Ads Area


আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বনাম বিশ্বশান্তি বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Class-12 Bangla prabandha Rachana

 আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বনাম বিশ্বশান্তি বাংলা প্রবন্ধ রচনা 

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বনাম বিশ্বশান্তি ” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বনাম বিশ্বশান্তি বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Class-12 Bangla prabandha Rachana


আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বনাম বিশ্বশান্তি বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Class-12 Bangla prabandha Rachana


আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বনাম বিশ্বশান্তি


“সন্ত্রাস রূপে কালো মেঘ-পৃথিবীর পরে 

শান্তির ধারা নাই, শুধু বজ্র ভেঙে পড়ে।”


সন্ত্রাসবাদের পটভূমি :

সন্ত্রাসবাদ হল বর্তমান পৃথিবীর কাছে অশনি সংকেত। সন্ত্রাসবাদ বিশ্বের সব দেশেরই অন্যতম সমস্যা। মহাশক্তিধর আমেরিকার গগণচুম্বী 'ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে' জঙ্গিহানা বুঝিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসবাদ কতখানি ভয়ংকর। ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর আমাদের সংসদে হানা দিয়ে গণতন্ত্রকে খতম করতে এগিয়ে এসেছিল জঙ্গি মানববোমা। তাই, সন্ত্রাসবাদ আজ প্রত্যেক মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে।

যুদ্ধ বনাম সন্ত্রাসবাদ :

 এর আগে 'যুদ্ধ' ইত্যাদিকে ঘিরে ভয়ংকর কাণ্ডকারখানা দেখা গেছে। যুদ্ধকে ঘিরে অনেক মহাকাব্য লেখা হয়েছে, লেখা হয়েছে অনেক গ্রন্থ। ওই সব গ্রন্থে যুদ্ধের ভয়াবহতা যেমন বর্ণিত হয়েছে, তেমনি যোদ্ধাদের বীরত্ব ও শৌর্যের কথাও বলা হয়েছে। যোদ্ধারা সোজাসুজি লড়াই করতেন। ওইসব যুদ্ধে কোনোরকম সংকীর্ণতা বা নীচতা ছিল না। কিন্তু পরবর্তীকালে যুদ্ধটা হানাদারির চেহারা নিল। চেঙ্গিস খান প্রমুখ যুদ্ধবাজদের হাতে যুদ্ধটা রীতিমতো নৃশংসতায় পরিণত হয়ে গেল। বর্তমানে গোপন যুদ্ধ, ছায়া যুদ্ধ, গেরিলা যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদী আক্রমণে না আছে বীরত্ব, না শৌর্য। এখন শুধু নৃশংসতা, ধ্বংস আর মৃত্যু। সন্ত্রাসবাদ বিংশ শতকের ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন হয়ে একবিংশ শতককেও ভাবিয়ে তুলেছে।

'আল-কায়দা' সংগঠন :

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মহাশক্তিধর আমেরিকা ও রাশিয়ার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রশ্রয়ে সন্ত্রাসবাদ জন্ম নিয়েছে। বিশ্বযুদ্ধের পর ঠান্ডা যুদ্ধ ও প্যালেস্তাইন সমস্যাকে কেন্দ্র করে মুসলিম সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেয়। দেশে দেশে ইসলামিক শক্তির সঙ্গে আমেরিকার বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিনি দমনপীড়নের এরা বিরোধী। সেই বিরোধই জন্ম দিল জঙ্গি ইসলামি সন্ত্রাসবাদের। জঙ্গিদের হাতে উঠে এল অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। এই অবকাশে মৌলবাদী মুসলমানরা তরুণ জঙ্গিদের মনের ভেতর ঢুকিয়ে দিল পৃথিবী জুড়ে ইসলামিক রাষ্ট্র তৈরির স্বপ্ন। এই স্বপ্নের সওদাগর হয়ে দেখা দিলেন আরবদেশের ধনীর দুলাল 'ওসামা বিন লাদেন'। তিনি তৈরি করলেন 'আল-কায়েদা' নামে জঙ্গি সংগঠন। মার্কিনি দমননীতির বিরুদ্ধে তিনি তৈরি করলেন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ। 'আল-কায়েদা'র সন্ত্রাসে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্য এশিয়া সন্ত্রস্ত আজ। এদের হাতে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র এসে পৌঁছেছে। শোনা যায় এরা পারমাণবিক অস্ত্র জোগাড়ের চেষ্টায় আছে।

ওসামা বিনা লাদেন ও হানাদারি, বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসবাদ :

২০০১-এর ১১ সেপ্টেম্বর হল 'আল-কায়েদা' সংগঠনের মার্কিন বিরোধিতার চূড়ান্ত প্রকাশ। সমগ্র পৃথিবীকে যেন জানিয়ে দেওয়া হল, আমেরিকাকে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ক্ষমতা পৃথিবীতে এই মুহূর্তে একটি গোষ্ঠীর হাতে রয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকা লাদেনের আশ্রয়দানকারী রাষ্ট্র আফগানিস্তানকে যুদ্ধে বিধ্বস্ত করল। তবু লাদেনকে তখন ধরা সম্ভব হয়নি। তাই আল-কায়েদা এখনও দেশে দেশে ধ্বংসাত্মক কাজ করে চলেছে। তাদের সন্ত্রাসবাদী হামলায় নানা দেশে প্রাণহানি ও সম্পদহানি আজও অব্যাহত। ইরাক, লিবিয়া প্রভৃতি দেশগুলি সন্ত্রাসবাদকে মদত দিয়ে চলেছে। পাকিস্তানও আজ সন্ত্রাসবাদের প্রশ্রয়দাতা অন্যতম মৌলবাদী রাষ্ট্র। তাদের দেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদীরা ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে।

সন্ত্রাসবাদ দূর করার উপায় :

বিশ্বকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে হলে রাষ্ট্রসংঘের উদ্যোগে বিশ্বের সব দেশকে সহমতে পৌঁছাতে হবে। এ ব্যাপারে ক্ষমতাধর দেশ-আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি প্রভৃতির দায়িত্ব অসীম। অনেক ক্ষেত্রে এই দেশগুলি তাদের অস্ত্র ব্যবসায়ের স্বার্থে সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয়। তা ছাড়া এই দেশগুলির স্বার্থ-সংকীর্ণ সাম্রাজ্যবাদী নীতির কারণেও সন্ত্রাসবাদ প্রশ্রয় পায়। সুতরাং শান্তির জন্য এদেরই সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে। দেশে দেশে জনমত গঠন, শান্তি প্রক্রিয়া ও উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্ব থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে।

উপসংহার :

সন্ত্রাসবাদকে রুখতে হলে মানুষের শুভবুদ্ধিকে জাগাতে হবে। ত্যাগ করতে হবে সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। মনে রাখতে হবে সন্ত্রাসবাদ ক্ষমতাধর রাষ্ট্রকেও ছাড়ে না। তাই সকলের জন্য শুভ-চেতনা সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদ মুক্ত করার কাজে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area