Ads Area


পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বন্যা ও তার প্রতিকার বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Bangla prabandha Rachana Class-X

 পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বন্যা ও তার প্রতিকার বাংলা প্রবন্ধ রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বন্যা ও তার প্রতিকার” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বন্যা ও তার প্রতিকার বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Bangla prabandha Rachana Class-X


পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বন্যা ও তার প্রতিকার বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Bangla prabandha Rachana Class-X 



পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক বন্যা ও তার প্রতিকার


"জলের উচ্ছ্বাস, নাম তার বন্যা, 

অসহায় মানুষের বুকফাটা কান্না।"


ভূমিকা :

নদীমাতৃক বঙ্গদেশের দুঃস্বপ্ন 'বন্যা'। নদী আমাদের ধাত্রী, আবার নদীই আমাদের নিয়তি। আবার আকাশ ভরা যে মেঘের শোভা আমাদের বুকে আশা জাগায়, সেই মেঘ অঝোর ধারাবর্ষণে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বাঙালির এ এক অলঙ্ঘ্য বিধিলিপি।

বন্যার কারণ ও উৎস 

অত্যধিক বর্ষণ বা বিপুল বৃষ্টিপাত, সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি বন্যার মূল কারণ। এ ছাড়া, অত্যধিক বর্ষণে নদী ও জলাধারের জলস্ফীতির ফলে বন্যা হয়। বন্যার ফলে মাইলের পর মাইল জমি, ঘরবাড়ি, ফসল সবই জলের তলায় চলে যায়।

বর্ষা ও বন্যা :

'বর্ষে বর্ষে বন্যা হানে'- আমাদের এই দেশের সঙ্গে বন্যার একটি দুর্নিবার আত্মীয়তাও রয়েছে। আমাদের এই রাজ্যে বন্যা একটা বাৎসরিক দুর্বিপাকের মতো হয়ে উঠেছে। বিশেষত বর্ধমান, হাওড়া, মেনিদিপুর, বীরভূম, মুরশিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাগুলির বিভিন্ন অংশ সম্বৎসর বন্যার কবলে পড়ে। প্রখর গ্রীষ্মের দাবদাহে, রুক্ষ, দগ্ধ ধরিত্রীর বুকে স্বস্তির আনন্দ বহন করে আনে বর্ষা। আর বর্ষার ছন্দে বৃষ্টির প্রাচুর্যে বা জলধারার বাধাবন্ধনহীন প্রগলভতায় আমাদের ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রায় প্রতি বছরই বন্যার প্রকোপ অকস্মাৎ ধেয়ে আসে। কিন্তু যাত্রাশেষে রেখে যায় মহাধ্বংসের চিহ্ন-মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার স্বপ্ন-সৌধের বিস্তীর্ণ ধ্বংসাবশেষ।

বন্যার তাণ্ডব :

বন্যার তান্ডবে বাড়ি, মাঠঘাট সবই জলমগ্ন হয়। চারিদিক একাকার হয়ে যায় জলে। মাইলের পর মাইল জুড়ে কেবলমাত্র বিস্তীর্ণ জলরাশি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। রাত্রে যেখানে ছিল মানুষের বসতি, সকালবেলায় সেখানে দেখাগেল বিপুল জলাশয়। এক নবতর সমুদ্র যেন কৌতুকহাস্যে আমাদের ব্যঙ্গ করতে থাকে। ভেসে যায় শহর-গ্রাম-গঞ্জ। বানভাসি অসহায় মানুষের দিন কাটে খেলা আকাশের নীচে, অথবা গাছের ডালে, উঁচু ডাঙায়, পাকা বাড়ির ছাদে, রেলের প্লাটফর্মের ওপরে, সাপ-শেয়াল-কুকুরের সহাবস্থানে। জলের স্রোতের মতোই ভেসে যায় জীবনস্রোত। চারিদিকে জল, কিন্তু তৃষ্ণা মিটানোর জল নেই, 'Water, water everywhere, not a drop to drink'. পেটে ভাত নেই, লজ্জা নিবারণের বস্ত্র নেই, মাথায় ছাদ নেই, সবাই তখন নেই-রাজ্যের বাসিন্দা। বন্যার পায়ে পায়ে আসে আধি-ব্যাধি, এমনকি মহামারিও। বন্যাত্রাসিত মানুষের দুঃখদুর্দশা সত্যই অবর্ণনীয়।

বন্যার সুফল :

তবে বন্যা শুধুমাত্র ধ্বংসসাধন করে না। এই বন্যার কিছু কিছু শুভ দিকও রয়েছে। বন্যা শক্ত ও পতিত জমিকে জল সরবরাহ করে। স্থলভাগ থেকে জমা আবর্জনা সরিয়ে দিয়ে পলি দ্বারা আবৃত করে মাটিকে করে উর্বর।

বন্যা প্রতিরোধ :

মানুষ যদি সচেষ্ট হয়, প্রকৃতির এই ভয়াবহ বিপদকে নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব বা শক্ত নয়। উপযুক্ত সময়ে নদীর বুকে উঁচু এবং শক্ত বাঁধ নির্মাণ করে বর্ষার উচ্ছ্বসিত জলরাশি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করে রাখা বন্যা প্রতিরোধের শ্রেষ্ঠ উপায়। এজন্য নদীগর্ভকে গভীরতর করে নদীকে অতিরিক্ত জলধারণের যোগ্য করে তুলতে হবে। বেশ কিছু খাল খনন করে জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। বর্ষাকালের অতিরিক্ত জলকে ধরে রাখবার জন্য অতিকায় জলাধার নির্মাণ করতে হবে। জল নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। বানভাসি মানুষ, প্রাণীসম্পদ ইত্যাদি সুরক্ষায় আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে আগাম আবহবার্তা দিয়ে সকলকে সতর্ক করতে হবে।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area