১৫) "রং-তুলিরা বেজায় খুশি আজ দুপুরে আমায় পেয়ে।"-কবির এমন বক্তব্যের কারণ কী?
উত্তর: শিল্পী ছবি আঁকেন রং এবং তুলি দিয়ে। কবি-শিল্পী ওই রং আর তুলি দিয়ে প্রকৃতির ছবি আঁকছেন বলে তারা খুব খুশি হয়।
১৬)'অ' লিখছে 'আ' লিখছে"-কারা কীভাবে এমন লিখছে? তাদের দেখে কী মনে হচ্ছে?
উত্তর: দশটি জোনাকি উড়ে উড়ে তাদের আলো দিয়ে 'অ', 'আ' লিখছে। জোনাকিদের দেখে মনে হয়, তারা খুবই খুশি।
১৭)"এই ছড়াতেই আজ আমাকে তোমার কাছে আনলো হাওয়া"-কাকে উদ্দেশ্য করে কবি একথা বলেছেন? কবির আঁকা ও লেখার সঙ্গে এই মানুষটির উপস্থিতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব বিচার করো।
উত্তর: কবি মৃদুল দাশগুপ্ত এখানে তাঁর কবিতার পাঠক, বিশেষত শিশু- কিশোরদের উদ্দেশ্য করে একথা বলেছেন।
যখন মাঠ ভরে ওঠে দুধের সরের মতো জ্যোৎস্নায়, বাতাসে লাগে মৃদু কাঁপন, তখন কবির ছড়া লেখা শুরু হয়। ঠিক এই সময় তারার মালা আকাশ থেকে নেমে আসে গোপনে এবং নিঃশব্দে আর জোনাকিরা বকুল গাছে তাদের ক্ষুদ্র আলো দিয়ে লেখে 'অ', 'আ'। কবি অনুভব করেছেন, এই হাওয়াই তাঁকে ছড়ার মাধ্যমে পাঠকদের সঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছে।
এইভাবে আনন্দকে পাওয়াই হল তাঁর সকল খুশির উৎস এবং এটিই তাঁর পাওয়া শ্রেষ্ঠ 'পদক'। কেবল লেখা নয়, ছবি আঁকার সময়ও কবি এরকমই আনন্দ পান, তাই তিনি 'খুশ-খেয়ালে' ছবি আঁকেন। কবির আঁকা দেখে শালিক, চড়াই, মাছরাঙা পাখিরা, প্রজাপতির ঝাঁক সেই আনন্দের অংশ হতে চায়, গর্তের ইঁদুরও চোখ পিটপিট করে কবির দিকে চেয়ে থাকে। আনন্দিত হয়ে ওঠে রং আর তুলি। প্রকৃতি, প্রাণীর বিস্ময় ও আনন্দের সঙ্গে কবির আনন্দ মিশে তখন এক ঐকতানের সৃষ্টি করে, যার প্রকাশ ঘটে তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। এই সৃষ্টি সার্থক হয়ে ওঠে শুধুমাত্র পাঠকের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে।
১৮) এই কবিতায় যে যে উপমা ও তুলনা ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলির ব্যবহারের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: কবিতার ভাবটিকে যথাযথভাবে প্রকাশ করার জন্য উপমা ব্যবহার করা হয়। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর 'আঁকা, লেখা' কবিতায় কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ উপমা সুন্দরভাবে ব্যবহার করেছেন। কবিতায় চাঁদের জ্যোৎস্নার সঙ্গে 'দুধের সরের' তুলনা করা হয়েছে। তারকাপুঞ্জকে বলা হয়েছে 'তারার মালা'। খুদে পাঠকের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার পরম আনন্দকে 'পদক' পাওয়ার সঙ্গে তুলনা করে কবি এখানে তাঁর কবিতায় চমৎকারিত্ব এনেছেন। এইরকম যথাযথ উপমা প্রয়োগই কবিতাটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এগুলির ব্যবহারের যে সার্থকতা দেখা যাচ্ছে, তা আলাদা আলাদা ভাবে বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।
১৯) ছবি-আঁকা, ছড়া/কবিতা লেখার মধ্যে তুমি নিজে কোনটি কেন বেশি পছন্দ করো তা লেখো।
উত্তর: আমি নিজে ছবি আঁকাকে বেশি পছন্দ করি। কারণ কবিতা লেখার মতো কল্পনাশক্তি এবং বাংলা ভাষার ওপর দখল এখনও আমার নেই। তা ছাড়া কবিতায় ব্যবহৃত ছন্দের নিয়মও আমি ঠিক বুঝতে পারি না। সেকারণেই যথাযথ শব্দ, ছন্দ, অলংকার, উপমা প্রয়োগ করে এখনও একটি কবিতা আমি লিখে উঠতে পারিনি। তার চেয়ে ছবি এঁকে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতেই আমার সুবিধা হয়। চারপাশের প্রকৃতি আমাকে ছবি আঁকায় দারুনভাবে উদ্বুদ্ধ করে।
২০) তোমার নিজের লেখা ছড়া/কবিতা, নিজের আঁকা ছবিতে ভরিয়ে চার পাতার একটি হাতে লেখা পত্রিকা তৈরি করো। পত্রিকাটির একটি নাম দাও। তারপর শিক্ষিকা/শিক্ষককে দেখিয়ে তাঁর মতামত জেনে নাও।
উত্তর: ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে সক্রিয় ও সফলভাবে কাজটি করবে।
২১)"আমি যখন চিত্র আঁকি”-কবি কীভাবে চিত্র আঁকেন?
উত্তর: কবি রং ছড়িয়ে খুশিতে ও খেয়ালে ছবি আঁকেন।
২২) কবির ছবি আঁকায় মাছরাঙার কী ভূমিকা ছিল?
উত্তর: কবির ছবি আঁকার সময়ে মাছরাঙা মাছের কথা ভুলে গিয়ে তার নীল রংটি কবিকে ধার দিতে চেয়েছিল।
২৩) প্রজাপতিরা কবির কাছে কী চেয়েছিল?
উত্তর: প্রজাপতির ঝাঁক চেয়েছিল কবি যেন তাদেরও ছবি আঁকেন।
২৪) গর্তের ইঁদুর কবির ছবি আঁকার সময় কী করছিল?
উত্তর: গর্তের ইঁদুর কবির ছবি আঁকার সময় পিটপিট করে তাকাচ্ছিল।
২৫) মাছরাঙা তার কোন্ রং ধার দিতে চায়?
উত্তর: মাছরাঙা তার নীল রংটি কবিকে ধার দিতে চায়।
২৬) “তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়”-এই ঝগড়া থামানোের কারণ কী?
উত্তর: চিত্রকর যখন ছবি আঁকেন, সেই ছবি এতই মুগ্ধতা তৈরি করে যে চারপাশের প্রকৃতি ও প্রাণীজগতও তার ব্যতিক্রম হয় না। তাই শালিকেরাও ঝগড়া থামিয়ে ছবির দিকে তাকায়।
২৭)'আঁকা-লেখা' কবিতায় মাঠে কী ঘটেছিল?
উত্তর: চাঁদের জ্যোৎস্নার আলোয় মাঠটা এমনভাবে আলোকিত হয়েছিল যেন মনে হচ্ছিল মাঠে দুধের সর জমে গেছে।
২৮) "আমার ছড়া লেখার শুরু..."-কখন কবির ছড়া লেখার শুরু?
উত্তর: যখন বাতাসের কম্পন অল্প অনুভূত হয় তখনই কবি ছড়া লেখা শুরু করেন।
২৯) "বাতাস ঈষৎ কাঁপন দিতেই আমার ছড়া লেখার শুরু।"-বাতাসের কাঁপনের সঙ্গে কবির ছড়া লেখা শুরু হওয়ার সম্পর্ক কী?
উত্তর: বাতাসের কাঁপন কবির মনে সৌন্দর্য ও আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তোলাতেই কবি ছড়া লেখা শুরু করেন।
৩০) 'আঁকা, লেখা' কবিতায় কীসের মালা খুব গোপনে নামছে কাছে?
উত্তর: 'আঁকা, লেখা' কবিতায় কবির কাছে খুব গোপনে তারার মালা নেমে আসার কথা বলা হয়েছে।
৩১) 'অ' লিখছে, 'আ' লিখছে-'কারা কীভাবে এমন লিখছে?
উত্তর: জোনাকিরা বকুল গাছে আলো দিয়ে যেন বাংলার বর্ণমালা- 'অ' 'আ' লিখছিল।
৩২) "এই ছড়াতেই আজ আমাকে তোমার কাছে আনল হাওয়া"-এখানে 'তুমি' কে?
উত্তর: এখানে 'তুমি' বলতে পাঠককে বোঝানো হয়েছে।
৩৩)"সেই তো আমার পরম পুলক, সেই তো আমার পদক পাওয়া"। - কীসের কথা বলেছেন কবি?
উত্তর: 'আঁকা, লেখা' কবিতাতে কবি ছড়ার সূত্রে পাঠকের কাছে পৌঁছে যাওয়াকেই তাঁর আনন্দ ও পুরস্কার পাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন।
৩৪) কবির ছড়া লেখায় প্রকৃতি কীভাবে প্রভাব ফেলেছিল লেখো।
উত্তর: কবি নিজেই বলেছেন যে মাঠে যখন জ্যোৎস্না নামে এবং বাতাস কম্পন তৈরি করে তখন তাঁর ছড়া লেখার শুরু হয়। আকাশ থেকে তখন তারার মালা নেমে আসে আর জোনাকিরা বকুল গাছে আলোর অক্ষর তৈরি করে। প্রকৃতির এই পরিবর্তনে কবি পরম পুলক বোধ করেন।
৩৫)"বাতাস ঈষৎ কাঁপন দিতেই আমার ছড়া লেখার শুরু"-বাতাসের ঈষৎ কাঁপন কীভাবে কবিকে ছড়া লেখার কাজে উৎসাহিত করেছিল?
উত্তর: নিসর্গপ্রকৃতি যুগ যুগ ধরে কবিদের কাব্যরচনায় উৎসাহ যুগিয়েছে। আধুনিক কবি মৃদুল দাশগুপ্তও প্রকৃতির মায়াবী হাতছানি উপেক্ষা করতে পারেননি। তাই যখন রাত্রিবেলা প্রান্তরের ওপর দুধের সরের মতো জ্যোৎস্না জমে ওঠে এবং বাতাসের ঈষৎ কাঁপন অনুভূত হয়, তখনই প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ কবি তাঁর কবিতায় প্রকৃতির সেই রূপকে ধরে রাখতে চান। এভাবেই প্রকৃতি কবিকে অনুপ্রাণিত করে কবিতা লিখতে।
আরও পড়ো-