Ads Area


গণতন্ত্রী ভারত বনাম সন্ত্রাসবাদ বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Class-X Bangla prabandha Rachana

 গণতন্ত্রী ভারত বনাম সন্ত্রাসবাদ বাংলা প্রবন্ধ রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “গণতন্ত্রী ভারত বনাম সন্ত্রাসবাদ” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

গণতন্ত্রী ভারত বনাম সন্ত্রাসবাদ বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Class-X Bangla prabandha Rachana


গণতন্ত্রী ভারত বনাম সন্ত্রাসবাদ বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Class-X Bangla prabandha Rachana



গণতন্ত্রী ভারত বনাম সন্ত্রাসবাদ


"কোথায় নিরাপত্তা বল? চারদিকে শুধু বিস্ফোরণ, সন্ত্রাস আতঙ্কে তাই দিশেহারা মন।"


ভূমিকা :

 ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানে জনসাধারণের সরকার, জনসাধারণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার, জনসাধারণের জন্য সরকার। "Government of the People, by the people, for the people." কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কথায়-"আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে।” কিন্তু সেই শান্তিপূর্ণ ভারতে সম্প্রতি অশান্তির ঘূর্ণিঝড় দেখা দিয়েছে, দুর্যোগের কালো মেঘ দেখা দিয়েছে ঈশান কোণে। তার কারণ, সন্ত্রাসবাদ আজ দিকে দিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে প্রত্যেকটি মানুষ।

সংসদে সন্ত্রাসবাদী হানা :

সন্ত্রাসবাদ আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিপন্ন করে চলেছে। সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছে ভারতীয় সংসদ ভবন। সন্ত্রাসবাদীদের আকস্মিক হামলায় গত ১৩ ডিসেম্বর, ২০০১ খ্রিস্টাব্দে, বেলা ১১-৪০ মিনিটে, কয়েকজন জঙ্গি সন্ত্রাসবাদী হঠাৎ এসে সংসদ ভবনের দরজায় ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমাদের সংসদ ভবন হল গণতন্ত্রের মন্দির। একশো দশ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হল এই সংসদ ভবন। ভারতীয় সংসদে আঘাত করে তারা ভারতীয় গণতন্ত্রকে আঘাত করছে। এইভাবে সন্ত্রাসবাদীরা আমাদের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চাইছে। তারা চেয়েছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ সমস্ত নেতা-নেত্রীদের হত্যা করতে। এই ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়ার প্রতি সমগ্র বিশ্ব ধিক্কার জানিয়েছে।

কলকাতার আমেরিকান দূতাবাসে জঙ্গিহানা :

দিল্লির সংসদ ভবনে জঙ্গিহানার ঠিক চল্লিশ দিন পরে কলকাতায় জঙ্গি আক্রমণের ঘটনা ঘটল ২২ জানুয়ারি ২০০২, মঙ্গলবার সকালে, জওহরলাল নেহরু রোডের আমেরিকান সেন্টারে। ২০০৯-এর ২৬ নভেম্বর মুম্বাই-এ এক ভয়ংকর আক্রমণ চালায় পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীরা। এ ছাড়া বিগত এক দশক জুড়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে আলফা, কামতাপুরী প্রভৃতি উগ্রবাদী সংগঠন ও মাওবাদীরা সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনহানি হচ্ছে, দেশের সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে, দেশের গণতন্ত্র এক ঘোর বিপদের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।

সন্ত্রাসবাদ এবং তাদের যুক্তি :

ওই সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি হানাদারেরা তথা সন্ত্রাসবাদীরা হল মৌলবাদী। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের উৎসাহে ও আশ্রয়ে তারা লালিত-পালিত। এদের ভেতরে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হল, 'লশকর-ই-তৈবা' এবং 'জৈশ-ই-মহম্মদ'। এদের সকলের উদ্দেশ্য হল, ভারতের কাশ্মীর রাজ্যটিকে ছিনিয়ে নিয়ে পাকিস্তানের ভেতর শামিল করা-অর্থাৎ এরা ভারতকে পুনরায় খন্ডিত করতে চায়। কিন্তু কাশ্মীর হল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, তাকে ভারত থেকে আলাদা করা যাবে না। ভারত হল ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এই দেশে হিন্দু-মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করছে। তাদেরও কোনোভাবে ভারত বিরোধী করে তোলা যাবে না। তারা দেশপ্রেমিক। ভারত সন্ত্রাসবাদীদের হুমকির কাছে মাথা নোয়াবে না। ফলে, ভারত বিভাজনও সন্ত্রাসবাদীদের অলীক স্বপ্ন হয়ে থাকবে। ভারতের জনগণ যে-কোনো মূল্যে ভারতের সংহতি রক্ষা করবে। সন্ত্রাসবাদীদের চক্রান্তে তারা বিভ্রান্ত হবে না। ভারতের জনগণের ঐক্য চেতনার কাছে অশুভ শক্তির সর্বপ্রকার প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে।

পাকিস্তান ও জঙ্গিবাদ :

বর্তমানে এই সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হল আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান। পাকিস্তানে গণতন্ত্র নেই, জনসাধারণের ইচ্ছাকে তারা মর্যাদা দেয় না। মূল সমস্যাগুলিকে পাশ কাটিয়ে মৌলবাদকে তারা উসকে দিচ্ছে।

ভারতের ভেতর দিকে দিকে সন্ত্রাসবাদ :

ভারতের বুকে যেভাবে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তা ভাবতে গেলে আমাদের শিহরিত হতে হয়। নাগাল্যান্ড, অসম, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যগুলি আজ সন্ত্রাসবাদের শিকার। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং অন্ধ্রে মাওবাদী গোষ্ঠী প্রতিনিয়তই সংঘর্ষে লিপ্ত। বিচ্ছিন্নতাবাদ এইভাবে নানা জায়গায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। পশ্চিমবঙ্গেও এই ধরনের উৎপাত মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এই অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দা চক্র আই. এস. আই. গোপনে এই বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে চলেছে। বিক্ষুব্ধদের হাতে হাতে তারা একান্ত গোপনে ধরিয়ে দিচ্ছে মারাত্মক সব অস্ত্রশস্ত্র।

সন্ত্রাস থেকে বাঁচবার সঠিক পথ :

আমাদের দেশকে বাঁচাতে হলে এবং আমাদের বাঁচতে হলে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করা জরুরি। এজন্য আমাদের সামরিক ও অসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সজাগ রাখতে হবে। কিন্তু অস্ত্র ব্যবহারের দ্বারা সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সন্ত্রাসবাদ উত্থানের কারণ খুঁজে বের করে তা দূর করা। ভারতের অশিক্ষা, অজ্ঞতা, দারিদ্র্য, অস্বাস্থ্য দূর না হলে অসন্তোষ জাগবেই, আর তা সন্ত্রাসবাদে পরিণত হবে। তাই সর্বাগ্রে প্রয়োজন দেশের মানুষের জীবনধারণের ন্যূনতম চাহিদাগুলিকে পূরণ করার চেষ্টা করা। গণতান্ত্রিক ভারতে প্রতিটি মানুষের জীবনধারণের জন্য সমান অধিকার ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে সার্বিক গণসচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area