Ads Area


পটলবাবুর ফিল্মস্টার (সত্যজিৎ রায়) প্রশ্ন ও উত্তর || সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || Patalababura Philmastara Questions

 পটলবাবুর ফিল্মস্টার
সত্যজিৎ রায়

সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের জন্য আজ আমরা বাংলা বই থেকে পটলবাবুর ফিল্মস্টার এই আলোচ্য গল্পটি  রয়েছে। এই আলোচ্য গল্পটি লেখক সত্যজিৎ রায়ের লেখা। এই গল্প থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর তোমাদের দেওয়া হলো, পরীক্ষার জন্য খুবই উপকার হবে। তাই একবার নিচের প্রশ্ন ও উত্তর গুলো দেখে নাও।


সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || পটলবাবুর ফিল্মস্টার (সত্যজিৎ রায়) প্রশ্ন ও উত্তর || Patalababura Philmastara Questions


সপ্তম শ্রেণীর বাংলা || পটলবাবুর ফিল্মস্টার (সত্যজিৎ রায়) প্রশ্ন ও উত্তর || Patalababura Philmastara Questions 


১) পটলবাবুর কাছে যেদিন ফিল্মে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, সেদিন ছুটির দিন ছিল কেন?

উত্তর: পটলবাবুর কাছে যেদিন ফিল্মে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, সেদিন রবীন্দ্র-জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছুটি ছিল।

২) বাজারে গিয়ে কেন গৃহিণীর ফরমাশ গুলিয়ে গেল পটলবাবুর?

উত্তর: হঠাৎ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়ার কথা ভাবতে থাকায় বাজারে গিয়ে গৃহিণীর ফরমাশ গুলিয়ে গেল পটলবাবুর।

৩) থিয়েটারে পটলবাবুর প্রথম পার্ট কী ছিল? 

উত্তর: থিয়েটারের প্রথম পার্টে পটলবাবু মৃত সৈনিকের ভূমিকায় অভিনয় করে ছিলেন।

৪) উনিশশো চৌত্রিশ সালে পটলবাবু কলকাতায় বসবাস করতে এলেন কেন?

উত্তর: উনিশশো চৌত্রিশ সালে কলকাতার 'হাডসন অ্যান্ড কিম্বার্লি' কোম্পানিতে আরেকটু বেশি মাইনের চাকরি আর নেপাল ভাজ্যি লেনের এই বাড়িটা পেয়ে পটলবাবু সস্ত্রীক কলকাতায় বসবাস করতে এসেছিলেন।

৫) পাড়ায় থিয়েটারের দল গড়া আর হলো না কেন পটলবাবুর? 

উত্তর: হাডসন অ্যান্ড কিম্বার্লি কোম্পানিতে ন-বছরের চাকরিটা হঠাৎ করে চলে যাওয়ায় পটলবাবুর পাড়ায় থিয়েটারের দল আর গড়া হয়নি।

৬) পটলবাবু তাঁর সময়নিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য কোন্ উদাহরণ দিতে ভালোবাসতেন?

উত্তর: নিজের সময়নিষ্ঠার প্রমাণ দিতে ন-বছরের মধ্যে একটি দিনের জন্যও হাডসন অ্যান্ড কিম্বার্লিতে লেট না হওয়ার উদাহরণ দিতে পটলবাবু ভালোবাসতেন।

৭) "পটলবাবুর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেল।"-পটলবাবু এমন লজ্জা পেলেন কেন?

উত্তর: অভিনয়প্রেমী পটলবাবুর কাছে যখন নরেশবাবু জানতে চাইলেন যে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে তাঁর কোনো আপত্তি আছে কি না তখন পটলবাবুর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেল।

৮) "গগন পাকড়াশি আজ তাঁকে দেখলে সত্যিই খুশি হতেন।'-তিনি খুশি হতেন কেন?

উত্তর: পটলবাবু যেভাবে ছোটো একটি চরিত্রকে অভিনয়ের মাধ্যমে সার্থক করে তুলেছেন, তা চোখের সামনে দেখতে পেলে তাঁর নাট্যগুরু গগন পাকড়াশি সত্যিই খুশি হতেন।

৯) "আমার টক করে তোমার কথা মনে পড়ে গেল।"-কার মনে পড়ে গেল পটলবাবুর কথা? পটলবাবুর কথাই বিশেষ করে তাঁর মনে পড়ল কেন?

 উত্তর: সত্যজিৎ রায়ের 'পটলবাবু ফিল্মস্টার' শীর্ষক রচনা থেকে উদ্ধৃত অংশে পটলবাবুর প্রতিবেশী নিশিকান্ত ঘোষ মহাশয়ের পটলবাবুর কথা মনে পড়ে গেল।

নিশিকান্ত ঘোষ মহাশয়ের কাছে তাঁর ছোটো শালা নরেশ দত্ত সিনেমায় একটা দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য বিশেষ চেহারার একটি লোকের খোঁজ করতে বলেছেন। যে ধরনের চেহারার বর্ণনা নরেশ দত্ত দিয়েছেন তা হল, বছর পঞ্চাশ বয়সী, বেঁটেখাটো, মাথায় টাক। ছোটো শালার মুখে চরিত্রের বর্ণনা শুনে নিশিকান্তবাবুর সেই মুহূর্তেই পটলবাবুর কথা মনে পড়ে যায়। কারণ পটলবাবুর চেহারার সঙ্গে সিনেমার চরিত্রের উপযোগী চেহারার অবিকল মিল খুঁজে পান তিনি।

১০)"গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল। সাধে কি তোমার কোনোদিন কিচ্ছু হয় না?"-পটলবাবুর গৃহিণীর এই মন্তব্যের কারণ কী?

উত্তর: 'গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল' প্রবচনটির অর্থ হল, 'কার্যারম্ভের পূর্বেই ফল লাভের ব্যবস্থা'। হঠাৎ করে সিনেমার একটি দৃশ্যে অভিনয় করার ডাক পেয়ে পটলবাবু এতটাই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়লেন যে তিনি মনে করতে শুরু করে দিলেন, অভিনেতা হিসেবে সাফল্যের সিঁড়ির এইটাই প্রথম ধাপ। তাঁর মনে হল, এরপর তিনি ধাপে ধাপে ওপরের দিকে উঠতে থাকবেন এবং অভিনেতা হিসেবে মান, যশ, খ্যাতি সবই লাভ করবেন। জীবনের একসময় শখের থিয়েটারে অভিনয় করা পটলবাবু বিভিন্ন পেশায় ব্যর্থ হয়েছেন। তারপর বাহান্ন বছর বয়সে সিনেমায় অভিনয়ের একটা সামান্য সুযোগ পেয়ে বাড়াবাড়ি রকমের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করায় তাঁর গৃহিণী উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিলেন।

১১) কার উপদেশের স্মৃতি পটলবাবুর অভিনেতা-সত্তাকে জাগিয়ে তুলল? কোন্ 'অমূল্য' উপদেশ তিনি দিয়েছিলেন পটলবাবুকে?

 উত্তর: পটলবাবুর নাট্যগুরু গগন পাকড়াশি মশাই-এর উপদেশের স্মৃতি পটলবাবুর অভিনেতা-সত্তাকে জাগিয়ে তুলল।

 পাকড়াশি মহাশয় একসময় পটলবাবুকে বলেছিলেন, ছোটো চরিত্রে বা পাটে অভিনয় করা নিয়ে পটলবাবুর যেন কখনও কোনো আক্ষেপ না থাকে কারণ, সেসব ক্ষেত্রে শিল্পী হিসেবে তাঁর একমাত্র দায়িত্ব হবে ছোটো পাটটি থেকেও শেষ রসটুকু নিংড়ে বার করে তাকে সার্থক করে তোলা। প্রত্যেকটি অভিনেতার সাফল্যের যোগফলই হল সম্পূর্ণ থিয়েটারটির সাফল্যের একমাত্র চাবিকাঠি। এ ছাড়াও পাকড়াশি মহাশয় পটলবাবুকে বলেছিলেন, নাটকের এক-একটি কথা হল গাছের ফলের মতো আর অভিনেতার একমাত্র কাজ হল, সেই ফল পেড়ে তার খোসা ছাড়িয়ে তার থেকে রস নিংড়ে বার করে সেটা লোকের কাছে পরিবেশন করা। তাঁর এই কথাগুলিই পটলবাবু অমূল্য উপদেশ হিসেবে মনে রেখেছিলেন।

১২) "ধন্যি মশাই আপনার টাইমিং। বাপের নাম ভুলিয়ে দিয়েছিলেন। প্রায়-৩ঃ?'-বক্তা কে? কোন্ ঘটনার ফলে তাঁর এমন মন্তব্য? 

উত্তর: সত্যজিৎ রায় রচিত 'পটলবাবু ফিল্মস্টার' গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশের বক্তা হলেন সিনেমার নায়ক চঞ্চলকুমার।

সিনেমার নায়ক চঞ্চলকুমারের সঙ্গো পটলবাবুর ধাক্কা লাগার দৃশ্যে পটলবাবুর কপালের সঙ্গে নায়কের মাথার জোর ঠোকাঠুকি হয়। সেই ঘটনার ফলে নায়ক চঞ্চলকুমার এই মন্তব্যটি করেছেন। ওই দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে পটলবাবু যখন চঞ্চলকুমারের মাথার সঙ্গে নিজের কপালের ঠোকা লাগালেন তখন একটা তীব্র যন্ত্রণা তাঁকে একমুহূর্তের জন্য হলেও জ্ঞানশূন্য করে দিয়েছিল। পটলবাবুর মতো একই যন্ত্রণা নায়ক চঞ্চলকুমারও পেয়েছিলেন এবং তা সত্ত্বেও তিনি পটলবাবুর নিঁখুত সময় জ্ঞানের প্রশংসা করে তাঁর উদ্দেশে ওই মন্তব্যটি করেছিলেন।

১৩)"এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোঁতা হয়ে যায়নি।"- এই অনুভব কীভাবে জাগল পটলবাবুর মনে?

উত্তর: সিনেমার একটা মাত্র দৃশ্যে, একটি মাত্র শব্দ 'আঃ' বলার মধ্যে দিয়ে নিজের অসাধারণ অভিনয়ক্ষমতা নিজের কাছেই প্রকাশিত হয়ে পড়ায় পটলবাবুর নিজের মনের ভিতরেই উদ্ধৃত অংশের মনোভাবটি প্রকাশিত হয়েছে। নিজের কপালের সঙ্গে নায়ক চঞ্চলকুমারের মাথার ধাক্কা লাগিয়ে 'আঃ' শব্দটি তিনি উচ্চারণ করেন দশ আনা বিরক্তির সঙ্গে তিন আনা বিস্ময় আর-তিন আনা যন্ত্রণা মিশিয়ে। এতদিন পরে এইটুকু ছোট্ট দৃশ্যে অভিনয় করে অভিনয়ের শেষ রসটুকু নিংড়ে দিতে পারার আনন্দে পটলবাবু অনুভব করেছেন যে, তাঁর শিল্পীমন আজও ভোঁতা হয়ে যায়নি। সেই কারণেই 'আঃ' শব্দটি উচ্চারণের মাধ্যমে তাঁর অভিনয়ে মনের তিন রকমের অনুভূতি অর্থাৎ বিরক্তি, বিস্ময় ও যন্ত্রণা প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি।

১৪) পটলবাবুর ফিল্মে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রোডাকশন ম্যানেজার নরেশ দত্তের অনেকগুলি ব্যস্ত মুহূর্ত। টুকরো মুহূর্তগুলি জোড়া দিয়ে নরেশ দত্ত নামে মানুষটির সম্পূর্ণ ছবি নিজের ভাষায় তৈরি করো।

 উত্তর: পটলবাবু প্রতিবেশী নিশিকান্ত ঘোষ মহাশয়ের কাছে প্রথম নরেশ দত্ত নামটি শোনেন। তিনি তাঁকে জানান তাঁর ছোটো শালা বছর ত্রিশের নরেশ দত্ত ফিল্মে কাজ করে-সিনেমার চরিত্রানুযায়ী বিভিন্ন লোকজন জোগাড় করে দেয়।

ব্যস্ত মানুষ নরেশবাবু পটলবাবুর বাড়িতে বেশিক্ষণ বসেননি-স্বল্প সময়ে পটলবাবুর চেহারাকে চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়েছেন। তারপর পটলবাবুকে শুটিং-এর দিন, স্থান, সময় ইত্যাদি বললেও কীসের ভূমিকায় অভিনয় করতে হবে তা বলতে ভুলে গিয়েছেন।

শুটিং-এর নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে পটলবাবুকে দেখে নরেশবাবু ভুলবশত তাঁকে অতুলবাবু' বলে সম্বোধন করলেও পটলবাবুর পাংচুয়ালিটি বা সময়নিষ্ঠতার বেশ প্রশংসা করলেন এবং মন্দারক নির্দেশ দেন পটলবাবুকে ডায়ালগ লিখে দেবার জন্য। শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পর নরেশবাবু পারিশ্রমিক নিয়ে পানের দোকানের কাছে পটলবাবুর খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন যে, পটলবাবু পারিশ্রমিক না নিয়েই ফিরে গেছেন।

১৫) পটলবাবুর বাড়ি কোথায়?

উত্তর: পটলবাবুর বাড়ি নেপাল ভাজ্যি লেনে।

১৬) সিনেমায় অভিনয় করার জন্য কীরকম লোক দরকার ছিল?

উত্তর: সিনেমায় অভিনয় করার জন্য বছর পঞ্চাশ বয়সের একজন বেঁটেখাটো, মাথায় টাকওয়ালা লোক দরকার ছিল।

১৭) পটলবাবু কত বছর বয়সে সিনেমার অভিনয় করার প্রস্তাব পান?

উত্তর: পটলবাবু বাহান্ন বছর বয়সে সিনেমার অভিনয় করার প্রস্তাব পান।

১৮) বাজারে গিয়ে পটলবাবু কী আনার কথা ভুলে গিয়েছিলেন?

উত্তর: বাজারে গিয়ে পটলবাবু সৈন্ধব নুন আনার কথা ভুলে গিয়েছিলেন।

১৯) পটলবাবুর প্রকৃত নাম কী?

উত্তর: পটলবাবুর প্রকৃত নাম ছিল শীতলাকান্ত রায়।

২০) কাঁচরাপাড়ায় পটলবাবু কীসের চাকরি করতেন?

উত্তর: কাঁচরাপাড়ায় পটলবাবু রেলের কারখানায় কাজ করতেন।

২১) পটলবাবু সারাজীবন কী কী কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?

উত্তর: পটলবাবু সারাজীবনে রেলের কারখানার কাজ, হাডসন অ্যান্ড কিম্বার্লি কারখানার কাজ, বাঙালি অফিসে কেরানিগিরি, মনিহারি দোকানদারি, ইনসিওরেন্সের দালাল ইত্যাদি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

২২) "সেই থেকে আজ অবধি বাকি জীবনটা রোজগারের ধান্দায় কেটে গেছে পটলবাবুর।"-কোন্ সময় থেকে পটলবাবুর এই অবস্থা হয়ে গেছে লেখো।

উত্তর: কাঁচরাপাড়ার রেলের কারখানার চাকরি ছেড়ে উনিশশ চৌত্রিশ সালে কলকাতার হাডসন অ্যান্ড কিম্বার্লি কোম্পানিতে আরেকটু বেশি মাইনের চাকরি নিয়ে পটলবাবু কলকাতায় চলে আসেন। সেখানে তাঁর চাকরি ভালোই চলছিল। কিন্তু যুদ্ধের সময় ছাঁটাইয়ের ফলে পটলবাবুর নয় বছরের সাধের চাকরিটি চলে যায়। তখন থেকেই রোজগারের ধান্দায় তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে হচ্ছে।

২৩) "এমন সময় বাইরের থেকে নিশিকান্তবাবু হাঁক দিলেন..."- নিশিকান্তবাবু কে ছিলেন? তাঁর এই হাঁক দেওয়ার উদ্দেশ্য কী ছিল? 

উত্তর: নিশিকান্ত ঘোষ ছিলেন নেপাল ভাজ্যি লেনে পটলবাবুর প্রতিবেশী। তাঁর তিনখানি বাড়ির পরেই তিনি থাকতেন।

পটলবাবুর সন্ধানে তাঁর বাড়িতে গিয়ে নিশিকান্ত ঘোষ বলেছিলেন যে, ল] সেদিনই নেতাজি ফার্মেসিতে তাঁর ছোটো শালার সঙ্গে দেখা হয়েছে। সে ফিল্মে কাজ করে-লোকজন জোগাড় করে দেয়। সেই বলেছে যে একটি সিনেমার দৃশ্যের জন্য একজন লোক দরকার। বছর পঞ্চাশের সেই মানুষটি হবেন বেঁটেখাটো, মাথায় টাক। তার কথা শুনেই নিশিকান্তবাবুর পটলবাবুর কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। তিনি পটলবাবুর নাম বলে দিয়েছেন, তাই তাঁর ছোটো শালা নরেশ দত্ত সকাল দশটায় আসবে। অভিনয়ের জন্য কিছু ছারি পারিশ্রমিকও দেওয়া হবে। এসব কথা বলা এবং পটলবাবুর আপত্তি আছে কিনা জানার জন্যই নিশিকান্তবাবু হাঁক দিয়েছিলেন।

২৪) নরেশ দত্ত পটলবাবুর কাছে কখন এসেছিলেন?

উত্তর: নরেশ দত্ত পটলবাবুর কাছে এসেছিলেন ঠিক সাড়ে বারোটার সময়।

২৫) ফ্যারাডে হাউস কত বড়ো বাড়ি ছিল?

উত্তর: ফ্যারাডে হাউস ছিল একটি সাততলা বাড়ি।

২৬) পটলবাবু থিয়েটারে ভালো অভিনয় করার জন্য কার কাছ থেকে মেডেল পেয়েছিলেন?

উত্তর: অভিনয়ের জন্য পটলবাবু মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান চারু বিশ্বাসের কাছ থেকে মেডেল পেয়েছিলেন।

২৭) শিশির ভাদুড়ি সত্তর বছর বয়সে কী করেছিলেন?

উত্তর: শিশির ভাদুড়ি সত্তর বছর বয়সে চাণক্যের পার্টে লাফ দিয়েছিলেন।

২৮) "এ তো সবে সিঁড়ির প্রথম ধাপ।"-মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

 উত্তর: বাহান্ন বছর বয়সে পটলবাবুর কাছে ফিল্মে অভিনয় করার প্রস্তাব আসে। তাঁকে জানানো হয় যে একজন পথচারীর চরিত্রে তাঁকে অভিনয় করতে হবে। এই প্রসঙ্গেই নিজের স্ত্রীকে পটলবাবু বোঝান যে, পার্টটা খুব বড়ো কিছু নয়, অর্থপ্রাপ্তিও সামান্য। কিন্তু নাটক অভিনয়ের ক্ষেত্রেও এভাবে একদিন মৃত সৈনিকের চরিত্র দিয়ে শুরু করে তিনি খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছিলেন। তাই সিনেমার এই সামান্য অভিনয়কেও সিঁড়ির প্রথম ধাপ বলে দেখা যেতে পারে।

২৯) নরেশ দত্তের সঙ্গে পটলবাবুর সাক্ষাতের দৃশ্যটি নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: ঠিক সাড়ে বারোটায় পটলবাবুর বাড়িতে নরেশ দত্তের আগমন ঘটলে পটলবাবু তাঁকে ঘরের ভেতরে আহবান করেন। অভিনয় করতে পটলবাবুর আপত্তি আছে কি না নরেশ দত্ত জানতে চান। লজ্জিত পটলবাবু পালটা জানতে চান যে তাঁকে দিয়ে চলবে কি না। নরেশ দত্ত সম্মতি দিয়ে বলেন যে, পরের দিন রবিবার, সেদিন বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট আর মিশন রো-এর মোড়ে ফ্যারাডে হাউসের সামনে পটলবাবু যেন ঠিক সাড়ে আটটায় পৌঁছে যান। সেখানেই শুটিং-এর কাজ। বারোটার মধ্যে ছুটি হয়ে যাবে। পটলবাবু তাঁর চরিত্রটির বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। নরেশ দত্ত বলেন যে, চরিত্রটি হল একজন অন্যমনস্ক বদমেজাজি পথচারির। এরপর নরেশবাবু জানতে চান, পটলবাবুর গলাবন্ধ কোট আছে কি না। পটলবাবুর কাছে হ্যাঁ- বাচক উত্তর পেয়ে নরেশবাবু তাঁকে সেটা পরেই নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ে আসতে বলেন। এর কারণ হল দৃশ্যটা শীতকালের। পটলবাবু নিজের পার্টটি স্পিকিং পার্ট কি না তা জানতে চাইলে, নরেশ দত্ত জানান যে পটলবাবুর পার্টটিতে অবশ্যই ডায়ালগ আছে।

৩০) "একমাত্র তিনি ছাড়া তো পটলবাবুকে কেউই চেনেন না।”-একমাত্র কে পটলবাবুকে চেনেন?

উত্তর: নরেশ দত্ত একমাত্র পটলবাবুকে চেনেন।

৩১)"তরতরিয়ে উঠছে ছোকরা।"-কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: নায়ক চঞ্চলকুমারের কথা বলা হয়েছে।

৩২) "বেড়ে ফিমেল পার্ট করত চিলু।"-চিনু কে ছিলেন?

 উত্তর: চিনু ছিল কাঁচরাপাড়ায় পটলবাবুর সহনাট্যকর্মী মনোতোষ রায়।

৩৩) নরেশ পটলবাবুর দিকে কী নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল?

 উত্তর: নরেশ পটলবাবুর দিকে এক ভাঁড় চা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল।

৩৪)"গরম হঠাৎ অসহ্য হয়ে উঠেছে।"-কেন এই অবস্থা হয়েছিল ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: পটলবাবু সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে ডায়লগ পেতে উদ্‌গ্রীব হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু তাঁকে যখন কাগজে ডায়লগ লিখে দেওয়া হল সেখানে শুধু লেখা ছিল 'আঃ'! 'স্পিকিং পার্ট'-এ অভিনয় করতে এসে সংলাপের এই চেহারা দেখে পটলবাবু সহ্য করতে পারেননি। তাঁর মনে হয়েছিল কোটটা খুলে ফেলতে পারলেই ভালো হয়। তিনি অসুস্থবোধ করতে থাকেন।

৩৫)"বিরাট তোড়জোড় চলেছে আপিসের গেটের সামনে।"-কোথায় কীসের তোড়জোড় চলছিল? এই তোড়জোড়-এর পরিচয় দাও।

 উত্তর: ফ্যারাডে হাউসের সামনে শুটিং-এর তোড়জোড় চলছিল।

সেখানে তিন-চারটে গাড়ি ছিল। তার একটা বেশ বড়ো, প্রায় বাস-এর মতো। তারই মাথায় আবার সব জিনিসপত্র চাপানো ছিল। রাস্তার ঠিক ধারে ফুটপাথের ওপরে, একটা তেপায়া কালো যন্ত্রের মতো জিনিস রাখা ছিল। তার পাশে ব্যস্তসমস্ত হয়ে কয়েকজন লোক ঘোরাফেরা করছিল। গেটের ঠিক মুখে একটা তেপায়া লোহার ডান্ডার মাথায় আরেকটা লোহার ডান্ডা আড়াআড়িভাবে শোয়ানো ছিল। আর তার ডগা থেকে ঝুলছিল একটি মৌমাছির চাকের মতো জিনিস। ইতস্তত ছড়িয়ে ছিল জনা ত্রিশেক লোক, যাদের মধ্যে কেউ কেউ ছিল অবাঙালি।

৩৬) পটলবাবুকে অভিনয়ের দৃশ্যটি বুঝিয়ে দিয়েছিল কে?

উত্তর: পটলবাবুকে অভিনয়ের দৃশ্যটি বুঝিয়ে দিয়েছিল জ্যোতি নামের একটি ছেলে।

৩৭) "পটলবাবু নিয়মিত গিয়ে শোনেন।"-কী শোেনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: রবিবার সকালে করালীবাবুর বাড়িতে পটলবাবুর নিয়মিত শ্যামাসংগীত শোনার কথা বলা হয়েছে।

৩৮) গগন পাকড়াশি কী ধরনের মানুষ ছিলেন? [নামখানা নারায়ণ বিদ্যামন্দির]

উত্তর: গগন পাকড়াশি ছিলেন আশ্চর্য অভিনেতা, কিন্তু দম্ভের লেশমাত্র ছিল না।

৩৯) গগন পাকড়াশি নাটকের এক একটা কথাকে কীসের সঙ্গে তুলনা করতেন?

উত্তর: গগন পাকড়াশি নাটকের এক একটা কথাকে গাছের এক-একটি ফলের সঙ্গে তুলনা করতেন।

৪০) "আপনি তো ভাগ্যবান লোক মশাই।"-কেন একথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ফিল্মে পথচারীর চরিত্রে সুযোগ পেয়ে শুধু 'আঃ'-এই সংলাপটুকু বলতে হবে শুনে পটলবাবু যখন দ্বিধায় পড়েছেন, সেই সময়ে তাঁকে বলা হয় যে, পরিচালক বরেন মল্লিকের ছবিতে কথা বলার সুযোগ পাওয়াটাই ভাগ্যের। সেই ছবিতে প্রায় দেড়শো লোক অভিনয় করে গেছে যারা কোনো কথাই বলেনি। শুধু হেঁটে গেছে। অনেকে আবার হাঁটার সুযোগও পায়নি, শুধুই দাঁড়িয়ে থেকেছে। কিন্তু পটলবাবু এটুকু হলেও সংলাপ বলতে পারছেন সেটিই সবচেয়ে ভাগ্যের ব্যাপার।

৪১) "সেইখানেই যাবেন নাকি চলে?"-কোথায় চলে যাবার কথা ভাবা হয়েছে এবং কেন?

উত্তর: করালীবাবুর বাড়িতে শ্যামাসংগীত শুনতে চলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রতি রবিবার সকালে করালীবাবুর বাড়িতে শ্যামাসংগীত শুনতে যান। পটলবাবু। কিন্তু সেই রবিবারে সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে তাঁকে এসে দাঁড়াতে হয়েছে শুটিংস্থল ফ্যারাডে হাউসের সামনে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরে পটলবাবুকে যা বলা হয় তা হল তার চরিত্রটা একজন পথচারীর, আর সংলাপও নামমাত্র-“আঃ”। নায়ক চঞ্চলকুমারের সঙ্গে ধাক্কার পরে ঐ সংলাপই তাঁকে উচ্চারণ করতে হবে। এই তুচ্ছ সংলাপে এবং চরিত্রের সীমিত। উপস্থিতিতে যে কোনো অভিনয়ই করা সম্ভব নয়, তা পটলবাবু বুঝতে বাড়ি চলে যাওয়াই ভালো।

৪২) অভিনয় করার আগে পটলবাবুর মধ্যে কেমন অনুভূতি হয়েছিল?

উত্তর: পঁচিশ বছর আগে স্টেজে অভিনয় করার সময় একটা বড়ো দৃশ্যে নামার আগে যেরকম অনুভূতি হত ঠিক সেরকম অনুভূতি হয়েছিল।

৪৩) অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে কোন্ পত্রিকা ছিল?

উত্তর: অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে ছিল 'যুগান্তর' পত্রিকা।

৪৪) পটলবাবু হাতে খবরের কাগজ নিতে চেয়েছিলেন কেন?

উত্তর: অন্যমনস্কতার ভাব ফুটিয়ে তোলার জন্য পটলবাবু হাতে খবরের কাগজ নিতে চেয়েছিলেন।

৪৫) পটলবাবু কোন্ স্টাইলের গোঁফ লাগিয়েছিলেন?

উত্তর: পটলবাবু বাটারফ্লাই স্টাইলের গোঁফ লাগিয়েছিলেন।

৪৬) "হাতে সময় পাওয়া গেছে কিছুটা!"-বক্তা কেন এমনটা ভেবেছিলেন লেখো।

উত্তর: পটলবাবু হাতে আধঘণ্টা সময় পেয়ে খুশি হয়েছিলেন। তিনি চাইছিলেন 'আঃ' শব্দটি কীভাবে চলচ্চিত্রে প্রয়োগ করবেন, তা রিহার্সাল করে নিতে। এই সময়ে উলটো দিকের নির্জন গলিতে-সেই সুযোগটাই পাবেন বলেই পটলবাবু এমন ভেবেছিলেন।

৪৭) "একটা গভীর আনন্দ ও আত্মতৃপ্তির ভাব ধীরে ধীরে তাঁর মনকে আচ্ছন্ন করে ফেলল।" -এই আনন্দের অনুভূতিটি নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: পটলবাবু তাঁর প্রাথমিক উত্তেজনাকে এড়িয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তাঁর অভিনয় সমাপ্ত করেন। 'অ্যাকশন' বলার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি হাঁটতে থাকেন। পাঁচ পা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নায়ক চঞ্চলকুমারের সঙ্গে তাঁর ধাক্কা লাগে। নিখুঁত টাইমিং হয়। দশ আনা বিরক্তির সঙ্গে তিন আনা বিস্ময় আর তিন আনা যন্ত্রণা মিশিয়ে 'আঃ' শব্দটা উচ্চারণ করে হাতের কাগজটা সামলে আবার চলতে আরম্ভ করেন তিনি। পরিচালক থেকে নায়ক চঞ্চলকুমার সকলেরই প্রশংসা পান পটলবাবু। এক আত্মতৃপ্তির অনুভব তাঁর মধ্যে কাজ করে। নিজের শিল্পীসত্তার সার্থক প্রকাশের ফলে তাঁর মন আনন্দে ভরে ওঠে।

আরও পড়ো- 

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area