Ads Area


স্বাধীনতার সত্তর বছরের প্রাক্ কালে বাংলা রচনা || Class-X Bangla Rachana

 স্বাধীনতার সত্তর বছরের প্রাক্ কালে বাংলা রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “স্বাধীনতার সত্তর বছরের প্রাক্ কালে” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাধীনতার সত্তর বছরের প্রাক্ কালে বাংলা রচনা || Class-X Bangla Rachana


স্বাধীনতার সত্তর বছরের প্রাক্ কালে বাংলা রচনা || Class-X Bangla Rachana



স্বাধীনতার সত্তর বছরের প্রাক্ কালে 


"স্বাধীনতার পরে কেটে গেছে কত কাল, 

এসেছে নোতুন যুগ, বলেছে হালচাল।"


ভূমিকা :

 দীর্ঘ দুশো বছরের পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্টে এল সেই বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সূর্য আবার উদিত হল ভারতাকাশে, উড্ডীয়মান হল আমাদের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা। জাতির জীবনে সূচনা হল এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের।

পিছনের ছেষট্টি বছর :

 ইতিমধ্যে আমরা ছেষট্টিটি স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করে এসেছি, ভালোয় মন্দে ছেষট্টি বছরের বেশি সময় ধরে স্বাধীন ও স্বাধিকারসম্পন্ন সত্তা প্রতিষ্ঠিত করেছি নানান পরিস্থিতিতে। আমরা কখনও হয়েছি বিভ্রান্ত, কখনও সাফল্যে উদ্বেল। এই ছেষট্টি বছরে দেশের সংহতি বারবার বিপন্ন হয়েছে। দেশের মাটি সম্প্রদায়িক ও জাতি-দাঙ্গায় রক্তাক্ত হয়েছে। দেশের অর্ধেক মানুষ আজও দু'বেলা খেতে পায় না। দেশের প্রায় চল্লিশ শতাংশ মানুষ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। আজও দেশে বহু শিশু, শ্রমিকের জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। এখনও দেশে অপুষ্টিতে ভোগে গর্ভবতী জননী ও কোলের শিশুরা। বিপরীতে ধনীর বিলাসব্যসন ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এই বৈপরীত্যময় অবস্থায় ভারতের স্বাধীনতা সুদীর্ঘ ছেষট্টি বছরের সীমা পার হল।

উন্নতির নানা পর্ব ও পরিকল্পনা :

তবে অর্জনও আমাদের নেহাত কম নয়। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারিতে আমরা প্রতিষ্ঠিত হই স্বাধীন সার্বভৌম প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু হয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। পূর্বে ৪০ কোটি জনগণের খাদ্য সংকুলানের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হত, কিন্তু পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা রূপায়ণের ফলে ভারত খাদ্য উৎপাদনে মোটের ওপর স্বয়ম্ভর হয়েছে। সারা ভারতবর্ষে এখন বড়ো বড়ো কলকারখানা গড়ে উঠেছে। ভূমিসংস্কার ও গ্রামোন্নয়ন প্রভৃতির সাহায্যে সকল শ্রেণির জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নও ঘটেছে। গ্রামীণ বৈদ্যুতিকীকরণ, সড়ক নির্মাণ, সাধারণ শিক্ষার প্রসার, চিকিৎসা-ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ঘটেছে। মহাকাশ গবেষণা এবং শান্তির কাজে আণবিক শক্তির ব্যবহারে ভারত আজ পৃথিবীর অন্যতম অগ্রণী রাষ্ট্র।

সার্থকতার নানান দিক :

বিশ্ব রাজনীতির ক্ষেত্রেও ভারতের স্থান উজ্জ্বলতর। জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন, রাষ্ট্র-সমবায় গঠনে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধির ভূমিকাটি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। ভারত আজ 'বিশ্ব আণবিক ক্লাব'-এর সদস্য। খেলাধুলার ক্ষেত্রেও বিশেষত ক্রিকেটে ভারতের বিশ্বজয় এক নজির সৃষ্টি করেছে। কুমেরু অভিযানে ভারতের ভূমিকাও সারা বিশ্বে স্মরণীয়।

সাফল্য :

সবুজ-বিপ্লব ভারতের খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা দান করেছে। শিল্পোৎপাদনে, বিশ্ববাণিজ্যে ভারত প্রভূত উন্নতি করেছে। রফতানি বাণিজ্যেও ভারতে সাফল্য উল্লেখযোগ্য।

সংকট ও বিপদ :

তবে ছেষট্টি বছরের জাতীয় জীবনে বিপত্তির মাত্রাটিও কিছু কম নয়। স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে আমাদের প্রধান হাতিয়ার ছিল একতা ও জাতীয়তাবোধ। স্বাধীনতার পরে আঞ্চলিকতা, ধর্মীয় সংকীর্ণতা ও ভাষাগত বিভেদ প্রবণতা দেশে অনৈক্যের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সম্পদ বণ্টন ও প্রশাসনিক নিরপেক্ষতার অভাবও এই সমস্ত ভেদবুদ্ধির জন্য অনেকাংশে দায়ী। এই সুযোগে বিচ্ছিন্নতাবাদী উগ্রপন্থীরা স্বার্থান্বেষী বিদেশি রাষ্ট্রশক্তির সহায়তায় ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য তৎপর হয়েছে। আজ ভারতের দিকে দিকে বিচ্ছেদ, বিচ্ছিন্নতার লেলিহান অগ্নিশিখা তার বাহু বিস্তার করেছে, আর এরই ফলে ভারতের জাতীয় সংহতি আজ বিপন্ন।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতা :

 জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং মূল্যবৃদ্ধি হল ভারতের বড়ো সমস্যা। ভারতে দরিদ্রের সংখ্যা ও নিরক্ষরের সংখ্যাও দুর্ভাবনার কারণ হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে বেকারত্ব ও কর্মহীনতাও বেড়ে চলেছে। স্বাধীনতার ছেষট্টি বছর পূর্তিতে শুধুমাত্র লোক দেখানো আড়ম্বর নয়, আমাদের শপথ নেওয়া উচিত যে-কোনো মূল্যে আমরা ভারতের জাতীয় সংহতি রক্ষা করব। সেই সঙ্গে নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। দেশে কৃষি ও শিল্পের সুষম বিকাশ ঘটিয়ে বেকারত্ব দূর করতে হবে। এ ছাড়া লোকশিক্ষার বিস্তার ঘটিয়ে দেশের মানুষের অজ্ঞতা দূর করতে হবে। সর্বোপরি নিরপেক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে জাতিকে প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবাইকে চেষ্টা করতে হবে।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area