মেঘ-চোর
(সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়)
তোমাদের আজ শেয়ার করতে চলেছি Class-7 বাংলা বই থেকে মেঘ-চোর গল্পের কিছু প্রশ্নপত্র রয়েছে। লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লেখা এই মেঘ-চোর গল্প। তাই পরীক্ষা জন্য এই গল্প থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর তোমাদের কাছে তুলে ধরা হল, নিচে নতুন পোস্টে এই গল্পের সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর আছে,তোমরা ভালো করে পড়ে নাও।
সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || মেঘ-চোর (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর || Megha Cora Questions And Answers
১) 'মেঘ-চোর'-এর মতো তোমার পড়া দু-একটি কল্পবিজ্ঞানের গল্পের নাম বলো।
উত্তর: আমার পড়া কল্পবিজ্ঞানমূলক গল্পগুলির মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য গল্প হল সত্যজিৎ রায়ের 'বঙ্কুবাবুর বন্ধু' ও 'একশৃঙ্গ অভিযান'।
২) এই গল্পে কজন চরিত্র?' তাদের নাম কী?
উত্তর: 'মেঘ-চোর' গল্পে মোট চারটি চরিত্রের উল্লেখ আছে। 'মেঘ-চোর' গল্পের চরিত্রগুলি হলেন বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি, তাঁর ভাই বিজয়, বিজ্ঞানী কারপড এবং তাঁর মেয়ে অসীমা। তবে দিবিজয় এবং ভারপত্তের নাম কথোপকথন প্রসঙ্গে এসেছে, তাঁরা সরাসরি এই গল্পের চরিয় হিসেবে আসেননি।
৩) 'মেঘ-চোর' কাকে বলা হয়েছে?
উত্তর: এই গল্পে বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরিকে 'মেঘ-চোর' বলা হয়েছে।
৪) পুরন্দরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি হলেন একজন নামজাদা বৃষ্টিবিজ্ঞানী। পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সের এই বিজ্ঞানী সাহারা মরুভূমিতে এক মাসে একশো ইঞ্চি শাষ্টিপাত ঘটিয়ে সমগ্র বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
৫) অসীমা সম্বন্ধে দু-একটি বাক্য লেখো।
উত্তর: সাতাশ বছর বয়সি অসীমা আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করলেও ভূগোল ও কম্পিউটারে রয়েছে তাঁর বিশেষ আগ্রহ এবং দক্ষতা। বিজ্ঞানী কারপভের মেয়ে অসীমা, পুরন্দরকে তাঁর ভয়ংকর পরীক্ষা থেকে নিবৃত্ত করতেই তাঁর ভাইঝি হিসেবে নিজের মিথ্যা পরিচয় দিয়েছিলেন।
৬) পুরন্দর কী সাংঘাতিক কান্ড করেছেন?
উত্তর: সাহারা মরুভূমিতে এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে পুরন্দর একটি সাংঘাতিক কান্ড করেছেন। এই বৃষ্টিপাতের জন্য তিনি সাইবেরিয়া থেকে মেঘ চুরি করে সাহারায় নিয়ে এসেছিলেন।
৭) রাষ্ট্রসঙ্ঘে বিভিন্ন দেশ কী দাবি তুলেছে?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি সাইবেরিয়া থেকে মেঘ নিয়ে গিয়ে সাহারা মরুভূমিতে এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটানোর জন্য রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন দেশ দাবি চলেছে যে, মেঘ চুরি আইন করে পরিবর্তন করা দরকার।
৮) হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কোথায়?
উত্তর: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত।
৯) পুরন্দরের মুখটা হাঁ হয়ে গেল কেন?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি যখন জানতে পারলেন যে, অসীমা আগে থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এর কৌশলে তাঁদের রকেটটিকে বায়ুমণ্ডলের অনেক ওপরে নিয়ে গেছেন এবং সেখানে পারদের সঙ্গে এগারোটি ধাতু মিশিয়ে তৈরি তাঁর ধাতব বলটি ক্রমে ক্রমে ঠান্ডা হয়ে আসছে, তখন তিনি বাঝতে পারলেন যে সুন্দরী মেয়েটি ভাইঝি পরিচয়ে তাঁকে সম্পূর্ণ প্রতারিত করেছে। সেকথা বুঝে বিস্ময়ে পুরন্দরের মুখটা হাঁ হয়ে গিয়েছিল।
১০) জ্ঞান ফিরে পুরন্দর অবাক হয়েছিলেন কেন?
উত্তর: আমেরিকার বোস্টন শহরে একটি আবহাওয়া সংক্রান্ত আলোচনাসভায় বিখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরিকে বিজ্ঞানী কারপভ 'মেঘ-চোর' বলে অপবাদ দিলে তিনি উত্তেজনায় অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন যে একটি সুন্দরী বাঙালি মেয়ে তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। বিদেশ-বিভুঁইতে আত্মীয়স্বজনহীন পুরন্দর অপ্রত্যাশিতভাবে একটি বাঙালি মেয়ের সেবা পেয়ে আনন্দে অবাক হয়ে যান।
১১) দিবিজয় কে ছিলেন?
উত্তর: দিবিজয় ছিলেন বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দরের ভাই। তিনি পঁচিশ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন।
১২) গল্পের ঘটনা যখন ঘঠেছে তখন চরিত্রগুলি কোথায় ছিল।
উত্তর: গয়ের ঘটনা যখন ঘটেছে তখন চরিজগুলি ছিল আলাস্কার আকাণে একটি রকেটে।
১৩) ইগলু-র পরিবর্তে সেখানে তখন কী দেখা যাচ্ছিল?
উত্তর: আলাঙ্কা অঞ্চলে এস্কিমোদের বাসস্থান ইগলুর পরিবর্তে তখন বড়ো বড়ো এয়ারকন্ডিশনড্ বাড়ি দেখা যাচ্ছিল।
১৪) কেন বলা হয়েছে অসীমা 'ভূগোলও বেশ ভালো জানে'?
উত্তর: রকেট থেকে নীচের দিকে তাকিয়ে তুষারাবৃত একটি পাহাড়ের দিকে তাকিয়েই অসীমা বলে দিয়েছিলেন যে, পাহাড়টি হল মাউন্ট চেম্বারলিন। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, মাউন্ট চেম্বারলিন আলাস্কায় অবস্থিত এবং ওই পাহাড়ের পাশের যে হ্রদটি কুয়াশা দিয়ে ঘেরা, তার নাম লেক শ্রেভার। এসব থেকেই বোঝা যায় ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করলেও ভূগোলেও অসীমার দক্ষতা আছে।
১৫) কে কোথা থেকে কোথায় মেঘ এনেছিলা?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি সাইবেরিয়া থেকে মেথা নিয়ে এসেছিলেন সাহারা মরুভূমিতে এবং সেখানে এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিলেন।
১৬) তুষার যুগ কাকে বলে?
উত্তর: যে যুগে পৃথিবীপৃষ্ঠ তুষারে অর্থাৎ বরফে ঢেকে গিয়েছিল, সেই যুগকেই তুষার যুগ বলে অভিহিত করা হয় এবং পৃথিবীতে এই রকম তুষার যুগ বেশ কয়েকবার এসেছে। আনুমানিক তেরো হাজার বছর আগেপৃথিবীতে শেষ তুষার যুগ এসেছিল।
১৭) পৃথিবী থেকে কত জল সারাবছর বাষ্প হয়ে মেঘে উড়ে যায়?
উত্তর: পৃথিবী থেকে পঁচানব্বই হাজার কিউবিক মাইল জল সারা বছর বাষ্প হয়ে মেঘে পরিণত হয়।
১৮) মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার কেন?
উত্তর: পৃথিবীতে মানুষ, গাছপালা ও জীবজন্তুর বেঁচে থাকার জন্য প্রতি বছর পনেরো হাজার কিউবিক মাইল বৃষ্টি প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে জনসংখ্যা অত্যন্ত দ্রুত ছারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার।
১৯) আটলান্টিস কী?
উত্তর: আটলান্টিস হল একটি লুপ্ত সভ্যতার নাম। যেহেতু এই সভ্যতার তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তাই অনেকের মতে এটি নিছকই প্রাচীন গ্রিক লেখকদের কল্পনা।
২০) পুরন্দরের মতে আটলান্টিসের অবস্থান কোথায়?
উত্তর: পুরন্দরের মতে, আটলান্টিসের অবস্থান আলাস্কার লেক শ্রেভার-এর নীচে। তাই তিনি লেক শ্রেভার-এর জল শুকিয়ে ফেলে সেই সভ্যতার অনুসন্ধান করতে চেয়েছিলেন।
২১) সাইবেরিয়া কোথায়?
উত্তর: পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের একেবারে উত্তর অংশে এশিয়া ফ্লাদেশের ও রাশিয়ায় সাইবেরিয়া অবস্থিত। এটি অত্যন্ত শীতল জায়গা, তাই সারা বছরই অঞ্চলটি বরফে ঢাকা থাকে।
২২) অসীমা কেন পুরন্দরকে ফেরিওয়ালা বলে ব্যঙ্গ করেছে?
উত্তর: ফেরিওয়ালা যেমন নানারকম সামগ্রী নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফেরি করে বেড়ায়, পুরন্দর চৌধুরিও তেমন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মেঘ ফেরি করে বেড়াতে চেয়েছিলেন। আলাঙ্কার লেক শ্রেভার-এর জল শুকিয়ে ফেলে তিনি পঁচানব্বই হাজার কিউবিক মাইল আয়তনের এক বিশাল জলভরা মেঘ তৈরি করে তা বিভিন্ন দেশে ফেরি করতে চেয়েছিলেন, তাই অসীমা তাঁকে ফেরিওয়ালা বলে ব্যঙ্গ করেছেন।
২৩) অ্যালয় কী?
উত্তর: একটি ধাতুর সঙ্গে অন্য একটি বা একাধিক ধাতু মিশিয়ে যে মিশ্র ধাতু তৈরি হয়, তাকে বলা হয় 'অ্যালয়' বা সংকর ধাতু। 'মেঘ-চোর' গল্পে দেখা যায়, বিখ্যাত বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি পারদের সঙ্গে এগারোটি ধাতু মিশিয়ে একটি সংকর ধাতু বা অ্যালয়ের বল তৈরি করেছেন, যা জলের ছোঁয়া পাওয়া মাত্রই গরম হতে শুরু করে।
২৪) পুরন্দরের তৈরি গোলকটিতে আছে এমন কোন্ ধাতুর নাম গল্পে পেলে?
উত্তর: 'মেঘ-চোর' গল্পে পুরন্দরের তৈরি গোলকটিতে থাকা ধাতুটি হল পারদ বা মার্কারি।
২৫) পুরন্দরের তৈরি গোলকটি এয়ারটাইট রাখতে হয় কেন?
উত্তর: বাতাসে উপস্থিত জলকণার ছোঁয়া পেলেই পুরন্দরের তৈরি গোলকটি গরম হতে শুরু করে। খোলা রাখলে পাছে পৃথিবীর আবহমণ্ডলে বিপর্যয় ঘটে, তাই সেটিকে এয়ারটাইট করে রাখতে হয়।
২৬) "প্রকৃতিকে ধবংস করা একটা অপরাধ।"-কে, কাকে, কখন বলেছে?
উত্তর: কারপন্ডের মেয়ে অসীমা বিশ্বখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরির উদ্দেশে উদ্ধৃত উত্তিটি করেছেন।
পুরুন্দর চৌধুরি তাঁর তৈরি ধাতব বলের সাহায্যে লেক শ্রেডার-এর জল সম্পূর্ণ শুকিয়ে ফেলে কৃত্রিমভাবে পঁচানব্বই হাজার কিউবিক মাইল আয়তনের এক বিশাল জলভরা মেঘ তৈরি করতে চাইলে অসীমা তাঁকে একথা বলেছিলেন।
২৭) অসীমার প্রকৃত পরিচয় কী?
উত্তর: প্রথমে পুরন্দর চৌধুরির ভাইঝি হিসেবে পরিচয় দিলেও অসীমা আসলে ছিলেন বিজ্ঞানী কারপডের মেয়ে। তিনি আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন।
২৮)"তাহলে আমরা গুঁড়ো হয়ে যাব।"-কে, কাকে, কেন বলেছে?
উত্তর: অসীমা পুরন্দর চৌধুরির উদ্দেশে প্রশ্নোস্মৃত উত্তিটি করেছিলেন। বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি তাঁর সৃষ্ট গোলাকৃতি ধাতব বলটির দ্বারা পাঁচ মিনিটে লেক শ্রেডার-এর সমস্ত জল শুকিয়ে তা মেঘে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। অসীমার শত নিষেধ এবং অনুনয় সত্ত্বেও তাঁর এই কীর্তিকে অমর করে রাখতে পুরন্দর ধাতব বলটিকে রকেট থেকে বাইরে ফেলতে উদ্যত হন। পুরন্দর রকেটের একটি অংশ খুলতে যেতেই উদ্বিঘ্ন অসীমা তাঁকে উদ্দেশ করে কথাটি বলেছিলেন, এর কারণ হল অসীমা আশঙ্কা করেছিলেন যে এমনটা ঘটলে চাপের তারতম্যের কারণে তাঁরা গুঁড়ো হয়ে যাবেন।
২৯) অসীমার বিশেষ আগ্রহ কোন্ বিষয়ে?
উত্তর: অসীমার বিশেষ আগ্রহ কম্পিউটার বিষয়ে।
৩০)"পৃথিবীর জল যেখন আছে তেমনই থাকুক'-কে কখন এই কথা বলেছে?
উত্তর: বায়ুমণ্ডলের অনেক ওপরে রকেট নিয়ে গিয়ে অসীমা পুরন্দরের হাত থেকে ধাতব বলটি নিয়ে রকেটের সকেটে ফেলে দেয় যাতে সেটি মহাশূন্যে বেরিয়ে যায়। বায়ুমণ্ডলের বাইরে ধাতব বলটি অকেজো। এভাবে পুরন্দরকে জব্দ করে অসীমা উপরোক্ত মন্তব্যটি করে।
৩১) পৃথিবী জুড়ে পুরন্দরের কেমন খ্যাতি রয়েছে?
উত্তর: পৃথিবী জুড়ে পুরন্দরের বৃষ্টিবিজ্ঞানী হিসেবে খ্যাতি রয়েছে।
৩২) অসীমা কী করেন?
উত্তর: অসীমা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন।
৩৩) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম লেখো।
উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম হল 'নীললোহিত'।
৩৪) "এ-জন্য তাঁর প্রশংসা যত হয়েছে, নিন্দেও হয়েছে প্রায় ততটাই।"- কীসের কথা বলা হয়েছে? কেন তাঁর নিন্দে হয়েছিল?
উত্তর: বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি সাহারা মরুভূমিতে এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে যে বিস্ময়কর কান্ডটি ঘটিয়েছিলেন এখানে তার কথাই বলা হয়েছে।অন্য দেশ থেকে মেঘ তাড়িয়ে এনে সাহারায় বৃষ্টিপাত ঘটানোর অর্থ সেই দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়া, যা এক অর্থে 'মেঘ-চুরি'। রাষ্ট্রসংঘের অনেকগুলি দেশ দাবি তুলেছিল যে আইন করে এই মেঘ চুরি বদলানো দরকার।
৩৫)"তারপর তিনি আর অসীমাকে ছাড়তে চাননি।"-কে কেন অসীমাকে ছাড়তে চাননি?
উত্তর: বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি অসীমাকে ছাড়তে চাননি।
অসীমা পুরন্দর চৌধুরিকে বলেছিলেন যে, তিনি তাঁর পঁচিশ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভাই দিবিজয়ের মেয়ে। অসীমা জানায় যে, তার বাবা দেশ ছেড়ে আলাস্কায় চলে যান এবং একটি এস্কিমো মেয়েকে বিয়ে করেন। মৃত্যুর আগেও তার বাবা পুরন্দর চৌধুরির নাম করেছিলেন। বিদেশে এসে রক্তের সম্পর্কের এক আত্মীয়কে খুঁজে পেয়ে দারুণ খুশি হয়েই পুরন্দর চৌধুরি আর অসীমাকে ছাড়তে চাননি।
৩৬) রকেট থেকে আলাস্কার কোন্ পরিবর্তন চোখে পড়েছিল?
উত্তর: আলাস্কায় ইগলুর বদলে বড়ো বড়ো এয়ারকন্ডিশনড্ বাড়ি গড়ে উঠেছে, রকেট থেকে এই পরিবর্তনই চোখে পড়েছিল।
৩৭) লেক শ্রেভার-এর পাশে যে পাহাড়টি ছিল তার নাম কী ছিল?
উত্তর: লেক শ্রেভার-এর পাশে থাকা পাহাড়টির নাম ছিল মাউন্ট চেম্বারলিন।
৩৮) পুরন্দর চৌধুরির মতে লেক শ্রেভার-এর জল কতদিনে শুকিয়ে যাবে?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরির মতে দশ হাজার বছরে লেক শ্রেভার-এর জল শুকিয়ে যাবে।
৩৯)"বিজ্ঞানীদের উচিত নয় কিন্তু একজন আর-একজনকে জব্দ করা।"-কে কখন একথা বলেছে?
উত্তর: আলাস্কার আকাশে পুরন্দর চৌধুরির সঙ্গী অসীমা মন্তব্যটি করেছিলেন।
আলাস্কার আকাশে রকেটে ঘোরার সময় পুরন্দর চৌধুরি তাঁর আবিষ্কারের মাধ্যমে বিজ্ঞানী কারপভকে জব্দ করার কথা সঙ্গী অসীমাকে জানান। তখনই অসীমা আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিলেন।
৪০) "পুরন্দর চৌধুরী হা-হা করে হেসে উঠলেন"-কেন হেসে উঠলেন? এর মধ্য দিয়ে তাঁর চরিত্রের কোন্ বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি তাঁর সঙ্গী অসীমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে সে আটলান্টিস নামক লুপ্ত সভ্যতার কথা জানে কি না। তিনি তাঁকে আরও জানান যে, লেক শ্রেভার-এর তলাতেই আটলান্টিস সভ্যতা চাপা পড়ে আছে। তাঁর এই মন্তব্যে আংশিক সন্দেহ প্রকাশ করে যখন অসীমা বলেন যে সেই সভ্যতার কথা তাহলে দশ হাজার বছর পরে জানা যাবে, তখন তাঁর কথা শুনে পুরন্দর চৌধুরি হেসে উঠেছিলেন।
তাঁর এই হাসির মধ্য দিয়ে পুরন্দর চৌধুরির প্রত্যয়ী অথচ অহংকারী স্বভাবেরই প্রকাশ ঘটেছে।
৪১) হঠাৎ বৃষ্টি বেড়ে গেলে পৃথিবীর কোথায় পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে পুরন্দর চৌধুরি উল্লেখ করেছিলেন?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি বলেছিলেন হঠাৎ বৃষ্টি বেড়ে গেলে সাইবেরিয়ায় বড়োজোর এক ইঞ্চি বেশি বরফ জমবে।
৪২) পৃথিবীর উত্তাপ তিন থেকে চার ডিগ্রি ফারেনহাইট কমে যাওয়ায় কী হয়েছিল?
উত্তর: পৃথিবীর উত্তাপ তিন থেকে চার ডিগ্রি ফারেনহাইট কমে যাওয়ায় গোটা উত্তর আমেরিকা বরফে ঢেকে গিয়েছিল।
৪৩)"... পৃথিবীর সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।" -কীভাবে?
উত্তর: কিছু মানুষ যে পরিমাণ অ্যাটম বোমা আর হাইড্রোজেন বোমা জমিয়ে রেখেছে সেগুলো একসঙ্গে ফাটতে শুরু করলে সব পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।
৪৪)"তাদের দেশে আমি ইচ্ছে করলে একফোঁটাও বৃষ্টি না দিতে পারি।" -কাদের দেশের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে যে বিজ্ঞানীরা পুরন্দরের সঙ্গে শত্রুতা করেছেন বা তাঁর নামে নিন্দে রটিয়েছেন তাঁদের দেশের কথা বলা হয়েছে।
৪৫)"আমি ওসব বোমা-টোমায় বিশ্বাস করি না।" -কে কেন একথা বলেছে?
উত্তর: বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি এই কথাটি বলেছেন।
পুরন্দর চৌধুরি বিশ্বাস করতেন যে, তাঁর আবিষ্কার সবসময় মৌলিক। দশ হাজার বছর পরে যে লেক শ্রেভার শুকানোর কথা ছিল তাকে তিনি পাঁচ মিনিটে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তাঁর উদ্দেশ্য মেঘ সৃষ্টি করা। এই পরীক্ষার সাফল্যে নিশ্চিত হয়েই পুরন্দর চৌধুরি এই মন্তব্যটি করেছিলেন।
৪৬)"আমি হব আকাশের দেবতা ইন্দ্র।" -বক্তা কেন একথা বলেছেন লেখো।
উত্তর: লেক শ্রেভার-এর জলকে মেঘে রূপান্তরিত করে পুরন্দর চৌধুরি তার কিছুটা সাইবেরিয়ায় পাঠাতে চেয়েছিলেন, কিছু বিক্রি করার কথাও বলেছিলেন। এক দেশ থেকে অন্য দেশে মেঘ উড়িয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। প্রয়োজনে পৃথিবীর সব মেঘ একসঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কথাও তিনি ভেবেছিলেন। কোথায় কখন বৃষ্টি হবে তাও নির্ধারণ করতে চেয়েছিলেন। এইভাবে মেঘের একচ্ছত্র অধিকার নিয়ে প্রকৃত অর্থে 'পুরন্দর' অর্থাৎ আকাশের দেবতা ইন্দ্র হয়ে বৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই পুরন্দর চৌধুরি একথা বলেছেন।
৪৭)"এটা কিন্তু প্রমাণিত সত্য" -এখানে কোন্ সত্যের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: পুরন্দর বড়ো বড়ো বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্বন্ধে আলোচনা প্রসঙ্গে অসীমাকে জানান যে দশ লক্ষ বছরেরও আগে পৃথিবীর উত্তাপ একবার কমে গিয়েছিল। দশ-পনেরো বছর পরে পরে পৃথিবার উত্তাপ বাড়ে কমে। সেবার পৃথিবীর উত্তাপ তিন থেকে চার ডিগ্রি ফারেনহাইট কমে গিয়েছিল। এর ফলে, গোটা উত্তর আমেরিকা বরফে ঢেকে গিয়েছিল। কোথাও কোথাও এক হাজার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত বরফ জমে গিয়েছিল। এখানে এই সত্যের কথাই বলা হয়েছে।
৪৮) একটা ফাইবার গ্লাসের বাক্স বার করলেন।"-বাক্সের ভিতরে কী ছিল?
উত্তর: বাক্সের ভিতরে ছিল ফুটবলের সাইজের একটা ধাতব বল।
৪৯) জলকণার স্পর্শে পুরন্দরের ধাতব বলটি গরম হয়ে যেত বলে সেটিকে কী করতে হত?
উত্তর: জলকণার স্পর্শে ধাতব বলটির গরম হয়ে যাওয়া ঠেকাতে সেটিকে এয়ারটাইট অবস্থায় রাখতে হত।
৫০) "আমি তো মেঘের ব্যবসাদার নই।"-কেন বক্তা একথা বলেছেন?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি কৌতুক করে লেক শ্রেভার-এর জল শুকিয়ে মেঘ তৈরি করে সেই মেঘ বিক্রির কথা অসীমাকে বলেছিলেন। পুরন্দর আকাশে বিশাল মেঘ নিয়ে ঘুরছেন আর দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে তা বিক্রি করতে চাইছেন-বিষয়টি অসীমার কাছে যথেষ্ট মজাদার বলে মনে হয়েছিল। তখনই পুরন্দর বলেন যে তিনি মেঘ নিয়ে ব্যাবসা করতে চান না, মানুষের ক্ষতি করতেও চান না।
৫১)"তবে নতুন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার সময় এ রকম একটু ঝুঁকি নিতেই হয়।”-কোন্ বিষয়ে বক্তা একথা বলেছেন?
উত্তর: অসীমা পুরন্দর চৌধুরির কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে লেক শ্রেভার-এর জলকে মেঘে পরিণত করে সাইবেরিয়ায় পাঠানোর সময়ে আগেই সেটি ভেঙে গিয়ে কোনো দেশকে ভাসিয়ে দিতে পারে কি না। তখনই পুরন্দর চৌধুরি সেই কথার উত্তরে বলেছিলেন যে, সেরকম ঝুঁকি কিছুটা থেকেই যায়। কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়া মেঘের চরিত্র কেমন হবে, তা আগে থেকে বলা যায় না। কিন্তু যে-কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করার সময় এই ঝুঁকিটুকু থাকবেই।
৫২) অসীমা রিভলবার বের করে পুরন্দর চৌধুরিকে কী করতে বলেছিল?
উত্তর: অসীমা রিভলবার বের করে পুরন্দর চৌধুরিকে তার ধাতব বলটি পুনরায় এয়ারটাইট বাক্সে ঢোকাতে বলেছিল।
৫৩) "তুমি একটা স্পাই" -কাকে স্পাই বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে কারপভের মেয়ে অসীমাকে স্পাই বলা হয়েছে।
৫৪) “এই নাও ধার শোেধ।"-কাকে বক্তা একথা বলতে চেয়েছিলেন?
উত্তর: বক্তা পুরন্দর চৌধুরি বিজ্ঞানী কারপভকে একথা বলতে চেয়েছিলেন।
৫৫) কারপড়ের মেয়ের নাম কী?
উত্তর: বিজ্ঞানী কারপন্ডের মেয়ের নাম হল অসীমা।
৫৬)"ওটা মহাশূন্যে থাক"-এখানে কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে পুরন্দর চৌধুরির তৈরি অ্যালয় বলটির কথা বলা হয়েছে।
৫৭) "আপনার দিকে অস্ত্র তুলতে হয়েছে বলে আমি দুঃখিত।"-কে একথা বলেছিলেন? এই অস্ত্র তোলার কারণ কী ছিল?
উত্তর: উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছিলেন অসীমা।আবহাওয়া-বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি পরিকল্পনা করেছিলেন যে, তাঁর আবিষ্কার করা ধাতব বলের সাহায্যে তিনি লেক শ্রেভার-এর জলকে পাঁচ মিনিটে শুকিয়ে মেঘে পরিণত করবেন এবং তার একটা অংশ সাইবেরিয়ায় পাঠাবেন। কিন্তু ইচ্ছামতো প্রকৃতির এই রূপান্তর সভ্যতার বিপদ ডেকে আনবে। তাই পুরন্দরকে নিবৃত্ত করতেই অসীমা অস্ত্র তুলে নিয়েছিল।
৫৮)"...আমাকে মেরে ফ্যালো, তবু এই গোলাটা আমি হ্রদে ফেলবই।"- এখানে বক্তার কোন্ মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরি লেক শ্রেভার-এর জল শুকিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন। এতে যে প্রকৃতির নিজস্ব ভারসাম্য বিপন্ন হতে পারে তা জানা সত্ত্বেও তিনি বিজ্ঞানী হিসেবে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে মরিয়া ছিলেন। পুরন্দর চৌধুরিকে নিবৃত্ত করার জন্য অসীমা রিভলবার বের করে বলটি এয়ারটাইট বাক্সে ঢোকানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু নিজের আবিষ্কারের উন্মাদনায় মত্ত পুরন্দর চৌধুরি পৃথিবীর আশু ক্ষতিকে গুরুত্বই দিতে চাননি।
৫৯)"পুরন্দর চৌধুরি ওই বলটি আপনি এবার ওই এয়ারটাইট বাক্সে ঢোকান"-পুরন্দর চৌধুরিকে কে একথা বলেছে? বলটির বিশেষত্ব কী?
উত্তর: পুরন্দর চৌধুরিকে অসীমা এই কথা বলেছেন। এই ধাতব বলটির বিশেষত্ব হল এটি জলের ছোঁয়া লাগতেই গরম হতে শুরু করে। তাই একে এয়ারটাইট অবস্থায় রাখতে হয়। এ ছাড়া এই ধাতুটির কোনো ধ্বংস নেই, যতবার ইচ্ছা ব্যবহার করা যায়।
আরও পড়ো-