Ads Area


প্রাকৃতিক বিপর্যয়: সমস্যা ও প্রতিকার বাংলা রচনা || Bengali Grammar class-12

 প্রাকৃতিক বিপর্যয়: সমস্যা ও প্রতিকার বাংলা রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিতপ্রাকৃতিক বিপর্যয়: সমস্যা ও প্রতিকাপ্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।


প্রাকৃতিক বিপর্যয়: সমস্যা ও প্রতিকার বাংলা রচনা || Bengali Grammar class-12


প্রাকৃতিক বিপর্যয়: সমস্যা ও প্রতিকার বাংলা রচনা || Bengali Grammar class-12


 প্রাকৃতিক বিপর্যয়: সমস্যা ও প্রতিকার


ভূমিকা :

'মন্বন্তরে মরিনি আমরা, মারি নিয়ে ঘর করি'-খরা, বন্যা, মহামারি মানুষের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বিজ্ঞান সভ্যতাকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনের আঘাতকারী প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে বশ করতে পারেনি। এখানেই বিশ্বপিতার অদৃশ্য শক্তির মাহাত্ম্য লুকিয়ে আছে। এখানে মানুষ অসহায়, বড়ো নিরুপায়। বিজ্ঞানের ঔদ্ধত্য বিশ্বপিতার রূদ্ররূপের কাছে হার মানে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের স্বরূপ :

প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিভিন্ন রূপে আত্মপ্রকাশ করে। ভূমিকম্প, খরা, বন্যা, মহামারি, আয়লা, সুনামি-কত নাম, কত রূপ। এক এক ধরনের বিপর্যয়ের স্বরূপ দেখে তাদের নামকরণও হয়েছে। তবে যে নামেই তাকে ডাকা হোক না কেন, তার নাম ধ্বংস। ধ্বংসের স্বরূপ দেখে চোখের পলক পড়ে না। ভূমিকম্পে বারবার কেঁপে উঠেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে সভ্যতার ইমারত। স্বজন হারানোর আকুলতা আকাশ-বাতাসকে মুখর করে তুলেছে। খরা অর্থাৎ অনাবৃষ্টি মানুষের জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য কেড়ে নিয়েছে। অনাবৃষ্টির আকাশের আগুন ফুটিফাটা করে মানুষের বুকে ফাটল ধরিয়েছে। 

ক্ষুধার অন্ন, তৃষ্ণার জল-সবই দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠে খরাক্লিষ্ট এলাকায়। বন্যার জলের উদ্দাম তাণ্ডবে কখনও-বা ভেসে গেছে মানুষের ঘরবাড়ি, মানুষ, গবাদিপশু। আয়লা ও সুনামির রূপও ভয়াল ভয়ংকর। এই সমস্ত প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানবজীবনে সমস্যা সৃষ্টি করেছে। সেই সমস্যা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে মানুষের কেটে গেছে বহু সময়। কিন্তু এই সমস্ত প্রাকৃতিক বিপর্যয় কী নিয়ম করে আসে, না মানুষের কৃতকর্মের ফলে মানুষ নিজেই এগুলিকে ডেকে আনে? সমস্ত কাজের পিছনে নানান কারণ বর্তমান-সেইসব কারণ অনুসন্ধান এবং তার প্রতিকারের ভাবনা ভাবার দিন হয়তো এসেছে।

প্রতিকার :

বিশ্বের প্রকৃতি জগতে দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, ফলে নানারকম প্রাকৃতিক অঘটন ঘটার ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছে। মানুষ প্রকৃতির ওপর নানাভাবে আঘাত হানছে, তাই প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। মানুষ প্রকৃতির প্রতি সংযত আচরণ করলেই প্রকৃতি সদয় হবে। বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু গাছপালা বাড়ছে না। যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য নানারকম পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে, যুদ্ধ চলছে-সবই প্রভাব ফেলছে প্রকৃতির ওপর। সবক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। অথচ সেই ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে আমরা কেউ ভাবি 

না। ভূগর্ভস্থ জল নির্বিচারে তুলে নেওয়ায় ভূগর্ভে শূন্যতার সৃষ্টি হচ্ছে, ভূমিকম্প হচ্ছে। ভৌগোলিক কোনো বিশেষ কারণেও এটি ঘটে থাকে। বিশ্ব উন্নায়ন এখন একটি পরিচিত কথা। কিন্তু তা রোধ করার কোনো প্রয়াস আমাদের নেই। পর্বতশিখর ও মেরুপ্রদেশে বরফ গলার ফলে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, স্বাভাবিক কারণেই নীচু স্থলভাগ প্লাবিত হচ্ছে। 

জলাধারে জল সংরক্ষণের অভাবে খরা মানুষের জীবনে অভিশাপ হয়ে নেমে আসছে। সম্প্রতি আয়লা বিপুলসংখ্যক মানুষের ক্ষতিসাধন করেছে। সুন্দরবন অঞ্চলের বিস্তীর্ণ নদীবাঁধকে কংক্রিটের করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নদী তো বারবার তার গতিপথ বদলায়, সেক্ষেত্রে এই বাঁধ তৈরি কতখানি যুক্তিযুক্ত সে বিষয়ে সংশয় থাকতে পারে। বোধ হয় প্রতিবছর বাঁধ সংস্কারের কাজ বুদ্ধিমানের কাজ। যাই হোক, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানুষের জীবনে যাতে না আসতে পারে, তার জন্য মানুষের সচেতন হওয়া উচিত।

উপসংহার :

দুঃখ-সুখের এই ছোট্ট জীবনে সবাই চায় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য পেতে, কিন্তু বারবার ঝড়ে ঘর ভাঙে। প্রকৃতিকে শান্ত করতে পারলে সুখের ঘরে স্বাচ্ছন্দ্যে বাস করা যাবে। বাস্তব প্রকৃতিকে স্থির করতে গেলে মানব প্রকৃতিকে আগে স্থির করা জরুরি। আমরা আর কবে বুঝব যে, এ পৃথিবী তোমার-আমার। আমাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হোক-

"এ পৃথিবীকে এ শিশুর বাসযোগ্য 

করে যাব আমি

নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।"

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area