“বাহিরের কথা বা ঘটনা যখন ভাবের হয়ে আমাদের মনের সঙ্গে রসের প্রভাবে মিলে যায় তখন মানুষ স্বভাবতই ইচ্ছা করে সেই মিলনকে সর্বকালের সর্বজনের অধিকারভুক্ত করতে। ” -রবীন্দ্রনাথ।
⨀ প্রবন্ধ প্রসঙ্গে:
সাহিত্যের রয়েছে নানা বিভাগ । কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক এমনি নানা ধরনের, নানা রকমের বিচিত্র, রসোত্তীর্ণ শিল্পসম্ভার । প্রবন্ধ সেই বিচিত্র সাহিত্যকর্মের এক সমৃদ্ধ শাখা ৷ ‘প্রবন্ধ’ কথাটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল ‘প্রকৃষ্ট বন্ধন’ । এ বন্ধন প্রকৃতপক্ষে ভাবের সঙ্গে চিন্তার ও ভাষার অবিচ্ছেদ্য মিলনসাধন । প্রবন্ধ ও রচনার মধ্যে সামান্য হলেও পার্থক্য আছে । ‘প্রবন্ধ’ বলা হয় তাকে যাতে থাকে বিষয়ের (subject) প্রাধান্য । আর ‘রচনা’ (Essay) বলে তাকে যাতে থাকে লেখকের বিষয়ী অর্থাৎ চিন্ময় সত্তার প্রাধান্য । ‘প্রবন্ধ’ বুদ্ধিবাহিত, তাই তার আবেদন একমাত্র বুদ্ধির কাছে । ‘রচনা’ হল হৃদয়-সমুত্থিত, তাই তার আবেদন হৃদয়ের কাছে ।
প্রবন্ধে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়কে নানা তথ্যের সাহায্যে বিবিধ যুক্তিতর্কের শৃঙ্খলে সুসজ্জিত করে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের ভিতর দিয়ে উপস্থাপন করতে হয় । এখানে ভাবের সংযম প্রয়োজন, চিন্তার স্বচ্ছতার প্রয়োজন, ভাষার স্বচ্ছন্দ গতিময়তা ও প্রকাশের যুক্তিনির্ভর ঋজুতাও আবশ্যক । এ জাতীয় রচনায় ভাব ও ভাবাবেগের পাশাপাশি বুদ্ধি বা মননও সমান গুরুত্বপূর্ণ । তবে এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, যে-কোনো শিল্পের উৎকর্ষ মূলত নির্ভর করে শিল্পীর বোধ ও জীবনকে দেখার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ।
এ প্রসঙ্গে আর-একটি উল্লেখযোগ্য কথা স্মরণে রাখা উচিত । তা হল–প্রবন্ধই হোক বা যে-কোনো রচনাই হোক প্রত্যেকটিতে উৎকৃষ্ট রচনার বৈশিষ্ট্যই হল তাতে লেখকের ব্যক্তিত্বের যথার্থ প্রতিফলন ঘটবে । বক্তব্য বিষয় ও প্রকাশভঙ্গি অনুসারে প্রবন্ধ রচনাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতেই পারে । যেমন- বর্ণনামূলক, চিন্তামূলক, ভাবমূলক, ব্যাখ্যামূলক, বিবৃতিমূলক, বিতর্কমূলক, তথ্যমূলক ইত্যাদি । আবার বিষয়বস্তুর দিক থেকে প্রবন্ধ হয় বিষয়প্রধান কিংবা বিষয়ীপ্রধান ।
⨀ সার্থক প্রবন্ধ রচনার কলাকৌশল:
প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু সুনির্দিষ্ট রীতি কৌশল আছে । কোনো বিষয়ে প্রবন্ধ লেখার আগে বুঝে নিতে হবে প্রবন্ধটি বিষয়নিষ্ঠ নাকি চিন্ময় । এরপর বিষয়বস্তু অনুযায়ী এটিকে সূত্রাকারে ক্রমান্বয়ে সাজাতে হবে । এক একটি অনুচ্ছেদে এক একটি বিশেষ পর্বকে বিন্যস্ত করতে হবে এবং সবশেষে উপসংহারে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে বিষয়টিকে সংহত আকারে প্রকাশ করতে হবে ।
লেখার ভাষা যেন সহজ, সরল এবং প্রাঞ্জল হয় । সহজ ভাষায় ছোটো ছোটো বাক্যে বিষয়-সূত্রগুলি উপস্থাপন করতে পারলে রচনার গুণগত মান বেড়ে যায় ৷
প্রবন্ধের বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা চাই এবং চাই ভাষার ওপর সাবলিল অধিকার । একই বক্তব্যের ভাষা ব্যবহারে পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন । অনুচ্ছেদ বিভাজন করার সময় যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার যাতে পারস্পর্য বিচ্ছিন্ন না হয় ।
হৃদয়াবেগকে কঠিন কঠোর বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে হয়, বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশের ক্ষেত্র নয় প্রবন্ধ ।
বিভিন্ন বিষয়ে কিছু প্রবন্ধরচনা নিচে দেওয়া হল
পছন্দের বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা পড়তে ক্লিক করুন👇👇👇
Note: পোস্ট টি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এ শেয়ার করুন।
This Website is very useful for students.Basically bengali medium. I am very glad to use this website 😊
ReplyDeleteThank you for your support.
Delete