দেবতাত্মা হিমালয়
প্রবোধকুমার সান্যাল
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী,
আজ শেয়ার করবো সপ্তম শ্রেণীর বাংলা বই থেকে "দেবতাত্মা হিমালয়" থেকে প্রশ্ন উত্তর। দেবতাত্মা হিমালয়ে রচয়িতা হলেন প্রবোধকুমার সান্যাল। ফাইনাল পরীক্ষা বা টেস্ট পরীক্ষা জন্য এই প্রশ্ন ও উত্তর ভালো করে পড়তে পারো। তাই আর সময় নষ্ট না করে নিচের নতুন পোস্টটি একবার দেখে নাও।
সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || দেবতাত্মা হিমালয় (প্রবোধকুমার সান্যাল) প্রশ্ন ও উত্তর || Debotatma Himalay Questions And Answers
১) প্রাচীন পথ ধরে কোন্ তিনজন প্রসিদ্ধ বাঙালি অতীতে তিব্বতে অভি গিয়েছিলেন?
উত্তর: প্রাচীন পথ ধরে অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, রাজা রামমোহন রায় এবং শরৎচন্দ্র দাস অতীতে তিব্বতে গিয়েছিলেন।
২)কোন্ প্রাচীন পথের রেখা ধরে তাঁরা গিয়েছিলেন?
উত্তর: কালিম্পঙের ওপর দিয়ে এগিয়ে চলা রেনক্ রোড ধরে তাঁরা তিব্বত গিয়েছিলেন।
৩) এখনকার পর্যটকরা এই প্রাচীন পথটি পরিহার করেন কেন?
উত্তর: এখনকার পর্যটকরা এই প্রাচীন পথটি পরিহার করেন কারণ পথটিতে দুর্যোগ বেশি এবং চলা-ফেরা করা কষ্টসাধ্য।
৪) কোন্ দুই বিখ্যাত বাঙালি তিব্বতে গিয়ে বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন?
উত্তর: যশোরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত এবং অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতে গিয়ে বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন।
৫) ছদ্মবেশে কে গিয়েছিলেন তিব্বতে?
উত্তর: ছদ্মবেশে তিব্বতে গিয়েছিলেন শরৎচন্দ্র দাস।
৬) স্যার ফ্রান্সিস ইয়াংহাসব্যান্ডকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল তিব্বত বিষয়ক কোন্ বইটি?
উত্তর: শরৎচন্দ্র দাশ তিব্বতের ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখেছিলেন যে বইটিতে, সেটি স্যার ফ্রান্সিস ইয়াংহাসব্যান্ডকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল।
৭) কালিম্পঙের কোথায় পড়াশোনা করে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ও ইংরেজ অনাথ ছেলেমেয়েরা?
উত্তর: অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ও ইংরেজ অনাথ ছেলেমেয়েরা কালিম্পঙের গ্রেহামস হোম-এ পড়াশোনা করে।
৮) গৌরীপুর প্রাসাদে কারা ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী?
উত্তর: গৌরীপুর প্রাসাদে হীরেন দত্ত, রথীন্দ্রনাথ, প্রতিমাদেবী, অনিল চন্দ, মৈত্রেয়ী দেবী, চিত্রিতা দেবী প্রভৃতি মানুষজন ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী।
৯) লেখকের অনুরোধে কোন্ পত্রিকার জন্য অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
উত্তর: লেখকের অনুরোধে 'যুগান্তর' পত্রিকার জন্য অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
১০) ২৫ বৈশাখের সেই বিশেষ দিনটি যে ছিল শুরুগন্ধ, লেখা থেকে সে কথা জানতে পার কেমন করে?
উত্তর: লেখক তাঁর স্মৃতিচারণে স্পষ্ট করে বলেছেন, "জ্যোৎস্না ছিল সেদিন বাইরে।"-এই উক্তি থেকেই জানতে পারি ২৫ বৈশাখের সেই বিশেষ দিনটি ছিল শুক্লপক্ষ।
১১) কীভাবে গেলে পৌঁছোনো যায় কালিম্পঙের গ্রেহামস হোম-এ? এই হোমটির বিশিষ্টতা কী?
উত্তর: বড়ো গির্জাটা হল কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক। তারই পাশ দিয়ে চলে যাওয়া চড়াই পথ ধরে এদিক-ওদিক ঘুরে অনেকখানি উঁচুতে উঠে গেলে পৌঁছোনো যায় কালিম্পঙের গ্রেহামস হোম-এ।
কালিম্পঙের গ্রেহামস হোম-এ অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান এবং ইংরেজদের অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে মানুষ হয়। পরিচালনা ব্যবস্থা সমস্তই খাঁটি সাহেব-মেমদের হাতে। এই হোমের সীমানাটা এতই বিস্তৃত যে একটু-আধটু ঘুরে দেখতেই ঘণ্টা খানেক সময় লেগে যায়।
১২) ২৫ বৈশাখের 'যুগান্তর' পত্রিকার প্রথম পাতায় শিল্পীর আঁকা যে বিশেষ রেখাচিত্রটি প্রকাশ পেয়েছিল, তার বিষয় কী ছিল? রবীন্দ্র জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে এই ছবির বিষয়টি তোমার যথার্থ মনে হয় কি না, লেখো।
উত্তর: ২৫ বৈশাখের 'যুগান্তর' পত্রিকার রবীন্দ্রজয়ন্তী সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছিল শিল্পীর হাতে আঁকা যে রেখাচিত্র, তার বিষয় ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ।
২৫ বৈশাখ বাঙালিদের কাছে শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন হিসেবেই চিহ্নিত নয়, এই দিনটি বাঙালির সংস্কৃতির বিশেষ উৎসবের দিনও। রবীন্দ্রনাথ তাঁর অসামান্য প্রতিভার দ্বারা বাঙালির সংস্কৃতির সমস্ত ক্ষেত্রগুলিকে আলোকিত করে গেছেন, তাই 'যুগান্তর' পত্রিকা জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে ২৫ বৈশাখের দিনের রবীন্দ্রজয়ন্তী সংখ্যায় শিল্পীর আঁকা কবিগুরুর রেখাচিত্র কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশ করেছিলেন। ছবিটিতে দেখানো হয়েছিল, গ্রাম-নগর, দেশ-মহাদেশ এবং দিগ্বলয় ছাড়িয়ে কবির মাতা উঠেছে ধবলকার গিরিশৃঙ্গের মতো-তিনি যেন পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ। আমার মতে, এটা যথার্থই কারণ রবীন্দ্রনাথের বিপুল সৃষ্টিকে এড়িয়ে যাবার শক্তি বাঙালির নেই।
১৩)"কাজটি দুরূহ, অনেকদিন সময় লাগবে।"-কোন্ কাজটি সম্পন্ন করবার ইচ্ছে লেখককে জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ? কেন সে-কাজ করার ইচ্ছে হয়েছিল তাঁর? কার সাহায্য প্রত্যাশা করেছিলেন ওই কাজে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ সমগ্র মহাভারত মহাকাব্যটিকে নিজের হাতে লিখে সম্পন্ন করার ইচ্ছে লেখককে জানিয়েছেন।
মহাভারতের মতো অত বড়ো মহাকাব্য বা এপিক পৃথিবীর কোনো কালের কোনো সাহিত্যেই নেই। সেই কারণেই ওই মহাকাব্যটিকে নিজের হাতে একবার লিখতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
ওই কাজে রবীন্দ্রনাথ হীরেন দত্তর সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন।
১৪) "এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায় হে?"-কোন্ প্রসঙ্গে এই পরিহাস রবীন্দ্রনাথের?
উত্তর: 'দেবতাত্মা হিমালয়' নিবন্ধের লেখক কালিম্পঙে ঠাকুরবাড়িতে উঠেছিলেন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন গৌরীপুর প্রাসাদে। ২৫ বৈশাখ লেখক যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জন্মদিনের প্রণাম জানাতে গেলেন তখন বিশ্বকবি লেখকের কাছে জানতে চাইলেন তিনি কোথায় উঠেছেন। ঠাকুরবাড়িতে ওঠার কথা শুনে রবীন্দ্রনাথ রসিকতা করে লেখককে উদ্ধৃত কথাগুলি বলেছিলেন।
১৫) "কবি সেদিন আমাকে বাগে পেয়েছিলেন।"- 'বাগে পেয়েছিলেন'-এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ কী? তাঁকে কবির 'বাগে পাওয়ার' কী পরিচয় রয়েছে লেখকের সেদিনের বিবরণে?
উত্তর: 'বাগে পেয়েছিলেন'- এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ হল 'আয়ত্তের মধ্যে পেয়েছিলেন'।
'দেবতাত্মা হিমালয়' শীর্ষক নিবন্ধে লেখক প্রবোধকুমার সান্যাল একটি মজার ঘটনার মাধ্যমে জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ কেমনভাবে তাঁকে বাগে পেয়েছিলেন। লেখক ঠাকুরবাড়িতে উঠেছিলেন শুনে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, "এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায় হে?" রবীন্দ্রনাথ আসলে মজা করে বলতে চেয়েছিলেন যে ওই সময় তাঁর গৌরীপুর প্রাসাদে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রয়েছেন, তাই সেটাই তো আসল ঠাকুরবাড়ি। এই জাতীয় নানা পরিহাস সরস বাক্যবাণে লেখককে বিদ্ধ করতে লাগলেন রবীন্দ্রনাথ এবং তাতে সবাই খুব হাসতে লাগল।
১৬) "কালিম্পঙে টেলিফোন ছিল না, এই উপলক্ষে তার প্রথম উদ্বোধন।"-কোন্ বিশেষ উপলক্ষ্যে, কীভাবে এই উদ্বোধন সম্পন্ন হল?
উত্তর: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন উপলক্ষ্যে কালিম্পঙে টেলিফোনের উদ্বোধন হল।
জন্মদিনের দিন, ২৫ বৈশাখ কবি রবীন্দ্রনাথ সন্ধে সাড়ে সাতটা-আটটা নাগাদ গৌরীপুর প্রাসাদে তাঁর ঘরে বসানো টেলিফোন যন্ত্রের সামনে বসলেন। মিনিট পনেরো সময় ধরে কবি তাঁর নবরচিত কবিতা পাঠ করলেন। বেতার কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা অনুযায়ী সেই কণ্ঠস্বর কলকাতা ঘুরে কালিম্পঙের রেডিয়োতে বেজে উঠল। এইভাবে কালিম্পঙে টেলিফোনের উদ্বোধন সম্পন্ন হল।
১৭) "কিন্তু নৃপেন্দ্রবাবুর ফরমাশ শুনতেই হলো।"-নৃপেন্দ্রবাবু কে? কী ছিল তাঁর ফরমাশ? কীভাবে তা শুনেছিলেন লেখক?
উত্তর: নৃপেন্দ্রবাবু হলেন একজন বেতার-বিশেষজ্ঞ। তাঁর পুরো নাম নৃপেন্দ্র মজুমদার।
নৃপেন্দ্রবাবু লেখক প্রবোধকুমার সান্যালকে রবীন্দ্রনাথের বসার চেয়ারে বসে সূক্ষ্ম যন্ত্রে মুখ রেখে কলকাতাকে একবার 'হ্যালো' বলে ডাকার জন্য ফরমাশ করেছিলেন।
লেখক প্রথমে বিশ্বকবির নধর মখমল বসানো চেয়ারে বসতে খানিকটা সংকোচবোধ করলেও শেষপর্যন্ত নৃপেন্দ্রবাবুর ফরমাশ পালন করতে গিয়ে, তিনি ওই চেয়ারে বসেছিলেন এবং সূক্ষ্ম যন্ত্রের সামনে ডেকেছিলেন, “হ্যালো, ক্যালকাটা... হ্যালো...?"
১৮) সমগ্র উত্তর ভারতের মধ্যে তিব্বত থেকে নিকটবর্তী স্থান কোন্টি?
উত্তর: সমগ্র উত্তর ভারতের মধ্যে কালিম্পঙ হল তিব্বত থেকে সর্বাপেক্ষা নিকটবর্তী।
১৯) অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান কে ছিলেন?
উত্তর: ঢাকা-বিক্রমপুরের মানুষ অতীশ দীপঙ্কর ছিলেন তিব্বতে বৌদ্ধধর্মের প্রচারক।
২০) দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতে গিয়েছিলেন কতবছর আগে?
উত্তর: দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতে গিয়েছিলেন ন'শো বছরেরও আগে।
২১) তিব্বতে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেছিলেন যে বিখ্যাত বাঙালি সস্তান তার নাম কী?
উত্তর: তিব্বতে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেছিলেন অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান।
২২) "তার মূর্তিকে আজও বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে।"-কার মূর্তিকে বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে?
উত্তর: অতীশ দীপঙ্করের মূর্তিকে তিব্বতীয়রা বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে।
২৩) গারটক জায়গাটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: কাশ্মীরের পূর্বপ্রান্তে তিব্বতের সঙ্গে বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হল গারটক।
২৪) "তাঁর কাছে আধুনিক ভারতবর্ষ ঋণী...". ."-কার কাছে কেন এই ঋণ?
উত্তর: ছদ্মবেশে তিব্বতে যাওয়া শরৎচন্দ্র দাসের কাছে লেখক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এর কারণ, তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্ত শুনেই আধুনিক যুগে প্রথম তিব্বতের সম্পর্কে বহু তথ্য জানা যায়।
২৫) "ভারতের তদানীন্তন শ্রেষ্ঠ জ্ঞানঋষি দীপঙ্কর তিব্বত গিয়ে বৌদ্ধধর্মের নির্মল স্বরূপকে প্রচার করেছিলেন।"-দীপঙ্করের সঙ্গে তিব্বতের যোগাযোগের বর্ণনা দাও। আর কোন্ কোন্ বাঙালি তিব্বতে গিয়েছিলেন লেখো।
উত্তর: বাংলাদেশের ঢাকা-বিক্রমপুরের সন্তান অতীশ দীপঙ্কর ১০৪০ খ্রিস্টাব্দে তিব্বতে যান। সেখানে তিনি তেরো বছর থাকেন এবং লামার নিকটেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। গৌতম বুদ্ধের পরে তিব্বতবাসীরা তাঁর মূর্তিকে বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে।
দীপঙ্করের পরে রামমোহন রায়ের তিব্বত যাত্রার কথা জানা গেলেও সে-বিষয়ে বিশেষ তথ্য পাওয়া যায় না। ছদ্মবেশে তিব্বতে গিয়েছিলেন শরৎচন্দ্র দাস, উনিশ শতকের শেষভাগে। তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্ত থেকেই একালের ভারত, তিব্বত সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে। অতীশ দীপঙ্করেরও আগে অষ্টম শতাব্দীতে যশোরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত তিব্বতে যান। লামারা তাঁকে রাজকীয় সম্বর্ধনা জানান। কিন্তু তাঁর সম্পর্কেও বিশেষ কিছু জানা যায় না।
২৬) কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক কোন্টি?
উত্তর: কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক হল সেখানকার বড়ো গির্জা।
২৭) গ্রেহামস হোম কারা পরিচালনা করেন?
উত্তর: গ্রেহামস হোম পরিচালনা করতেন ইউরোপীয় সাহেব-মেমরা।
২৮) "মহাকবি জানতেন ..."-'মহাকবি' কে?
উত্তর: 'মহাকবি' বলতে এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বোঝানো হয়েছে।
২৯)'এপিক' শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: 'এপিক' শব্দের অর্থ হল মহাকাব্য।
৩০) "সমগ্র পাহাড় নিয়ে এ এক বিরাট কীর্তি।"-কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে কালিম্পঙের গ্রেহামস হোম-এর কথা বলা হয়েছে। সাহেব এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা এখানে পড়াশোনা করত। এর পরিচালন-ব্যবস্থা পুরোটাই সাহেব-মেমদের হাতে ন্যস্ত ছিল।
৩১) "গ্রাম-নগর-দেশ-মহাদেশ এবং দিগ্বলয় ছাড়িয়ে কবির মাথা উঠেছে ধবলাধার গৌরীশৃঙ্গের মতো"-উদ্ধৃত অংশটি কোন্ গদ্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে? কোন্ কবির কথা বলা হয়েছে? উদ্ধৃতিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: উদ্ধৃত অংশটি প্রবোধকুমার সান্যালের 'দেবতাত্মা হিমালয়' গদ্যাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে।
এখানে মহাকবি রবীন্দ্রনাথের কথা বলা হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতাত্মার প্রতীক। মানবতা ও সম্প্রীতির যে বার্তা, সংস্কারমুক্তির যে সন্ধান তিনি দিয়েছেন তা সভ্যতাকে পথ দেখিয়েছে। এই চির-উন্নতশির রবীন্দ্রনাথকেই, 'যুগান্তর' পত্রিকা তাদের রবীন্দ্র জয়ন্তী সংখ্যার প্রথম পাতায় প্রকাশিত ছবির মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করতে চেয়েছিল।
৩২) রবীন্দ্রনাথের বেতারে কবিতা পাঠ উপলক্ষ্যে কীসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথের বেতারে কবিতা পাঠ উপলক্ষ্যে কালিম্পঙে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।
৩৩) লেখককে চেয়ারে বসে কী করতে বলা হয়েছিল?
উত্তর: লেখককে চেয়ারে বসে যন্ত্রে মুখ রেখে কলকাতাকে ডাকতে বলা হয়েছিল।
৩৪) 'কলকাতা থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব এল"-কী জবাব এল?
উত্তর: কলকাতা থেকে জবাব এসেছিল 'ও-কে'।
৩৫) রবীন্দ্রনাথ কখন তাঁর কবিতা পাঠ শুরু করেন?
উত্তর: একটি আলোর নিশানা পেয়ে রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতা পাঠ শুরু করেন।
৩৬) "কেঁপে উঠলুম।”- কখন এবং কেন বক্তা কেঁপে উঠেছিলেন?
উত্তর: জন্মদিনে বেতারযোগে রবীন্দ্রনাথ কবিতা পাঠ করবেন বলে কালিম্পঙে টেলিফোন যোগাযোগের ব্যবস্থা হয়। অনুষ্ঠানের আগে পরীক্ষা করার জন্য লেখককে কবিগুরুর চেয়ারে বসে যন্ত্রের কাছে মুখ রেখে 'হ্যালো কলকাতা' বলতে বলা হয়। কবিগুরুর চেয়ারে বসতে হবে শুনেই লেখক কেঁপে ওঠেন।
৩৭)"ভুলে গিয়েছিলুম পরস্পরের অস্তিত্ব।"-এই অবস্থার কারণ কী?
উত্তর: কবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কালিম্পং থেকে কলকাতা বেতারের জন্য কবিতা পাঠ করেছিলেন। এজন্য কালিম্পঙে টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়। কবির দীপ্ত কণ্ঠের মূর্ছনায় লেখকসহ শ্রোতারা আবিষ্ট হয়ে যান। সকলে যেন মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোকের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছিলেন। সব কিছুরই একমাত্র কারণ ছিলেন রবীন্দ্রনাথ আর তাঁর কবিতাপাঠ।
৩৮) রবীন্দ্রনাথের কবিতাপাঠ উপলক্ষ্যে কালিম্পঙে যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল লেখো।
উত্তর: রবীন্দ্রনাথের কবিতাপাঠ উপলক্ষ্যে কালিম্পঙে বেতার কর্তৃপক্ষ টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেছিলেন। কবি তাঁর ঘরে বসে কবিতা পাঠ করবেন, আর বেতার কর্তৃপক্ষ সেটি ধরে নিয়ে সম্প্রচার করবে এমনই ছিল ব্যবস্থা। কয়েকজন বেতার-বিশেষজ্ঞও সেখানে উপস্থিত হয়ে যান। লেখককে কবির চেয়ারে বলিয়ে একবার প্রস্তুতিও সেরে নেওয়া হয়। গলা ফেটে যাচ্ছে কিনা অর্থাৎ আওয়াজে গণ্ডগোল হচ্ছে কি না দেখে নেওয়া হয়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা কিংবা আটটা নাগাদ কবি গিয়ে বসেন যন্ত্রের সামনে। শুরু হয় সকলের রোমাঞ্চকর অপেক্ষা।
আরও পড়ো-