Ads Area


মিড-ডে মিল বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Mid Day Meal Bangla Prabandha Rachana

 মিড-ডে মিল বাংলা প্রবন্ধ রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে। এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত “মিড-ডে মিল” প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মিড-ডে মিল বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Mid Day Meal Bangla Prabandha Rachana


মিড-ডে মিল বাংলা প্রবন্ধ রচনা || Mid Day Meal Bangla Prabandha Rachana 


মিড-ডে মিল


ভুমিকা :

মিড-ডে মিল ভারত সরকারের একটি জনকল্যাণমুখী প্রকল্প। প্রকল্পটির সঙ্গে বিদ্যালয় শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। ভারতবর্ষের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করে। দারিদ্র্যের কারণেই এদেশের মানুষের কাছে বিদ্যালয় শিক্ষা বিলাসিতামাত্র। কিন্তু নিরক্ষরতামুক্ত সুস্থ সবল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলবার জন্য প্রয়োজন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেও নতুন প্রজন্মকে বিদ্যালয়মুখী করে তোলা। বিদ্যালয়ে গেলে যদি একটি শিশু বা কিশোর দুমুঠো খেতে পাবে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া যায় তবেই একজন দরিদ্র অভিভাবক তাঁর সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাবেন-এই ভাবনা থেকেই মিড-ডে মিলের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল ভারত সরকার।

মিড-ডে মিলের প্রয়োজনীয়তা :

বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার গবেষণা থেকে জানা যায় ভারতের শিশু-কিশোরদের একটি বড়ো অংশই অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগছে। ফলে তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে না, এমনকি ওজনও স্বাভাবিকের তুলনায় কম। সমীক্ষায় দেখা গেছে ৬ থেকে ৯ বছরের শিশুদের ৫৮.৬ শতাংশ, ১০ থেকে ১৩ বছরের কিশোরদের ৭৭.৯ শতাংশরই ওজন স্বাভাবিক ওজনের থেকে কম। অপুষ্টিজনিত কারণেই এমনটি ঘটছে। এই কারণে নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্যপ্রদানের মাধ্যমে স্বাভাবিক শিশু-কিশোর গড়ে তোলবার জন্যে এবং স্কুলছুট শিক্ষার্থীর হার কমাবার জন্য নিয়মিত রান্না করা খাবার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ছুটির দিন বাদে প্রত্যহই পরিবেশন করার প্রকল্প নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পের নামই মিড-ডে মিল প্রকল্প।

প্রকল্পের স্বরূপ :

স্বাধীনতা পূর্ববর্তী বা পরবর্তীকালে বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা চালু ছিল। ভারত সরকারও ১৯৫৮-৫৯-এ ইউনিসেফের সহযোগিতায় মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করেছিল, তবে এ বিষয়টি যথার্থ গুরুত্ব পেল ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট থেকে। এই সময় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফ নিউট্রিশন সাপোর্ট টু প্রাইমারি এডুকেশন চালু করেন। এই প্রোগ্রাম অনুযায়ী কয়েকটি রাজ্যে ও কেন্দ্রশাসিত পন্ডিচেরিতে রান্না করা খাবার পরিবেশন করা শুরু হয়। এই সময় পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য রাজ্যগুলিতে ৩ কেজি করে খাদ্যশস্য প্রতি শিক্ষার্থীকে দশ মাস ধরে দেবার বন্দোবস্ত হয়। এই ব্যবস্থাই পরে পরিবর্তিত হয়ে সারা ভারতবর্ষে মিড-ডে মিলে রূপান্তরিত হয়।

মিড-ডে মিলের কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্প হলেও এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারেরও একটি ভূমিকা থাকে। ঠিক হয় এর ব্যয়ভার ৭৫ শতাংশ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাকি ২৫ শতাংশ বহন করবে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করবে। সেই সঙ্গে রান্নার ব্যবস্থা, পরিবহণ, রান্নাঘর, পরিস্তুত জল প্রভৃতি বিষয়গুলির ভার কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েই বহন করবে। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে সিদ্ধান্ত হয় রান্নাঘরের ব্যবস্থা অর্থাৎ রান্না করার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করবে কেন্দ্র সরকার। রাঁধুনি ও সহকারী দলিত শ্রেণির মানুষদের মধ্য থেকে নিয়োগ করতে হবে।

প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা :

 সারা ভারতবর্ষের প্রতিটি রাজ্যেই এই প্রকল্পটি বর্তমানে চালু রয়েছে। তবে সর্বত্র এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে প্রায় ১২ কোটি ছাত্রছাত্রী এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। প্রকল্পটিকে চালু করতে গেলে আরও সরকারি অনুদান প্রয়োজন। কারণ বহু স্কুলেই রান্না করার মতো উপযুক্ত বন্দোবস্ত নেই, বহু স্কুলে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই।

উপসংহার :

মিড-ডে মিল ভারত সরকারের একটি জনকল্যাণমুখী প্রকল্প। প্রকল্পটি ভালো, তবে সীমাবদ্ধতা অনেক। অনেকক্ষেত্রেই খাদ্যসামগ্রীর গুণগত মান ভালো থাকে না। যথার্থ স্বাস্থ্যবিধি মেনে রান্নার বন্দোবস্ত করা যায় না। পুষ্টিমূলাও সর্বত্র সঠিক থাকে না, অবহেলার খাদ্য খেয়ে অনেক সময়ই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আবার যথেষ্ট সহযোগীর অভাবে অনেক সময় শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই এই কাজে এগিয়ে আসতে হয়। এতে দৈনন্দিন পড়াশোনারও যথেষ্ট ক্ষতি হয়ে থাকে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area