প্রাত্যহিক জীবন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “প্রাত্যহিক জীবন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ”প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাত্যহিক জীবন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা || Class-10 Bengali Bengali Grammar
প্রাত্যহিক জীবন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
ভূমিকা :
কোনো এক মনীষী বলেছিলেন, উনিশ শতকটা ছিল দার্শনিকদের যুগ। বিশ শতক এল বিজ্ঞানীদের যুগ হয়ে। এই সূত্র ধরে এখন বলা যায়, একবিংশ শতাব্দী নিয়ে এসেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগল অন্বেষণ-এ যুগটি তাঁদের।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক :
'বিজ্ঞান' দেয় নিত্যনতুন সত্যের সন্ধান। সেই আবিষ্কৃত সত্যকে কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তি আমাদের হাতে হাতে উপহার দিচ্ছে ব্যবহারিক নানা জিনিস। যে বিদ্যুৎ একদা আকাশের মেঘে মেঘে সংঘর্ষে উৎপন্ন হয়ে পৃথিবীর জীবজগৎকে কাঁপিয়ে তুলেছিল, তার শক্তি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন-তাকে মানবকল্যাণে যে ব্যবহার করা যায়, সে ইঙ্গিত তাঁরা দিলেন। কিন্তু তাকে ব্যবহারিক জীবনে কাজে লাগাল যে, সে হল প্রযুক্তি। প্রযুক্তির বিশেষ কৌশলে বিদ্যুৎকে বন্দি করে আমাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিল। এ এক অভাবিত ফল!
প্রযুক্তির ফসল :
বিদ্যুৎ যে অনেক বড়ো বড়ো কাজে ব্যবহৃত হয়, তা চোখের সামনে প্রতিনিয়ত দেখতে পাই। কিন্তু প্রাত্যহিক জীবনে আমরা তাকে কাজে লাগিয়ে চলেছি একটি চাকরের মতো। আমাদের ঘরে ঘরে আলো জ্বালিয়ে, মাটির ভেতর থেকে জল তুলে তা ট্যাঙ্কে ভরে দেয় এই বিদ্যুৎ। রেডিয়ো, টেলিভিশন, ফ্রিজ, এয়ারকুলার সবই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফসল। এই ব্যবহার দিকে দিকে বেড়ে চলেছে।
জ্বালানি হিসাবে গ্যাস :
মাটির তলায় রয়েছে অযুত গ্যাসের ভান্ডার। বিজ্ঞান তার সন্ধান দিল এবং তাকে যে আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তার ইশারাও দিল। বিজ্ঞানের হাত ধরাধরি করে পরে এগিয়ে এল প্রযুক্তি। তাকে ভরে ফেলল সিলিন্ডারে। এর নতুন নাম হল, 'লিক্যুইফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস'-এই গ্যাস এখন আমাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে রান্নার কাজে লাগছে। আজ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এই রান্নার গ্যাসের প্রভাব অপরিসীম।
টেলিফোন ও মোবাইল ফোন :
আজ আমাদের ঘরে ঘরে যে টেলিফোন এবং হাতে হাতে 'মোবাইল ফোন' তাও সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে, মোবাইল ফোন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কতখানি প্রয়োজনীয়, তা ব্যাখ্যা করে বোঝানোর দরকার হয় না। ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, দোকানদার, সবজিওয়ালা, রিকশাওয়ালা, কেউই মোবাইল ফোন ছাড়া প্রাত্যহিক জীবনে এক পা চলতে পারে না। মোবাইল ফোনের আর এক বিশেষ প্রযুক্তিগত গঠনে তার ভেতর ছবি ফুটে ওঠে যাকে ফোন করা হচ্ছে। এই ফোন-যোগে দূরত্ব বা কোনো দুর্গমতা থাকে না। আমেরিকার মানুষও এই মোবাইলে এসে ধরা দেয়। বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে প্রযুক্তি যেভাবে দিনে দিনে উন্নীত করছে, তা এক বিস্ময়কর ব্যাপার। এর ব্যবহার কোনোদিন ফুরোবে বলে মনে হয় না।
Computer-এর ব্যবহার :
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে Computer-এর ব্যবহার আরও এক বিস্ময়ের দরজা খুলে দিয়েছে। 'মোবাইল ফোনের' মাধ্যমে আমরা যেসব 'মেসেজ' পাঠাই, এস এম এস করি, সেটা কম্পিউটারের মাধ্যমে ঘারে বসে বাড়ো বড়ো বি চিঠি, প্রবন্ধ, লেখা 'ই-মেল' করে দূরদূরান্তে পাঠিয়ে দিতে পারি এবং এই পাঠানো বিবরণ সঙ্গে সঙ্গে প্রাপকের কাছে পৌঁছে যায়। এইভাবে আমরা ঘরে বসে 'fax' করে পাঠিয়ে দিচ্ছি নানা বার্তা ও সংবাদ। এই Computer যন্ত্রটি এখন আমাদের ঘরে আবশ্যিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী। Computer খুলে ঘরে বসে সারা বিশ্বের খবর সংগ্রহ করা যায়। শেয়ার বাজার থেকে বাজারদর, কর্মখালি থেকে সরকারি বিজ্ঞপ্তি, আরও নানান প্রাত্যহিক জীবনের প্রয়োজনীয় তথ্য মুহূর্তে আমাদের কাছে এসে যাচ্ছে-এই Computer যন্ত্রটি খুলে সারা বিশ্বের খবরের কাগজও আমরা চটপট পড়ে নিতে পারি।
ল্যাপটপ :
'কম্পিউটার' যন্ত্রটিকে ঘরের টেবিলে বসিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এ যন্ত্রটি হাতের ব্যাগে ঢুকে পড়ছে। তখন সে হয়ে যাচ্ছে 'ল্যাপটপ'। আমাদের চলার পথের সঙ্গী হয়ে আমাদের প্রতি মুহূর্তের কাজের সহায়ক হয়ে উঠেছে।
উপসংহার :
এইভাবে আলোচনা করলে, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কীভাবে এবং কতভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যে ঢুকে পড়েছে, তার হদিস পেতে পারি। কিন্তু দিকে দিকে তার সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, পরে তার সংখ্যা নির্ণয় করাটা বেশ কঠিনতর হবে এবং এখনও তা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-