পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা রচনা
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা রচনা || Class-10 Bengali Grammar
পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা
ভূমিকা :
আমরা যেখানে বাস করি, তার পারিপার্শ্বিক পরিমণ্ডলকেই বলা হয় 'পরিবেশ'। গাছ যেমন সজল মাটি, অবাধ আলো এবং উৎকৃষ্ট সার পেলে সতেজভাবে বেড়ে ওঠে, আমাদের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠাটাও যেন ঠিক অনুরূপ। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই উৎকৃষ্ট পরিবেশ। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল পরমায়ুর জন্য সুস্থ পরিবেশের বড়ো প্রয়োজন।
পরিবেশ দূষণ, নালানর্দমা, পচা খাবার ইত্যাদি :
দুঃখের ব্যাপার এই যে, আমাদের বেঁচে থাকার জন্য ভালো পরিবেশের বড়ো অভাব। বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায়, আমাদের ঘরের পাশেই নালানর্দমা। আমরা যে জল ব্যবহার করি, তার নিকাশি ব্যবস্থাও ঠিক নেই। ফলে, জল জমে এবং এই জমে-থাকা জলে মশার জন্ম হয়। কেবল মশা নয়, আরও নানারকম দূষিত কীটপতঙ্গের আশ্রয় হয় এই জমে-থাকা জলে। কলেরা প্রভৃতি নানান রোগের সৃষ্টি হয় এই পরিবেশে।
শুধু জল জমা নয়, আমরা ঘরের পাশেই জমিয়ে তুলি নানাধরনের আবর্জনা। ছাইপাঁশ, মাছের আঁশ, পচা খাবার, কাঁঠালের ভুতি, শালপাতা, খাবারের প্যাকেট ইত্যাদি জমিয়ে ঘরের পাশে তৈরি করি আবর্জনার পাহাড়। এই আবর্জনা হল দূষিত গন্ধের গন্ধমাদন, ভীষণ অস্বাস্থ্যকর। এরা হল নানান রোগের উৎস।
আলো ও বাতাস দরকার :
বিশেষভাবে সূর্যের আলো এবং বাতাসের ওপর পরিবেশের উৎকর্ষ নির্ভর করে। সূর্যের আলোর এত অভাবে বাসগৃহগুলি অনেক সময় ভিজে ও স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে। চারদিকের নোংরা আবহ পরিবেশকে করে তোলে অস্বাস্থ্যকর। এ এই ধরনের পরিবেশে যারা বাস করে, তারা সারা বছর ধরে নানা অসুখে ভোগে। কোনো ওষুধের ক্ষমতা নেই যে, তাদের নিরাময় করে তোলে। এই প্রেক্ষিতে বলা যায়, পরিবেশ উন্নয়নে আলো ও বাতাস খুবই জরুরি।
সুস্থ পরিবেশের জন্য চাই নাগরিক-সচেতনতা। নাগরিকরা যদি নিজেরা নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হন, তা হলে তাঁরা - পরিবেশকেও পরিচ্ছন্ন রাখায় সচেষ্ট হবেন। এ ব্যাপারে অবশ্য সরকার, পুরসভা, পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ ও = পরিকল্পনা থাকা দরকার।
ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা :
তবে এ ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রদের জীবনটাই তো সুন্দর, পবিত্র, - নির্মল। তারা নিয়মিতভাবে স্কুলের পরিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখায় কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। তাই সামাজিক পরিবেশ রক্ষায়ও তাদের এগিয়ে আসতে হবে। তারা যেমন হাতেকলমে পরিচ্ছন্নতার কাজ করবে, তেমনি নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তাদের সামনে নিজেরা কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, আলাপ-আলোচনা করবে, পদযাত্রা করে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে।
ছাত্ররা প্রথমে তাদের গৃহ-পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করবে। তারপর তারা প্রতিবেশীদের পরিবেশকে সুন্দর করার চেষ্টা করবে। এইভাবে তারা বৃহত্তর সমাজে নিজেদের আদর্শের কথা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে। ফলে সমাজের সবচেয়ে সচেতন অংশ যে ছাত্রসমাজ, তাদের আচার-আচরণ দেখে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশ সুন্দর হয়ে উঠবে।
ছাত্রছাত্রীরা যা পারে :
পল্লির নিকাশি ব্যবস্থা এবং বাসগৃহের পাশে যাতে জঞ্জাল না-জমে সে বিষয়ে আবাসিকদের সচেতন করার দায়িত্বও নিয়ে পারে ছাত্রছাত্রীরা। দরকার হলে তারা দল বেঁধে সাফাইয়ের কাজেও নেমে পড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। তারা জনসাধারণকে দেখাতে পারে, বাড়ির আবর্জনা কোথায় ফেলতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে আবাসিকদের সচেতন করতে ছাত্রছাত্রীরাই পারে।
আরও পড়ুন-