Ads Area


একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা বাংলা রচনা || Bangla Rachana Class- X

 একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা বাংলা রচনা

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বর্তমান পাঠক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষায় একটি করে প্রবন্ধ রচনা প্রশ্নপত্রে এসেই থাকে। শব্দসীমা ৫০০ এবং পূর্ণমান ১০। মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কোনো উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে না কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে উত্তরসংকেত দেওয়া থাকে।

এই নমুনা বাংলা প্রবন্ধরচনা ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে আমরা মধ্য বিভাগের সকল শ্রেনীর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রদান করবো। নতুন নতুন প্রশ্ন পেতে নিয়মিত আমাদের Website টি Follow করো। যাইহোক, বর্তমান পোস্টে প্রকাশিত " একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা" প্রবন্ধটি মূলত মাধ্যমিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।


একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা বাংলা রচনা || Bangla Rachana Class- X


একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা বাংলা রচনা || Bangla Rachana Class- X 


একটি বৃষ্টিমুখর দিনের অভিজ্ঞতা


"বর্ষণ মুখর দিনে-

 কত স্মৃতি জাগে মনে,

 কত কথা গান হয়- 

আনন্দ শিহরণে।"


ঋতু রঙ্গময়ী এই বঙ্গভূমি। এই সোনার বাংলায় প্রকৃতির রমণীয় আঙিনায় ষড় ঋতুর লীলাচাঞ্চল্য। গ্রীষ্মের দাবদাহকে শান্ত করতে আসে বর্ষা। বর্ষা বয়ে আনে নবজীবনের আশা।

ঋতুর নাম বর্ষা: বাদল মেঘের মাদল বাজে :

'এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘনঘোর বরিষায়।' না-বলা কথা উজাড় করে বলার একমাত্র এই ঋতু, যখন 'বাদল মেঘে বাদল বাজে'। আজ ঘুম থেকে উঠে দেখি দিগন্তব্যাপী আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে আছে, কোথাও আলো নেই। আকাশের কান্নার বিরাম নেই। অবিরল অবিচ্ছিন্ন ধারায় তার অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে ধরিত্রী বক্ষে। বর্ষণ কখনও মুশলধারে, কখনও ঝিরঝিরে। কানে আসছে তার একটানা শব্দ। ভাবুক মন সেই শব্দে খুঁজে পায় নদীর কুলু কুলু ধ্বনি, কখনও বা পাতার মর্মরধ্বনি। আজ জলের স্বর আর বাতাসের স্বর মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছে। এমন পরিবেশে অন্যমনস্ক হওয়াই স্বাভাবিক।

বৃষ্টি আর বৃষ্টি :

 বর্ষার এই দিনটিতে গাছপালা, মাঠে-ঘাটে সর্বত্রই প্রাণের হিল্লোল বয়ে চলেছে। তাল আর নারকেল গাছ সব গাছের মাথা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাওয়ায় দুলছে। খামখেয়ালি বাতাস কিছুক্ষণের জন্য লতাপাতাকে নাচিয়ে দিয়ে বৃষ্টিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে গাছগাছালির লুকোচুরি খেলা শুধু চোখভরে দেখা নয়, মনভরে উপভোগ করাও যাচ্ছে। এই মুহূর্তে মন চিন্তাশূন্য, আছে শুধু এক অব্যক্ত অনুভূতি।

বৃষ্টিকে নিয়ে কবিতা ও গান :

মনে পড়ে কবি বুদ্ধদেব বসুর কবিতার কটি লাইন- “সকাল থেকেই বৃষ্টির পালা শুরু/আকাশ হারালো আঁধার জড়ানো দিন। আজকেই যেন শ্রাবণ করেছে পণ,/শোধ করে দেবে বৈশাখী সব ঋণ।” হর্ষে-বিষাদে মেশানো অনামিক অনুভূতির জমির ওপর দাঁড়িয়ে অনেক ছোটো-বড়ো ঘটনার কথা মনের আকাশে বিদ্যুতের চমক নিয়ে আবির্ভূত হয়েই আবার মিলিয়ে যায়, রেখে যায় স্মৃতির রেশ। বর্ষার দিনে কত গানের সুর কানের কাছে গুনগুনিয়ে বাজে। "মন মোর মেঘের সঙ্গী/উড়ে চলে দিক দিগন্তের পানে-", প্রিয় কবির কত কবিতার পঙ্ক্তি নিজেরই অজান্তে আবৃত্ত হয়।

বর্ষণমুখর দিনের ভাব :

বর্ষণমুখর দিনে বোঝা যায় মানুষ তার ভাব ভাষায় কত কম ব্যক্ত করতে পারে, আর কত বেশি অব্যক্ত থেকে যায়। সাধারণ মানুষ ভাষার অভাবে ভাবকে ব্যক্ত করতে পারে না। কিন্তু কবি-সাহিত্যিকরাও সমস্ত গভীর ভাবকে ভাষারূপ দিতে পারেন বলে মনে হয় না। এমন বর্ষণ দিনের গভীরে প্রকৃতি যেন সেই অব্যক্তকে প্রকাশ করে চলে নিরন্তর বারি বর্ষণে। তাইতো মন এত উদাস হয়ে পড়ে। 

বর্ষার কাব্য ও কবিতা :

বৈয়ব কবি থেকে আরম্ভ করে রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্র-পরবর্তী প্রকৃতি-প্রেমিক কবিরা বর্ষার যে সমস্ত ছবি শব্দের রঙে এঁকেছেন, সেগুলো একে একে আমার মনের পর্দায় বর্ণের বিচিত্রতা নিয়ে ফুটে উঠছে। আমি যেন স্মৃতিলোকে প্রকৃতির সেই রূপ-রস-শব্দ-গন্ধের স্পর্শ পাচ্ছি। বিদ্যাপতি আর গোবিন্দদাসের অভিসারের পদে বর্ষার যে বর্ণনা রয়েছে তাকে বর্ষা প্রকৃতির ফ্রেমে বাঁধানো ছবি বলে মনে হয়।

বর্ষা যখন বন্যা হয়ে ওঠে :

তবে বর্ষার দিনের মধ্যে কেবল মিলন এবং সুখের অন্বেষণ বৃথা। বর্ষার বারিধারা অনেক সময় অঘটনও ঘটায়। তুমুল বৃষ্টিপাত নদীগুলি তাদের দু'কূল ছাপায়, পথঘাট ভাসে। দেখা দেয় বন্যা। এই বন্যাতে অনেকেরই বাড়িঘর হয় প্লাবিত। তখন বানভাসি মানুষদের নিয়ে দুঃখের অবধি থাকে না। এক বর্ষণমুখর দিনে ওই রকম বিষণ্ণ বন্যার্তদের দুঃসহ ঘটনা আমি দেখেছিলাম। সেই স্মৃতি ভেসে উঠলে মন ভারী হয়ে আসে।

আরও পড়ুন-

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Area